---Advertisement---

Concept of Socialization || সামাজিকীকরণের ধারণা

By Siksakul

Published on:

Concept of Socialization
---Advertisement---

Concept of Socialization || সামাজিকীকরণের ধারণা : মানব জীবনের অঙ্গীভূত একটি প্রক্রিয়া হল সামাজিকীকরণ, যা ব্যক্তিকে সমাজের সদস্য হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এটি শুধু ব্যক্তিগত আচরণ ও মানসিকতা গঠনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সামাজিক নৈতিকতা, মূল্যবোধ, ও সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মাধ্যমও বটে। সামাজিকীকরণের মাধ্যমে মানুষ শিখে কিভাবে সমাজে সহাবস্থান করতে হয়, সামাজিক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়, এবং কিভাবে নিজেদের আদর্শ ও মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্য রেখে জীবনযাপন করতে হয়।

এই ব্লগে আমরা সামাজিকীকরণের মূল ধারণা, এর প্রক্রিয়া, এবং এর বিভিন্ন পর্যায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। পাশাপাশি, আমরা কিভাবে এটি ব্যক্তির চরিত্র ও আচরণ গঠনে প্রভাব ফেলে, তার বিশদ বিশ্লেষণ করব। আপনারা যারা সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, বা শিক্ষা ক্ষেত্রে আগ্রহী, তাদের জন্য এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় হতে পারে। আসুন, সামাজিকীকরণের জগতে এক সাথে পদার্পণ করি এবং এর গভীরে ঢুকে বুঝি এর প্রকৃত গুরুত্ব ও প্রভাব।

Concept of Socialization || সামাজিকীকরণের ধারণা


সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া (Socialization Process)

সামাজিকীকরণের সংজ্ঞা: Definition of Socialization

সামাজিকীকরণ হলো ব্যক্তির একটি সামাজিক শিখন প্রণালী। যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি কিছু বিশ্বাস ও সামাজিক আদর্শ শিক্ষা লাভ করে এবং তার পরিবার ও সংস্কৃতির উপযোগী আচরণ অর্জন করে, তাকে সামাজিকীকরণ বলে।

প্রকৃত অর্থের যখন মা তার সন্তানকে আদর করে, তখন থেকেই সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং এই প্রক্রিয়া ব্যক্তির পরিবারের অন্যান্য সদস্য, খেলার সাথী, বন্ধুবান্ধব, শিক্ষক-শিক্ষিকা, সিনেমা, দূরদর্শন ইত্যাদির মাধ্যমে দ্বারা আরও সমৃদ্ধ হয়।

শিশুর বা ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রধানত শিখনের কয়েকটি মৌলিক ক্রিয়ার মাধ্যমে সংঘটিত হয়ে থাকে। যেসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সামাজিকীকরণ ঘটে, সেগুলি হল-
1. যান্ত্রিক অনুবর্তন বা সক্রিয় অনুবর্তন: যান্ত্রিক শিখনের মূল উদ্দেশ্য হলো শিশুর আচরণের পরিবর্তনের জন্য বলবর্ধক প্রয়োগ করা। বলবর্ধক দু ধরনের হতে পারে। যথা-ইতিবাচক বলবর্ধক এবং নেতিবাচক বলবর্ধক। শিশুকে আদর (ইতিবাচক বলবর্ধক) করলে তার আচরণের পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা দেখা যায়। পুরস্কার পাওয়ার আশায় বহু শিক্ষার্থী ভালো আচরণ করে। মোটকথা ইতিবাচক বলবর্ধকের মাধ্যমে শিশুকে বহু সামাজিক আচরণ শেখানো যায়।

2. ভূমিকা শিখুন (Role Learning): সমাজে বসবাস করতে গিয়ে ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়। অর্থাৎ বিভিন্ন ভূমিকায় অংশগ্রহণ করতে হয়। বিভিন্ন ভূমিকায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে ব্যক্তি সহজে বিভিন্ন ধরনের আচরণ করতে শেখে। এর মধ্য দিয়েই ব্যক্তির সামাজিকীকরণ ঘটে।

3. পর্যবেক্ষণ মূলক শিখন (Observational Learning): শিশুরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অন্যকে যে সমস্ত আচরণ করতে শেখে সেগুলির পরবর্তীকালে অনুকরণ হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় কোন শ্রেণীর একটি মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রী বাড়ির কাজ করতে উৎসাহ দেখালে, অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা ওই কাজ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে, পর্যবেক্ষণ শিক্ষার্থীর সামাজিকীকরণের সহায়ক হয়।

4. একাত্মীভবন(Identification): একাত্মীভবন এমন একটি শিখন প্রণালী যার সাহায্যে শিশু বা ব্যক্তি অন্যান্য ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলী কে নিজের বৈশিষ্ট্য বলে মনে করে। একাত্মীভবন এবং অনুকরণ অনেক সময় একই বলে মনে হলেও এদুটি এক নয়। অনুকরণে অন্যের আচরণকে অস্থায়ীভাবে গ্রহণ করা হয়। অন্যদিকে একাত্মীভবনে আচরণ কে স্থায়ীভাবে ও গভীরভাবে গ্রহণ করা হয়। বহু শিশুই মাতা পিতার সঙ্গে নিজেকে একাত্মঘোষণা করে।

5. প্রত্যক্ষ শিক্ষাদান (Direct Tuition): অনেক ক্ষেত্রে শিশুর সামাজিকীকরণের জন্য তাদের প্রত্যক্ষভাবে শিক্ষাদান করা হয়। শিশুর করণীয় বিষয়গুলির সম্পর্কে তাকে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই নির্দেশ মত কাজ করলে তাকে পুরস্কৃত করা হয় আবার কাজ না করলে বকাবকি করা হয়। এই ধরনের প্রত্যক্ষ শিক্ষাদান শিশুর সামাজিক আচরণ শিখনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সামাজিকীকরণের মাধ্যম (Agents of Socialization):

শিশুর সামাজিকীকরণে যে মাধ্যমগুলি বিশেষভাবে সহায়ক হয়, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- 1) শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিবেশ, 2) পিতা-মাতা ও গৃহ পরিবেশ, 3) খেলার সাথী ও সহপাঠী।

সামাজিকীকরণের বিভিন্ন মাধ্যমের ভূমিকা-

1. শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিবেশ:- সমাজে বসবাসকারী মানুষকে সমাজের রীতিনীতি ও নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিবেশ শিশুকে তথা শিক্ষার্থীকে ওইসব সামাজিক রীতিনীতি, আচার-আচরণ, বিভিন্ন ধরনের প্রচলিত প্রথা ও মূল্যবোধ সম্পর্কে অবহিত করে।

2. পিতা-মাতা ও গৃহ পরিবেশ: শিশুর সামাজিকীকরণের হাতে খড়ি হয় পরিবারে তথা গৃহ পরিবেশে। সমাজের একটি ক্ষুদ্রতম প্রতিষ্ঠান হল পরিবার। শিশু পরিবারের মধ্যে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে এবং গৃহে পিতা-মাতা ও পরিবেশ পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ায় অংশ নেয়, মায়ের কোলে বসে শিশু বুঝতে শুরু করে পরিবারের বিভিন্ন সদস্য ও সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের মধ্য থেকেই তার সামাজিকীকরণ হতে থাকে।

3. খেলার সাথী ও সহপাঠী: শিশুর খেলার সাথীরা এবং সহপাঠীরা সাধারণত শিশুর সমবয়সী হয়ে থাকে। এই কারণে একজন শিশু অন্যজনের সঙ্গে একই প্রকার আগ্রহ দেখায়। স্বাভাবিক পরিবেশে শিশুরা যখন পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে শেখে, তখন তাদের মধ্যে কতগুলি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়। যেমন-সহযোগিতার মনোভাব, সামাজিক দায়িত্ববোধ, মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতনতা ইত্যাদি।

সামাজিকীকরণের প্রকারভেদ:

সামাজিকীকরণ চার প্রকার। যথা:-
1. মুখ্য সামাজিকীকরণ,
2. প্রত্যাশিত সামাজিকীকরণ,
3. উন্নয়নমূলক সামাজিকীকরণ,
4. পুনঃ সামাজিকীকরণ

1. মুখ্য সামাজিকীকরণ: সাধারণত বাচ্চারা যা শেখে তাই মুখ্য সামাজিকীকরণ। এই ধরনের সামাজিকীকরণ তখন ঘটে, যখন একটি শিশু ওই নিয়ম, মূল্যবোধ, আচার-আচরণ শিখে, যেগুলি একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতির সাথে মানানসই জীবন যাপনের জন্য প্রদর্শন করা উচিত। একটি শিশুর ৭-৮ বছরের মধ্যেই সমন্বয় পূর্ণভাবে শারীরিক ও মানসিক উন্নয়নের জন্য এটি প্রয়োজন। এ সময় শিশু যা দেখবে সেটাই শিখবে। উদাহরণস্বরূপ: শিশু যদি তার বাবাকে একজন বয়স্ক লোকের সাথে খারাপ আচরণ করতে দেখে তাহলে সে সেভাবেই খারাপ আচরণ শিখবে এবং সেও বয়স্ক লোকেদের সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করবে।

মুখের সামাজিকীকরণ এর কয়েকটি উদাহরণ: বাচ্চা যা পরিবার থেকে শিখে তাই মুখ্য সামাজিকীকরণ- সুন্দর ব্যবহার, কান্না, হাঁসা, যোগাযোগ, ভালোবাসা, দুঃখ।

2. প্রত্যাশিত বা আগাম সামাজিকীকরণ: এ ধরনের সামাজিকীকরণ সেই প্রক্রিয়াকে বুঝায় যেখানে একজন ব্যক্তি ভবিষ্যতের সামাজিক সম্পর্কের জন্য অনুশীলন করেন। কেউ যখন নতুন একটি দল বা গোষ্ঠীতে প্রবেশ করতে চায় তখন তাকে নিজেকে ওই দল বা সমাজের মতো পরিবর্তন করতে হয়। এটি হলো প্রত্যাশিত বা আগাম সামাজিকীকরণ। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়: একটি শিশু পিতৃত্বের প্রত্যাশা করে যখন সে তার বাবা মাকে তাদের দৈনন্দিন জীবনে ভূমিকা পালন করতে দেখে। যারা বিশ্ববিদ্যালয় আইন নিয়ে পড়াশোনা করে তারা শিখছে কিভাবে আইনজীবীদের মতো আচরণ করতে হয়। অর্থাৎ একটি শিশুর পিতা হওয়ার প্রত্যাশা, আইনজীবী হওয়ার অনুশীলন, ডাক্তার হওয়ার অনুশীলন, গাড়ি চালানোর অনুশীলন, কম্পিউটার চালানোর অনুশীলন ইত্যাদি হলো প্রত্যাশিত সামাজিকীকরণ।

3. উন্নয়নমূলক সামাজিকীকরণ: এই সামাজিকীকরণ একটি শেখার প্রক্রিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে যেখানে সামাজিক দক্ষতা বিকাশের দিকে মনোনিবেশ করা হয়।। উদাহরণস্বরূপ: একজন লাজুক ছাত্রকে মৌখিক যোগাযোগ বিকাশের জন্য নতুন নতুন শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শেখাতে শুরু করে।

4. পুনঃ সামাজিকীকরণ: এ ধরনের সামাজিকীকরণে পূর্ববর্তী আচরণের ধরন গুলি প্রত্যাখ্যান করা এবং নতুন আচরণ, উপাস গ্রহণ করা যাতে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার জীবনের এক অংশ থেকে অন্য অংশে স্থানান্তরিত হতে পারে। এর প্রথম পর্যায়ে হলো একজন ব্যক্তির পূর্বের বিশ্বাস এবং আস্থা ধ্বংস করা। উদাহরণ: বিবাহ, কলেজে ভর্তি, সন্ন্যাস গ্রহণ, সৈনিক যোগদান, বন্দী হওয়া, বেকারত্ব, বিধবা হওয়া।


আরো পড়ুন: প্রাইমারি টেট বাংলা প্র্যাকটিস সেট

সামাজিকীকরণ কাকে বলে ?, সামাজিকীকরণের মাধ্যমগুলি উল্লেখ করো।

সামাজিকীকরণঃ

মানুষ হল সামাজিক জীব। সংস্কৃতির মাধ্যমে ব্যক্তির মানবিক বৈশিষ্ট্য সমূহের উন্মেষ ও বিকাশ ঘটে। ব্যক্তিত্ব বিকাশের এই বিষয়টি একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া। প্রত্যেক সমাজেই সদ্যজাত শিশুকে ধীরে ধীরে বেশ কিছু প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তার ব্যক্তিত্ব বিকাশের চেষ্টা করা হয় এবং তাকে সমাজের উপযোগী বা সামাজিক করে তোলা হয়; এই সামাজিক প্রশিক্ষণই হল সামাজিকীকরণ।

মানুষের অধিকাংশ আচার-ব্যবহারই অর্জিত, সহজাত নয়। শিশু যখন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে তখন সে শুধুমাত্র কয়েকটি জৈবিক চাহিদা সম্পন্ন প্রাণী হিসাবেই থাকে। সে প্রধানত ক্ষুধা, তৃষ্ণা, কষ্ট প্রভৃতি ইন্দ্রিয়ানুভূতির দ্বারাই তাড়িত হয়। জন্মাবার পর থেকে তাকে প্রচলিত রীতিনীতি ও মূল্যবোধ শেখানো হয়। সে ভাষা শেখে এবং এই ভাষার মাধ্যমেই সে নিজের সামাজিক ঐতিহ্য আস্বত্ব করে। যে পদ্ধতিতে একজন শিশুর সামাজিক বৈশিষ্ট্যগুলি উন্মোচিত ও বিকোশিত হয় এবং তার ব্যক্তিত্ব সুগঠিত হয়, সেই প্রক্রিয়াকে বলা হয় সামাজিকীকরণ।

কিংসলে ডেভিস এর মতে, মানব শিশুর ক্রমশ সামাজিক জীবে পরিণত হওয়ার পদ্ধতি হল সামাজিকীকরণ।

পিটার ওসলে এর মতে, সামাজিকীকরণ হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সংস্কৃতি প্রবাহিত হয়। তাছাড়া এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি গোষ্ঠীর রীতিনীতি ও আচার-ব্যবহার শেখে।

সামাজিকীকরণের মাধ্যমঃ

বিভিন্ন রকমভাবে মানুষের সামাজিকীকরণ ঘটে থাকে, সেগুলি নীচে আলোচনা করা হল –

পরিবারঃ

শিশুর জন্ম পরিবারের মধ্যেই হয় এবং এর মধ্যেই সে লালিত ও পালিত হয়। পরিবারের মধ্যে সে ভাষা, কথা, প্রেমপ্রীতি, ভালোবাসা প্রভৃতি আয়ত্ত করে। ধীরে ধীরে তার মধ্যে সামাজিক চেতনার প্রকাশ ঘটে। পরিবারের বাবা-মার তত্যাবধানে শিশু তার গোষ্ঠীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদান অর্জন করে থাকে। সুস্থ পরিবারের মধ্যেই শিশু তার সুঅভ্যাস আয়ত্ত করে। নিয়মশৃঙ্খলা, আনুগত্য, শালিনতাবোধ প্রভৃতি সম্পর্কে মানুষ প্রাথমিক জ্ঞান আহরণ করে।

চার্লস হর্টন কুলির মতে, প্রাথমিক গোষ্ঠী বিশেষত পরিবারের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুর ধারণা জন্মায়।

শিক্ষাঃ

সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিদ্যালয়ে ব্যক্তি ব্যবহারিক ও বিধিবদ্ধ জ্ঞান লাভের পাশাপাশি নিয়মানুবর্তিতা, আদর্শবোধ আয়ত্ত করে এবং পরবর্তী জীবনে নিজেকে সামাজিক হিসাবে পরিণত করে। পরিবারের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি দ্বিতীয় কর্তৃত্বমূলক সংগঠন যা সামাজিকীকরণে দ্বিতীয় কর্তৃত্বমূলক মাধ্যম বলে বিবেচিত হয়।

বন্ধু-বান্ধবঃ

শিশু যখন একটু বড় হয় তখন সে কোনো না কোনো খেলার সঙ্গী বা সমবয়স্ক বন্ধুগোষ্ঠীতে প্রবেশ করে। এদের সঙ্গে শিশুর মনের মিল তৈরি হয়। এই গোষ্ঠীর কাছ থেকে শিশু সহযোগিতা, ভালোবাসা প্রভৃতি অর্জন করার পাশাপাশি অনেক বিষয় জ্ঞান লাভ করে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই জাতীয় বন্ধু-সংস্কৃতি পরিবারের পিতামাতার সংস্কৃতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

গণমাধ্যমঃ

শিক্ষিত সমাজে ব্যক্তি সামাজিকীকরণের অন্যতম বিষয় হল গণমাধ্যম ও সাহিত্য। বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তির চিন্তা ভাবনাকে প্রভাবিত এবং সুগঠিত করে তোলে। ব্যক্তির অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, মূল্যবোধ, ভাবাদর্শ প্রভৃতি এই গণমাধ্যমের মধ্য দিয়েই তৈরি হয়। বর্তমান যুগে সাহিত্যের পাশাপাশি সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন প্রভৃতিও সামাজিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলির মধ্য দিয়ে ব্যক্তি যে শুধুমাত্র পারিপার্শ্বিক বিষয় সম্পর্কে অবগত হয় তা নয় এগুলির দ্বারা ব্যক্তির কাছে বিভিন্ন প্রকার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানঃ

জন্মলাভের পর থেকে মানুষের সমগ্র জীবনধারা জুড়ে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের প্রভাব প্রতিক্রিয়া প্রবলভাবে দেখা যায়। ধর্মের অন্তর্গত বিভিন্ন আদর্শ, বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা, উপদেশ, অনুশাসন প্রভৃতি ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে বিকোশিত করে। ধর্মের অন্তর্গত পাপ-পুন্যের বিষয়টি ব্যক্তিকে অসামাজিক কাজকর্ম থেকে বিরত রাখে।

রাষ্ট্রঃ

আধুনিককালে রাষ্ট্র তার সরকারের আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগের দ্বারা একদিকে যেমন সমাজের ব্যক্তিদের আচার-আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনি অপরদিকে সমাজের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ব্যক্তিকে সামাজিক করে তোলার চেষ্টা করে।


FAQ:

1. সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া কখন থেকে শুরু হয়?

:- সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া জন্মের পর থেকে শুরু হয় এবং তা জীবনব্যাপী চলতে থাকে। শিশুর এ প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ায় প্রথমে তার বাবা-মা, পরিবারের সদস্যরা, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন এবং পরবর্তীতে তার শিক্ষক, সহযোগী, চেনা অচেনা অনেকেই খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

2. সামাজিকীকরণের বৈশিষ্ট্য?

:- শিশুর সামাজিকীকরণ চারটি বৈশিষ্ট্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় যথা-
• অভিব্যক্তি
• সহজাত প্রবৃত্তি
• জেদ
• ক্ষমতা

3. সামাজিকীকরণের উপাদান কত প্রকার?

:- সামাজিকীকরণের উপাদান প্রধানত চার প্রকার। যথা:- অনুকরণ, অভিভাবন, অঙ্গীভূতকরণ, ভাষা।

---Advertisement---

Related Post

PSPCL Assistant Lineman Recruitment 2025: Apply Online for 2500 ALM Vacancies

PSPCL Assistant Lineman Recruitment 2025: Punjab State Power Corporation Limited (PSPCL) has officially released the Assistant Lineman (ALM) Recruitment 2025 notification for 2500 vacancies. Eligible and interested candidates ...

World Famous Statues List PDF 2025 l বিশ্বের বিখ্যাত স্ট্যাচু তালিকা PDF 2025

World Famous Statues List PDF 2025: বিভিন্ন সরকারি ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় (WBCS, SSC, UPSC, Railways, Banking, PSC) বিশ্বের বিখ্যাত স্ট্যাচু সম্পর্কিত প্রশ্ন প্রায়ই আসে। তাই পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করতে, ...

Environmental Studies SAQ l পরিবেশ বিদ্যা SAQ

আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি পরিবেশ বিদ্যা প্রশ্নোত্তর PDF, যেখানে পরিবেশ বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (SAQ) সংকলন করা হয়েছে। Primary TET, CTET, Upper Primary TET ...

West Bengal GK Questions And Answers l পশ্চিমবঙ্গ জিকে প্রশ্নোত্তর l পশ্চিমবঙ্গের জেনারেল নলেজ

West Bengal GK Questions And Answers: পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ জ্ঞান (West Bengal General Knowledge) বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় (WBCS, WBPSC, SSC, Railways, Police, Group-D) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পরীক্ষায় ...

Leave a Comment