বৃদ্ধি ও বিকাশ || Growth and Development: মানব জীবনের প্রতিটি ধাপই বৃদ্ধি ও বিকাশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই দুটি প্রক্রিয়া আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং আবেগিক—প্রত্যেকটি দিকেই বৃদ্ধি ও বিকাশের স্পষ্ট ছাপ পাওয়া যায়।
বৃদ্ধি বলতে মূলত শারীরিক পরিবর্তন এবং আকারে বৃদ্ধি বোঝায়, যা সাধারণত মাপা যায় এবং দৃশ্যমান। এর মধ্যে উচ্চতা, ওজন, পেশীর বৃদ্ধি, এবং শারীরিক কাঠামোর পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, বিকাশ হল মানসিক ও আবেগিক পরিবর্তনের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা মানুষের চিন্তা-ভাবনা, মানসিক ক্ষমতা, সামাজিক যোগ্যতা এবং ব্যক্তিত্বের উন্নতির সাথে সম্পর্কিত।
শিশু বিকাশ এর ধারণা (Concept of Child Development):
শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের যথাযথ লালন-পালন এবং সঠিক বিকাশ বিশেষভাবে প্রয়োজন। ভারতে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৪ শতাংশ জুড়ে রয়েছে শিশু। এই শিশুদের মধ্যে যাদের বয়স ৬ বছরের নিচে তারা দখল করে রয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ এবং ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সে শিশুরা দখল করে রয়েছে প্রায় 19 শতাংশ। মানব জীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং সঙ্কটজনক পর্যায় এটি।এই পর্যায়ের ভিত মজবুত এবং স্থায়ী হওয়া প্রয়োজন। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, “আগামী দিনে ভারতকে প্রগতির দিকে নিয়ে যেতে হলে, এখনই শিশুদের যথাযথ বিকাশের জন্য পিতা-মাতা, অভিভাবক-অভিভাবিকাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে”।
বৃদ্ধির সংজ্ঞা:
একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মানবশিশুর দেহের আকার বা আয়তন, ওজন ও উচ্চতার স্বতঃস্ফূর্ত ও স্থায়ী পরিবর্তন হলো বৃদ্ধি।
বৃদ্ধির সাধারণ বৈশিষ্ট্য:
1. বংশধারা ও পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার ফলেই বৃদ্ধি ঘটে: অনেক মনোবিদ মনে করেন, বৃদ্ধির ওপর বংশধারার প্রভাব অধিক। আবার অনেকের মত হলো পরিবেশের কারণে বৃদ্ধি ঘটে। অধিকাংশ মনোবিদ অবশ্য মনে করেন বৃদ্ধি বংশধারা ও পরিবেশের স্ক্রিয়ার ফল। শিক্ষকের কাজ হল, এমন পরিবেশ রচনা করা যায় মিথস্ক্রিয়াকে উৎসাহিত করে এবং বৃদ্ধিকে সার্থক করে তোলে।
2. বৃদ্ধি ও অনুশীলন: বিথির ওপর অনুশীলনের প্রভাব সম্পর্কিত একাধিক পরীক্ষা হয়েছে এবং ধনাত্মক প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। উপযুক্ত বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকগণ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের ব্যবস্থা করবেন।
3. শিশুদের মধ্যে বৃদ্ধির হারে পার্থক্য দেখা যায়: কিছু শিশু দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পায় এবং কোন কোন শিশুর বৃদ্ধি শ্লথগতিতে হয়। শিক্ষার্থীর বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে শিক্ষক শিক্ষা পরিকল্পনা রচনা করবেন।
4. ব্যক্তিভেদে বৃদ্ধির সমাহার সাধারণভাবে বজায় থাকে: যে শিশু বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকে, সারা জীবনই সে গিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীর জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা কর্মসূচি পরিকল্পনায় বৃদ্ধির এই বৈশিষ্ট্যের উপর শিক্ষক গুরুত্ব দেবেন। সকলের জন্য একই কর্মসূচি সুপারিশ করা শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সম্মত নয়।
5. একটি স্তর পর্যন্ত বৃদ্ধি নিরবিচ্ছিন্ন এবং ধারাবাহিক: বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই বৈশিষ্ট্যটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ,আবার একই সঙ্গে অসুবিধাজনক। শিশুর বৃদ্ধি নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঘটে। বয়স ভেদে বৃদ্ধির হারের পরিবর্তন ঘটতে পারে, কিন্তু কোন বয়সে থেমে গিয়ে আবার শুরু হয়, এমনটি ঘটে না। তাই বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিরবিচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিকতা একটি অন্যতম শর্ত।
শিক্ষাক্ষেত্রে এটি তাৎপর্যপূর্ণ এই অর্থে যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অসুবিধাজনক এই অর্থে যে, বৃদ্ধি নিরবিচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক হওয়ার জন্য স্তরভিত্তিক ভাগ করা বিজ্ঞানসম্মত হয় না।
আরও পড়ুন:- বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রশ্ন উত্তর
বিকাশের সংজ্ঞা:
বিকাশ হল ব্যক্তির সহজাত দৈহিক মানসিক ক্ষমতা বা সামর্থের প্রকাশ ও বিস্তার, যা ব্যক্তিকে জটিল থেকে জটিলতার কর্মসম্পাদন করতে সহায়তা করে। বৃদ্ধির মাধ্যমে বিকাশ অর্জিত হয়। কাজেই জন্মের পর থেকে শিশুর জীবনব্যাপী, সামগ্রিক গুণগত পরিবর্তনের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হলো বিকাশ।
বিকাশের বৈশিষ্ট্য:
1. মিথস্ক্রিয়ার ফল: বিকাশ হলো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বা মিথস্ক্রিয়ার ফল। শিশুর সহযাতো ক্ষমতা ও তার চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বা মিথস্ক্রিয়ার ফলেই শিশুর বিকাশ সম্ভব হয়।
2. ধারাবাহিকতা: বিকাশের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ধারাবিকতা আছে। যদিও প্রত্যেক ব্যক্তির বৃদ্ধি ও বিকাশের হার সমান হয়, তবুও বিকাশ একটি সুবিন্যস্ত অনুক্রম বা ধারাবাহিকতাকে অনুসরণ করে থাকে।
3. নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া: বিকাশ হল একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। মানব শিশুর বিকাশ শুরু হয় মাতৃগর্ভে থাকাকালীন অবস্থা থেকে এবং চলতে থাকে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। মানব জীবনে বিকাশের মধ্যে কোন বিরাম বা বিচ্ছেদ নেই। বিকাশ কোন একটি আকস্মিক ঘটনা নয়।
4. ব্যক্তিতান্ত্রিক প্রক্রিয়া: বিকাশ হল ব্যক্তিতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিকাশ লাভ করে। প্রতিটি শিশুর দৈহিক, মানসিক, প্রাক্ষোভিক এবং সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে একটি স্বতন্ত্র্য লক্ষ্য করা যায়।
5. ক্রমসমষ্টিমূলক প্রক্রিয়া: বিকাশ ক্রমসমষ্টিমূলক প্রক্রিয়া। শিশুর কতকগুলি নাটকীয় আকস্মিক পরিবর্তন আমাদের সকলেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। শিশুর বর্তমানের পরিবর্তন বা বিকাশ হল তার পূর্ববর্তী স্তরের বৃদ্ধি ও অভিজ্ঞতার ফলশ্রুতি।
6. সামগ্রিক থেকে বিশেষের দিকে অগ্রসরতা: বিকাশ সামগ্রিক থেকে বিশেষের দিকে অগ্রসর হয়। বিকাশের ক্ষেত্রে আমরা যে দুটি নীতি লক্ষ্য করি তা হল পৃথকীকরণ এবং সমন্বয়।
7. বিভিন্ন দিকের সঙ্গে সম্পর্ক: বিকাশের বিভিন্ন দিকগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। প্রথমদিকে শিশুর সামাজিক বিকাশ তার দৈহিক বিকাশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
8. লিঙ্গ ভেদে বিষমতা: ছেলেদের এবং মেয়েদের বিকাশের হার সমান নয়। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পরিপক্কতা আগে আসে।
9. বিকাশ পরিনমনের ফল: বিখ্যাত শিশু মনোবিজ্ঞানী আর্নল্ড জোনসের মতে, বিকাশের ওপর দৈহিক পরিবর্তনের প্রভাব দেখা যায়। শৈশব কাল থেকে বয়সন্ধিকণ পর্যন্ত ব্যক্তির দৈহিক পরিবর্তন তার জিনের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়। এই স্বতঃস্ফূর্ত পরিবর্তন পরিণমন ঘটায় যা বিকাশ সম্ভব করে তোলে।
10. নিম্নাভিমুখী প্রক্রিয়া: বিকাশ ওপর থেকে নিচের দিকে ঘটে। অর্থাৎ মস্তিষ্ক, ঘাড়, হাত, পা-এইভাবে ওপর থেকে নিচের দিকে পরপর বিকাশ ঘটে। বিকাশমূলক বিজ্ঞানে একে Cephalocaudal বলে।
11. কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে ঘটে: বিকাশ কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে ঘটে। শিশু কোন কিছু ধরার জন্য প্রথম অবস্থায় সমগ্র বাহু ব্যবহার করে। পরে সে হাত এবং আঙ্গুল ব্যবহার করে, একে বলে Boximodigital ।
12. উভয় হাত-পা থেকে নির্দিষ্ট হাত-পা(Bilateral থেকে Unilateral): সদ্যোজাত শিশু দুটি হাত-পা একইভাবে ব্যবহার করতে পারে। দুই বা আড়াই বছর বয়স থেকে শিশুর কোন একটি হাত-পা পণ্যটি তুলনায় বেশি ব্যবহার করে।
এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, শিশুর বিকাশে উপযুক্ত পরিবেশ রচনা করা প্রয়োজন এবং বিকাশগত বৈশিষ্ট্যের প্রতি নজর দিয়ে শিক্ষার পরিকল্পনার স্থির করা উচিত।
শিশুর বিকাশ প্রক্রিয়ার শিক্ষাগত গুরুত্ব:
1. শিশুর জীবনে বিকাশের বিভিন্ন স্তর গুলি জানা থাকলে সে কোন স্তরে কেমন আচরণ করতে পারে, তার আন্দাজ পাওয়া যায়। বিভিন্ন স্তরের তার বিকাশের প্রকৃতি ও আচরণের স্বরূপ জানা থাকলে শিক্ষক তার শিক্ষার পদ্ধতি, পাঠ্যক্রম, মূল্যায়ন পদ্ধতি ইত্যাদি সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারে।
2. প্রত্যেক বিকাশের ক্ষেত্রে নির্দেশনার প্রয়োজন। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির স্বরূপ জানা থাকলে তাকে বাঞ্ছিত পথে পরিচালনা করা সম্ভব।
3. সব শিশুর ক্ষেত্রে বিকাশের ধারা একই রকম। সুতরাং, বিশেষ বয়সের শিশুর আচরণের আদর্শ জানা থাকলে একটি বিশেষ শিশুর বুদ্ধ্যঙ্কক সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।
4. বিকাশের প্রকৃতি সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় এবং বিকাশের হার প্রত্যেকের ক্ষেত্রে বরাবর স্থির থাকায় শিশুর দৈহিক ও মানসিক সামর্থ্য সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী করা সম্ভব হয়। বর্তমানে বয়স-উচ্চতা, বয়স-ওজন, মানসিক বয়স-সামাজিক বিকাশ ইত্যাদির স্কেল তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
5. বিকাশ সাধারন থেকে বিশেষ গুণের দিকে অগ্রসর হয় বলে সাধারন থেকে বিশেষধর্মী জ্ঞানের দিকে শিশুকে নিয়ে যাওয়া শিক্ষা পদ্ধতির একটি প্রয়োজনীয় নীতি।
6. শিশুর বিকাশ বলতে তার দৈহিক, মানসিক, প্রাক্ষোভিক, চারিত্রিক, সামাজিক সর্বপ্রকার বিকাশকে বোঝায়। বিকাশ একটি সামগ্রিক সমন্বয়পূর্ণ প্রক্রিয়া। এইজন্য শিক্ষার লক্ষ্য শিশুর সার্বিক বিকাশ সাধন।
7. প্রত্যেক শিশুর তারা নিজের নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে বেড়ে ওঠে।তাই বর্তমান শিক্ষার একটি অন্যতম লক্ষ্য হলো ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যুর বিকাশ।
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সম্পর্ক:
শৈশব থেকে পরিণত বয়স অবধি প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে। সাধারণত বৃদ্ধি ও বিকাশ পাশাপাশি ঘটে থাকে। শিশুর দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার বিকাশও শুরু হয়। বৃদ্ধিই শিশুর বিকাশে সাহায্য করে। কিন্তু সব সময় তা হয় না। কোন কোন ক্ষেত্রে বিকাশ ছাড়াই বৃদ্ধি হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, কোন শিশুর আকার বা আয়তন, উচ্চতা ওজনে যথেষ্ট বড়ো হয় অথচ তার জ্ঞানেন্দ্রিয়ের ও দৈহিক কাজকর্মের কোনো উন্নতি বা বিকাশ দেখা যায় না। অনুরূপভাবে, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোন শিশুর বিকাশ হয়েছে অথচ বিকাশের তুলনায় বৃদ্ধির হার যথেষ্ট কম। অর্থাৎ কোনো কোনো সময় দেখা যায় যে শিশুর বৃদ্ধি হয়েছে অথচ বিকাশ হয়নি, অথবা বিকাশ হয়েছে অথচ বৃদ্ধির আশানুরূপ হয়নি।
সবশেষে বলা যায় যে, বৃদ্ধি ও বিকাশ- এই দুটি প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য যাই হোক না কেন, এরা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও নির্ভরশীল। মানব শিশুর সামগ্রিক ব্যক্তিত্বের বিকাশে বৃদ্ধি ও বিকাশ-এই দুই প্রক্রিয়ার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পরিণমনের সংজ্ঞা:
পরিণমনের অর্থ শিশুর শারীরিক বিকাশ। ব্যক্তির জীবনবিকাশের পক্ষে, এটি একটি স্বাধীন ও সর্বজনীন প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মনোবিদ পরিনমনের যে সংখ্যা দিয়েছেন তার নিম্নরূপ:-
কোলেসনিক(Kolesnick): সহজাত সম্ভাবনা গুলির স্বাভাবিক বিকাশের ফলে ব্যক্তির গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তনকেই পরিনমন বলে। এককথায় সহজাত সম্ভাবনাগুলির বাস্তবায়নই হলো পরিনমন।
ম্যাকগিয়ক(McGeoch): বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনুশীলন অভিজ্ঞতার পরিবর্তনে প্রধানত জৈবিক কারণে আচরণের পরিবর্তনকেই পরিণমন বলে।
পরিণমনের বৈশিষ্ট্য:
সংজ্ঞা ও প্রকৃতি আলোচনা করে পরিণমনের যে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য করি লক্ষ্য করা যায় এখানে তা আলোচনা করা হলো-
1. বিকাশের প্রক্রিয়া: পরিনমন হল বিকাশের একটি প্রক্রিয়া। যেমন, পরিনমনের ফলে হৃৎপিণ্ড, পাকস্থলীর আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং এর কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটে, হাত-পায়ের পেশী সফল হয় এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি।
2. স্বাভাবিক প্রক্রিয়া: পরিনমন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অসুস্থতা পরিণমনে বাধার সৃষ্টি করে। যেমন, পোলিও রোগাক্রান্ত শিশুরা স্বাভাবিক পরিণমনের অভাবে ঠিকমতো হাঁটতে পারে না।
3. অনুশীলন নির্ভর নয়: ওই নমনের জন্য কোন অনুশীলনের প্রয়োজন হয় না। শিখন ও পরিনমনের মূল পার্থক্য এখানেই। বলা যায়, শিখন অনুশীলনসাপেক্ষ, পরিনমন অনুশীলননিরপেক্ষ।