মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় – অভিব্যক্তি ও অভিযোজন প্রশ্নোত্তর পরীক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ে জীবের পরিবেশগত অভিযোজন ও আচরণগত পরিবর্তনের বিষয়গুলি সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। নিচের প্রশ্নোত্তরগুলি মাধ্যমিক ২০২৬ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিশেষ সহায়ক হবে।
Madhyamik Life Science Chapter 4 Question Answer: মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান ২০২৬ পরীক্ষার্থীদের জন্য চতুর্থ অধ্যায় ‘অভিব্যক্তি ও অভিযোজন’ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায়ে আমরা জীবদেহে বিভিন্ন অভিব্যক্তি, পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর প্রক্রিয়া তথা অভিযোজন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারি। পরীক্ষায় বহুবার এখান থেকে MCQ, সংক্ষিপ্ত ও ব্যাখ্যাসহ দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর আসে।
এই ব্লগে আমরা দিচ্ছি –
✅ Madhyamik Life Science Chapter 4 Question Answer
✅ মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় ৪: অভিব্যক্তি ও অভিযোজন প্রশ্নোত্তর
✅ গুরুত্বপূর্ণ MCQ, Short Question, Long Question
✅ Chapter 4 PDF ডাউনলোড লিংক ও সাজেশন
✅ 2026 Madhyamik পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য উপযোগী সম্পূর্ণ গাইড
এই প্রশ্নোত্তর গুলো WBBSE মাধ্যমিক বোর্ড অনুসারে সাজানো, যা তোমার Class 10 Life Science (Madhymik 2026 Life Science Chapter 4)প্রস্তুতিতে বিশেষ সহায়ক হবে।
Madhyamik Life Science Chapter 4 Question Answer l মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় – অভিব্যক্তি অভিযোজন প্রশ্নোত্তর
Table of Contents
মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় – অভিব্যক্তি অভিযোজন MCQ প্রশ্নোত্তর| Madhyamik Life Science Question and Answer l Life Science Chapter 4 Bengali MCQ
- ক্যাকটাসের কাঁটা যে অঙ্গের রূপান্তর সেটি হলো
(A) কাণ্ড /
(B) মূল /
(C) পাতা /
(D) ফুল
Ans: (C) পাতা
- আধুনিক ঘোড়ার নাম হলো—
(A) ইওহিপ্পাস /
(B) মেরিচিপ্পাস /
(C) ইকুয়াস /
(D) মেসোহিপ্পাস
Ans: (C) ইকুয়াস
- নীচের কোনটি আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রামকে নির্দেশ করে তা শনাক্ত করো
(A) মশার লার্ভা খাওয়ার জন্য গাপ্পি মাছদের মধ্যে সংগ্রাম
(B) ইঁদুর ধরে খাওয়ার জন্য সাপ ও পেঁচার মধ্যে সংগ্রাম
(C) একই জায়গার ঘাস খাওয়ার জন্য একদল হরিণদের মধ্যে সংগ্রাম
(D) হরিণ শিকারের জন্য একটি জঙ্গলের বাঘদের মধ্যে সংগ্রাম ।
Ans: (B) ইঁদুর ধরে খাওয়ার জন্য সাপ ও পেঁচার মধ্যে সংগ্রাম
- ল্যামার্কের তত্ত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত শব্দগুচ্ছটি সঠিকভাবে নিরুপণ করো
(A) অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম
(B) প্রকরণের উৎপত্তি
(C) অর্জিত গুণের বংশানুসরণ
(D) প্রাকৃতিক নির্বাচন ।
Ans: (C) অর্জিত গুণের বংশানুসরণ
- পায়রার ফুসফুসের সঙ্গে যুক্ত বায়ুথলির সংখ্যা—
(A) 7 /
(B) 9 /
(C) 11 /
(D) 13
Ans: (B) 9
- নীচের কোন প্রাণীটি বিশেষ নৃত্যভঙ্গি দ্বারা নিজ দলের অন্য সদস্যদের সাথে খাদ্যের উৎস সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদান করে তা শনাক্ত করো (A) শিম্পাঞ্জি
(B) আরশোলা
(C) ময়ূর
(D) মৌমাছি ।
Ans: (D) মৌমাছি ।
- তিমির ফ্লিপার , পাখির ডানা ও মানুষের হাত হলো—
(A) সমসংস্থ অঙ্গ /
(B) সমবৃত্তীয় অঙ্গ /
(C) নিষ্ক্রিয় অঙ্গ /
(D) কোনোটিই নয় ।
Ans: (A) সমসংস্থ অঙ্গ
- কুমিরের হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠের সংখ্যা
(A) 2 /
(B) 3 /
(C) 4 /
(D) 13
Ans: (C) 4
- ‘ ফিলোজফিক জুলজিক ‘ গ্রন্থটির লেখক হলেন
(A) মেন্ডেল /
(B) ডারউইন /
(C) অ্যারিস্টটল /
(D) ল্যামার্ক
Ans: (D) ল্যামার্ক
- সমসংস্থ অঙ্গ হলো—
(A) তিমির প্যাডেল , পাখির ডানা ও মানুষের হাত /
(B) পতঙ্গের ডানা /
(C) পাখির ডানা /
(D) উপরের কোনোটিই নয়
Ans: (A) তিমির প্যাডেল , পাখির ডানা ও মানুষের হাত
- জীবন সৃষ্টির সময় আদিম পরিবেশে নীচের কোনটি অনুপস্থিত ছিল ?
(A) CH , /
(B) NH , /
(C) CO ,
(D) O² ,
Ans: O²
- শ্বাসমূল ( নিউম্যাটাফোর ) দেখা যায়-
(A) পদ্ম /
(B) সুন্দরী /
(C) ক্যাকটাস /
(D) সবক’টিতে
Ans: (B) সুন্দরী
- মৌমাছির চক্রাকার নৃত্য সাহায্য করে—
(A) বাসস্থান সন্ধানে /
(B) প্রজননের জন্য /
(C) খাদ্যের সন্ধানে /
(D) শত্রুর হাত থেকে বাঁচার জন্য
Ans: (C) খাদ্যের সন্ধানে
- বাষ্পমোচন হ্রাসে পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়—
(A) পদ্ম /
(B) ওপানশিয়া /
(C) সুন্দরী /
(D) সবক’টিতে
Ans: (B) ওপানশিয়া
মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় – অভিব্যক্তি অভিযোজন অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer l Madhyamik Life Science Chapter 4 Question Answer
- একটি জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদের উদাহরণ দাও ।
Ans: গিংক্গো বাইলোবা ।
- আলুর স্ফীতকন্দ ও ফণীমনসার পর্ণকাণ্ড কী জাতীয় অঙ্গ ?
Ans: সমসংস্থ অঙ্গ ।
- মৌমাছিদের ভাষা 1967 খ্রিস্টাব্দে কোন বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেন ?
Ans: কার্ল ভন ফ্রিশ ।
- জীবাশ্ম বিষয়ক বিদ্যাকে কী বলে ?
Ans: প্রত্ন জীববিদ্যা বাপ্যালিওণ্টলজি ।
- মানুষের একটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গের নাম লেখো ।
Ans: অ্যাপেনডিক্স ।
- প্রথম উৎপন্ন নিউক্লিক অ্যাসিডটির নাম কী ?
Ans: RNAT .
- উভচর প্রাণীর হৃৎপিণ্ডে কয়টি প্রকোষ্ঠ ?
Ans: তিনটি ।
- ডারউইন কোন গ্রন্থে তাঁর ‘ প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদ ’ – এর ব্যাখ্যা দেন ?
Ans: ‘ অন দ্য অরিজিন অব স্পেসিস বাই মিস অব ন্যাচারাল সিলেকশন ’ গ্রন্থে ।
- বিবর্তনের ফলে উৎপন্ন কার্যহীন অঙ্গকে কী বলে ?
Ans: নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলে ।
- জীবের উৎপত্তি সম্পর্কিত জৈবরাসায়নিক মতবাদের প্রশ্ন : প্রবক্তা কে ?
Ans: ওপারিন ও হ্যালডেন ।
- বায়োজেনি কী ?
Ans: আদিম কোশের উৎপত্তি ও জীবনের বিবর্তনের ঘটনা ।
- প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদের প্রবক্তা কে ?
Ans: চার্লস ডারউইন ।
- কুমিরের হৃৎপিণ্ডে প্রকোষ্ঠ সংখ্যা কত ?
Ans: চার প্রকোষ্ঠ ।
- কোশের অগ্রদূত কাকে বলা হয় ?
Ans: কোয়াসারভেটকে ।
- মৌমাছির বার্তা আদান প্রদানে কোন কোন নৃত্য সাহায্য করে ?
Ans: চক্রাকার নৃত্য ও ওয়াগ্টেল নৃত্য ।
- ‘ ব্যবহার ও অপব্যবহার ‘ কার মতবাদ ?
Ans: ল্যামার্কের ।
Madhyamik Life Science Chapter 4 Question Answer l মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় – অভিব্যক্তি অভিযোজন সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer
- মৌমাছিদের বার্তা আদান – প্রদান কৌশল সংক্ষেপে লেখো ।
Ans: মৌমাছিদের সামাজিক জীব বলে । এদের মধ্যে বার্তা আদান – প্রদানের উন্নত প্রক্রিয়া দেখা যায় । যেসব শ্রমিক মৌমাছি খাবার সন্ধান করে তাদের স্কাউট বলে । খাবারের সন্ধান পেলে শ্রমিক মৌমাছি দুই প্রকার নৃত্য করে—
চক্রাকার নৃত্য : যখন খাদ্যের উৎস 100 মিটারের মধ্যে ।
ওয়াল নৃত্য : যখন খাদ্যের উৎস 100 মিটারের বেশি তখন এই প্রকার নৃত্য করে । এটি দেখতে ইংরেজি 8 – এর মতো ।
- উটের জলক্ষয় কমানোর দু’টি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।
Ans: উটের জলক্ষয় কমানোর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য – এদের চামড়া রোমযুক্ত এবং পুরু আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে । ফলে বাষ্পীভবন কম হয় । ও এরা রেচন পদার্থকে শুষ্ক ইউরিক হিসেবে দেহ থেকে ত্যাগ করে । দেহে জলের পরিমাণ কমে গেলে এরা ঘন মূত্র ত্যাগ করে এবং দেহের জল সংরক্ষণ করে ।
- উটের RBC- এর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো ।
Ans: উটের RBC ( লোহিত রক্তকণিকা ) ডিম্বাকার এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত হয় । উটের ডিহাইড্রেশনের সময় অভিস্রবণীয় চাপের তারতম্য বা বেশি পরিমাণে জলগ্রহণ করলেও অভিস্রবণীয় চাপের কম বা বেশিতে RBC ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না । কারণ RBC- র পর্দার প্রসারণ ক্ষমতা অনেক বেশি ।
- সমসংস্থ অঙ্গ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও
Ans: যেসব অঙ্গ উৎপত্তি ও গঠনগতভাবে এক কিন্তু কার্যগতভাবে আলাদা তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে ।
উদাহরণ : পাখির ডানা , মানুষের হাত ।
- জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি কাকে বলে ?
Ans: যে মন্থর অথচ গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূর্বপুরুষ অর্থাৎ উদ্ংশীয় সরল জীব থেকে নতুন ধরনের অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি বলে ।
- দুইটি জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদের উদাহরণ দাও ।
Ans: জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদ – সাইকাস , গিংক্গো বাইলোবা ।
- বায়োজেনেটিক সূত্র কাকে বলে ?
Ans: হেকেল বায়োজেনেটিক সূত্রের প্রবক্তা । তাঁর মতানুসারে প্রতিটি জীব ভ্রুণ অবস্থায় খুব অল্পসময়ের জন্য হলেও পূর্বপুরুষের আকৃতি ও গঠনকে পুনরাবৃত্তি করে , একে ‘ অনটোজেনি রিপিটস ফাইলোজেনি ‘ বা বায়োজেনেটিক সূত্র বলে ।
- জীবাশ্ম কাকে বলে ?
Ans: জীবের সম্পূর্ণ দেহ বা দেহের কোনো অংশ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পাললিক হ º = শিলাস্তরে চাপা পড়ে থাকার ফলে জীবের সামগ্রিক বা দেহাংশের ছাপ বা ছাঁচ সংরক্ষিত হন থাকলে তাকে জীবাশ্ম বলে ।
- অপসারী অভিব্যক্তি কাকে বলে ?
Ans: উৎপত্তি ও গঠনগতভাবে একইরকমের অঙ্গযুক্ত জীবদেহে বিভিন্ন পরিবেশে অভিযোজনের জন্য যে বিবর্তন দেখা যায় তাকে অপসারী অভিব্যক্তি বলে । উদাহরণ : ঘোড়ার অগ্রপদ , মানুষের হাত , তিমির ফ্লিপার ইত্যাদি অঙ্গের উৎপত্তি ও গঠন একই কিন্তু কাৰ্য আলাদা ৷
- ভেনাস হৃৎপিণ্ড কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
Ans: মাছের তৃৎপিণ্ডে সর্বদা কার্বন ডাই – অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত প্রবাহিত হয় । তাই মাছের হৃৎপিণ্ডকে ভেনাস হৃৎপিণ্ড বলে ।
- জীবন্ত জীবাশ্ম কাকে বলে ?
Ans: যেসকল জীব বহুবছর ধরে কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই পৃথিবীতে বেঁচে আছে অথচ তাদের সমসাময়িক ও সমগোত্রীয় জীব অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে , তাদের জীবন্ত জীবাশ্ম বা লিভিং ফসিল বলে ।
উদাহরণ : পেরিপেটাস নামক সন্ধিপদ প্রাণী , সিলাকান্ধ নামক মাছ , হংসচঞ্জু নামক স্তন্যপায়ী প্রাণী ইত্যাদি হলো জীবন্ত জীবাশ্মের উদাহরণ ।
Madhyamik Life Science Chapter 4 Question Answer l মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় – অভিব্যক্তি অভিযোজন রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer
- ল্যামার্কের অভিব্যক্তি সংক্রান্ত তত্ত্বের প্রতিপাদ্যের প্রধান দুটি বিষয় বর্ণনা করো । হৃৎপিন্ডের তুলনামূলক অংঙ্গসংস্থান কীভাবে অভিব্যক্তি মতবাদের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে কাজ করে ?
Ans: 1. অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহারের সূত্র : পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজিত হওয়ার সময় কোনো কোনো অঙ্গ খুব বেশি ব্যবহার হওয়ার ফলে সবল ও সুগঠিত হয় । অন্যদিকে , কোনো কোনো অঙ্গ কম ব্যবহার হওয়ায় ধীরে ধীরে দুর্বল হয় এবং অবলুপ্ত হয়ে যায় । এটি অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহারের সূত্র নামে পরিচিত ।
- অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার সূত্র : ল্যামার্কের মতে পরিবেশে অভিযোজিত হওয়ার সময় যেসব বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয় বা উৎপন্ন হয় তা বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয় এবং জীবের বিবর্তনে সাহায্য করে । এটি অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার সূত্র বা অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ সূত্র নামে পরিচিত ।
যে মন্থর অথচ গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূর্বপুরুষ অর্থাৎ উদ্বংশীয় সরল জীব থেকে নতুন ধরনের অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব ঘটে , তাকে বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি বলে ।
বিভিন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীর হৃৎপিণ্ডের তুলনামূলক অঙ্গসংস্থান থেকে অভিব্যক্তির প্রমাণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় । মাছ , উভচর , সরীসৃপ , পক্ষী ও স্তন্যপায়ীর হৃৎপিণ্ড ক্রমান্বয়ে জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে । মাছের হৃৎপিণ্ড একটি অলিন্দ ও একটি নিলয় নিয়ে গঠিত । অলিন্দ দু’টি পর্দা দিয়ে পৃথক থাকায় দূষিত ও বিশুদ্ধ রক্ত পৃথক থাকে কিন্তু নিলয়ে একটি প্রকোষ্ঠ থাকায় দুইপ্রকার রক্ত মিশে যায় । সরীসৃপের দু’টি অলিন্দ এবং নিলয়টি অর্ধবিভক্ত , তাই দুইপ্রকার রক্ত পৃথক করার প্রবণতা লক্ষ করা যায় । পক্ষী ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর হৃৎপিণ্ড দু’টি অলিন্দ ও দুটি নিলয়যুক্ত , তাই দূষিত ও বিশুদ্ধ রক্ত পৃথকভাবে প্রবাহিত হয় । হৃৎপিণ্ডের গঠনগত পরিবর্তন থেকে সিদ্ধান্তে আসা যায় যে এরা সকলেই একই উদ্ংশীয় জীব থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনের ফলে ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে ।
- বিবর্তনের সপক্ষে ঘোড়ার জীবাশ্মের গুরুত্ব সংক্ষেপে বর্ণনা করো ।
Ans: ঘোড়ার বিবর্তন : আধুনিক যুগের ঘোড়া ইকুয়াস ইওসিন যুগের ইওহিপ্পাস নামক শিয়ালের মতো জীব থেকে সৃষ্টি হয়েছে । ঘোড়ার বিবর্তনের মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হলো
- ইওহিপ্পাস : ইওসিন যুগে সৃষ্টি হয় । উচ্চতা 40 cm । এদের অগ্রপদে চারটি ও পশ্চাদ্পদে তিনটি আঙুল ছিল । পেষকদাঁত খাঁজবিহীন । ইওহিপ্পাস থেকে মেসোহিপ্পাসের আবির্ভাব হয় ।
- মেসোহিপ্পাস : অলিগোসিন যুগে আবির্ভাব ঘটে । উচ্চতা 60 cm । দেখতে ভেড়ার মতো , অগ্র ও পশ্চাদ্পদে তিনটি আঙুল এবং মাঝের আঙুল মজবুত এবং লম্বা । তৃণভূমিতে বাস করত । মেসোহিপ্পাস থেকে মেরিচিপ্পাসের উৎপত্তি হয় ।
- মেরিচিপ্পাস : মায়োসিন যুগে আবির্ভাব ঘটে । অগ্র ও পশ্চাপদে আঙুলের সংখ্যা তিনটি কিন্তু শুধু মাঝেরটি মাটি স্পর্শ করত । উচ্চতা 100 cm , পেষক ও পুরপেষক ক্রাউনযুক্ত । এদের থেকে প্লিওহিপ্পাসের উৎপত্তি হয় ।
- প্লিওহিপ্পাস : প্লায়োসিন যুগে আবির্ভাব ঘটে । উচ্চতা 108 cm , মাঝের আঙুল লম্বা , মজবুত এবং খুরযুক্ত । দেখতে অনেকটা আধুনিক ঘোড়ার মতো । প্লিওহিপ্পাস থেকে বর্তমান ঘোড়ার আবির্ভাব হয় ।
- ইকুয়াস ( আধুনিক ঘোড়া ) : প্লিস্টোসিন যুগে আবির্ভাব হয় । উচ্চতা 1.5-16 | মিটার , মাঝের আঙুল মজবুত ও ক্ষুরযুক্ত । পেষক ও পুরুপেষক ক্রাউনযুক্ত ।
- জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তির সংক্ষিপ্ত রূপরেখা মিলার ও ঊরের পরীক্ষার সাহায্যে বর্ণনা করো ।
Ans: মিলার ও ঊরের পরীক্ষা প্রমাণ করে জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তি সঠিক । তার জন্য তারা একটি বড়ো গোলাকার কাঁচের ফ্লাক্সে CH ,, NH , ও H , গ্যাস 2 : 2 : 1 অনুপাতে নিয়ে জলীয় বাষ্পে রেখে , অন্য একটি গোলতল কাঁচের ফ্লাক্স থেকে ফোটানো জলীয় বাষ্প নলের সাহায্যে ঐ বড়ো ফ্লাক্সে পাঠান । এরপর বড়ো ফ্লাক্সে টাংস্টেন ইলেকট্রোডের সাহায্যে 60,000 ভোল্টের বিদ্যুৎ পাঠান । এবার ঘনীভবন যন্ত্রে উৎপন্ন হওয়া জৈব যৌগ U আকৃতির নলে জলীয় মাধ্যমে জমা হয় । প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই ঘটনা ঘটার পরে তারা উৎপন্ন জৈব যৌগগুলি শনাক্ত করে । তারা পেলেন গ্লাইসিন , অ্যালানিন ইত্যাদি অ্যামাইনো অ্যাসিড । এমনকী তাঁরা অ্যাডেনিনও পেয়েছিলেন ।
এই পরীক্ষা থেকেই রাসায়নিক সংশ্লেষবাদ , জীবন উৎপত্তির ক্ষেত্রে বড় প্রমাণ সত্য হিসাবে পরিগণিত হয় । অর্থাৎ সরল যৌগ থেকেই ধীরে ধীরে জটিল জৈব যৌগের উৎপত্তি ।
- নয়া ডারউইনবাদ বলতে কী বোঝায় ? ডারউইনবাদের ত্রুটি উল্লেখ করো ।
Ans: ভাইসম্যান , হুগো দ্য ভ্রিস , গোল্ডস্মিথ , হ্যালডেন প্রমুখ বিজ্ঞানী ডারউইনের তত্ত্বকে বা মতবাদকে নতুন করে আণবিক জীববিদ্যা , জেনেটিক্স , বাস্তুবিদ্যা প্রভৃতির আলোকে বর্ণনা করেছেন যা নয়া ডারউইনবাদ বা আধুনিক সংশ্লেষণবাদ [ Modern Synthetic Theory ] নামে পরিচিত ।
ডারউইনবাদের ত্রুটি : 1) ডারউইন দেহকোশ ও জননকোশের প্রকরণকে পৃথক করতে পারেননি । 2) ডারউইন প্রকরণের বর্ণনা করলেও প্রকরণের উৎপত্তির কারণ বর্ণনা করেননি । 2) ডারউইন যোগ্যতমের উদ্বর্তন বর্ণনা করলেও এর কারণ সঠিকভাবে বর্ণনা করতে পারেননি । 4) ডারউইন পরিব্যক্তি বা মিউটেশনকে ‘ প্রকৃতির খেলা ‘ বলেছিলেন ।
- জলজ অভিযোজনে রুই মাছের পটকার এবং খেচর প্রাণী হিসেবে পায়রার বায়ুথলির গুরুত্ব আলোচনা করো ।
Ans: রুই মাছের পটকার ভূমিকা : রুই মাছের জলজ অভিযোজনে পটকা অন্যতম ভূমিকা পালন করে । রুই মাছের পটকা দেহগহ্বরে অবস্থান করে । পটকা দুই প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট । অগ্রপ্রকোষ্ঠে রেড গ্রন্থি থাকে যা গ্যাস সৃষ্টি করে এবং পশ্চাৎ প্রকোষ্ঠে রেটিয়া মিরাবিলিয়া গ্রন্থি থাকে যা গ্যাস শোষণ করে । পটকাতে গ্যাস উৎপন্ন হলে দেহ হালকা হয় এবং মাছ জলে ভাসে । আবার পটকাতে গ্যাস শোষিত হলে দেহ ভারী হয় এবং মাছ জলের নীচে নেমে যায় । এইভাবে মাছের পটকা মাছকে জলে ভাসতে এবং জলের নীচে নামতে সাহায্য করে ।
পায়রার বায়ুথলির ভূমিকা : বায়ুতে ওড়ার জন্য পায়রার বায়ুথলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । পায়রার ফুসফুসের সঙ্গে 9 টি বায়ুথলি ( Air Sac ) যুক্ত থাকে । বায়ুথলিগুলি বায়ুপূর্ণ থাকার জন্য দেহ হালকা হয় , ফলে সহজেই পায়রা উড়তে পারে । বায়ুথলি ওড়ার সময় দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ।
- অভিব্যক্তির সপক্ষে পরোক্ষ প্রমাণ হিসেবে মেরুদণ্ডী প্রাণীদের অগ্রপদের সদৃশ ব্যাখ্যা করো ।
অথবা , সমসংস্থ অঙ্গ বলতে কী বোঝায় ? উদাহরণ দিয়ে বোঝাও ।
Ans: সমসংস্থ অঙ্গ : বিভিন্ন প্রকার প্রাণীর যে সকল অঙ্গ উৎপত্তিগত ও গঠনগতভাবে একই কিন্তু কার্য আলাদা তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বা হোমোলোগাস অর্গান ( Homologous organ ) বলে ।
উদাহরণ : পাখির ডানা , বাদুড়ের ডানা , সিল বা তিমির অগ্রপদ ( ফ্লিপার ) , ঘোড়ার অগ্রপদ এবং মানুষের অগ্রপদ ( হাত ) হলো সমসংস্থ অঙ্গ । কারণ এদের উৎপত্তি ও গঠন একই রকমের । প্রত্যেকটি অঙ্গ হিউমেরাস , রেডিয়াস ও আলনা , করপাল , মেটাকরপাল এবং ফ্যালেঞ্জস অস্থি নিয়ে গঠিত এবং প্রত্যেকটি পেকটোরাল গার্ডেল নামক হাড়ের সঙ্গে যুক্ত । বিভিন্ন প্রকার কাজ করে , যেমন— পাখি ও বাদুড়ের অগ্রপদ ওড়ার জন্য , তিমির অগ্রপদ ( ফ্লিপার ) সাঁতার কাটার জন্য , ঘোড়ার অগ্রপদ দৌড়ানোর জন্য , মানুষের অগ্রপদ বিভিন্ন প্রকার কাজ করার জন্য ব্যবহার হয় ।
সমসংস্থ অঙ্গগুলি থেকে বোঝা যায় যে উক্ত জীবগুলির উৎপত্তি একই জায়গা থেকে অর্থাৎ পূর্বপুরুষ একই কিন্তু বিভিন্ন পরিবেশে বসবাসের জন্য অভিযোজনের ফলে বিভিন্ন অঙ্গের গঠনগত পরিবর্তন হয়েছে ।
- ল্যামার্কের মতবাদের সপক্ষে এবং বিপক্ষে একটি করে উদাহরণ দাও । ল্যামার্কবাদের সঙ্গে ডারউইনবাদের পার্থক্য লেখো ।
Ans: ল্যামার্কবাদের সপক্ষে উদাহরণ : ল্যামার্কের মতে বহুবছর আগে ছোটো গলাযুক্ত জিরাফের আবির্ভাব হয়েছিল । পরবর্তীকালে ঘাস ও ছোটো উদ্ভিদ হ্রাস পাওয়ার কারণে খাদ্যাভাব দেখা দেয় , ফলে জিরাফ উঁচু গাছের পাতা খাওয়ার চেষ্টা করে এবং কালক্রমে লম্বা গলা ও লম্বা পাযুক্ত জিরাফের আবির্ভাব হয় ।
ল্যামার্কের মতবাদের বিপক্ষে উদাহরণ : বিজ্ঞানী ভাইসম্যান ইঁদুরের ওপরে পরীক্ষা করে ল্যামার্কের মতবাদকে ভুল বলে যুক্তি দেন । তিনি প্রথমে একজোড়া ইঁদুর দম্পতির লেজ কেটে দেন এবং প্রজনন ঘটান । দেখা গেল অপত্যদের লেজ আছে । তিনি এইভাবে 35 জনু পর্যন্ত লেজ কাটলেন , তা সত্ত্বেও লেজবিহীন ইঁদুর সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি ।
- জীবাশ্ম কাকে বলে ? জীবাশ্মের গুরুত্ব লেখো ।
Ans: জীবাশ্ম : দীর্ঘকাল যাবৎ ভূগর্ভের পাললিক শিলাস্তরে চাপা পড়ে থাকা জীবের সমগ্র দেহ বা আংশিক দেহ বা ছাপকে জীবাশ্ম বলে । জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞানকে প্রত্নজীববিদ্যা বা প্যালেনটোলজি বলে ।
জীবাশ্মের গুরুত্ব – 1) জীবাশ্ম অভিব্যক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে ।
2) জীবাশ্ম আধুনিক যুগের জীবের পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে সাহায্য করে ।
3) জীবাশ্ম প্রাণী বা উদ্ভিদের বয়স ও সৃষ্টির সময়কাল জানতে সাহায্য করে ।
4) জীবাশ্ম লুপ্ত প্রাণী ও উদ্ভিদের ভৌগোলিক বিস্তার জানতে সাহায্য করে ।
5) জীবাশ্ম দু’টি ভিন্ন গোষ্ঠীর প্রাণী বা উদ্ভিদের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী জীবের অধ্যয়নে এবং এক প্রকার জীব থেকে অপর প্রকার জীবের উৎপত্তির বিষয়ে ধারণা দিতে সাহায্য করে ।
- অভিযোজন কাকে বলে ? অভিযোজনের তিনটি গুরুত্ব লেখো ।
Ans: সংজ্ঞা : পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য জীবদেহের গঠনগত , শারীরবৃত্তীয় এবং আচরণগত স্থায়ী পরিবর্তন যা বিবর্তনে সাহায্য করে তাকে অভিযোজন বলে । — অভিযোজনের গুরুত্ব বা উদ্দেশ্য 1) পরিবর্তনশীল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে । 2) অভিযোজন প্রতিকূল পরিবেশকে সহজে অতিক্রম করতে সাহায্য করে । 3) অভিযোজন জীবকে আত্মরক্ষায় সাহায্য করে ।
- জাঙ্গল উদ্ভিদ বা জেরোফাইট কাকে বলে ? ক্যাকটাসের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।
Ans: জেরোফাইট : ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ যেমন ফণীমনসা , শতমূলী ইত্যাদি | শুষ্ক ও বালুকাময় পরিবেশে জন্মায় । এদের জাঙ্গল বা জেরোফাইট বলে । এদের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি হলো—
কাণ্ড : 1) কাণ্ড রসালো , সবুজ ও চ্যাপ্টা । একে পর্ণকাণ্ড বলে ( ফণীমনসা ) । খর্বাকার এবং কাষ্ঠল হয় । 2) বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য কাণ্ডের ত্বক পুরু , কিউটিকলযুক্ত ।
মূল : 1) মূল সুগঠিত , দীর্ঘ ও শাখাপ্রশাখাযুক্ত ।
পাতা : 1) বাষ্পমোচনের হার কমানোর জন্য পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত ।
- নিম্নলিখিত অঙ্গগুলির অভিযোজনগত গুরুত্ব উল্লেখ করো । – 1) সুন্দরীর শ্বাসমূল , 2) ক্যাকটাসের পাতা , 3) রুই মাছের পটকা , 4) পায়রার বায়ুথলি ।
Ans: 1. সুন্দরীর শ্বাসমূল : লবণাক্ত মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকায় বেশ কিছু শাখা – প্রশাখা , মূল মাটির উপরে উঠে আসে । এদের শ্বাসমূল বলে । শ্বাসমূলের অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে উদ্ভিদ অক্সিজেন গ্রহণ করে ।
- ক্যাকটাসের পাতা : বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য ক্যাকটাসের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে ।
- রুই মাছের পটকা : রুই মাছের পটকা মাছকে জলের উপরে ভাসতে ও জলের নীচে নামতে সাহায্য করে ।
- পায়রার বায়ুথলি : পায়রার বায়ুথলি দীর্ঘক্ষণ ওড়ার সময় অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ।
- উটের লোহিত রত্তকণিকার আকৃতি : উটের লোহিত রক্তকণিকা তুলনামূলকভাবে বড়ো , ডিম্বাকার ও নিউক্লিয়াসযুক্ত । ফলে উট অভিস্রবণীয় চাপের তারতম্য সহ্য করতে পারে । বেশি পরিমাণে জলগ্রহণ করলেও লোহিত রক্তকণিকা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না ।
আরো পড়ুনঃ