Aspirants should read the Child Development & Pedagogy Study Notes on Child Growth & Development Principle, Factor Influence of heredity and environment topic. This topic is useful and important for upcoming WB PRIMARY TET 2023, CTET, ASSAM TET, TRIPURA TET, WBSSC TET, WB MADRASHA TET and Other TET Exams.
কৈশোরের চাহিদা পুরণে পিতা-মাতা ও শিক্ষক-শিক্ষিকার ভূমিকা:
জীবনবিকাশের স্তরগুলির মধ্যে কৈশোর অত্যন্ত সংকটপূর্ণ কাল। এইসময় উপযুক্ত পরিচালনার মাধ্যমে একজন কিশোর বা কিশোরীকে যেমন সু সবল, উৎপাদনশীল নাগরিকে পরিণত করা যায়, তেমনি সুপরিচালনা এবং নির্দেশনার অভাবে বখে যাওয়া অকর্মণ্য কিশোর-কিশোরী সমাজের বোঝা হয়ে উঠতে পারে। তাই পিতা-মাতা, শিক্ষক ও অভিভাবককে যথেষ্ট সহানুভূতি -এবং সতর্কতার সঙ্গে কিশোর-কিশোরীদের পরিচালনার ভার নিতে হবে।
কৈশোরে প্রকৃতিগতভাবেই কতকগুলি চাহিদা দেখা দেয়। এই চাহিদাগুলি যদি যথাযথভাবে পূরণ করা না হয়, সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে নানান সমস্যা, বিভিন্ন ধরনের মানসিক জটিলতা, অন্তর্দ্বন্দ্ব, উৎকণ্ঠা প্রভৃতি দেখা যায়। স্বাভাবিক উপায়ে নিজেদের তৃপ্ত করতে না পেরে অনেক সময় তারা অস্বাভাবিক উপায় অবলম্বন করে। অনেক সময় তারা নিজেদের গুটিয়ে নেয়, আবার অনেক সময় বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। কৈশোরের ছেলেমেয়েদের এই জটিল অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হলে পিতা-মাতা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কিছু বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। এইগুলি হল—
1. পরিবর্তন সমন্বে সচেতন করা :
প্রথমেই যেটা প্রয়োজন তা হল, বিদ্যালয়ের নির্দেশনা বিভাগ কিশোর-কিশোরীদের তাদের বিভিন্ন পরিবর্তন সম্বন্ধে সচেতন করবে, তাদের বোঝাবে যে এই পরিবর্তন স্বাভাবিক, সকলের জীবনেই ঘটে। কীভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন করতে হবে, সে সম্পর্কে তাদের পরামর্শ দেওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পিতা-মাতাকেও এ বিষয়ে তৎপর হতে হবে।
2. যথাযথ চাহিদা পূরণ করা :
গৃহে অভিভাবকদের এবং বাইরে বিদ্যালয়ের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের চাহিদা পুরণ করতে হবে এবং এই ব্যাসের বিশেষ ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। চাহিদাগুলি হল—
(A) খাদ্যের চাহিদা : কিশোর-কিশোরীদের দৈহিক পরিবর্তনগুলি খুব সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে। তাদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য ও নিয়মিত শারীরিক অনুশীলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
(B) যৌন চাহিদা : যৌন চাহিদার সমাজ অনুমোদিত সুষ্ঠু বহিঃপ্রকাশের জন্য বিদ্যালয়ে ছবি আঁকা, অভিনয়, নাচ গান, সাহিত্য রচনা প্রভৃতির ব্যবস্থা করতে হবে। যৌন কৌতূহল পরিতৃপ্তির জন্য পাঠক্রমে যৌন শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
(C) স্বাধীনতা ও আত্মপ্রকাশের চাহিদা : কিশোর-কিশোরীদের স্বাধীনতাবোধ ও আত্মপ্রকাশের চাহিদা মেটানোর জন্য তাদের বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। বনভোজন, ভ্রমণ, নাটক, অভিনয়, বিতর্কসভা সংগঠন ইত্যাদি কাজে তাদের উৎসাহিত করতে হবে।
(D) জীবনদর্শনের চাহিদা : জীবনদর্শনের চাহিদাপুরণের জন্য তাদের সামনে মহাপুরুষদের জীবনী তুলে ধরতে হবে। বহু কষ্ট স্বীকার করেও তাঁরা যে তাঁদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি, সেদিকে কিশোর কিশোরীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
(E) যথাযথ পাঠক্রমের চাহিদা : এই স্তরের ছেলেমেয়েরা যাতে তাদের আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী পাঠক্রমের সুবিধালাভের সুযোগ পায় সেজন্য বহুমুখী পাঠক্রমের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
(F) নৈতিক চাহিদা : কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে নৈতিক চাহিদা প্রবল হয়। তাদের নীতিবোধকে উৎসাহ দিতে শিক্ষকশিক্ষিকা এবং পিতা-মাতাকে নিজেদের জীবনে ন্যায়নিষ্ঠ হতে হবে।
(G) জ্ঞানার্জনের চাহিদা : নতুন জ্ঞানার্জনের চাহিদাপুরণের জন্য বিদ্যালয়ে উপযুক্ত পাঠাগারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, বিতর্কসভা, কুইজ ইত্যাদির আয়োজন করতে হবে এবং তাতে সমস্ত ছেলেমেয়েকে অংশগ্রহণে উৎসাহ দিতে হবে।
(H) সামাজিক চাহিদা : সামাজিক চাহিদা পুরণের জন্য কিশোর-কিশোরীদের বিদ্যালয়ের এবং পরিবারের বিভিন্ন কাজে যুক্ত করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ যেমন, সাক্ষরতা অভিযান, বন্যাত্রাণ, রক্তদান প্রভৃতি কাজে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে।
প্রাণশক্তিতে ভরপুর কিশোর-কিশোরীদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের বিকাশ ঘটাতে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার পথকে সুগম করতে শিক্ষক ও অভিভাবককে উপযুক্ত ব্যবস্থা অবলম্বনে সচেষ্ট হতে হবে। জীবনের এই স্তরটি খুবই স্পর্শকাতর। শিক্ষক, অভিভাবক, প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ্যালয়, পরিবার সবাইকে খুবই সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রেখে বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীদের পরিচালনা করতে হয়। কোনো তরফে কোনো ত্রুটি ঘটলে এদের বিপথগামীতার সম্ভাবনা তুঙ্গে উঠবে এবং তার দ্বারা গোটা সমাজ বিপন্ন হবে।