শিখনের প্রকারভেদ : গ্যাগনি l Types of Learning : Gagne: আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী রবার্ট এম. গ্যাগনি (Robert M.Gagne) 1956 সালে ব্যাক্তির মানসিক প্রক্রিয়াসমুহের জটিলতার উপর ভিত্তি করে তিনি শিখনের আটটি (8) শ্রেণীবিভাগ করেছেন। সেগুলি হল –
1. সংকেত শিখন (Signal Learning)
2. উদ্দীপক – প্রতিক্রিয়ার শিখন (Stimulus – Response Learning)
3. শৃঙ্খলিতকরণ শিখন (Chaining Learning)
4. বাচনিক শিখন (Verbal Association)
5. বিনিশ্চয়/পৃথকীরণ শিখন (Discrimination Learning)
6. ধারণার শিখন (Concept Learning)
7. নিয়ম শিখন (Rule Learning)
8. সমস্যা – সমাধানের শিখন (Problem solving Learning)
শিখনের প্রকারভেদ : গ্যাগনি l Types of Learning : Gagne
মনোবিদ গ্যাগনি পরবর্তীতে 1970 সালে তাঁর “The Condition of Learning” বইতে তিনি শিখনের এই শ্রেণীবিভাগ গুলির প্রথম চারটি পর্যায় আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গি (Behavioral Approach) এবং এগুলি নিম্নস্তরের শিখন ।
আর পরবর্তী চারটি অর্থাৎ পাঁচ থেকে আট পর্যায়ের শিখন হল প্রজ্ঞামূলক দৃষ্টিভঙ্গি (Cognitive Approach) এবং এগুলি উচ্চ পর্যায়ের শিখন এবং জটিল প্রকৃতির । নিম্নে বর্ণিত আটপ্রকার শিখন সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
1. সংকেত শিখন (Signal Learning): সবচেয়ে সহজ প্রকৃতির শিখন হল মনোবিদ পাভলভ (Pavlov) রচিত সংকেত শিখন (Signal Learning)। অর্থাৎ আমরা সংকেতের মধ্যে দিয়ে যখন জ্ঞান অর্জন করতে পারি তখন যে শিখন হয়, তাই হল সংকেত শিখন (Signal Learning)।
যেমন : Green Signal ট্রেন আসার সংকেত বোঝায়।
2. উদ্দীপক – প্রতিক্রিয়ার শিখন (Stimulus – Response Learning): মনোবিদ স্কিনার (Skinner) রচিত সক্রিয় অনুবর্তন হল এই ধরনের শিখন (Stimulus – Response Learning), অর্থাৎ উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে যে বন্ধন সৃষ্টি হয়।
3. শৃঙ্খলিত করণ শিখন (Chaining Learning): এই শিখনে শিক্ষণীয় বিষয়গুলি দক্ষতার সঙ্গে পরপর সংযুক্ত করে শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থাপন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধারাবাহিকতা বা শৃঙ্খলাবোধের জন্ম হয়, এটাই Chain Learning.
4. বাচনিক শিখন (Verbal Association): এটিও এক ধরনের শৃঙ্খলিত করণ শিখন। এখানে প্রধান উপাদান হল ভাষা, যার দ্বারা আমরা বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে সংযোগ সাধন করতে পারি। এই শিখনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
5. বিনিশ্চয়/পৃথকীকরণ শিখন (Discrimination Learning): এই ধরনের শিখন প্রক্রিয়া কঠিন ও জটিল। এখানে একই উদ্দীপক বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার মধ্যে সঠিক ও ভুল উভয় ধরনেরই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।আমরা এই শিখনের সাহায্যেই সঠিক প্রতিক্রিয়া সম্পকে জ্ঞান অর্জন করতে পারি।
6. ধারণার শিখন (Concept Learning): ধারণা হল কোনো বস্তু সম্পর্কে সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন করা।অর্থাৎ, কোনো ব্যাক্তি তার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কোনো বিষয়বস্তুর সাধারণ কতগুলি বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে, তাই হল ধারণার শিখন (Concept Learning)।
7. নিয়ম শিখন (Rule Learning): এই শিখন অতি উচ্চমানের প্রজ্ঞামূলক (Cognitive) শিক্ষণপদ্ধতি। এই শিখনের সাহায্যে শিক্ষার্থীরা পরপর বিভিন্ন ধারণার সাহায্যে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত গঠন করে এবং তারা মনে করে যে একটি ঘটনা ঘটলে অপরও ঘটবে অর্থাৎ একটি ঘটনা ওপর ঘটনার সাথে সম্পর্কযুক্ত।
8. সমস্যা – সমাধনমুলক শিখন (Problem Solving Learning): শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করাই হল শিখনের মূল লক্ষ্য অর্থাৎ,শেষ কথা।যখন শিক্ষার্থী বার বার কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং তা সমাধানের জন্য যে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করাই হল সমস্যা সমাধনমূলক শিখন (Problem Solving Learning)।
মনোবিদ গ্যাগনির শিখনের পর্যায়গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।যা শিক্ষার্থীর শিখনে সাহায্য করে।