১৬৭৪ সালে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মারাঠা সাম্রাজ্য ১৭শ এবং ১৮শ শতাব্দীতে ভারতে একটি প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সামরিক কৌশল, প্রশাসনিক উদ্ভাবন এবং গেরিলা যুদ্ধের জন্য বিখ্যাত এই সাম্রাজ্য চৌথ এবং সারদেশমুখীর মতো ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ (১৭৬১) এর শক্তিকে দুর্বল করে দেয়, যার ফলে ১৮১৮ সালে ব্রিটিশরা বিজয় লাভ করে। মারাঠা সাম্রাজ্যের উপর শীর্ষস্থানীয় জিকে প্রশ্ন এবং উত্তরগুলি এখানে দেওয়া হল, যা এসএসসি, ব্যাংকিং এবং অন্যান্য রাজ্য পরীক্ষার মতো বেশিরভাগ সরকারি পরীক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
১৬৭৪ সালে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মারাঠা সাম্রাজ্য ১৭শ এবং ১৮শ শতাব্দীতে ভারতে একটি শক্তিশালী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় । মহারাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে উৎপত্তি হওয়া এই সাম্রাজ্য শিবাজির নেতৃত্বে দ্রুত সম্প্রসারিত হয়, মুঘল আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করে। তাদের সামরিক দক্ষতা এবং প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য পরিচিত, মারাঠারা তাদের ক্ষমতা সুসংহত করার জন্য ‘চৌথ’ এবং ‘সরদেশমুখী’-এর মতো উদ্ভাবনী কর ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে। ১৭৬১ সালে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের পর সাম্রাজ্যের প্রভাব হ্রাস পায় এবং অবশেষে ১৮১৮ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে, যা ভারতীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ যুগের সমাপ্তি ঘটায় ।
মারাঠা সাম্রাজ্য সম্পর্কে শীর্ষস্থানীয় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQ) নীচে দেওয়া হল, প্রতিটির সাথে তার উত্তর এবং একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হল:
১. মারাঠা সাম্রাজ্য কে প্রতিষ্ঠা করেন?
a) বাজিরাও I b) শিবাজী c) সম্ভাজি d) শাহু
উত্তর: খ) শিবাজি
ব্যাখ্যা: শিবাজি ১৭ শতকে বিভিন্ন আঞ্চলিক সর্দারদের একত্রিত করে এবং একটি শক্তিশালী প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে মারাঠা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
২. শিবাজির রাজ্যের রাজধানী কোথায় ছিল?
a) পুনে খ) রায়গড় গ) সাতারা ঘ) কোলহাপুর
উত্তর: খ) রায়গড়
ব্যাখ্যা: রায়গড় দুর্গ নির্মাণের পর শিবাজি রাজধানী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। এটি মারাঠা সাম্রাজ্যের একটি কৌশলগত ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছিল।
৩. ১৬৬৫ সালে শিবাজি ও মুঘলদের মধ্যে কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল?
ক) পুরন্দরের চুক্তি খ) সালবাইয়ের চুক্তি গ) বাসেইন চুক্তি ঘ) দেবগাঁওয়ের চুক্তি
উত্তর: ক) পুরন্দরের চুক্তি
ব্যাখ্যা: ১৬৬৫ সালের পুরন্দরের চুক্তি ছিল শিবাজি এবং মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রতিনিধিত্বকারী জয় সিং প্রথমের মধ্যে একটি চুক্তি। চুক্তির অংশ হিসেবে, শিবাজি ২৩টি দুর্গ মুঘলদের কাছে সমর্পণ করতে সম্মত হন।
৪. ১৬৭৪ সালে রাজ্যাভিষেকের পর শিবাজী কী উপাধি গ্রহণ করেছিলেন?
a) ছত্রপতি খ) মহারাধিরাজ গ) পেশোয়া ঘ) রাজা
উত্তর: ক) ছত্রপতি
ব্যাখ্যা: ১৬৭৪ সালে, রায়গড়ে তাঁর রাজ্যাভিষেকের সময়, শিবাজি “ছত্রপতি” উপাধি ধারণ করেছিলেন, যা মারাঠা সাম্রাজ্যের উপর তাঁর স্বাধীন শাসন এবং সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে।
৫. অষ্টপ্রধান ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন:
a) বালাজী বিশ্বনাথ b) শিবাজী c) সম্ভাজি d) রাজারাম
উত্তর: খ) শিবাজি
ব্যাখ্যা: অষ্টপ্রধান ছিল আট সদস্যের একটি পরিষদ যা শিবাজীকে প্রশাসনে সহায়তা করত, যার মধ্যে পেশোয়া (প্রধানমন্ত্রী) এবং সেনাপতি (সেনাপতি) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা ছিলেন।
৬. মারাঠা সাম্রাজ্যের মধ্যে কোন ব্যক্তি পেশোয়ার প্রাথমিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন?
ক) বাজি রাও প্রথম খ) মাধব রাও প্রথম গ) বালাজি বিশ্বনাথ ঘ) নানা ফড়নবিস
উত্তর: গ) বালাজি বিশ্বনাথ
ব্যাখ্যা: বালাজি বিশ্বনাথ ছিলেন ছত্রপতি শাহু কর্তৃক নিযুক্ত প্রথম পেশোয়া। তিনি মারাঠা প্রশাসনে পেশোয়া শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
৭. মারাঠা প্রশাসনে ‘চৌথ’ শব্দটি কী বোঝায়?
ক) সামরিক পদমর্যাদা
খ) ভূমি রাজস্ব কর
গ) একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান
ঘ) এক ধরণের দুর্গ
উত্তর: খ) ভূমি রাজস্ব কর
ব্যাখ্যা: ‘চৌথ’ ছিল নামমাত্র মুঘল শাসনের অধীনে জমির উপর ২৫% কর আরোপ করা হত, যা মারাঠাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব উৎস হিসেবে কাজ করত।
৮. মুঘলদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের কৌশলের জন্য বিখ্যাত মারাঠা নেতা কে ছিলেন?
ক) সম্ভাজি
খ) বাজি রাও প্রথম
গ) শিবাজি মহারাজ
ঘ) মহাদাজি শিন্ডে
উত্তর: গ) শিবাজি মহারাজ
৯. ১৮ শতকে কোন পেশোয়া মারাঠা সাম্রাজ্যকে তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন?
ক) বালাজি বিশ্বনাথ
খ) বাজি রাও প্রথম
গ) মাধবরাও প্রথম
ঘ) রঘুনাথ রাও
উত্তর: খ) বাজি রাও প্রথম
ব্যাখ্যা: পেশোয়া বাজি রাও প্রথম ১৭২০ থেকে ১৭৪০ সালের মধ্যে মারাঠা সাম্রাজ্যের উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ করেছিলেন।
১০. কোন মারাঠা শাসক বাসেইন চুক্তিতে (১৮০২) স্বাক্ষর করেছিলেন?
ক) বাজিরাও দ্বিতীয় খ) শাহু গ) মাধব রাও দ্বিতীয় ঘ) রঘুজি ভোঁসলে
উত্তর: ক) দ্বিতীয় বাজিরাও
ব্যাখ্যা: বাজিরাও দ্বিতীয় এবং ব্রিটিশদের মধ্যে বাসেইন চুক্তি (১৮০২) স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার ফলে দ্বিতীয় অ্যাংলো-মারাঠা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ।