Madhyamik History Chapter 2 Questions – Sanskar Boisisto o Porjalochona: মাধ্যমিক ২০২৬ পরীক্ষার্থীদের জন্য ইতিহাস একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” (Madhyamik History Chapter 2: Sanskar Boisisto o Porjalochona) থেকে প্রায় প্রতি বছরই নানান ধরনের প্রশ্ন আসে – যেমন MCQ, SAQ, LAQ। তাই এই অধ্যায় ভালোভাবে অনুশীলন করা অত্যন্ত জরুরি।
এই ব্লগে আমরা তুলে ধরেছি মাধ্যমিক ইতিহাস ২০২৬-এর জন্য এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর, সংস্কার ও রেনেসাঁ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত এবং বহু নির্বাচনী প্রশ্ন, এবং অধ্যায়ভিত্তিক সাজেশন। Madhyamik History Chapter 2 questions, Madhyamik 2026 History SAQ, ইতিহাস MCQ প্রশ্ন মাধ্যমিক ইত্যাদি কিওয়ার্ড অনুসরণ করে আমরা প্রস্তুত করেছি পরীক্ষায় সহায়ক একটি সম্পূর্ণ গাইড।
✅ যারা Madhyamik History Bengali Notes খুঁজছেন বা মাধ্যমিক ইতিহাস প্রস্তুতিতে চূড়ান্ত গাইড চান, তাদের জন্য এই পোস্টটি হবে অমূল্য।
👉 চলুন জেনে নিই মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর এবং প্রস্তুত হই ২০২৬ সালের পরীক্ষার জন্য।
মাধ্যমিক ইতিহাস MCQ দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর l সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা l Madhyamik History Chapter 2 Questions – Sanskar Boisisto o Porjalochona
- ভারতের প্রথম সংবাদপত্র হল –
(A) বেঙ্গল গেজেট
(B) সমাচার দর্পণ
(C) হিন্দু প্যাট্রিয়ট
(D) বামাবোধিনী
Ans: (A) বেঙ্গল গেজেট
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘ বঙ্গদর্শন ‘ পত্রিকাটি ছিল –
(A) সাপ্তাহিক পত্রিকা
(B) মাসিক পত্রিকা
(C) পাক্ষিক পত্রিকা
(D) পাক্ষিক পত্রিকা
Ans: (B) মাসিক পত্রিকা
- ভারতের প্রথম জাতীয় পত্রিকাটি হল –
(A) সমাচার দর্পণ
(B) হিন্দু প্যাট্রিয়ট
(C) সোমপ্রকাশ
(D) বেঙ্গল গেজেট
Ans: (B) হিন্দু প্যাট্রিয়ট
- ভারতের প্রথম বাঙালি সংবাদপত্র প্রকাশক ছিলেন –
(A) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(B) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য
(C) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(D) অক্ষয়কুমার দত্ত
Ans: (B) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য
- ‘ সোমপ্রকাশ ‘ নামক সংবাদপত্র প্রথম প্রকাশিত হয় –
(A) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ সোমপ্রকাশ ‘ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন –
(A) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
(B) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) রাধাকান্ত দেব
Ans: (A) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
- হিকির বেঙ্গল গেজেট প্রকাশিত হয়—
(A) ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে
- প্রথম বাংলা সাময়িক পত্রিকার নাম হল –
(A) বেঙ্গল গেজেট
(B) দিগদর্শন
(C) সম্বাদ কৌমুদী
(D) প্রভাকর
Ans: (B) দিগদর্শন
- ‘ দিগদর্শন ‘ প্রকাশ করেন –
(A) তারাচাঁদ দত্ত
(B) কালিপ্রসাদ ঘোষ
(C) ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
(D) জে মার্শম্যান
Ans: (D) জে মার্শম্যান
- ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা ‘ প্রকাশিত হয় –
(A) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে
- বামাবোধিনী পত্রিকা’র সম্পাদক ছিলেন –
(A) উমেশচন্দ্র দত্ত
(B) কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
(C) শিশির কুমার ঘোষ
(D) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
Ans: (A) উমেশচন্দ্র দত্ত
- ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা ‘ ছিল –
(A) দৈনিক পত ্রিকা
(B) মাসিক পত্রিকা
(C) সাপ্তাহিক পত্রিকা
(D) ত্রৈমাসিক পত্রিকা
Ans: (B) মাসিক পত্রিকা
- নীলদর্পণ নাটককে ‘ আঙ্কল টমস কেবিন ‘ – এর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন—
(A) নবগোপাল মিত্র
(B) শিশির কুমার ঘোষ
(C) দীনবন্ধু মিত্র
(D) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
Ans: (D) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
- নীলদর্পণ নাটকের প্রথম অভিনয় হয় –
(A) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’র মোট যে ক’ভাগ প্রকাশিত হয়েছিল ।
(A) ১৭ ভাগ
(B) ১৯ ভাগ
(C) ৫০ ভাগ
(D) ৭১ ভাগ
Ans: (B) ১৯ ভাগ
- ‘ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন –
(A) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(B) হরিনাথ মজুমদার
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসূদন দত্ত
Ans: (B) হরিনাথ মজুমদার
- ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’র সম্পাদক ছিলেন –
(A) দীনবন্ধু মিত্র
(B) মধুসূদন দত্ত
(C) হরিশচন্দ্র মুখার্জি
(D) এদের কেউ নন
Ans: (D) এদের কেউ নন
- এশিয়াটিক সোসাইটি যে বছর প্রতিষ্ঠিত হয় –
(A) ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ জেনারেল কমিটি অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন ‘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অথবা , সাধারণ জনশিক্ষা কমিটি গঠিত হয় –
(A) ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (D) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
- কলকাতা সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়—
(A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে
আরোও দেখুন: আফ্রিকা কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর
- হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় –
(A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
- হিন্দু কলেজ বর্তমান যে নামে পরিচিত –
(A) সেন্ট জেভিয়ার্স
(B) স্কটিশচার্চ কলেজ
(C) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
(D) প্রেসিডেন্সি কলেজ
Ans: (C) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
- ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার নীতি গৃহীত হয় –
(A) ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
Ans: A) ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে
- পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন –
(A) রামমোহন রায়
(B) জেমস প্রিন্সেপ
(C) লর্ড মেকলে
(D) লর্ড বেন্টিঙ্ক
Ans: (A) রামমোহন রায়
- ‘ উডের ডেসপ্যাচ ‘ প্রকাশিত হয় –
(A) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
Ans: A) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কলকাতার যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ছিলেন , সেটি হল –
(A) কলকাতা মাদ্রাসা
(B) সংস্কৃত কলেজ
(C) হুগলি কলেজ
(D) হিন্দু কলেজ
Ans: (B) সংস্কৃত কলেজ
- জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন বর্তমানে যে নামে পরিচিত –
(A) প্রেসিডেন্সি কলেজ
(B) স্কটিশ চার্চ কলেজ
(C) সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ
(D) বিদ্যাসাগর কলেজ
Ans: (B) স্কটিশ চার্চ কলেজ
- ‘ ক্যালকাটা ফিমেল স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয় –
(A) ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে
- ক্যালকাটা ফিমেল স্কুল যখন থেকে বেথুন স্কুল নামে পরিচিত হয় –
(A) ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে
- বেথুন স্কুল বেথুন কলেজে উন্নীত হয়—
(A) ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (D) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
- ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি’ র প্রথম সম্পাদক ছিলেন—
(A) রাজা রামমোহন রায়
(B) রাজা রাধাকান্ত দেব
(C) উইলিয়াম কেরি
(D) এঁদের কেউ নন
Ans: B) রাজা রাধাকান্ত দেব
- ‘ ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠা করেন—
(A) ডেভিড হেয়ার
(B) রাধাকান্ত দেব
(C) ড্রিংক ওয়াটার বেথুন
(D) রামমোহন রায়
Ans: (A) ডেভিড হেয়ার
- স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়—
(A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে
Ans: A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক ‘ ( ১৮২২ খ্রি . ) গ্রন্থ রচনা করেন –
(A) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(B) রাধাকান্ত দেব
(C) গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কার
(D) রামমোহন রায়
Ans: (C) গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কার
- ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে বেমানান নামটি –
(A) রাজা রামমোহন রায়
(B) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(C) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(D) ড্রিংক ওয়াটার বিটন ( বেথুন )
Ans: (B) কালীপ্রসন্ন সিংহ
- ভারতে শিক্ষাক্ষেত্রে ‘ চুঁইয়ে পড়া ‘ নীতির প্রবর্তন করেন—
(A) চার্লস উড
(B) লর্ড আমহার্স্ট
(C) হোরেস উইলসন
(D) মেকেলে
Ans: D) মেকেলে
- সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় –
(A) ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: C) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
- কেশবচন্দ্র সেনকে ব্রহ্মানন্দ উপাধি দেন –
(A) রামমোহন রায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) শিবনাথ শাস্ত্রী
(D) রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ
Ans: (B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ‘ নব্যবঙ্গ ‘ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন –
(A) ডিরোজিও
(B) ডেভিড হেয়ার
(C) ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
(D) রামমোহন রায়
Ans: (C) ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
- ‘ নব্যবঙ্গ’ র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন –
(A) রামমোহন রায়
(B) ডিরোজিও
(C) স্বামী বিবেকানন্দ
(D) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
Ans: (B) ডিরোজিও
- ‘ স্বদেশের প্রতি ‘ ( To India My Native Land ) কবিতাটির রচয়িতা হলেন—
(A) রসিকৃষ্ণ মল্লিক
(B) ডিরোজিও
(C) প্যারীচাঁদ মিত্র
(D) দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়
Ans: (B) ডিরোজিও
- হিন্দু কলেজে ডিরোজিও অধ্যাপকরূপে যোগ দেন –
(A) ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে
- নব্যবঙ্গ ‘ বলা হয় –
(A) ডিরোজিওর শিষ্যদের
(B) বিদ্যাসাগরের শিষ্যদের
(C) বিবেকানন্দের শিষ্যদের
(D) রাজা রামমোহন রায়ের শিষ্যদের
Ans: A) ডিরোজিওর শিষ্যদের
- নব্যবঙ্গ সম্প্রদায়ের ‘ অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন ‘ নামক বিতর্কসভা প্রতিষ্ঠিত হয়—
(A) ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ এনকোয়ারার ‘ নামক পত্রিকা প্রকাশ করেন –
(A) ডিরোজিও
(B) কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি
(C) রসিককৃষ্ণ মল্লিক
(D) তারাচাঁদ চক্রবর্তী
Ans: (B) কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি
- ‘ জ্ঞানান্বেষণ ‘ পত্রিকা প্রকাশ করেন –
(A) রসিককৃষ্ণ মল্লিক
(B) প্যারীচাঁদ মিত্র
(C) রাধানাথ শিকদার
(D) মধুসুদন দত্ত
Ans: (A) রসিককৃষ্ণ মল্লিক
- বিধবাবিবাহ আন্দোলনে সাফল্য আনেন –
(A) রাজা রাজবল্লভ
(B) জলধর মল্লিক
(C) মতিলাল শীল
(D) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
Ans: (D) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
- বিধবাবিবাহ আইন পাস হয়—
(A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
- বিধবাবিবাহ আইন পাস করেন —
(A) লর্ড এলেনবরো
(B) লর্ড ডালহৌসি
(C) লর্ড ময়রা
(D) লর্ড ক্যানিং
Ans: (D) লর্ড ক্যানিং
- প্রথম বিধবাবিবাহ অনুষ্ঠিত হয় –
(A) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৬ ডিসেম্বর
(B) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর
(C) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ৬ ডিসেম্বর
(D) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর
Ans: (B) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর
- বিদ্যাসাগর বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করে যে পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখতেন –
(A) সুলভ সমাচার
(B) জ্ঞানান্বেষণ
(C) সর্বশুভকরী
(D) সমাচার দর্পণ
Ans: (C) সর্বশুভকরী
- ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্রটির নাম হল –
(A) বেঙ্গল গেজেট
(B) তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা
(C) সর্বশুভকরী
(D) সমাচার দর্পণ
Ans: (B) তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা
- তত্ত্ববোধিনী সভা প্রতিষ্ঠা করেন—
(A) রামমোহন রায়
(B) রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ
(C) অক্ষয়কুমার দত্ত
(D) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
Ans: (D) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
- তত্ত্ববোধিনী সভা প্রতিষ্ঠিত হয়—
(A) ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
Ans:
56.তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা প্রকাশিত হয় –
(A) ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ ব্রাহ্মধর্মের অনুষ্ঠান পদ্ধতি ‘ নামক গ্রন্থটি রচনা করেন—
(A) রামতনু লাহিড়ী
(B) বিজয়কৃয় গোস্বামী
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) আনন্দমোহন বসু
Ans: (C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় –
(A) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ ‘ প্রতিষ্ঠা করেন—
(A) শিবনাথ শাস্ত্রী
(B) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী
(C) কেশবচন্দ্র সেন
(D) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
Ans: (C) কেশবচন্দ্র সেন
- ব্রহ্মানন্দ নামে পরিচিত ছিলেন –
(A) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(B) কেশবচন্দ্র সেন
(C) রাধাকান্ত দেব
(D) শিবনাথ শাস্ত্রী
Ans: (B) কেশবচন্দ্র সেন
- বিজয়কৃয় গোস্বামী ব্রাহ্মধর্ম প্রচারকরূপে প্রথম ধর্মপ্রচার করেন –
(A) কুমিল্লায়
(B) ময়মনসিংহে
(C) বরিশালে
(D) বাগআঁচড়াতে
Ans: (D) বাগআঁচড়াতে
মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়: সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | Madhyamik History Chapter 2 Questions – Sanskar Boisisto o Porjalochona
- বাংলা ভাষার প্রথম সাময়িক পত্রিকা কোনটি ?
Ans: বাংলা ভাষার প্রথম সাময়িক পত্রিকা ‘ সমাচার দর্পণ ‘ ।
- ‘ বাঙ্গাল গেজেট ‘ কী জন্য বিখ্যাত ?
Ans: গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় এটি ছিল বাংলা ভাষায় বাঙালি পরিচালিত প্রথম সংবাদপত্র ।
- ‘ সংবাদ প্রভাকর ‘ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন ?
Ans: ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ‘ সংবাদ প্রভাকর ‘ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ।
- ‘ সমাচার চন্দ্রিকা ‘ কাদের মুখপত্র ছিল ?
Ans: ‘ সমাচার চন্দ্রিকা ’ রক্ষণশীল হিন্দুদের মুখপত্র ছিল ।
- ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা ‘ কবে প্রকাশিত হয় ?
Ans: ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা ‘ প্রকাশিত হয় ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ।
- ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা’র প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ?
Ans: বামাবোধিনী পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন উমেশচন্দ্ৰ দত্ত ।
- বামাবোধিনী সভা কে গঠন করেছিলেন ?
Ans: উমেশচন্দ্র দত্ত ( ১৮৬৩ খ্রি . ) বামাবোধিনী সভা গঠন করেন ।
- উনিশ শতকে নারীজাতির বন্দনা করেছিল এমন একটি পত্রিকার নাম লেখো ।
Ans: উনিশ শতকে ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা’য় নারীজাতির বন্দনা করা হয়েছিল ।
- ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ’ পত্রিকার একজন উল্লেখযোগ্য সম্পাদকের নাম লেখো ।
Ans: ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ’ পত্রিকার একজন সম্পাদক হলেন হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ।
- হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ? উত্তর ) হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ ।
- হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় কে ছিলেন ?
Ans: হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ।
- ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ পত্রিকা কবে প্রথম প্রকাশিত হয় ?
Ans: ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয় ।
- ‘ ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ পত্রিকার প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল ?
Ans: ভারতের প্রচলিত সামাজিক ও রাজনৈতিক ত্রুটিবিচ্যুতিগুলি জনসাধারণের কাছে তুলে ধরে জাতীয়তাবাদী ধারণা প্রচার করাই ছিল ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ পত্রিকার প্রধান উদ্দেশ্য ।
- ‘ হুতোম প্যাঁচার নক্শা ‘ কে রচনা করেছিলেন ?
Ans: ‘ হুতোম প্যাঁচার নক্শা’র রচয়িতা কালীপ্রসন্ন সিংহ ।
- ‘ হুতোম প্যাঁচার নক্শা ’ থেকে আমরা কলকাতার কোন্ নব্য সম্প্রদায়কে দেখতে পাই ?
Ans: ‘ হুতোম প্যাঁচার নক্শা ’ থেকে কলকাতার বাবু সম্প্রদায়কে DISKCOP দেখতে পাই ।
- ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকটির রচয়িতা কে ?
Ans: ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকের রচয়িতা দীনবন্ধু মিত্র ।
- দীনবন্ধু মিত্র কে ছিলেন ?
Ans: দীনবন্ধু মিত্র ছিলেন একজন নাট্যকার এবং তাঁর রচিত একটি বিখ্যাত নাটক হল ‘ নীলদর্পণ ‘ ।
- ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকটি কোন্ প্রেক্ষাপটে রচিত ?
Ans: ১৮৫৯-৬০ – এর নীল বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকটি রচিত ।
- ‘ ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি ‘ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: ‘ ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি ‘ ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- হেয়ার স্কুল কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
Ans: ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে হেয়ার স্কুল প্রতিষ্ঠা হয় ।
- একজন প্রাচ্যবাদীর নাম লেখো ।
Ans: একজন প্রাচ্যবাদী হলেন এইচ টি প্রিন্সেপ ।
- একজন পাশ্চাত্যবাদীর নাম লেখো ।
Ans: একজন পাশ্চাত্যবাদী হলেন আলেকজান্ডার ডাফ ।
- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কে প্রতিষ্ঠা করেন ।
Ans: ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা লর্ড ওয়েলেসলি ।
- জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন কে প্রতিষ্ঠা করেন ।
Ans: জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠা করেন আলেকজান্ডার ডাফ ।
- শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশন কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা হয় ?
Ans: শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশন ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা হয় ।
- জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশনের বর্তমান নাম কী ?
Ans: জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশনের বর্তমান নাম স্কটিশ চার্চ কলেজ ।
- শ্রীরামপুর ত্রয়ী কারা ছিলেন ?
Ans: শ্রীরামপুর এয়ী ছিলেন উইলিয়াম কেরি , মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ড ।
- শ্রীরামপুর কলেজ করে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: শ্রীরামপুর কলেজ ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- টমাস ব্যাবিংটন এডওয়ার্ড মেকলে কে ছিলেন ?
Ans: টমাস ব্যাবিংটন এডওয়ার্ড মেকলে ছিলেন বেন্টিঙ্কের আইন সচিব ও জেনারেল কমিটি অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশনের সভাপতি ।
- কে , কত খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেন ?
Ans: ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে , লর্ড হার্ডিঞ্জ ইংরেজি ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেন ।
- কীভাবে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে ?
Ans: মেকলে মিনিটের ( ১৮৩৫ খ্রি . ) দ্বারা প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে ।
- উডের প্রতিবেদন কী নামে পরিচিত ।
Ans: উডের প্রতিবেদন ‘ ম্যাগনা কার্টা ‘ নামে পরিচিত ।
- উডের প্রতিবেদনে কোথায় কোথায় তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: উডের প্রতিবেদনে কলকাতা , বোম্বে ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- ভারতবর্ষের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় কোনটি ?
Ans: ভারতবর্ষের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ।
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য কে ছিলেন ?
Ans: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য ছিলেন লর্ড ক্যানিং ।
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য কে ছিলেন ?
Ans: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন স্যার জেমস উইলিয়াম কোলভিল ।
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় করে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতক কারা ?
Ans: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং যদুনাথ বোস ।
- বাংলার প্রথম মহিলা স্নাতক কারা ?
Ans: বাংলার প্রথম মহিলা স্নাতক হলেন চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ।
- প্রথম শিক্ষা কমিশনের নাম কী ? L
Ans: প্রথম শিক্ষা কমিশনের নাম ‘ হান্টার কমিশন ‘ ।
- র্যালে কমিশনের দুজন ভারতীয় সদস্যের নাম লেখো ।
Ans: র্যালে কমিশনের দুজন ভারতীয় সদস্য হলেন গুরুদাস ব্যানার্জি ও সৈয়দ হোসেন বিলগ্রামী ।
- ‘ কলকাতা মাদ্রাসা ’ কে , কত খ্রিস্টাব্দে গড়ে তোলেন ?
Ans: ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মাদ্রাসা গড়ে তোলেন ।
- কলকাতা মেডিকেল কলেজ কার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের উদ্যোগে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল কে ছিলেন ?
Ans: কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল ছিলেন ডাক্তার এম . জে . ব্রামলে ।
- কলকাতা মেডিকেল কলেজ করে প্রতিষ্ঠিত হয় ।
Ans: কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ।
- কে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য কে জমি দান করেন ?
Ans: মতিলাল শীল কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেন ।
- মধুসুদন গুপ্ত বিখ্যাত কেন ?
Ans: মধুসুদন গুপ্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের একজন ভারতীয় শল্যবিদ ও চিকিৎসক ।
- মধুসূদন গুপ্ত কবে শব ব্যবচ্ছেদ করেন ?
Ans: মধুসুদন গুপ্ত প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন ১০ জানুয়ারি , ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে ।
মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়: সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | Madhyamik History Chapter 2 Questions – Sanskar Boisisto o Porjalochona
- উমেশচন্দ্র দত্ত বিখ্যাত কেন ?
Ans: উমেশচন্দ্র দত্ত বিখ্যাত ( ১৮৪০-১৯০৭ খ্রি . ) ছিলেন , কারণ প্রথমত , তিনি ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের বিশিষ্ট নেতা , শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক এবং কলকাতায় সিটি স্কুল ও কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ । দ্বিতীয়ত , তিনি সামাজিক কুসংস্কারের বিরোধিতার পাশাপাশি বাঙালি ‘ বামা ‘ অর্থাৎ , নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার সাধন এবং নারীর সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ‘ বামাবোধিনী ‘ ( ১৮৬৩ খ্রি . ) সভা প্রতিষ্ঠা করেন । তৃতীয়ত , তিনি ‘ বামাবোধিনী ‘ নামক একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করে নারী সমাজের অবস্থা , নারীশিক্ষা গ্রহণ ও তার তাৎপর্য , চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় যোগদান ও তার অভিজ্ঞতা , গৃহ – চিকিৎসাসহ গৃহ পরিচালনার খুঁটিনাটি দিক তুলে ধরেন ।
- স্ত্রীশিক্ষা বিস্তারে ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা’র ভূমিকা কী ছিল ?
Ans: স্ত্রীশিক্ষা বিস্তারে বামাবোধিনী পত্রিকার ভূমিকাগুলি হল প্রথমত , বামাবোধিনী পত্রিকা’র বিভিন্ন লেখনীর ( তৎকালীন সমাজের ধর্ম , নীতিশাস্ত্র , বিজ্ঞান , ইতিহাস , ঘরোয়া ওষুধপত্র , শিশু পরিচর্যা , নারীশিক্ষা বিষয়ক ) মাধ্যমে বাঙালি গৃহবধূসহ নারীদের শিক্ষিত করে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল । দ্বিতীয়ত , এই পত্রিকা নারীদের প্রতি বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নারীদের সচেতন করে তুলেছিল । তৃতীয়ত , এই পত্রিকা নারীদের মধ্যে বিদ্যাশিক্ষার প্রসারের জন্য প্রতিবন্ধকতাগুলি দূর করে কুসংস্কারমুক্ত শিক্ষিত নারী গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ‘ বন্দিনী বামা মুক্তির যুগ ’ শুরু করেছিল ।
- ‘ বামাবোধিনী ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত বিষয়ের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো ।
Ans: ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা’য় প্রকাশিত বিষয়ের দুটি বৈশিষ্ট্য হল – প্রথমত , নারী জাতির মানসিক বিকাশের জন্য নারী সমাজের অবস্থা , নারীশিক্ষা গ্রহণ ও তার তাৎপর্য , চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় যোগদান ও তার অভিজ্ঞতা , গৃহচিকিৎসাসহ গৃহ পরিচালনার খুঁটিনাটি দিক প্রতিফলিত হয়েছিল । দ্বিতীয়ত , পত্রিকাটি নারীদের জন্য হলেও প্রকাশিত বিষয়ের পত্রিকাটিতে পুরুষ লেখকদের রচনার পাশাপাশি নারীরাও স্বনামে অথবা বেনামে নিয়মিত লিখতেন । তৃতীয়ত , এই পত্রিকা নারীদের প্রতি বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নারীদের সচেতন করে তুলে ‘ বন্দিনী বামামুক্তির ‘ যুগ শুরু করেছিল ।
- বামাবোধিনী পত্রিকা থেকে নারীশিক্ষা বিষয়ে কী কী তথ্য পাওয়া যায় ?
Ans: ‘ বামাবোধিনী পত্রিকা ‘ ঊনবিংশ শতকে বাঙালি নারীদের শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় , যেমন— প্রথমত , বামা অর্থাৎ নারীদের বিদ্যাশিক্ষার প্রতিবন্ধকতার প্রতিফলন ঘটেছিল এই পত্রিকাটিতে । দ্বিতীয়ত , মেয়েদের জড়তা কাটিয়ে শিক্ষিত করে তোলাই ছিল এই পত্রিকার অন্যতম লক্ষ্য ।
- ‘ জীবন ‘ কী ?
Ans: বামাবোধিনী পত্রিকা থেকে জানা যায় যে প্রথমত , ভারতীয় নারীর ব্যক্তিগত সম্পত্তিই হল ‘ জীবন ’ এবং এগুলি সাধারণত অলংকার ও পোশাক । দ্বিতীয়ত , বিবাহকালে নারীর ‘ পিতৃদত্ত ‘ বা পিতার দেওয়া , ‘ ভ্রাতৃদত্ত ‘ বা ভাইয়ের দেওয়া অলংকার ও উপহার ছিল স্ত্রীধনের উৎসস্থল । তৃতীয়ত , নারীর মৃত্যুর পর এই সম্পত্তি স্বামী অথবা পুত্ররা পেত না , তা পেত তার কন্যা বা কন্যারা ।
- ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ থেকে বাংলার জনজীবন সম্পর্কে কী জানা যায় ?
Ans: ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ’ – এ বাংলার জনগণের জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে প্রতিবেদন রচিত হয়েছিল , যেমন প্রথমত , ইংরেজ শাসনকালে অর্থকরী ফসল ( যেমন — পাট , তুলা , তৈলবীজ , আখ ) চাষ ও তা বিদেশে রপ্তানির কারণে কৃষিপণ্য ও খাদ্যশস্যের দাম বৃদ্ধির ফলে জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় । দ্বিতীয়ত , শিক্ষিত ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তাদের কর্মসংস্থানও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে । তৃতীয়ত , নীলকরদের অত্যাচার ও নীলচাষিদের দুরবস্থার কথাও জানা যায় ।
- ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ কেন বিখ্যাত ?
Ans: গিরিশচন্দ্র ঘোষের সম্পাদনায় মধুসুদন রায় ইংরেজি সাপ্তাহিক সংবাদপত্ররূপে ( অবশ্য ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দ থেকে দৈনিক ) প্রকাশ করেন ( ৬ ফেব্রুয়ারি , ১৮৫৩ খ্রি . ) । এই পত্রিকা বিখ্যাত ছিল , কারণ— প্রথমত , এই পত্রিকার বিখ্যাত সম্পাদক ছিলেন হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় । যিনি নীলকরদের অত্যাচার সম্পর্কে খবর প্রকাশ করে নীলচাষিদের বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন । দ্বিতীয়ত , এই পত্রিকা ইংরেজ শাসন – শোষণের সমালোচনা ও বিরোধিতা করে এবং নীলচাষিদের পক্ষ সমর্থন করে জাতীয়তাবাদী পত্রিকার মর্যাদা লাভ করে ।
- ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকটি লেখকের স্বনামে প্রকাশিত হয়নি কেন ?
Ans: ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকটি লেখকের স্বনামে প্রকাশিত হয়নি । কারণ প্রথমত , ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকের লেখক দীনবন্ধু মিত্র একজন সরকারি চাকুরে ছিলেন । দ্বিতীয়ত , নীলকরদের বিরুদ্ধে লেখা এই নাটকটিতে নীলচাষিদের দুঃখদুর্দশার কথা তুলে ধরে তিনি ব্রিটিশ সরকারের বিরাগভাজন হতে পারতেন এবং তার চাকুরির ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারত । তৃতীয়ত , তিনি মনে করেছিলেন পাদরি জেমস লঙ যেহেতু ইংরেজ সেহেতু তার নামে নাটকটা প্রকাশ করলে কোনো সমস্যা হবে না ।
- নীলদর্পণ ‘ নাটকের কয়েকটি চরিত্রের নাম লেখো ।
Ans: ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকের প্রধান দুটি চরিত্র হল তোরাপ এবং গোলকচন্দ্র বসু । এ ছাড়াও নবীন মাধব , বিন্দু মাধব , সৈরিথ্রী , সাবিত্রী প্রমুখ ছিল এই নাটকের অন্যতম প্রধান চরিত্র ।
- দেশপ্রেমের উন্মেষে ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকের কী ভূমিকা ছিল ?
Ans: দেশপ্রেমের উন্মেষে ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকের ভূমিকা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ , কারণ— প্রথমত , দীনবন্ধু মিত্র তাঁর ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটকে অনিচ্ছুক নীলচাষিদের ওপর নীলকরদের অত্যাচারের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন । দ্বিতীয়ত , প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা চোখের জল ও মুখের হাসি তুলে ধরেছিলেন তার নাটকে । তৃতীয়ত , নীলকরদের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনে রায়ত , সম্পন্ন কৃষক , মধ্যবিত্ত শ্রেণি একজোট হয়ে নীলচাষের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ করেছিল তা ধরা পড়ে এই নাটকে , যা ভারতীয়দের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছিল ।
- গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ – র কয়েকটি দিক চিহ্নিত করো ।
অথবা ‘ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকার বিষয়বস্তু কী ছিল ?
Ans: হরিনাথ মজুমদার বা ‘ কাঙাল হরিনাথ ‘ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ ছিল এক সাময়িক পত্রিকা । এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি প্রথমত , গ্রাম ও গ্রামবাসী প্রজার অবস্থা সহ সমসাময়িক বিভিন্ন খবর প্রকাশ করতেন ।। দ্বিতীয়ত , ব্রিটিশ সরকার ও তার সহযোগী জমিদার ও মহাজন কর্তৃক প্রজা শোষণ ও অত্যাচারের কথা প্রকাশিত হয়েছিল । এমনকি জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়ির জমিদারি ব্যবস্থাও তাঁর সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পায়নি । তৃতীয়ত , এই পত্রিকায় সাহিত্য , দর্শন , বিজ্ঞান ও বীরগাথা প্রকাশিত হয়েছিল ।
- গ্রামাবার্তা প্রকাশিকা ‘ কেন ব্যতিক্রমী ছিল ?
Ans: গ্রামাবার্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকা বিভিন্ন কারণে ব্যাতিক্রমী ছিল , যেমন প্রথমত , এর আগের সমস্ত পত্রপত্রিকা কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল বলে তাতে শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানসিক প্রতিফলন ধরা পড়েছিল । কিন্তু ‘ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা ‘ সর্বপ্রথম গ্রাম থেকেই প্রকাশিত হয় । দ্বিতীয়ত , এতে গ্রামের মানুষের দুঃখ , দুর্দশা , বঞ্চনা , নিপীড়নের কথা , নীলকরদের অত্যাচারের কথা তুলে ধরা হয়েছিল বলেই এটি ব্যতিক্রমী । তৃতীয়ত , এটিই ছিল বাংলার গ্রামীণ সংবাদপত্রের জনক ‘ ।
- হরিনাথকে ‘ কাঙাল হরিনাথ ‘ বলা হয় কেন ?
অথবা , কে , কেন কাঙাল হরিনাথ নামে পরিচিত ছিলেন ?
Ans: হরিনাথকে ‘ কাঙাল হরিনাথ ‘ বলা হয় , কারণ— প্রথমত , কুমারখালি পাঠশালার পণ্ডিত হরিনাথ মজুমদার ‘ কাঙাল হরিনাথ ‘ নামে ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকাটি সম্পাদনা করতেন । দ্বিতীয়ত , নিদারুণ আর্থিক দুরবস্থা , পরিকাঠামোগত অসুবিধে সত্ত্বেও দীর্ঘ বাইশ বছর ধরে তিনি এই সমাজের নিপীড়িত , অত্যাচারিত , অবহেলিত মানুষের অবস্থা প্রকাশ করেন । তৃতীয়ত , হরিনাথ নিজে শুধুমাত্র সমাজের ওইসব মানুষগুলির প্রতি সমব্যথীই ছিলেন না , এক গভীর একাত্মবোধে আবদ্ধ হয়েছিলেন বলে তিনি নিজে তার নামের আগে ‘ কাঙাল ‘ কথাটি ব্যবহার করতেন ।
- দেশীয় শিক্ষা বলতে কী বোঝ ?
Ans: প্রাক – ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা দেশীয় শিক্ষা নামে পরিচিত ছিল ; এর বিভিন্ন দিকগুলি হল প্রথমত , হিন্দুদের পাঠশালা ও টোল এবং মুসলিমদের মক্তব ও মাদ্রাসাগুলি ছিল দেশীয় শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র । দ্বিতীয়ত , হিন্দুরা সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় এবং মুসলিমরা মারবি ও ফারসি ভাষায় ধর্মীয় কাহিনিসহ সাধারণ কিছু বিষয়ের প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করত । তৃতীয়ত , এই শিক্ষা ছিল ধর্মভিত্তিক এবং একারণেই এই শিক্ষা কেন্দ্রগুলিতে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান , গণিত , ভূগোল , ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষাদান অবহেলিত ছিল
- জনশিক্ষা কমিটি কেন তৈরি হয়েছিল ?
Ans: লর্ড হেস্টিংসের আমলে ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলা প্রদেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে জনশিক্ষা কমিটি বা General Committee of Public Instruction ( GCPI ) তৈরি হয়েছিল ।
- বাংলায় নবজাগরণের প্রধান ভিত্তি কী ছিল ?
Ans: বাংলায় নবজাগরণের প্রধান ভিত্তি ছিল প্রাচ্যবাদ ও পাশ্চাত্যবাদ এবং এই দুই আদর্শের ঘাত – প্রতিঘাতেই সৃষ্টি হয় বাংলার নবজাগরণ । প্রাচ্যবাদী প্রতিষ্ঠানগুলিতে ( এশিয়াটিক সোসাইটি , কলকাতা মাদ্রাসা , ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ও কলকাতা সংস্কৃত কলেজ ) প্রাচ্যবাদের চর্চা ভারতের ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন ঘটায় । অন্যদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষা বাংলায় মানবতাবাদ , যুক্তিবাদ , প্রগতিবাদী আদর্শের সঞ্চার ঘটায় ।
- বাংলার নবজাগরণের সীমাবদ্ধতাগুলি কী ?
Ans: বাংলায় নবজাগরণের সীমাবদ্ধতাগুলি হল— প্রথমত , সমাজ ও ধর্মসংস্কার আন্দোলন মূলত হিন্দুসমাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল , তাই তা ছিল হিন্দু নবজাগরণ । দ্বিতীয়ত , নবজাগরণ শহরকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবীদের আন্দোলন হওয়ার কারণে এর প্রভাব ছিল সীমিত । তৃতীয়ত , নবজাগরণের ফলে জমিদার , ব্যবসায়ী , শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী ব্যক্তিরা লাভবান হলেও কৃষক – সহ সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়নি ।
- ইটালির নবজাগরণের সঙ্গে বাংলার নবজাগরণের দুটি বৈসাদৃশ্য লেখো ।
Ans: ইটালির নবজাগরণের সঙ্গে বাংলার নবজাগরণের দুটি বৈসাদৃশ্য হল— প্রথমত , ইটালির নবজাগরণের উন্মেষ ও বিকাশ ঘটেছিল মুক্ত পরিবেশে কিন্তু বাংলার নবজাগরণের বিকাশ ঘটেছিল ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে । দ্বিতীয়ত , ইটালির স্বাধীন নগর রাষ্ট্রগুলির বুর্জোয়া ব্যবসায়ী , বণিক শ্রেণি ও শাসকবর্গ ইটালীয় নবজাগরণের পৃষ্ঠপোষকতা দান করেছিল , কিন্তু বাংলার নবজাগরণের মূল পৃষ্ঠপোষক ও কারিগর ছিল চাকরজীবী , উকিল , ডাক্তার ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি ।
- ভারতে নারীশিক্ষা বিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান কী ছিল ?
Ans: উনিশ শতকে বাংলা তথা ভারতের নারীশিক্ষা বিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদানগুলি হল প্রথমত , ১৮৫০ – এর দশকে দক্ষিণবঙ্গের বিদ্যালয় পরিদর্শকের সরকারি পদে থাকার সুবাদে তিনি ৩৫ টি ( মতান্তরে ৪০ টি ) বালিকা বিদ্যালয় এবং ১০০ টি বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন । দ্বিতীয়ত , তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব ছিল ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে বেথুন সাহেবের সহযোগিতায় ‘ হিন্দু ফিমেল স্কুল ’ স্থাপন ও এই স্কুলের জন্য নিয়মাবলি রচনা ।
Ans: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সারাজীবন ধরে শিক্ষাবিস্তারে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন , যেমন— প্রথমত , নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য তিনি ৩৫ টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন । দ্বিতীয়ত , পাঠ্যপুস্তকের অভাব দূর করার জন্য তিনি নানা ধরনের সহজ পুস্তক রচনা করেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বর্ণপরিচয় , কথামালা , বোধোদয় ইত্যাদি ।
- বেথুন কলেজ কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু ফিমেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন । ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে এই স্কুলের সঙ্গে বালিগঞ্জের ‘ বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয় ‘ সম্মিলিত বা একত্রিত হয়ে বেথুন কলেজে পরিণত হয় ।
- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল কেন ? অথবা ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ?
Ans: ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলি কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন । এর উদ্দেশ্যগুলি হল প্রথমত , ওয়েলেসলি ভেবেছিলেন যে , ইংল্যান্ড থেকে যেসব যুবক ভারতে সিভিল সার্ভিসের চাকরি নিয়ে ভারতে আসবে তাদের অদেশের ভাষা , সামাজিক রীতিনীতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে পরিচয় থাকা দরকার । দ্বিতীয়ত , এই সিভিল সার্ভেন্টদের ভারতীয় ভাষা , সংস্কৃতি , আইন ও রীতিনীতি শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- হিন্দু কলেজ কখন ও কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় ও ইউরোপীয়দের যৌথ উদ্যোগে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় । হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে রাজা রামমোহন রায় , ডেভিড হেয়ার এবং বিচারপতি হাইড ইস্ট – এর নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য । অধিকাংশের মতে , হিন্দু কলেজের প্রস্তাবক ডেভিড হেয়ার এদেশীয় ধনবান ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতায় এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন , কিন্তু ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে , হাইড ইস্ট – ই এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন ।
- বাংলার নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো ।
Ans: বাংলার নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ , কারণ— প্রথমত , তিনি নিজে সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও জাতির নৈতিক চরিত্র ও সামাজিক সুখ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নারীদের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে ‘ ক্যালকাটা ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি ’ প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন ( ১৮১৯ খ্রি . ) । দ্বিতীয়ত , তিনি ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটির অবৈতনিক সম্পাদকরূপে তাঁর বাড়িতে ক্যালাকাটা স্কুল সোসাইটির অধীনস্থ স্কুলের ছাত্রীদের পরীক্ষা দানের সুযোগ করে দেন । তৃতীয়ত , স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের সমর্থনে রাধাকান্ত দেব গৌরমোহন বিদ্যালংকারকে ‘ স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক ‘ ( ১৮২২ খ্রি . ) পুস্তিকাটি রচনার জন্য অনুরোধ করেন ও সাহায্য করেন । এই সমস্ত কারণে জে . ডি . বেথুন রাধাকান্ত দেবকে ‘ স্ত্রীশিক্ষার সমর্থক প্রথম বাঙালি ’ বলে অভিহিত করেছেন ।
- পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে রাধাকান্ত দেব গুরুত্বপূর্ণ কেন ?
Ans: রাধাকান্ত দেব কলকাতার রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের নেতা হলেও পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন , প্রথমত , তিনি হিন্দু কলেজের প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা এবং ‘ ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি ‘ পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন । দ্বিতীয়ত , নারীশিক্ষার ক্ষেত্রেও তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষাকে প্রাধান্য দেন এবং তাঁর সহযোগিতায় ব্যাপটিস্ট মিশনারিরা ‘ ক্যালকাটা ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠা করেন ।
মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়: সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | Madhyamik History Chapter 2 Questions – Sanskar Boisisto o Porjalochona
1. ‘ হুতোম প্যাঁচার নক্শা ‘ গ্রন্থে উনিশ শতকের বাংলার কীরূপ সমাজচিত্র পাওয়া যায় ?
অথবা , ‘ হুতোম প্যাঁচার নকশা ‘ – তে কালীপ্রসন্ন সিংহ কলকাতার কী সমাজচিত্র তুলে ধরেছেন ?
Ans: ভূমিকা : কালীপ্রসন্ন সিংহ রচিত ‘ হুতোম প্যাঁচার নক্শা ’ নামক ব্যঙ্গাত্মক রচনা থেকে কলকাতার বিত্তবান নব্যবাবু সমাজের বিলাসবাসন ও স্বার্থপরতার কথা – সহ সমাজ – সংস্কৃতির কথা জানা যায় ।
সমাজ – সংস্কৃতি : কলকাতার সমাজ – সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল—
সমাজবিন্যাস : ইংরেজ শাসন ও ব্যাবসাবাণিজ্যের সূত্র ধরে উনিশ শতকের সমাজবিন্যাসে পরিবর্তন আসে । ইংরেজ শাসনের আগে বাংলায় বড়ো বড়ো বংশের ( কৃষ্ণচন্দ্র , রাজবল্লভ , মানসিংহ , নন্দকুমার , জগৎশেঠ ) পতন ঘটে এবং নতুন জাতি ও বংশের ( মল্লিক পরিবার , শীল পরিবার ) উদ্ভবের কথা জানা যায় ।
কালীপ্রসন্ন সিংহ বাবু সংস্কৃতি : ব্যাবসাবাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী এবং গ্রাম থেকে কলকাতায় চলে আসা জমিদাররা যে বিলাসবহুল এবং দেখনদারি সংস্কৃতির সূচনা করেছিল তা ‘ বাবু সংস্কৃতি ‘ নামে পরিচিতি লাভ করে ।
পূজাপার্বণ : কলকাতায় ছিল বারো মাসে তেরো পার্বণ , অর্থাৎ চড়কপূজা , নীলষষ্ঠী , রাসলীলা , রথযাত্রা , মাহেশের স্নানযাত্রা , বারোয়ারি দুর্গাপূজা ইত্যাদি নানা ধরনের উৎসব ।
সংস্কৃতি : নীলের ব্রত , গাজন সন্ন্যাসী ( চড়কি ) -দের শিবের কাছে মাথা দোলানো বা মাথাচালা , যাত্রাগান , বুলবুলের গান , অশ্লীল শব্দযুক্ত আখড়াই গান ছিল তৎকালীন সংস্কৃতির অঙ্গ । আবার বাইজি নাচ ও মদ্যপান সংস্কৃতিও ছিল কলকাতার বাবু সমাজের একটি বিশেষ দিক ।
উপসংহার উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে , উনিশ শতকে কলকাতার সমাজজীবনে পরিবর্তন এসেছিল এবং এর মূল কারণ ছিল বাঙালিদের ইংরেজ অনুকরণ ও পাশ্চাত্য শিক্ষা ।
2. ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটক ও তার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো ।
Ans: উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান ছিল নীলবিদ্রোহ কালে দীনবন্ধু মিত্রের রচিত ‘ নীলদর্পণ ‘ ( ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দ ) নাটক । নাটকের বিষয় এই নাটকের মধ্য দিয়ে কৃষক সমাজ , নীলকরদের অত্যাচার ও কৃষকের সংগ্রামের কথা প্রতিফলিত হয়েছিল , যেমন— নীলকরদের অত্যাচার এই নাটকে সাধারণ প্রজাদের ওপর নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও লুঠতরাজ , গৃহদাহ , নরহত্যা , নারী নির্যাতনের বিবরণ পাওয়া যায় ।
প্রতিক্রিয়াশীল শ্রেণি : ইংরেজদের সাহায্যকারী দেশীয় আমিন , গোমস্তা , পুলিশ , ম্যাজিস্ট্রেটদের কথা , তৎকালীন সমাজের আইন – আদালতের চিত্র এই নাটকে প্রতিফলিত হয়েছে ।
জোটবদ্ধতা : নীলকরদের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনে রায়ত , সম্পন্ন কৃষক , মধ্যবিত্ত শ্রেণি একজোট হয়ে নীলচাষের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ করেছিল তা ধরা পড়ে এই নাটকে , যা ভারতীয়দের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছিল ।
গুরুত্ব : নীলদর্পণ নাটক বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ , যেমন—
কৃষক প্রীতি : বাংলার সাহিত্য জগতে নীলদর্পণ নাটকেই প্রথম বাংলার কৃষকদের দুর্দশার চিত্র উপস্থাপিত হয়েছিল । নীলকরদের স্বরূপ প্রকাশ : নীল বিদ্রোহ ও ‘ নীল কমিশন ’ গঠনের পর এই নাটকটি প্রকাশিত হলে পাদরি জেমস্ লং এই নাটকটির ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেন এবং ইউরোপের জনমানসে নীলকরদের অত্যাচার তুলে ধরতে সচেষ্ট হন ।
পেশাদারি নাটকের সূচনা : ‘ নীলদর্পণ ‘ প্রকাশের পর নাটকটির জনপ্রিয়তার কারণে প্রথমে ঢাকায় ও পরে কলকাতায় ( ১৮৬২ খ্রি . ) নাটকটি অভিনীত হয় । একারণেই গিরিশ্চন্দ্র ঘোষ নীলদর্পণ নাটকের স্রষ্টা দীনবন্ধু মিত্রকে ‘ বাংলার রঙ্গালয়ের স্রষ্টা ‘ বলে অভিহিত করেছেন ।
3. ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকা ও তার অবদান সম্পর্কে একটি টীকা লেখো ।
Ans: ভূমিকা : কুমারখালি পাঠশালার পণ্ডিত হরিনাথ মজুমদার ( ‘ কাঙাল হরিনাথ ‘ ) ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকাটি সম্পাদনা করতেন । নিদারুণ আর্থিক দুরবস্থা , পরিকাঠামোগত অসুবিধে সত্ত্বেও দীর্ঘ বাইশ বছর ধরে তিনি এই পত্রিকাটি প্রকাশ করেন , যাতে সমাজের নিপীড়িত , অত্যাচারিত , অবহেলিত মানুষের অবস্থা পরিবেশিত হয়েছে ।
গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকার বৈশিষ্ট্য : হরিনাথ মজুমদার বা ‘ কাঙাল হরিনাথ ’ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ’ ছিল এক সাময়িক পত্রিকা । এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি—
প্রথমত , গ্রাম ও গ্রামবাসী প্রজার অবস্থা সহ সমসাময়িক বিভিন্ন খবরও প্রকাশিত হত ।
দ্বিতীয়ত , ব্রিটিশ সরকার ও তার সহযোগী জমিদার ও মহাজন কর্তৃক প্রজা শোষণ ও অত্যাচারের কথা প্রকাশিত হয়েছিল । এমনকি জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়ির জমিদারি ব্যবস্থাও তাঁর সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পায়নি ।
তৃতীয়ত , এই পত্রিকায় সাহিত্য , দর্শন , বিজ্ঞান ও বীরগাথাও প্রকাশিত হয়েছিল ।
অবদান : ‘ গ্রামাবাৰ্ত্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকা , উনিশ শতকের গ্রামীণ সমাজে আলোড়ন তুলেছিল , কারণ—
প্রথমত , গ্রাম ও গ্রামবাসী প্রজার অবস্থা সহ সমসাময়িক বিভিন্ন খবরও প্রকাশিত হত ।
দ্বিতীয়ত , ব্রিটিশ সরকার ও তার সহযোগী জমিদার ও মহাজন কর্তৃক প্রজা শোষণ ও অত্যাচারের কথা প্রকাশিত হয়েছিল । এমনকি জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়ির জমিদারি ব্যবস্থাও তাঁর সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পায়নি ।
তৃতীয়ত , এই পত্রিকায় সাহিত্য , দর্শন , বিজ্ঞান ও বীরগাথাও প্রকাশিত হয়েছিল ।
অবদান : ‘ গ্রামাবাৰ্ত্তা প্রকাশিকা ‘ পত্রিকা , উনিশ শতকের গ্রামীণ সমাজে আলোড়ন তুলেছিল , কারণ—
প্রথমত , এর আগের সমস্ত পত্রপত্রিকা কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল বলে তাতে শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানসিক প্রতিফলন ধরা পড়েছিল , কিন্তু ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ শুধু গ্রাম থেকেই প্রকাশিত হয় ।
দ্বিতীয়ত , এতে গ্রামের মানুষের দুঃখ , দুর্দশা , বঞ্চনা , নিপীড়নের কথা , নীলকরদের অত্যাচারের কথা তুলে ধরা হয়েছিল বলেই এটি ছিল ব্যতিক্রমী পত্রিকা ।
তৃতীয়ত , এটিই ছিল ‘ বাংলার গ্রামীণ সংবাদপত্রের জনক ‘ ।
4. টীকা লেখো : উডের ডেসপ্যাচ ।
অথবা , চার্লস উডের নির্দেশনামা কী ?
Ans: ভূমিকা : ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক্চিহ্ন হল— ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের মেকলে মিনিট ও ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের উডের ডেসপ্যাচ বা নির্দেশনামা । উডের ডেসপ্যাচ : ভারতবর্ষের শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড শিক্ষা সংক্রান্ত এক নির্দেশনামা জারি করেন যা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত ।
সুপারিশ : ভারতের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রসারের জন্য চার্লস উডের বিভিন্ন সুপারিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল : ( ১ ) নিম্নতম শ্রেণি থেকে উচ্চতর শ্রেণি পর্যন্ত যথাযথ সমন্বয়মূলক শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন ; ( ২ ) সরকারি শিক্ষাবিভাগ স্থাপন ; প্রত্যেক প্রেসিডেন্সি শহরে ( অর্থাৎ — কলকাতা , বোম্বাই ও মাদ্রাজ শহরে ) একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ; ( ৪ ) গণশিক্ষা , নারীশিক্ষা , মাতৃভাষার উন্নয়ন এবং শিক্ষক – শিক্ষণ ব্যবস্থার প্রবর্তন ; ( ৫ ) প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের উপযুক্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন ; ( ৬ ) সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা প্রদান নীতির প্রবর্তন প্রভৃতি ।
প্রভাব : চার্লস উডের এইসব সুপারিশের ওপর ভিত্তি করেই আধুনিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল , যেমন— ( ১ ) চার্লস উড – এর সুপারিশ অনুসারে ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সরকারি শিক্ষা বিভাগ খোলা হয় । ( ২ ) ‘ উডের নির্দেশনামা’র ফলশ্রুতি হিসেবে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা , মাদ্রাজ ও বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয় । ( ৩ ) বহু বিদ্যালয়কে সরকারি অনুদান প্রদান এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে ।
5. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলাফল কী হয়েছিল ?
Ans: ভূমিকা : ভারতে প্রথমে বেসরকারি ও পরে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা বহুমুখী ও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল ।
ফলাফল : উনিশ শতকের ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবগুলি হল যুক্তিবাদের প্রসার পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির সংস্পর্শে আসার ফলে ভারতবাসীর মধ্যে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণার পরিবর্তন ঘটে এবং যুক্তিবাদী ধ্যানধারণার প্রতিষ্ঠা হয় । পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে ভারতে যুক্তিবাদী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব হয় ।
পাশ্চাত্যবাদী আদর্শের প্রসার : পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে ভারতবাসীর একাংশ পাশ্চাত্য সভ্যতার ইতিহাস , জ্ঞানবিজ্ঞান , মানবতাবাদ , স্বাধীনতা , গণতন্ত্র , যুক্তিবাদ প্রভৃতি উচ্চ আদর্শের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠে ।
ধর্ম ও সমাজসংস্কার : পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে উনিশ শতকের শিক্ষিত ভারতীয়রা কুসংস্কারমুক্ত হয়ে ওঠে এবং তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদ , গণতন্ত্র , রাজনীতি , সমাজতন্ত্র প্রভৃতি বিষয়ে প্রগতিমুলক চিন্তাভাবনার উন্মেষ হয় । ভারতে নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলন , ধর্মসংস্কার ও সমাজসংস্কার আন্দোলন শুরু হয় ।
জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ : ভারতে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটে , যা পরবর্তীকালে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিণতি লাভ করেছিল ।
উপসংহার : পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত ভারতীয়রা প্রথমে সমাজসংস্কারমূলক কাজ এবং পরবর্তীকালে দেশের স্বাধীনতার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন । তবে পাশ্চাত্য শিক্ষার কয়েকটি কুপ্রভাবও ছিল — যেমন , ( ১ ) ভারতীয় ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি অবহেলা , ( ২ ) বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষায় অবহেলা , ( ৩ ) অবহেলিত নারীশিক্ষা ও গণশিক্ষা , ( ৪ ) পরোক্ষভাবে খ্রিস্টধর্মের প্রচার প্রভৃতি ।
6. নারীশিক্ষা প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : উনিশ শতকের বিখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত ও সমাজসংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ( ১৮২০-৯১ খ্রি . ) । নারীমুক্তির উদ্দেশ্যে সারাজীবন ধরে শিক্ষাবিস্তার ও সমাজসংস্কারে সচেষ্ট হয়েছিলেন । প্রেক্ষাপট : নারীশিক্ষা প্রসারে বিদ্যাসাগরের লক্ষ্য ছিল দুটি , যথা—
প্রথমত , বিদ্যাসাগর বিধবাবিবাহ প্রবর্তন , বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ রোধ , এবং বিভিন্ন সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে প্রবল জনমত গড়ে তোলার পাশাপাশি অনুভব করেন নারী মুক্তির জন্য প্রয়োজন নারীশিক্ষা ।
দ্বিতীয়ত , নারীকে শিক্ষিত করে তোলা সম্ভব হলে পরবর্তী L প্রজন্মও শিক্ষিত হয়ে উঠবে বলে তিনি বিশ্বাস করতেন ।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষা বিস্তারে অবদান : স্কুল প্রতিষ্ঠা : বিদ্যাসাগর বিদ্যালয় দক্ষিণবঙ্গের পরিদর্শকের সরকারি পদে থাকার ( ১৮৫৭-৫৮ খ্রি . ) সুযোগে বাংলার বিভিন্ন স্থানে ৩৫ টি বালিকা বিদ্যালয় এবং ১০০ টি বাংলা স্কুল স্থাপন করেন । ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে বেথুন সাহেবের উদ্যোগে ‘ হিন্দু ফিমেল স্কুল ’ প্রতিষ্ঠাকালে তিনি বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন ।
ভগবতী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা : বিদ্যাসাগর তাঁর নিজের জন্মস্থান মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে মা ভগবতী দেবীর পুণ্য স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিষ্ঠা করেন ভগবতী বিদ্যালয় ( ১৮৯০ খ্রি . ) ।
নারী শিক্ষা ভাণ্ডার : তাঁর প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়গুলিকে সরকার আর্থিক সাহায্যদান বন্ধ করলে বিদ্যাসাগর ‘ নারীশিক্ষা ভাণ্ডার ‘ নামে একটি তহবিল গঠন করেছিলেন ।
স্ত্রী শিক্ষা সম্মিলনী : বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার যথাযথ প্রসারের জন্য মেদিনীপুর হুগলি বর্ধমানসহ বিভিন্ন জেলায় ‘ স্ত্রীশিক্ষা সন্মিলনী ‘ নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ।
উপসংহার : বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার প্রসার ও নারী সমাজের উন্নতির জন্য যুক্তির চেয়ে হিন্দু ধর্মশাস্ত্রের ওপর বেশি নির্ভর করেন । তাই ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী তাঁকে ‘ ঐতিহ্যবাহী আধুনিককার ’ বলে অভিহিত করেছেন ।
7. ভারতে পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশে পণ্ডিত মধুসূদন দত্তের অবদান বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ভূমিকা : ভারতে পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশে হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি গ্রামে জন্মগ্রহণকারী মধুসূদন গুপ্তের ( ১৮০৬–১৮৫৬ খ্রি . ) ভূমিকা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ ।
অবদান : ডা . মধুসূদন গুপ্ত যেভাবে ভারতে পাশ্চাত্য চিকিৎসা বিদ্যার বিকাশে সাহায্য করেন তা হল 1 হিন্দু ওষুধের পণ্ডিত : তিনি ছিলেন কলকাতা সংস্কৃত কলেজের ছাত্র । এবং পরবর্তীকালে এই কলেজে তিনি হিন্দু ওষুধের পণ্ডিতরূপে নিযুক্ত হন ( ১৮৩০ খ্রি . ) ।
অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জেন : কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি এখানে ডাক্তাররূপে যোগদান করেন ও পরবর্তীকালে তিনি প্রথম মর্যাদার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জেন হন ।
শব ব্যবচ্ছেদ : ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি হিন্দু কুসংস্কার উপেক্ষা করে নিজ হাতে শব ব্যবচ্ছেদ করেন এবং এর দশ মাস পর ডাক্তার গুডিভের তত্ত্বাবধানে চারজন মেডিক্যাল ছাত্র ( রাজকৃষ্ণ দে , উমাচরণ শেঠ , দ্বারকানাথ গুপ্ত ও নবীনচন্দ্র মিত্র ) -কে সাথে নিয়ে পুনরায় শব ব্যবচ্ছেদ করেন ।
গ্রন্থ রচনা : সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনাকালে মধুসূদন গুপ্ত হুপারের ‘ অ্যানাটমিস্টস ভাডে — মেকাম ’ গ্রন্থটির সংস্কৃত অনুবাদ করেন ( ১৮৩৫ খ্রি . ) এবং পরবর্তীকালে ‘ লন্ডন ফার্মাকোপিয়া গ্রন্থটির বাংলা অনুবাদ করেন ( ১৮৪৯ খ্রি . ) । এ ছাড়া তিনি ইংরাজি ও ল্যাটিন ওষুধের নাম ও ব্যবহারের নির্দেশাবলি সম্পর্কিত অনুবাদ গ্রন্থ ‘ অ্যানাটোমি ‘ ( ১৮৫৩ খ্রি . ) রচনা করেন ।
উপসংহার : ভারতে পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশের ক্ষেত্রে ডা . মধুসূদন গুপ্তের ভূমিকাকে স্মরণ করে শিক্ষা কাউন্সিলের সভাপতি জে ডি বেথুন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে ডা . মধুসূদন গুপ্তের এক বিশাল তৈলচিত্র উপহার দেন ( ১৫ জুন , ১৮৪৯ খ্রি . ) । এটি বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজে জি . এল . টি হলে সংরক্ষিত আছে ।
8. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও তার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ভূমিকা : ভারতে শিক্ষা তথ্য উচ্চশিক্ষার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক্চিহ্ন হল উডের ডেসপ্যাচের সুপারিশ অনুযায়ী লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকরণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ( ১৮৫৭ খ্রি . ) ।
প্রতিষ্ঠা : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ইউনিভার্সিটি কমিটি : উডের ডেসপ্যাচের সুপারিশের ভিত্তিতে লর্ড ডালহৌসির শাসনকালে গঠিত ইউনিভার্সিটি কমিটির দেওয়া রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ( ২৪ জানুয়ারি , ১৮৫৭ খ্রি . ) ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে ৪১ জন সিনেট সদস্য নিয়ে গঠিত সিনেটের হাতে শিক্ষানীতি রূপায়ণের ভার ন্যস্ত করা হয় । লর্ড ক্যানিং হন প্রথম আচার্য এবং স্যার জেমস উইলিয়াম কোলভিল প্রথম উপাচার্য ।
বিস্তার : প্রতিষ্ঠাকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এলাকা ছিল লাহোর থেকে বর্তমান মায়ানমারের রেঙ্গুন পর্যন্ত । দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে অনুমোদন নেয় ।
কর্ম শুরু : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট – এর প্রথম মিটিং হয় ৩০ জানুয়ারি , ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কাউন্সিল রুম – এ । ক্যামাক স্ট্রিটের একটি ভাড়া বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অফিস গড়ে ওঠে । ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ২৪৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ।
উপসংহার : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে ভারতের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষার বিষয়টি পরিপূর্ণতা লাভ করলেও প্রতিষ্ঠাকালে এটি উচ্চ শিক্ষাকেন্দ্র ছিল না , বরং তা ছিল পরীক্ষাগ্রহণকারী কেন্দ্র ।
9. পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : উনিশ শতকে ভারতবর্ষে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে রাজা রামমোহন রায় ( ১৭৭২-১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দ ) অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন । তাঁর ভূমিকা ছিল এরকম—
পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার : পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে রামমোহন পাশ্চাত্য দর্শন , গণিত , রসায়ন , অস্থিবিদ্যা প্রভৃতি শিক্ষার জন্য ব্যাপক প্রচার চালান ।
ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা : ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায় নিজ উদ্যোগে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে কলকাতায় অ্যাংলো – হিন্দু স্কুল নামে একটি ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ।
সরকারি সহযোগিতার জন্য আবেদন : ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে রামমোহন লর্ড আমহার্স্টকে এক চিঠিতে শিক্ষাখাতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রদত্ত এক লক্ষ টাকা পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ব্যবহারের জন্য আবেদন জানান ।
বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা : কুসংস্কার দূর করে পাশ্চাত্য পদার্থবিদ্যা ও সমাজবিজ্ঞানের ধারণা প্রসারের উদ্দেশ্যে রামমোহন ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন । এ ছাড়াও ডেভিড হেয়ার , আলেকজান্ডার ডাফ প্রমুখ পাশ্চাত্য শিক্ষার সমর্থকদের তিনি নানাভাবে সমর্থন ও সহযোগিতা করেন এবং হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্বে যুক্ত হয়েছিলেন ।
10. সতীদাহ প্রথা বিরোধী আন্দোলন বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ভূমিকা : মৃত স্বামীর চিতায় তার সদ্যবিধবা জীবন্ত স্ত্রীর সহমরণ সতীদাহ প্রথা নামে পরিচিত । আন্দোলন বাংলা তথা ভারতের সমাজসংস্কার আন্দোলনে সতীদাহপ্রথা বিরোধী আন্দোলন ছিল একটি ব্যাপক আন্দোলন । তার বিভিন্ন দিক হল –
সার্বিক আন্দোলন প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে প্রচলিত সতীদাহ প্রথা গোঁড়া হিন্দুদের কাছে পবিত্র ও মহান প্রথা হলেও বাস্তবে তা অত্যন্ত নিষ্ঠুর হওয়ায় এই প্রথার বিরুদ্ধে উনিশ শতকে কলকাতা – সহ বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে আন্দোলন গড়ে ওঠে ।
সরকারি নিয়ন্ত্রণ : সতীদাহ প্রথার ব্যাপকতায় চিন্তিত ইংরেজ সরকার ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে একটি আইনের মাধ্যমে গর্ভবর্তী ও অল্পবয়সি নারীর সতী হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে । রামমোহনের চেষ্টা : মানবতাবাদী ও যুক্তিবাদী রাজা রামমোহন রায় সতীদাহপ্রথা বিরোধী প্রচারসভা ও প্রচার পুস্তিকার মাধ্যমে এই প্রথার বিরোধিতা করেন ও সতীদাহ প্রথাকে অশাস্ত্রীয় বলে প্রমাণ করেন । সরকারের কাছে আবেদনপত্র প্রেরণ করে । সরকারি আইনের সাহায্যে এই প্রথা রদে সচেষ্ট হন ।
ইংল্যান্ড ও বেন্টিঙ্কের উদ্যোগ : ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ইংল্যান্ডের জনগণ তাদের পার্লামেন্টের মাধ্যমে নিষ্ঠুর সতীদাহপ্রথা বন্ধের জন্য আবেদন জানায় । তৎকালীন বড়োেলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কও এই প্রথার বিরোধী হওয়ায় তিনি ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে সপ্তদশ বিধি ‘ নামে আইন প্রবর্তন করে এই প্রথা রদ করেন ।
উপসংহার : উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে , রামমোহন রায়ের আগেই গড়ে ওঠা সতীদাহপ্রথা বিরোধী আন্দোলনকে তিনি সাফল্যের পথে এগিয়ে দেন ।
11. টীকা লেখো : ডিরোজিও ।
Ans: ভূমিকা : উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর ( ১৮০৯-১৮৩১ খ্রি . ) নেতৃত্বে বাংলায় এক উগ্র সংস্কারবাদী আন্দোলনের অবতারণা হয় , যা নব্যবঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত ।
বাল্যকাল : ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার এক ইউরেশিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণকারী ডিরোজিও হেনরি ড্রামন্ডের কাছে ধর্মতলা অ্যাকাডেমিতে শিক্ষালাভ করেন এবং পাশ্চাত্যের যুক্তিবাদী ধারণায় উদ্বুদ্ধ হন ।
অধ্যাপনা : ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি হিন্দু কলেজের শিক্ষক রূপে যোগ দেন ও কলেজের তরুণ ছাত্র – সম্প্রদায়ের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করেন । প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের মতো ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের যুক্তিবাদী ও প্রগতিশীল চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচয় ঘটান ।
হিন্দু সমাজের সমালোচনা : তিনি ‘ অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন ‘ নামে এক সমিতি গঠন করেন এবং সেখানে আলোচনা সভার মাধ্যমে হিন্দু সমাজের কুসংস্কার , রক্ষণশীলতা ও প্রচলিত কুপ্রথাগুলির বিরুদ্ধে কশাঘাত করেন ।
কর্মচ্যুতি : ডিরোজিওর প্রভাবে তাঁর ছাত্র সম্প্রদায় প্রকাশ্যে হিন্দুধর্মের আচার – ব্যবহার লঙ্ঘন করতে থাকলে হিন্দুসমাজের রক্ষণশীল সমাজপতিরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ডিরোজিওর বিরুদ্ধে নালিশ জানান এবং এর ফলে ডিরোজিও কর্মচ্যুত হন ( এপ্রিল ১৮৩১ ) । ওই বছরের শেষে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে ডিরোজিওর মৃত্যু হয় ।
উপসংহার : ডিরোজিও তাঁর অনুগামীদের মধ্যে স্বাধীন চিন্তার বীজ বপন করে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন তা প্রশংসার দাবি রাখে । মনেপ্রাণে ভারতপ্রেমী ডিরোজিও ‘ আমার স্বদেশের প্ৰতি ‘ ( To India My Native Land ) কবিতায় মাতৃভূমির বন্দনা করেছেন ।
12. টীকা লেখো : ইয়ং বেঙ্গল ।
Ans: ভূমিকা : হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর প্রভাবে পাশ্চাত্যের যুক্তিবাদী ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার তরুণ বুদ্ধিজীবীদের একাংশ যে উগ্র সংস্কারপন্থী আন্দোলন সৃষ্টি করেন তা ইয়ং বেঙ্গল বা নব্যবঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত । নব্যবঙ্গ দলের মূল উদ্দেশ্য : নব্যবঙ্গ দলের মূল উদ্দেশ্য ছিল—
( ১ ) জনসাধারণের মধ্যে যুক্তিবাদ প্রতিষ্ঠা ;
( ২ ) হিন্দুসমাজে প্রচলিত ধর্মীয় ও সামাজিক গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরোধিতা করা এবং
( ৩ ) আধুনিক ও যুক্তিবাদী পাশ্চাত্য চিন্তাধারা ও শিক্ষার বিস্তার ঘটানো ।
নব্যবঙ্গ দলের কার্যকলাপ : ডিরোজিওর ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ছাত্ররা –
( ১ ) বিভিন্ন পত্রপত্রিকা , সভাসমিতি ও প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে প্রগতিশীল ধ্যানধারণা প্রচার করেন । ডিরোজিওর ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন প্যারীচাঁদ মিত্র , রামতনু লাহিড়ি , দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় , কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ।
( ২ ) ইয়ং বেঙ্গলের সদস্যরা তাঁদের পত্রিকাগুলোর মাধ্যমে হিন্দুসমাজের বহুবিবাহ , নারীশিক্ষা , জুরির বিচার , সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখালেখি শুরু করেন ও তাঁদের সুচিন্তিত মতামত দেন ।
সমালোচনা : সমাজের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগসূত্র না থাকায় সমাজজীবনে ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি । সবচেয়ে বড়ো কথা , দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাঁরা পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ করতে আগ্রহী ছিলেন । এই কারণে ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীকে ‘ নকলনবীশের দল ‘ বলে মন্তব্য করেছেন ।
উপসংহার : নানান সমালোচনা সত্ত্বেও ইয়ং বেঙ্গল অনুগামীদের সত্যানুসন্ধানী মনোভাব , দেশাত্মবোধ ও সংস্কৃতি চেতনা উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণকে সমৃদ্ধ করেছিল ।