Madhyamik History Chapter 1 Questions – Itihaser Dharona: মাধ্যমিক ২০২৬ পরীক্ষার্থীদের জন্য ইতিহাস একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে প্রথম অধ্যায় “ইতিহাসের ধারণা” (Madhyamik History Chapter 1 Questions: Itihaser Dharona) থেকে প্রায় প্রতি বছরই নানান ধরনের প্রশ্ন আসে – যেমন MCQ, SAQ, LAQ। তাই এই অধ্যায় ভালোভাবে অনুশীলন করা অত্যন্ত জরুরি।
এই ব্লগে আমরা তুলে ধরেছি মাধ্যমিক ইতিহাস ২০২৬-এর জন্য এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর, সংস্কার ও রেনেসাঁ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত এবং বহু নির্বাচনী প্রশ্ন, এবং অধ্যায়ভিত্তিক সাজেশন। Madhyamik History Chapter 1 questions, Madhyamik 2026 History SAQ, ইতিহাস MCQ প্রশ্ন মাধ্যমিক ইত্যাদি কিওয়ার্ড অনুসরণ করে আমরা প্রস্তুত করেছি পরীক্ষায় সহায়ক একটি সম্পূর্ণ গাইড।
✅ যারা Madhyamik History Bengali Notes খুঁজছেন বা মাধ্যমিক ইতিহাস প্রস্তুতিতে চূড়ান্ত গাইড চান, তাদের জন্য এই পোস্টটি হবে অমূল্য।
👉 চলুন জেনে নিই মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর এবং প্রস্তুত হই ২০২৬ সালের পরীক্ষার জন্য।
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়: ইতিহাসের ধারণা MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Chapter 1 Questions – Itihaser Dharona
Table of Contents
- ইতিহাস হল –
(A) বর্তমানের বাস্তবতার অনুসন্ধান
(B) ভবিষ্যৎ – বিশ্লেষণ
(C) কোনোটিই নয়
(D) অতীতের বাস্তবতার অনুসন্ধান
Ans: (D) অতীতের বাস্তবতার অনুসন্ধান
- ইতিহাস চর্চাকারী ব্যক্তি যে নামে পরিচিত , তা হল –
(A) প্রত্নতাত্ত্বিক
(B) ভূ – তত্ত্ববিদ
(C) ঐতিহাসিক
(D) নৃ – তাত্ত্বিক
Ans: (C) ঐতিহাসিক
- ইতিহাসের জনক ‘ নামে পরিচিত হলেন –
(A) হেরোডোটাস
(B) জোশেফাস
(C) থুকিডিডিস
(D) ট্যাসিটাস ফ্ল্যাবিয়াস
Ans: (A) হেরোডোটাস
- ‘ হিস্টোরিয়া ‘ ( Historia ) নামক শব্দ থেকে ‘ হিস্ট্রি ‘ ( History ) কথার উদ্ভব , শব্দটি হল—
(A) ইংরেজি শব্দ
(B) গ্রিক শব্দ
(C) স্পেনীয় শব্দ
(D) জার্মান শব্দ
Ans: (B) গ্রিক শব্দ
- পেশাদারি ইতিহাস রচনা শুরু করেন –
(A) লিওপোল্ড র্যাঙ্কে
(B) মার্ক ব্লখ
(C) জুরগেন কোকা
(D) লুসিয়েন ফেভর
Ans: (A) লিওপোল্ড র্যাঙ্কে
- ঐতিহাসিক তথ্য বলতে বোঝায়-
(A) অতীত ঘটনা
(B) ঐতিহাসিক গল্প – কথা
(C) সমসাময়িক ঘটনা
(D) অতীতের নথিবদ্ধ তথ্য
Ans: D) অতীতের নথিবদ্ধ তথ্য
- ঐতিহাসিক তথ্যের ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ নির্ভরকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল –
(A) তথ্যের ব্যবহারকারী
(B) পাঠকদের মানসিকতা
(C) উপাদানের প্রাচুর্য
(D) উপাদানের দুষ্প্রাপ্যতা
Ans: (A) তথ্যের ব্যবহারকারী
- “ ইতিহাস হল অতীত ও বর্তমানের অন্তহীন কথোপকথন ” — এই মন্তব্যটি কার ?
(A) থুকিডিডিস
(B) লর্ড অ্যাকটন
(C) এডমন্ড বার্ক
(D) ই . এইচ . কার
Ans: (D) ই . এইচ . কার
- “ তথ্য অনুসন্ধানের আগে ঐতিহাসিককে অনুধাবন করুন ” – এই মন্তব্যটি কার ?
(A) ডব্লু , হান্টার
(B) জে . বি . বিউরি
(C) জি . এম . ট্রেভেলিয়ান
(D) লর্ড অ্যাকটন
Ans: (C) জি . এম . ট্রেভেলিয়ান
- “ যে ইতিহাস আমরা পড়ি তা তথ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হলেও তা সঠিকভাবে তথ্যভিত্তিক নয় , বরণ এক সারি স্বীকৃত অভিমত ” —এ কথা কে বলেছেন ?
(A) লিওপোল্ড র্যাঙ্কে
(B) ই . এইচ . কার
(C) লর্ড অ্যাকটন
(D) জি . ব্যারাক্ল
Ans: (D) জি . ব্যারাক্ল
আরোও দেখুন:
- ‘ অ্যানালস ‘ পত্রিকা গোষ্ঠী গড়ে উঠেছিল ?
(A) ফ্রান্সে
(B) ইংল্যান্ডে
(C) রাশিয়াতে
(D) জার্মানিতে
Ans: (A) ফ্রান্সে
- অ্যানালস পত্রিকার মূল উদ্দেশ্য ছিল—
(A) আঞ্চলিক ইতিহাস
(B) লোকসংস্কৃতি
(C) সামাজিক ইতিহাস
(D) সামরিক ইতিহাস
Ans: (C) সামাজিক ইতিহাস
- ‘ দ্য অ্যানালস ‘ পত্রিকাটি প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন—
(A) কীথ টমাস
(B) লুসিয়েন ফেভর
(C) যদুনাথ সরকার
(D) মার্ক অ্যান্টনি
Ans: (B) লুসিয়েন ফেভর
- রণজিৎ গুহ হলেন—
(A) সাম্রাজ্যবাদী ঐতিহাসিক
(B) জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিক
(C) নিম্নবর্গীয় ঐতিহাসিক
(D) মার্কসবাদী ঐতিহাসিক
Ans: (C) নিম্নবর্গীয় ঐতিহাসিক
- ভারতের প্রথম ইতিহাস গ্রন্থটি হল –
(A) অর্থশাস্ত্র
(B) রাজতরঙ্গিনী
(C) রামচরিতমানস
(D) বাবরনামা
Ans: (B) রাজতরঙ্গিনী
- ভারতে নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চার প্রবক্তা হলেন –
(A) সি . এম . যোশী
(B) রণজিৎ গুহ
(C) এ . এল . রাউজ
(D) দাদাভাই নৌরজী
Ans: (B) রণজিৎ গুহ
- যারা নতুন সামাজিক ইতিহাসের বিষয়বস্তু –
(A) বুদ্ধিজীবী
(B) সাধারণ মানুষ
(C) ভদ্রলোক
(D) চাকরিজীবী
Ans: (B) সাধারণ মানুষ
- নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা শুরু হয় –
(A) ১৯৪০ – এর দশকে
(B) ১৯৬০ – এর দশকে
(C) ১৯৫০ – এর দশকে
(D) ১৯৯০ – এর দশকে
Ans: (B) ১৯৬০ – এর দশকে
- নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার মুখপত্র হল –
(A) সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি
(B) সোশ্যাল হিস্ট্রি
(C) সোসাইটি ফর হিস্ট্রি
(D) দ্য ক্লিওপেট্রা
Ans: (A) সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি
- ইউরোপে ক্রীড়া ইতিহাসের-
(A) ১৯২০ – র দশকে
(B) ১৯৬০ – র দশকে
(C) ১৯৭০ – র দশকে
(D) ১৯৩০ – র দশকে
Ans: (C) ১৯৭০ – র দশকে
আরোও দেখুন: মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – দ্বিতীয় অধ্যায়: সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা
- ক্রিকেট খেলার উদ্ভব হয়েছিল –
(A) জার্মানিতে
(B) ওয়েস্ট ইন্ডিজে
(C) অস্ট্রেলিয়াতে
(D) ইংল্যান্ডে
Ans: (D) ইংল্যান্ডে
- ক্রিকেটের নিয়ম প্রথম রচিত হয় –
(A) ১৭৫০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭১৫ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭২১ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে
- ভারতে ক্রিকেট খেলার সূচনা হয় –
(A) ১৭১৫
(B) ১৭২১
(C) ১৭২০
(D) ১৭২২
Ans: (B) ১৭২১
- ভারতের পারসি ক্রিকেট গিয়েছিল –
(A) ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (D) ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে
- ‘ ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় –
(A) ১৭৫০
(B) ১৭৭০
(C) ১৭৬০
(D) ১৭৯২
Ans: (D) ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে
- আধুনিক হকি খেলার সূচনা হয় –
(A) ফ্রান্সে
(B) ভারতে
(C) পাকিস্তানে
(D) ইংল্যান্ডে
Ans: (D) ইংল্যান্ডে
- ভারতে প্রথম হকি ক্লাব ( ১৮৮৫-১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ) প্রতিষ্ঠিত হয় –
(A) কলকাতায়
(B) মাদ্রাজ – এ
(C) গোয়া – তে
(D) বোম্বাই – এ
Ans: (A) কলকাতায়
- ভারত অলিম্পিক গেমস – এ প্রথমবার হকি প্রতিযোগিতায় যোগ দেই –
(A) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে
- ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে আই . এফ . দলের অধিনায়ক ছিলেন –
(A) গোষ্ঠ পাল
(B) চুনি গোস্বামী
(C) শৈলেন মান্না
(D) শিবদাস ভাদুড়ী
Ans: (D) শিবদাস ভাদুড়ী
- ভারতের প্রথম আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রিকেটার ছিলেন—
(A) দলিপ সিংজি
(B) রণজিৎ সিংহ
(C) সি . কে . নাইডু
(D) রণজিৎ সিংজি
Ans: (D) রণজিৎ সিংজি
- ভারতে ফুটবল খেলা প্রবর্তন –
(A) ইংরেজরা
(B) ফরাসিরা
(C) ওলন্দাজরা
(D) পোর্তুগিজরা
Ans: (A) ইংরেজরা
- ভারতে প্রথম প্রদর্শিত চলচ্চিত্র –
(A) জামাইষষ্ঠী
(B) মেলোডি অব লাভ
(C) সাড়ে চুয়াত্তর
(D) পথের পাঁচালী
Ans: (B) মেলোডি অব লাভ
- ভারী পোশাক ব্যবহার করা হয়-
(A) উষ্ণ আবহাওয়ায়
(B) নাতিশীতোয় আবহাওয়ায়
(C) শীতপ্রধান এলাকায়
(D) মরুভূমি এলাকায়
Ans: (C) শীতপ্রধান এলাকায়
- বাঙালির জাতীয় পোশাক—
(A) পাজামা – পাঞ্জাবি
(B) শেরওয়ানি
(C) ধুতি – পাঞ্জাবি
(D) শার্ট – প্যান্ট
Ans: (C) ধুতি – পাঞ্জাবি
- পোশাক সংক্রান্ত ‘ সুম্পটুয়ারি লজ ‘ কঠোরভাবে মেনে চলা হতো –
(A) ইংল্যান্ডে
(B) ফ্রান্সে
(C) চিনে
(D) স্পেনে
Ans: (B) ফ্রান্সে
- ফ্রান্সে নী রিচ ( knee breeches ) ব্যবহার করার অধিকারী ছিল –
(A) অভিজাতরা
(B) কৃষকরা
(C) শ্রমিকরা
(D) সাঁ – কুলোত্রা
Ans: (A) অভিজাতরা
- ফরাসি বিপ্লবকালে ফ্রান্সে লাল টুপি ছিল –
(A) সাম্যের প্রতীক
(B) বিপ্লবের প্রতীক
(C) স্বাধীনতার প্রতীক
(D) মৈত্রীর প্রতীক
Ans: (C) স্বাধীনতার প্রতীক
- ষোড়শ শতকে ফ্রান্স ও ইটালি থেকে আমদানিকৃত সামগ্রী দ্বারা নির্মিত ভেলভেট টুপি খুব জনপ্রিয় ছিল—
(A) জার্মানিতে
(B) অস্ট্রিয়াতে
(C) প্রাশিয়ায়
(D) ইংল্যান্ডে
Ans: (D) ইংল্যান্ডে
- ইংল্যান্ডে নারীর ভোটাধিকারের পাশাপাশি পোশাক সংক্রান্ত আন্দোলনের সূচনা হয় –
(A) ১৮২০ – এর দশকে
(B) ১৮৩০ – এর দশকে
(C) ১৮৪০ – এর দশকে
(D) ১৮৫০ – এর দশকে
Ans: (B) ১৮৩০ – এর দশকে
- নারীদের পোশাক – পরিচ্ছদ সংক্রান্ত সংস্কারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব অ্যামিলিয়া ব্লুমার ছিলেন—
(A) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক
(B) ইংল্যান্ডের নাগরিক
(C) ফ্রান্সের নাগরিক
(D) রাশিয়ার নাগরিক
Ans: (A) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক
- নারীদের পসার পরিচ্ছেদে ব্যপকবসংক্রমর ক্ষেত্রে গুরুত্ব লাভ করে –
(A) ট্রাউজারের ব্যবহার
(B) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর
(C) ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর
(D) রুশ – জাপান যুদ্ধের পর
Ans: (B) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে নারীদের পোশাক –
পরিচ্ছদের –
(A) সপ্তদশ শতকে
(B) উনিশ শতকে
(C) বিশ শতকে
(D) উনিশ শতকে
Ans: (C) বিশ শতকে
- ভারতে পাশ্চাত্য পোশাকের ব্যবহার শুরু হয় –
(A) অষ্টাদশ শতকে
(B) উনিশ শতকে
(C) বিশ শতকে
(D) সপ্তদশ শতকে
Ans: (B) উনিশ শতকে
- উনিশ শতকে বাঙালি ‘ বাবু’রা ধুতির সঙ্গে যে পোশাক পরিধান শুরু করে , তা হল –
(A) কোট
(B) বুট জুতো
(C) টুপি
(D) উপরের সবকটি
Ans: (D) উপরের সবকটি
- বিশ শতকের গোড়ায় বাঙালি বাবুদের পাশ্চাত্য পোশাকরীতির ছবি চিত্রে ফুটিয়ে তোলেন –
(A) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(B) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) রবি বর্মা
(D) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
Ans: (B) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ভারতে রেলপথ চালু হয়-
(A) ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (D) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে
- কলকাতায় বৈদ্যুতিক ট্রাম চালু হয়
(A) ১৮৫১
(B) ১৮৮০
(C) ১৮৭৮
(D) ১৯০২
Ans: (D) ১৯০২
- পিচ – দেওয়া রাস্তা নির্মাণ করেন—
(A) ডেনিস পেপিন
(B) জর্জ স্টিফেনসন
(C) জন ম্যাকাডেম
(D) ম্যাথু স্টিভেনস্
Ans: (C) জন ম্যাকাডেম
- ইংল্যান্ডে প্রথম রেলপথ চালু হয় –
(A) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
- ভারতে রেলপথ – টেলিগ্রাফ –
(A) লর্ড আমহার্স্ট
(B) লর্ড ডালহৌসি
(C) লর্ড ক্যানিং
(D) লর্ড ডাফরিন
Ans: (B) লর্ড ডালহৌসি
- টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায় –
(A) ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে
(B) ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে
- ইউরোপে যানবাহনের ব্যবহার শুরু হয়-
(A) ষোড়শ শতকে
(B) অষ্টাদশ শতকে
(C) সপ্তদশ শতকে
(D) উনিশ শতকে
Ans: (D) উনিশ শতকে
- বাষ্পচালিত ইঞ্জিন আবিষ্কৃত হয় –
(A) ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭৫০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (A) ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দে
- হাওড়া থেকে হুগলি রেল চালু হয় –
(A) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে
- পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব সৃষ্টিকারী সুয়েজ খাল খননের প্রক্রিয়া শুরু হয় –
(A) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (B) ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে
- হাজার দুয়ারি বা নবাব প্যালেস ( ১৮৩৭ ক্লি . ) স্থাপত্যটি যেখানে অবস্থিত –
(A) দিল্লিতে
(B) মুরশিদাবাদে
(C) বিষ্ণুপুরে
(D) অযোধ্যায়
Ans: (B) মুরশিদাবাদে
- এদের মধ্যে কোনটি ব্রিটিশ স্থাপত্যের নিদর্শন ?
(A) কলকাতা মেডিকেল কলেজ
(B) আড়াই দিন কা ঝোপড়া
(C) নিবেদিতা ভবন
(D) বিদ্যাসাগর ভবন
Ans: (A) কলকাতা মেডিকেল কলেজ
- হাইকোর্টের বাড়িটি তৈরি হয়েছিল—
(A) গথিক শিল্পরীতি অনুসারে
(B) ডোরিক শিল্পরীতি অনুসারে
(C) টেরাকোটা শিল্পরীতি অনুসারে
(D) চোল শিল্পরীতি অনুসারে
Ans: (A) গথিক শিল্পরীতি অনুসারে
- কলকাতার প্রথম টাকশালটি তৈরি হয় –
(A) পার্ক স্ট্রিটে
(B) হেস্টিংস স্ট্রিটে
(C) ক্লাইভ রো – তে
(D) স্ট্যান্ড রোডে
Ans: (D) স্ট্যান্ড রোডে
- কলকাতার বর্তমান টাকশালটি –
(A) আলিপুরে
(B) সল্টলেক সিটিতে
(C) রাজারহাটে
(D) দমদমে
Ans: (A) আলিপুরে
- স্থানীয় ইতিহাসের আলোচ্য বিষয়গুলি হল –
(A) স্থানীয় ব্যক্তি বা সম্প্রদায়
(B) স্থানীয় স্থাপত্য
(C) স্থানীয় বিষয়
(D) এগুলির সবকটি
Ans: (D) এগুলির সবকটি
Download MCQআরোও দেখুন:-
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারণা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | Madhyamik History Itihaser Dharona Question and Answer
- কে ইতিহাসের জনক ‘ নামে পরিচিত ? অথবা , ইতিহাসের জনক ‘ কাকে বলা হয় ?
Ans: গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস ইতিহাসের জনক ’ নামে পরিচিত ।
- কে ‘ বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাসচর্চার জনক ‘ নামে পরিচিত ?
Ans: গ্রিক ঐতিহাসিক থুকিডিডিস ‘ বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাসচর্চার জনক ‘ নামে পরিচিত ।
- ‘ নিউ সায়েন্স ( ১৭২৫ খ্রি . ) গ্রন্থটির রচয়িতা কে ?
Ans: ইতালির চিন্তাবিদ ভিকো ‘ নিউ সায়েন্স ‘ গ্রন্থটির রচয়িতা ।
- ইতিহাসচর্চায় পেশাদারি পর্বের সূচনা করেন ?
Ans: লিওপোল্ড ভন র্যাঙ্কে ইতিহাসচর্চায় পেশাদারি পর্বের সূচনা 8 করেন ।
- ‘ দ্য অ্যানালস ‘ নামক পত্রিকা করে প্রকাশিত হয় ?
Ans: ‘ দ্য অ্যানালস ‘ নামক পত্রিকাটি প্রকাশিত হয় ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ।
- ‘ দ্য অ্যানালস ‘ ( ১৯২৯ খ্রি . ) পত্রিকাটি কে প্রকাশ করেন ?
Ans: মার্ক ব্লখ ও লুসিয়েন ফেভর নামক দুই ইতিহাসবিদ ‘ দ্য অ্যানালস ‘ পত্রিকাটি প্রকাশ করেন ।
- ‘ হিস্ট্রি ফ্রম বিলো ’ ( History from Below ) প্রবন্ধটি ( ১৯৬৬ খ্রি . ) কে প্রকাশ করেন ?
Ans: ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ই . পি . টমসন ‘ হিস্ট্রি ফ্রম বিলো প্রবন্ধটি প্রকাশ করেন ।
- বিশ শতকের কোন্ সময় থেকে নতুন সামাজিক ইতিহাস চৰ্চা শুরু হয় ?
Ans: ১৯৬০ – এর দশক থেকে নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা শুরু হয় ।
- আর জি কলিংউড লিখিত গ্রন্থের নাম কী ?
Ans: কলিংউড রচিত গ্রন্থটির নাম The Idea of History |
- নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠান ‘ দ্য সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ‘ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠান ‘ দ্য সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ।
- দুজন নিম্নবর্গীয় ( সাবস্টার্ন ) ঐতিহাসিকের নাম লেখো ।
Ans: রণজিৎ গুহ , গৌতম ভদ্র দুজন নিম্নবর্গীয় ঐতিহাসিক ।
- ইউরোপে খেলার ইতিহাসের চর্চা কখন শুরু হয় ?
Ans: ইউরোপে খেলার ইতিহাসের চর্চা শুরু হয় ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে ।
- কবে ‘ ব্রিটিশ সোসাইটি অব স্পোর্টস হিস্ট্রি ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: ‘ ব্রিটিশ সোসাইটি অব স্পোর্টস হিস্ট্রি ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে ।
- কবে ভারতে ক্রিকেট খেলার সূচনা হয় ?
Ans: ১৭২১ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ক্রিকেট খেলার সূচনা হয় ।
- খেলাধুলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন দুজন ভারতীয় ঐতিহাসিকের নাম লেখো ।
Ans: খেলাধুলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন দুজন ভারতীয় ঐতিহাসিকের নাম হল বোরিয়া মজুমদার ও রামচন্দ্র গুহ ।
- কবে কলকাতায় ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ।
- কোন্ খেলা ‘ খেলার রাজা ‘ নামে পরিচিত ।
Ans: ক্রিকেট খেলার রাজা ‘ নামে পরিচিত ।
- বাংলা নাট্যচর্চার প্রথম যুগে কোন্ দুটি বিদেশি নাটকের বাংলা অনুবাদ হয় ।
Ans: বাংলা নাট্যচর্চার প্রথম যুগে ‘ লাভ ইস্ দ্য বেস্ট ডক্টর ‘ , ‘ ডিসগাইস’– এই বিদেশি নাটক দুটির বাংলা অনুবাদ হয় ।
- বাংলা ভাষার প্রথম দুটি মৌলিক নাটক কী কী ?
Ans: বাংলা ভাষার প্রথম দুটি মৌলিক নাটক যোগেন্দ্র চন্দ্র গুপ্তের ‘ কীর্তিবিলাস ‘ ও তারাচরণ শিকদারের ‘ ভদ্রার্জুন ‘ ।
- মধুসূদন দত্তের লেখা দুটি প্রহসনের নাম লেখো ।
Ans: মধুসুদন দত্তের লেখা দুটি প্রহসন হল , ‘ একেই কি বলে সভ্যতা ‘ / ‘ বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ ‘ ।
- রবীন্দ্রনটিককে কী কী ভাগে বিভক্ত করা যায় ?
Ans: রবীন্দ্রনাটকের ভাগগুলি হল সামাজিক নাটক , ব্যঙ্গরসাত্মক নাটক , গীতিনাট্য , কাব্যনাট্য , নৃত্যনাট্য ইত্যাদি ।
- কারা প্রথম বায়োস্কোপের বাণিজ্যিক প্রদর্শন করেন ?
Ans: প্যারিসের লুমিয়্যের ভ্রাতৃদ্বয় প্রথম বায়োস্কোপের বাণিজ্যিক প্রদর্শন করেন ।
- ফ্রান্সে কে চলমান চিত্রগ্রহণের মেশিন আবিষ্কার করে ?
Ans: ফ্রান্সে ল্যুমিয়ের ব্রাদার্স চলমান চিত্রগ্রহণের মেশিন আবিষ্কার করে ।
- ‘ দ্য রেস্টলারস ‘ নামক সচল ছবি কবে তৈরি হয় ?
Ans: ” দ্য রেস্টলারস ‘ নামক সচল ছবিটি তৈরি হয় ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ।
- ‘ আলম আরা ‘ ছবিটি কবে তৈরি হয় ?
Ans: ‘ আলম আরা ‘ ছবিটি তৈরি হয় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ।
- ভারতে কে , কবে ‘ রাজা হরিশ্চন্দ্র ’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন ?
Ans: ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে দাদাসাহেব ফালকে ‘ রাজা হরিশ্চন্দ্র ‘ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন ।
- বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন ধারার প্রথম ছবি কোন্টি ? কে , কবে এই ছবি নির্মাণ করেন ?
Ans: বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন ধারার প্রথম ছবি ছিল ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে সত্যজিৎ রায় নির্মিত ‘ পথের পাঁচালী ‘ ।
- পথের পাঁচালী ছবিটির পরিচালক কে ?
Ans: পথের পাঁচালী ছবিটির পরিচালক হলেন সত্যজিৎ রায় ।
- সত্যজিৎ রায় বাদে বাংলা চলচ্চিত্রের দুজন নতুন ধারার চলচ্চিত্রকারের নাম লেখো ।
Ans: সত্যজিৎ রায় বাদে বাংলা চলচ্চিত্রের দুজন নতুন ধারার চলচ্চিত্রকার হলেন মৃণাল সেন ও ঋত্বিক ঘটক । ★
- বাংলা চলচ্চিত্রের জনক ‘ কাকে বলা হয় ?
Ans: ‘ বাংলা চলচ্চিত্রের জনক ‘ বলা হয় হীরালাল সেনকে ।
- রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি ‘ ( ১৮৯৮ খ্রিঃ ) কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
Ans: ‘ রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি ‘ ( ১৮৯৮ খ্রিঃ ) প্রতিষ্ঠা করেন হীরালাল সেন ।
- কলকাতায় ‘ স্টার থিয়েটার ‘ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: কলকাতায় ‘ স্টার থিয়েটার ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ।
- নটী বিনোদিনী কে ?
Ans: নটী বিনোদিনী উনিশ শতকের বাংলার একজন বিখ্যাত মঞ্চ অভিনেত্রী ।
- পোশাক সংক্রান্ত সুস্পটুয়ারি ল’জ কোন দেশে কঠোরভাবে মেনে চলা হ উত্তর ফ্রান্সে পোশাক সংক্রান্ত সুস্পটুয়ারি ল’জ কঠোরভাবে মেনে চলা হত ।
- পোশাক – পরিচ্ছদের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত একজন গবেষক ও তাঁর গ্রন্থের নাম লেখো ।
Ans: পোশাক – পরিচ্ছদের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত একজন গবেষক হলেন এল . টেলর এবং তাঁর গবেষণা গ্রন্থ ‘ দ্য স্টাডি অব্ ড্রেস হিস্ট্রি ।
- ১৮৭০ – এর দশকে ইংল্যান্ডের একজন পোশাক সংস্কারকের নাম লেখো ।
- ১৮৭০ – এর দশকের ইংল্যান্ডের একজন পোশাক সংস্কারক ছিলেন ।
Ans: মিসেস স্টানটন ।
- পারসি রীতির অনুসরণে বাংলায় ব্রাহ্মসমাজের নারীরা যে শাড়ি পরত তার নাম কী ?
Ans: পারসি রীতির অনুসরণে বাংলায় ব্রাহ্মসমাজের নারীরা যে শাড়ি পরত তার নাম ব্রাষ্মিকা শাড়ি ।
- বাঙালির বেশবাস ‘ গ্রন্থটির লেখক কে ?
Ans: বাঙালির বেশবাস ‘ গ্রন্থটির লেখক হলেন মলয় রায় ।
- মহাত্মা গান্ধির ব্যবহৃত টুপি কী নামে পরিচিত ?
Ans: মহাত্মা গান্ধির ব্যবহৃত টুপি ‘ গান্ধি টুপি ‘ নামে পরিচিত ।
- ভারতে রেলপথ কে , কবে প্রবর্তন করেন ?
Ans: লর্ড ডালহৌসি ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথম রেলপথ প্রবর্তন করেন ।
- কোন্ দেশে প্রথম টেলিগ্রাফ যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু হয় ?
Ans: ইংল্যান্ডে প্রথম টেলিগ্রাফ যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু হয় ।
- ভারতীয় টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা কবে চালু হয় এবং বিলুপ্ত হয় ?
Ans: ভারতীয় টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা চালু হয় ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে এবং বিলুপ্ত হয় ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে ।
- কবে ইংল্যান্ডে প্রথম রেলপথ চালু হয় ?
Ans: ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে প্রথম রেলপথ চালু হয় ।
- সুয়েজ খাল কবে খনন করা শুরু হয় ?
Ans: ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে সুয়েজ খাল খনন করা শুরু হয় ।
- ডেভিড আর্নল্ড সম্পাদিত পরিবেশ সম্পর্কিত একটি গ্রন্থের নাম লেখো ।
Ans: ডেভিড আর্নন্ত সম্পাদিত পরিবেশ সম্পর্কিত একটি বই হল ‘ নেচার , কালচার ।
- ইকোলজিক্যাল ইম্পেরিয়ালজম ‘ কার লেখা ?
Ans: ইকোলজিক্যাল ইম্পেরিয়ালজম ‘ অ্যালফ্রেড ডব্লিউ ।
- মেধা পাটেকর কে ছিলেন ?
Ans: নর্মদা বাঁচাও নামক পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী ।
- পরিবেশ আন্দোলনের দুজন নেত্রী কে ছিলেন ?
Ans: পরিবেশ আন্দোলনের দুজন নেত্রী মেধা পাটেকর এবং অরুন্ধতী রায় ।
- অরণ্যের অধিকার – কেন্দ্রিক দু’টি বিদ্রোহের নাম ( সাল – সহ ) লেখো ।
Ans: অরণ্যের অধিকার – কেন্দ্রিক দুটি উল্লেখযোগ্য বিদ্রোহ হল ১৮৫৫ খ্রি . সংঘটিত সাঁওতাল বিদ্রোহ এবং ১৯০০ খ্রি . সংঘটিত মুন্ডা বিদ্রোহ ।
- ম্যান অ্যান্ড দ্য ন্যাচারাল ওয়ার্ল্ড ‘ বইটির লেখক কে ?
Ans: ‘ ম্যান অ্যান্ড দ্য ন্যাচারাল ওয়ার্ল্ড ‘ বইটির লেখক হলেন ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ইতিহাসের ধারণা (প্রথম অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Itihaser Dharona Question and Answer
- ইতিহাস কী ?
Ans: মানবসমাজের অতীত কাহিনি ইতিহাস নামে পরিচিত , এর বিভিন্ন দিক হল— প্রথমত , এর মূল বিষয় হল সময় , মানুষ ও সমাজ অর্থাৎ , মানুষ ও তার সমাজের ক্রম বিবর্তনের ধারাবাহিক বর্ণনাই হল ইতিহাস । দ্বিতীয়ত , অতীতের রাজনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশি অর্থনৈতিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কাজকর্মও ইতিহাসের অন্তর্গত । তৃতীয়ত , গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস ও থুকিডিডিস যথাক্রমে ‘ ইতিহাসের জনক ’ ও ‘ বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাসের জনক নামে পরিচিত ।
- ঐতিহাসিক তথ্য কী ?
Ans: মানবসমাজের বিভিন্ন ঘটনা সমসাময়িক দলিল দস্তাবেজ বা অন্যান্য লিখিত ও প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের মধ্যে নিহিত থাকে । একজন ঐতিহাসিক বা গবেষক এই সমস্ত উপাদান থেকে সঠিক তথ্য নির্বাচন করে ইতিহাস রচনা করে । এইসব আকর সূত্র ঐতিহাসিক তথ্য নামে পরিচিত ।
- উত্তর ইতিহাস রচনার পদ্ধতি ও ইতিহাস বিষয়ে অনুসন্ধানের কলাকৌশল ইতিহাস তত্ত্ব নামে পরিচিত ।
Ans: ইতিহাস তত্ত্বের কয়েকটি দিক হল — গ্রিক ইতিহাস তত্ত্ব , রোমান ইতিহাস তত্ত্ব , খ্রিস্টান ইতিহাস তত্ত্ব , মধ্যযুগীয় ইতিহাস তত্ত্ব , রেনেসাঁ ইতিহাস তত্ত্ব ও আধুনিক ইতিহাস তত্ত্ব ।
- আধুনিক ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝ ?
Ans: অষ্টাদশ শতক থেকে শুরু করে বিংশ শতকের শেষ পর্যন্ত সময়কালের ইতিহাসচর্চা আধুনিক ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত । প্রথমত , যুক্তিবাদ , প্রগতিবাদ , রোমান্টিক ভাবধারা ও বৈজ্ঞানিক ভাবধারা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে এই ইতিহাসচর্চা । দ্বিতীয়ত , বিজ্ঞানসম্মত , প্রাতিষ্ঠানিক ও পেশাজীবী ইতিহাসচর্চা হল আধুনিক ইতিহাসচর্চার মূল বৈশিষ্ট্য ।
- ঐতিহাসিকের কাজ কী ?
Ans: ঐতিহাসিকের কাজ হল প্রথমত , তথ্য অনুসন্ধান , উপস্থাপন ও তা বিশ্লেষণ । দ্বিতীয়ত , ঐতিহাসিক লিওপোল্ড ভন র্যাঙ্কের মতে , যেমনভাবে ঘটনা ঘটেছিল ঠিক সেভাবেই তুলে রাখা হল ঐতিহাসিকের কাজ । তৃতীয়ত , ঐতিহাসিক লর্ড অ্যাকটনের মতে , ঐতিহাসিকের দেওয়া তথ্যের ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ ছাড়া ইতিহাস অর্থহীন ।
- আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিগুলি চিহ্নিত করো ।
Ans: আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি হল যুক্তিবাদী , আপেক্ষিকতাবাদী , দৃষ্টবাদী , মার্কসবাদী , প্রত্যক্ষবাদী দৃষ্টিভঙ্গি । এ ছাড়াও রয়েছে অ্যানাল গোষ্ঠীর মতবাদ , জাতীয়তাবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি , নিম্নবর্গীয় ( সাবল্টার্ন ) মতবাদ এবং সামগ্রিক সমাজ বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ।
- প্রচলিত ইতিহাসচর্চা কী ?
Ans: প্রচলিত ইতিহাস বলতে বোঝায়— প্রথমত , রাজার যুদ্ধজয় , দেশশাসন , রাজস্ব আদায় ও সাংবিধানিক কাজকর্মের ইতিহাসই ছিল প্রচলিত ইতিহাসচর্চার মূল বিষয় । দ্বিতীয়ত , বিশ শতকের গোড়া থেকে এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় সমাজ ও অর্থনীতির অন্য বিষয়গুলিও যুক্ত হতে শুরু করে । তৃতীয়ত , এই ধরনের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ঐতিহাসিকরা হলেন লর্ড মেকলে ,
- টমাস কার্লাইল প্রমুখ । ইতিহাসচর্চায় ভিকোর মতামত কী ?
Ans: ইটালির ঐতিহাসিক ও মানবতাবাদী দর্শনের প্রবক্তা — গিয়ান বাতিস্তা ভিকোর ( ১৬৬৮–১৭৪৪ খ্রি . ) মতে , ( ১ ) ইতিহাস হল মানবসমাজ ও তার প্রতিষ্ঠান সমূহের বিবর্তনের কাহিনি : ( ২ ) পূর্ব পরিকল্পিত ধারণা বা অবরোহী পদ্ধতিতে ইতিহাসচর্চার পরিবর্তে তিনি ঐতিহাসিক পদ্ধতি ও ঐতিহাসিকের সৃজনশীল মানসিকতার ওপর জোর দেন ; ( ৩ ) তিনি ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করেন , যথা — দেবতা , বীরনায়ক ও সাধারণ মানুষের যুগ ।
- ইতিহাসচর্চায় ‘ অ্যানাল স্কুল ‘ বলতে কী বোঝায় ?
Ans: বিশ শতকে ফ্রান্সে ঐতিহাসিক মার্ক ব্লখ ও লুসিয়েন ফেভর ‘ দ্য অ্যানালস ‘ ( ১৯২৯ খ্রিঃ ) পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে ইতিহাসচর্চায় যে নতুন ঘরানার সূচনা করেন তা হল ‘ অ্যানাল স্কুল ‘ । এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় প্রথমত , সামাজিক ইতিহাসসহ সার্বিক ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় ; দ্বিতীয়ত , ভৌগোলিক কাঠামো , আর্থসামাজিক পটভূমি , জনসংখ্যাতত্ত্ব , মানসিক প্রবণতার ওপর গুরুত্ব দান করে ইতিহাস রচনার কাজ শুরু করা হয় ।
- নিম্নবর্গের ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ? অথবা সাবস্টার্ন স্টাডিজ কী ?
Ans: ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ গুহ নিম্নবর্গের ইতিহাস রচনা পদ্ধতির কথা তুলে ধরেন যা সাবল্টার্ন স্টাডিজ নামে পরিচিত । এই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল প্রথমত , প্রচলিত ইতিহাসচর্চায় সমাজের উচ্চবর্গের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হত ; কিন্তু এই ইতিহাসচর্চায় নিম্নবর্গ , অর্থাৎ কৃষক , শ্রমিক , শহুরে জনতা , আদিবাসী এবং সমাজের নিম্নস্তরের মানুষ ও মহিলাদের উদ্যোগে বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় আন্দোলনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । দ্বিতীয়ত , নিম্নবর্গের ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জ্ঞান পাণ্ডে , স্টিফেন হেনিংহাম , দীপেশ চক্রবর্তী , গৌতম ভদ্র , শাহিদ আমিন প্রমুখ ।
আরো পড়ুনঃ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – দ্বিতীয় অধ্যায়: সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা
- মার্কসবাদী ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝায় ?
Ans: বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের উদ্গাতা কার্ল মার্কসের অনুসৃত অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ , ঐতিহাসিক বস্তুবাদ ও দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের ওপর ভিত্তি করে উনিশ শতক থেকে ইতিহাসচর্চায় যে নতুন ধারার সূচনা হয়েছে তা মার্কসবাদী ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত । এই ইতিহাসচর্চার উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল প্রথমত , ইতিহাসকে বিশ্লেষণের সময় শোষক – শোষিত সম্পর্ক , অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উৎপাদনের ধরন এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় । দ্বিতীয়ত , মার্কসবাদী ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন এরিক হবস্বম , ক্রিস্টোফার হিল , রজনীপাম দত্ত , সুশোভন সরকার , ইরফান হাবিব প্রমুখ ।
- সামাজিক ইতিহাস কী ?
Ans: ১৯৬০ ও ১৯৭০ – এর দশকে ইউরোপ ও আমেরিকায় ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে প্রচলিত রাজনৈতিক , সামরিক , সাংবিধানিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসের পরিবর্তে সমাজের অবহেলিত দিকগুলিসহ সমগ্র সমাজের ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় যা নতুন সামাজিক ইতিহাস নামে পরিচিত । এই ইতিহাস সংশোধনবাদী ইতিহাস নামেও পরিচিত । প্রথমত , এই ইতিহাসের বিভিন্ন দিকগুলি হল – সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন , জাতি – বর্ণ ও জাতিবিদ্বেষ , হিংসা ও সম্প্রীতি । দ্বিতীয়ত , এই ইতিহাসচর্চায় যুক্ত গবেষকরা হলেন ইউজিন জেনোভিস , হারবার্ট গুটম্যান , রণজিৎ গুহ , জ্ঞানেন্দ্র পান্ডে , শাহিদ আমিন , সুমিত সরকার , গৌতম ভদ্র , দীপেশ চক্রবর্তী ।
- নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠান ও তার মুখপত্রের নাম কী ?
Ans: নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠানটি হল ‘ দ্য সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ‘ ( ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দ ) । এটির মুখপত্র হল ‘ সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি ‘ । 22 ১৪ ইতিহাসচর্চা কি সত্যিই নিখুঁত ও বাস্তবসম্মত । ( উত্তর ) ইতিহাসচর্চা কতটা নিখুঁত ও বিজ্ঞানসম্মত সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে । জার্মান লেখক উইলহেলম ডিলথে মনে করেন ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিককে এক সারিতে বসানো যায় না । বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান , পরীক্ষানিরীক্ষার ওপর নির্ভর করেন আর ঐতিহাসিক নিজস্ব ধ্যানধারণার ওপর ভিত্তি করে ইতিহাস লেখেন । ব্রিটিশ লেখক আর . জি . কলিংউড ( ১৮৮৯-১৯৪৩ ) তাঁর বিখ্যাত The Idea of History গ্রন্থে দেখিয়েছেন সমস্ত ঐতিহাসিক তাঁর সমসাময়িককালের ভাবনাচিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হন । ই . এইচ . কার অনুরূপভাবে মনে করেন ঐতিহাসিক তাঁর নিজের সময়ের আয়নায় অতীত ঘটনাক্রমকে বাছাই করেন ।
- খেলার ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ?
Ans: আধুনিক সভ্যতায় অবসর বিনোদন ও শারীরিক দক্ষতা প্রদর্শনের একটি বিশেষ মাধ্যম হল খেলা বা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা । প্রথমত , বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ক্রিকেট , ফুটবল , হকি , টেনিস , গল্ফ , দাবা , রাগবি প্রভৃতি খেলার উদ্ভব , বিবর্তন , প্রসার ও প্রভাব সম্পর্কে চর্চা শুরু হয় যা খেলার ইতিহাস নামে পরিচিত । দ্বিতীয়ত , এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন জে . এ . ম্যাসান , রিচার্ড হোল্ট , গ্রান্ট জারভিস , মাইকেল ম্যাক কিনলে , আশিস নন্দী , রামচন্দ্র গুহ , বোরিয়া মজুমদার ।
- ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলার উদ্ভবকে কীভাবে চিহ্নিত করবে ?
Ans: আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে ইংল্যান্ডে ‘ স্টিক অ্যান্ড বল ‘ নামক খেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার উদ্ভব ঘটেছে । প্রথমত , প্রাক্ – শিল্পবিপ্লব পর্বের এই খেলায় হাতে তৈরি কাঠের ব্যাট ও স্ট্যাম্প বেল , বল ব্যবহার করা হত এবং আঠারো শতকে এই খেলা একটি পরিণত খেলার চরিত্র লাভ করে । দ্বিতীয়ত , ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ক্রিকেটের নিয়মবিধি রচিত হয় । ১৭৬০ – এর দশকে ইংল্যান্ডের হাম্বেলডন – এ প্রথম ক্রিকেট ক্লাব গঠিত হয় এবং ১৭৮০ – র দশকে শুরু হল ‘ ক্রিকেটের অভিভাবক ’ রূপে পরিচিত মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব ( MCC ) ।
- ঢাকাই খাবার কী ?
Ans: সুলতানি ও মুঘল শাসনকালে বাংলার প্রচলিত খাদ্যাভ্যাসে ( ভাত , ডাল ও নিরামিষ খাবার ) পরিবর্তন এসেছিল । পুরাতন ঢাকা এলাকায় অযোধ্যার নবাবী খাবারের ( কাবাব , নান , কাচ্চি ও পাকি বিরিয়ানী , হালিম , মাটন , ভুনি – খিচুড়ি ) প্রচলন ঘটে । এর পাশাপাশি ভাতের সঙ্গে সরষের তেল , ঘি ও বিভিন্ন মশলা সহযোগে বিভিন্নধর্মী তরকারি ও ইলিশ , পাবদা , রুই , চিতল , ভেটকি মাছের বিভিন্ন পদও প্রচলিত ছিল । এই বৈচিত্র্যময় খাবার ঢাকাই খাবার নামে পরিচিত ।
- শিল্পচর্চার ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ?
Ans: মানুষ যখন কোনো শিল্প মাধ্যম , যথা- ( সংগীত , নৃত্য , নাটক ও চলচ্চিত্র ) -কে বেছে নিয়ে তার সুকুমার বৃত্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটায় তখন তা শিল্পচর্চা নামে পরিচিত । তাই— প্রথমত , শিল্পচর্চার উদ্ভব , বিবর্তন ও প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করাই শিল্পচর্চার ইতিহাস নামে পরিচিত । দ্বিতীয়ত , এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন— ক্যারল ওয়েলস , ফিলিপ বি জারিল্লি , জ্যাকব বুর্খাহার্ট , নীহাররঞ্জন রায় , অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর , ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় , অশোক মিত্র , হিতেশরঞ্জন সান্যাল , তপতী গুহঠাকুরতা ।
- নৃত্যশিল্পের ইতিহাসের কয়েকটি দিক চিহ্নিত করো ।
Ans: নৃত্যকলাচর্চার উদ্ভব , বিবর্তন ও তার প্রভাব সংক্রান্ত ইতিহাসচর্চা নৃত্যশিল্পের ইতিহাস নামে পরিচিত । এর কয়েকটি দিক হল প্রথমত , ছন্দ বা গানের তালে তালে মানবশরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালনই হল নৃত্য । দ্বিতীয়ত , শাস্ত্রীয় ও ধর্মীয় নৃত্যের পাশাপাশি ভাবাবেগ প্রকাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের নৃত্য ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিপ – হপ নৃত্য , চিনের ইয়াংকো নৃত্য , ভারতের কথক , ফ্রান্স ও রাশিয়ার ব্যালে নৃত্য ) রয়েছে । তৃতীয়ত , এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যারা যুক্ত তাঁরা হলেন – ক্যারল ওয়েলস , ফিলিপ বি জারিল্লি , জ্যাকব বুৰ্খাহার্ট , চার্লস রাসেল ডে , তপতী গুহঠাকুরতা ।
- চলচ্চিত্রের ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ?
Ans: উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে উন্নত ক্যামেরার মাধ্যমে সচল ছবি তোলার প্রক্রিয়ার উদ্ভাবন ঘটে এবং অগাস্ট ল্যুমিয়ের ও লুই ল্যুমিয়ের নামক দুই ভাইয়ের হাত ধরে প্যারিসে প্রথম চলচ্চিত্রের উদ্ভব ঘটে ( ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দ ) । প্রথমত , প্রথমদিকে কোনো ঘটনা বা গল্পকে কেন্দ্র করে তৈরি এই সচল ছবি ছিল নির্বাক , কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিশ শতকের গোড়ায় আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে সবাক ও সচল ছবি তৈরি হয় , যা চলচ্চিত্র নামে পরিচিত । দ্বিতীয়ত , চলচ্চিত্রের উদ্ভব ও বিবর্তন সম্পর্কে বিশেষভাবে জড়িত ছিলেন — ফিলিপ বি জারিপি , চার্লস রাসেল ডে , সত্যজিৎ রায় , ঋত্বিককুমার ঘটক , গিরিশ কারনাড , আদুর গোপালকৃয়ন প্রমুখ ।
- ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রাথমিক ইতিহাস কীভাবে চিহ্নিত করবে ?
Ans: ঔপনিবেশিক শাসনপর্বে ভারতে ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে হরিশ্চন্দ সখারাম ভাতওয়াডেকর ‘ দ্য রেস্টলারস ‘ নামক একটি সচল ও নির্বাক ছবি নির্মাণ করেন । পরবর্তীকালে ধুন্দিরাজ গোবিন্দ ফালকে তৈরি করেন ‘ রাজা হরিশ্চন্দ্র ‘ নামক চলচ্চিত্র ( ১৯১৩ খ্রি . ) । তবে ‘ আলম আরা ‘ চলচ্চিত্রটি ছিল ( ১৯৩১ খ্রি . ) ভারতের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র । ভারতে হীরালাল সেন প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন এবং এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি ।
- বাংলা চলচ্চিত্রের আদিপর্বের ইতিহাস বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতে সিনেমা বা চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি বাংলা ভাষাতেও চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ শুরু হয় । প্রথম বাংলা ছবি ‘ বিল্বমঙ্গল ‘ ছিল নির্বাক ছবি , কিন্তু ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায় ‘ জামাইষষ্ঠী ‘ নামক সবাক ছবি । পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায় , ঋত্বিককুমার ঘটক , মৃণাল সেনের হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্র পরিণত হয়ে ওঠে এবং সত্যজিৎ রায়ের ‘ পথের পাঁচালী ‘ দেশ ও আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি লাভ করে ।
- সত্যজিৎ রায় বিখ্যাত কেন ?
Ans: সত্যজিৎ রায় বিখ্যাত ছিলেন , কারণ— প্রথমত , সত্যজিৎ রায় ছিলেন একাধারে চিত্রশিল্পী , সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক ও বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অস্কার পুরস্কার প্রাপক । দ্বিতীয়ত , বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বাগ্রগণ্য , কারণ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে তিনি ‘ পথের পাঁচালি ‘ নামক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন যা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বীকৃত ও প্রশংসা লাভ করে । তৃতীয়ত , তাঁর অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘ গুপী গাইন বাঘা বাইন ’ , ‘ অপুর সংসার ‘ , ‘ শাখাপ্রশাখা ‘ , ‘ নায়ক ‘ , ‘ আগন্তুক ‘ ।
- পোশাক – পরিচ্ছদের ইতিহাস কী ?
Ans: পোশাক – পরিচ্ছদের উদ্ভব ও তার বিবর্তনকে চিহ্নিত করা এবং পোশাক কীভাবে কর্তৃত্ব ও আভিজাত্যের মাপকাঠি হয়ে উঠেছিল তা ব্যাখ্যা করাই হল পোশাক – পরিচ্ছদের ইতিহাস । এই ইতিহাসের দিকগুলি হল প্রথমত , ভৌগোলিক অবস্থান , সাংস্কৃতিক অভিরুচি , সামাজিক রীতি কীভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পোশাক – পরিচ্ছদের ক্ষেত্রকে প্রভাবিত তা চিহ্নিত করা এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য । দ্বিতীয়ত , এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন ম্যাথেউস সোয়ার্জ , কার্ল কোহলার , এম্মা টারলো , এল টেলর , পিটার ম্যাকনিল , রবার্ট রস , মলয় রায় ।
- সামরিক ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ?
Ans: প্রাচীনকাল থেকে সংঘর্ষের মাধ্যমে ইতিহাসের গতি বয়ে চলেছে । যুদ্ধের প্রেক্ষাপট , যুদ্ধাস্ত্রের বিবর্তন , সামরিক বাহিনীর প্রকৃতি ও সমরকুশলতা , যুদ্ধের প্রকৃতি ও প্রভাবকে তুলে ধরা হল সামরিক ইতিহাস । এই প্রসঙ্গে প্রথমত , পেলোপনেসীয় যুদ্ধ , রামায়ণ ও মহাভারতের যুদ্ধসহ প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানের সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ঠান্ডা যুদ্ধের এই ইতিহাসচর্চায় স্থান পেয়েছে । দ্বিতীয়ত , এই ইতিহাসের গবেষকরা হলেন — শেলফোর্ড বিডওয়েল , জন টেরাইন , রিচাড কন , যদুনাথ সরকার , সুরেন্দ্রনাথ সেন , এ জে পি টেলর , বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় , কৌশিক রায় ।
- পরিবেশের ইতিহাস কী ?
Ans: পরিবেশের অর্থাৎ , প্রকৃতি জগতের সঙ্গে মানবসমাজের ক্রিয়া – প্রতিক্রিয়ার ইতিহাসই হল পরিবেশের ইতিহাস । এই ইতিহাসের বিভিন্ন দিকগুলি হল— প্রথমত , সুপ্রাচীন কালে মানুষের আবির্ভাব হয় । পশুশিকারি জীবন থেকে নক মানবসভ্যতার উত্তরণের পিছনে পরিবেশের ভূমিকা ও অবদানকে চিহ্নিত করাই এই ইতিহাসের মূল বৈশিষ্ট্য । দ্বিতীয়ত , ১৯৬০ ও ১৯৭০ – এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ সংক্রান্ত আলোচনা থেকেই পরিবেশের ইতিহাসচর্চা শুরু হয়েছে ; এই ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন — র্যাচেল কারসন , ডেভিড আরনল্ড , রামচন্দ্র গুহ , মাধব গ্যাডগিল , রিচার্ড গ্রোভ , স্যামুয়েল পি হাইজ , অ্যান্ড্রু সি ইসেনবার্গ , আলফ্রেড ডব্লিউ ।
- পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কী ?
Ans: পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্বগুলি হল প্রথমত , মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে পরিবেশের ভূমিকা চিহ্নিত করে পরিবেশ সচেতনতা ও পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করা । দ্বিতীয়ত , পরিবেশ সংকট ও তার প্রকৃতি , পরিবেশ বিপর্যয় ও তার ভয়াবহতা , বাসস্থানের সুস্বাস্থ্য , অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও তার প্রয়োগের ব্যবস্থা করা । তৃতীয়ত , পরিবেশের ইতিহাসের সঙ্গে ইতিহাসের অন্য দিকগুলির সম্পর্ক নির্ধারণ ।
- ভারতে সংগঠিত দুটি পরিবেশ আন্দোলনের নাম লেখো ।
Ans: ভারতে অনুষ্ঠিত দুটি পরিবেশ আন্দোলন হল প্রথমত , ১৯৬০ – এর দশকে উত্তরপ্রদেশের আদিবাসী নারী – পুরুষ , সরলা বেন ও সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে অরণ্য সংরক্ষণ আন্দোলন গড়ে ওঠে যা চিপকো আন্দোলন ‘ নামে পরিচিত । দ্বিতীয়ত , উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল জেলায় ভাগীরথী ও ভীলাঙ্গনা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত তেহেরি শহরকে জনমুক্ত করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয় । সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে এর বিরুদ্ধে পরিবেশ রক্ষার যে আন্দোলন গড়ে ওঠে তা তেহেরি গাড়োয়াল আন্দোলন ‘ ( ১৯৬০-২০০৪ খ্রিস্টাব্দ ) নামে পরিচিত ।
- বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ?
Ans: বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিকাশ ও বিবর্তন , প্রযুক্তির উদ্ভব ও তার অগ্রগতি এবং চিকিৎসাবিদ্যার বিবর্তন সম্পর্কিত ইতিহাসচর্চা বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস নামে পরিচিত । এই ইতিহাসের মূল কথা হল প্রথমত , বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যা কীভাবে মানবসমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে তার অগ্রগতির পরিমাপ করা । দ্বিতীয়ত , আদিম সভ্যতা থেকে আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার উত্তরণই হল এই ইতিহাসচর্চার পরিধি ; এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন — টমাস কুন , সি ডি ড্যামপিয়ার , আই . গোল্ডস্টাইন , জে ডি বারনাল , প্রফুল্লচন্দ্র রায় , ডেডিভ আরনল্ড , এস জি ব্রাস , দীপককুমার , আর্নস্ট মেয়র ।
- নারী – ইতিহাস কী ?
Ans: প্রচলিত পুরুষকেন্দ্রিক ইতিহাসের সংশোধন ঘটিয়ে সমাজ ও সভ্যতার ইতিহাসে নারীর অবদান ও ভূমিকার পুনর্মূল্যায়ন সংক্রান্ত ইতিহাসচর্চাই হল নারী – ইতিহাস । এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য হল প্রথমত , প্রথমদিকে প্রভাবশালী নারীদের সম্পর্কে ইতিহাসচর্চা করা হলেও বর্তমানে সাধারণ নারীরাও এর অন্তর্গত । দ্বিতীয়ত , সমাজ , সংস্কৃতি , অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নারীর ভূমিকা ও অংশগ্রহণকে চিহ্নিত করাই এই ইতিহাসের প্রধানতম তৃতীয়ত , নারী – ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন — মেরি ওলস্টনস্ক্রাফট , সিমোন দ্য বোভোয়ার , জি লার্নের , বারবারা কান , স্টিভেন মিনজ , লুই এ টিল্লি , জেরান্ডিন ফরবেশ , শমিতা সেন , নীরা দেশাই ।
- নারী ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব আলোচনা করো ।
Ans: নারী ইতিহাসচর্চার উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব হল প্রথমত , সভ্যতার ইতিহাসে রাজনৈতিক , আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে । দ্বিতীয়ত , লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ ও নারী – পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় এই ইতিহাসচর্চা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে । তৃতীয়ত , ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে প্রচলিত ইতিহাসের সংশোধন করতে চেয়ে নারী – ইতিহাস এক বিকল্প ইতিহাসচর্চার সন্ধান 45 দিয়েছে ।
- ‘ জীবনস্মৃতি ‘ থেকে উনিশ শতকের বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাসের কী কী উপাদান পাওয়া যায় ?
Ans: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী ‘ জীবনস্মৃতি ‘ থেকে— প্রথমত , উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের ঔপনিবেশিক শিক্ষার কথা জানা যায় । দ্বিতীয়ত , এই গ্রন্থের ‘ শিক্ষারম্ভ ‘ প্রভৃতি অধ্যায়ের বর্ণনা থেকে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ও নর্মাল স্কুল – এর শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে জানা যায় । তৃতীয়ত , ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে বন্ধ এবং প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কবিহীন ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কথা জানা যায় ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ইতিহাসের ধারণা (প্রথম অধ্যায়) মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Itihaser Dharona Question and Answer :
1. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্য লেখো ।
Ans: ভূমিকা : আধুনিক ইতিহাসচর্চা হল প্রচলিত ইতিহাসচর্চা থেকে উত্তরণ । রাজার যুদ্ধজয় , দেশশাসন , রাজস্ব আদায় ও সাংবিধানিক কাজকর্মের ইতিহাসই ছিল প্রচলিত ইতিহাসচর্চার মূল বিষয় ।
আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্য : বিশ শতকের গোড়া থেকে এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় সমাজ ও অর্থনীতির অন্য বিষয়গুলিও যুক্ত হতে শুরু করে এবং নতুন ধরনের ইতিহাসচর্চা শুরু হয় ; যেমন –
[ 1 ] আধুনিক ইতিহাসচর্চা আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি হল — যুক্তিবাদী , আপেক্ষিকতাবাদী , দৃষ্টবাদী , মার্কসবাদী , প্রত্যক্ষবাদী দৃষ্টিভঙ্গি । এ ছাড়াও রয়েছে অ্যানাল গোষ্ঠীর মতবাদ , জাতীয়তাবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি , নিম্নবর্গীয় মতবাদ এবং সামগ্রিক সমাজ বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি । [ 3 ] নীচুতলার ইতিহাস : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংল্যান্ডের কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও মার্কসবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী ইউরোপের ঐতিহাসিকগণ ( ক্রিস্টোফার হিল , এরিক হবসবম , প্যাট্রিক জয়েস , এডওয়ার্ড থম্পসন প্রমুখ । ) সমাজের নীচুতলা থেকে ইতিহাস রচনায় সচেষ্ট হন । [ 4 ] নতুন সামাজিক ইতিহাস : ১৯৬০ ও ১৯৭০ – এর দশকে ইউরোপ ও আমেরিকায় ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন , জাতি – বর্ণ ও জাতিবিদ্বেষ , হিংসা ও সম্প্রীতিসহ সমগ্র সমাজের ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় যা নতুন সামাজিক ইতিহাস নামে পরিচিত ।এই ইতিহাসচর্চায় যুক্ত গবেষকরা হলেন — ইউজিন জেনোভিস , হারবার্ট গুটম্যান , রণজিৎ গুহ , জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে , পার্থ চ্যাটার্জী , শাহিদ আমিন , সুমিত সরকার , গৌতম ভদ্র , দীপেশ চক্রবর্তী ।
গুরুত্ব : ইতিহাসচর্চার উপকরণে অনেক নতুন সংযোজন ঘটেছে কারণ , সমস্ত কিছুর মাধ্যমেই সমাজ প্রতিফলিত হয় । তবে নতুন ইতিহাসকে সর্বজনগ্রাহ্য করে তুলতে হলে , সংগৃহীত তথ্যগুলিকে মিউজিয়াম , লেখ্যাগার , গ্রন্থাগারে রক্ষিত মৌলিক আকরের সঙ্গে হাতেকলমে যাচাই করে নিতে হয় ।
2. আধুনিক ইতিহাসচর্চায় প্রত্যক্ষবাদী ও অ্যানাল গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চা সম্পর্কে আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : আধুনিক ইতিহাস রচনা পদ্ধতির প্রধানতম দুটি দিক হল প্রত্যক্ষবাদী ধারা ও অ্যানাল গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চার ধারা ।
প্রত্যক্ষবাদী ধারা : বৈজ্ঞানিক নীতির ওপর ভিত্তি করে অতীত ঘটনা ও তথ্যসমূহকে বিশ্লেষণ করে সত্য বা প্রকৃত জ্ঞানকে প্রতিষ্ঠা করার পদ্ধতি প্রত্যক্ষবাদী ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত । লিওপোল্ড ভন র্যাঙ্কে প্রবর্তিত এই ধরনের ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্য হল—
- 1. তথ্য ও নথিভিত্তিক তথ্য ও নথিপত্রের ভিত্তিতে অতীত যেমন ছিল তেমনভাবেই উপস্থাপিত করে বস্তুনিষ্ঠ পক্ষপাতশূন্য ইতিহাস রচনা করা ।
- 2. তথ্য উপস্থাপন : এই ইতিহাসচর্চায় অতীতের তথ্য উপস্থাপনের ওপর জোর দেওয়া হয় এবং একারণেই এই ইতিহাসচর্চায় ঐতিহাসিকরা তথ্যকেই ইতিহাস লেখার মূল আধার বলে মনে করেন ।
- 3. ঐতিহাসিকবর্গ । এই ধরনের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন লিওপোল্ড ভন র্যাঙ্কে , জে . বি . বিউরি , লর্ড অ্যাক্টন প্রমুখ ।
অ্যানাল গোষ্ঠী : বিশ শতকে ফ্রান্সে ( ১৯২৯ খ্রি . ) ঐতিহাসিক মার্ক ব্লখ ও লুসিয়েন ফেভর ‘ দ্য অ্যানালস ‘ পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে ইতিহাসচর্চায় যে নতুন ঘরানার সূচনা করেন তা ‘ অ্যানাল স্কুল ‘ নামে পরিচিত । এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় প্রথমত , সামাজিক ইতিহাসসহ সার্বিক ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় ; দ্বিতীয়ত , ভৌগোলিক কাঠামো , আর্থ – সামাজিক পটভূমি , জনসংখ্যাতত্ত্ব , মানসিক প্রবণতার ওপর গুরুত্ব দান করে ইতিহাস চর্চার সূচনা করা হয় । তৃতীয়ত , এই গোষ্ঠীর ঐতিহাসিকরা দীর্ঘ সময়ের পরিবর্তে স্বল্প সময় বা যুগের বিশ্লেষণ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন ।
উপসংহার : প্রত্যক্ষবাদীদের মতে , ইতিহাস একটি বিজ্ঞান , তার বেশিও নয় , কমও নয় ; কিন্তু অ্যানাল গোষ্ঠীর মতে , ইতিহাস হল এক সার্বিক সমন্বিত আলোচনা ।
- নতুন সামাজিক ইতিহাসের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ভূমিকা : প্রচলিত ইতিহাসচর্চার একটি বিকল্প ও সংশোধনবাদী ধারা হিসেবে আধুনিক ইতিহাসচর্চার একটি বিশেষ দিক হল ১৯৬০ ও ১৯৭০ – এর দশকে নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা ।
[ 1 ] প্রেক্ষাপট : নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার উদ্ভবের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে উন্নয়নের প্রচেষ্টা : প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে উদার সমাজব্যবস্থার প্রবর্তন , জীবনযাত্রাসহ জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রচেষ্টা মানবসমাজে অগ্রগতির সূচনা করায় সমাজের নাচুতলার মানুষ গুরুত্ব লাভ করে । [ 2 ] আন্দোলন ও মতাদর্শের বিকাশ : ১৯৬০ ও ১৯৭০ – এর দশকে জাতিবিদ্বেষ , যুদ্ধবিরোধী মানসিকতা , নাগরিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ফলে ঘটনার নতুন ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শুরু হয় । [ 3 ] অবহেলিত বিষয়ে গুরুত্ব দান : ঐতিহাসিক লরেন্স ডব্লু লেভাইন তাঁর ‘ Black Culture’- এর উপর গবেষণালব্ধ বইয়ের প্রথম বাক্যেই ঘোষণা করেন যে , এটাই হল সেই সময় যখন ঐতিহাসিকদের নিজস্ব চেতনা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন এবং একইভাবে দরকার গবেষণার মাধ্যমে অবজ্ঞাপ্রাপ্ত ও অবহেলিত বিষয়গুলির প্রতি গুরুত্ব দান করা । [ 4 ] ঐতিহাসিকদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংল্যান্ডের কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও মার্কসবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী ইউরোপের ঐতিহাসিকগণ সমাজের নীচুতলা থেকে ইতিহাস রচনায় সচেষ্ট হন । এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক হলেন ক্রিস্টোফার হিল , এরিক জে হবসবম , প্যাট্রিক জয়েস , এডওয়ার্ড থম্পসন প্রমুখ ।উপসংহার : উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে , বিভিন্ন ঘটনার ফলশ্রুতি হিসেবে গড়ে ওঠা নতুন সামাজিক ইতিহাসের মূল বিষয় হল সমাজের সামগ্রিক ইতিহাস ।
4. খেলাধুলার ইতিহাসকে কেন ইতিহাসের অঙ্গীভূত করা হয়েছে ?
Ans: ভূমিকা : আধুনিক সভ্যতায় অবসরবিনোদন ও শারীরিক দক্ষতা প্রদর্শনের একটি বিশেষ মাধ্যম হল খেলা বা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা । বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ক্রিকেট , ফুটবল , হকি , টেনিস , গল্ফ , দাবা , রাগবি প্রভৃতি খেলার উদ্ভব , বিবর্তন , প্রসার ও প্রভাব সম্পর্কে চর্চা শুরু হয় যা খেলার ইতিহাস নামে পরিচিত । খেলাধুলাকে ইতিহাসের অঙ্গীভূত করা হয়েছে , কারণ
[ 1 ] ঐতিহ্য সংরক্ষণ : খেলাধুলা একদিকে যেমন অবসর বিনোদনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম , তেমনি খেলাধুলার মাধ্যমে মানুষ , দেশ ও জাতির ঐতিহ্য , সংস্কৃতি এবং জাতীয়তাবাদী মনোভাব প্রকাশ পায় । [ 2 ] সামাজিক ইতিহাসের অঙ্গ : সমাজে মানুষের সঙ্গে খেলাধুলার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর হওয়ায় তা মানুষের কার্যকলাপরূপে বিবেচিত হয়েছে । তাই খেলাধুলা আজ সামাজিক ইতিহাসের অঙ্গ । [ 3 ] খেলাধুলার অতীত নির্মাণ : বিভিন্ন খেলার উদ্ভব ও বিবর্তন কীভাবে হয়েছিল এবং খেলার সরঞ্জাম কেমন ছিল তার অতীত নির্মাণের জন্যও খেলাকে ইতিহাসের অঙ্গীভূত করা হয়েছে । [ 4 ] প্রশাসনিক সংহতির মাধ্যম : ঔপনিবেশিক শক্তির প্রসার ও সংহতি সাধনে খেলাধুলা ছিল এক ধরনের ইতিবাচক অস্ত্র অর্থাৎ , ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি তাদের উপনিবেশের শাসনে সংহতি আনতে ক্রিকেট , ফুটবল , হকি , টেনিস খেলাকে যেভাবে ব্যবহার করেছিল তা আজ ইতিহাস । [ 5 ] আন্তঃরাষ্ট্রীয় সৌহার্দ্য : প্রাচীনকালে গ্রিসে অলিম্পিক প্রতিযোগিতার ক – দিন যুদ্ধ বন্ধ রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরে জোর দেওয়া হত । বর্তমানেও আন্তর্জাতিক খেলাগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সৌহার্দ্য ও শান্তি রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব লাভ করেছে ।5. আধুনিক ভারতে খেলাধুলার ইতিহাসের গতিপ্রকৃতি আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : ভারতে দেশজ খেলাধুলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শতরঞ্জ , পাশা , বাঘবন্দি , হাডুডু , কুস্তি , গেন্ডুয়া , গুলতি খেলা । খেলাধুলার গতিপ্রকৃতি আধুনিক ভারতে দেশজ খেলার পাশাপাশি বিদেশি খেলার আগমন ঘটে , যেমন—
- 1 ক্রিকেট : ১৭২১ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের সূত্র ধরেই ভারতে ক্রিকেট খেলার সূচনা হলেও তা ভারতস্থ ইংরেজ সামরিক বাহিনী ও শ্বেতাঙ্গদের ক্লাব বা জিমখানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল । পরবর্তীকালে প্রথমত , আঠারো শতকের শেষে ভারতে প্রথম ক্রিকেট ক্লাব রূপে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব ’ ( ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দ ) এবং ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে পারসিদের ‘ ওরিয়েন্টাল ক্রিকেট ক্লাব ’ ; দ্বিতীয়ত , ভারতে হিন্দু , পারসি , মুসলিম ও খ্রিস্টান দলের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলানো হত ।
- 2. হকি : ভারতে মূলত ইংরেজ সৈন্যবাহিনীর হাত ধরেই হকি খেলার প্রসার ঘটে এবং কলকাতায় ভারতের প্রথম হকি ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ( ১৮৮৫-৮৬ খ্রিস্টাব্দ ) । বিশ শতকে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে অলিম্পিক গেমসে ভারত প্রথম অংশগ্রহণ করে এবং শেষ পর্যন্ত ফাইনাল খেলায় হল্যান্ডের কাছে ভারত ৩-০ গোলে পরাজিত হয় । ধ্যানচাঁদ ছিলেন ভারতের একজন বিখ্যাত হকি খেলোয়াড় ।
- 3. ফুটবল : ইংরেজদের হাত ধরে ভারতে ফুটবল খেলার সূচনা হলেও নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী ছিলেন ‘ ভারতীয় ফুটবলের জনক ’ । পরবর্তীকালে ‘ মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় ( ১৮৮৯ খ্রি . ) এবং ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে আই এফ এ শিল্ড প্রতিযোগিতায় ইংরেজদের ইস্ট ইয়র্ক ক্লাবকে হারিয়ে দেয় ।
- 4. ইতিহাসচর্চা : ১৯৭০ – এর দশকে ইউরোপে খেলাধুলার ইতিহাস সম্পর্কে চর্চা শুরু হলেও ভারতে তা শুরু হয় ১৯৮০ – র দশকে এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য গবেষকরা হলেন সৌমেনচন্দ্ৰ মিত্র , আশীষ নন্দী , বোরিয়া মজুমদার , রামচন্দ্র গুহ , কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় ।
উপসংহার : ভারতে খেলাধুলার ইতিহাসে টেনিস , পোলো , গলফ , রাগবি , বাস্কেটবল খেলারও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল । ভারতীয়দের কাছে আধুনিক খেলাধুলা অবসরবিনোদন ও পৌরুষ প্রকাশের মাধ্যম হলেও তা ছিল পরাধীন ভারতে জাতীয়তাবাদ প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ।
6. শিল্পচর্চার ইতিহাসের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ভূমিকা : শিল্পচর্চার ইতিহাসের অন্তর্গত বিষয়গুলি হল । সংগীত , নৃত্য , নাটক ও চলচ্চিত্র । শিল্পচর্চার বিভিন্ন দিক : ইউরোপে রেনেসাঁসের সময়কাল থেকেই চলচ্চিত্র ছাড়া অন্যান্য শিল্পচর্চার ইতিহাসের সূচনা হয়েছিল । এর বিভিন্ন দিকগুলি হল—
[ 1 ]আকার বা ধরন চিহ্নিতকরণ : শিল্পচর্চার অন্তর্গত বিষয়গুলির উদ্ভব , ধরন ও রীতির বিবর্তনকে চিহ্নিত করে এই বিষয়গুলির ইতিহাস নির্মাণ করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য । হে নান্দনিকতা : সংগীত , নৃত্য , নাটক ও চলচ্চিত্র – এর সঙ্গে যুক্ত নান্দনিকতার বিষয়টি কীভাবে শ্রোতা ও দর্শকদের চিত্ত বিনোদনের পাশাপাশি সামাজিক ও মানসিক সংহতি গড়ে তুলেছিল তা চিহ্নিত করাই এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য । [ 2 ] প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব : শিল্পচর্চাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সংগীতকেন্দ্র , নৃত্যশালা , নাট্যকেন্দ্র বা রঙ্গমঞ্চ , সিনেমা হল এবং এইসব প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রগুলির পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করে তাঁদের অবদানের মূল্যায়ন করাও এই ইতিহাসের এক বিশিষ্ট দিক । [ 3 ] রাজনৈতিক গুরুত্ব : সংগীত , নৃত্য , নাটক ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে একটি দেশের সাংস্কৃতিক সত্তা প্রকাশিত হয় । এই সত্তা কীভাবে একটি দেশের রাজনৈতিক সংহতি বা স্বাধীনতা সংগ্রামকে উজ্জীবিত করে তোলে তা চিহ্নিত করাও শিল্পচর্চার ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য ।উপসংহার : শিল্পচর্চার সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও সংগঠনের অভিজ্ঞতা ও শিল্পচর্চা সম্পর্কিত পরীক্ষানিরীক্ষার মূল্যায়ন করার মাধ্যমে কলাকুশলীদের ইতিহাসও গড়ে ওঠে । ভারতে চলচ্চিত্রের আদিপর্ব বিশ্লেষণ করে চলচ্চিত্র ।
7. শিল্পে সত্যজিৎ রায়ের অবদান আলোচনা করো ।
Ans: চলচ্চিত্রের আদিপর্ব : ঔপনিবেশিক শাসনপর্বে ভারতে ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে হরিশ্চন্দ্র সখারাম ভাতওয়াডেকর ‘ দ্য রেস্টলারস ‘ নামক একটি সচল ও নির্বাক ছবি নির্মাণ করেন । পরবর্তীকালে ধুন্দিরাজ গোবিন্দ ফালকে তৈরি করেন ‘ রাজা হরিশ্চন্দ্র ‘ নামক চলচ্চিত্র ( ১৯১৩ খ্রি . ) । তবে , ‘ আলম আরা ‘ চলচ্চিত্রটি ছিল ( ১৯৩১ খ্রি . ) ভারতের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র । ভারতে হীরালাল সেন প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন এবং এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি ‘ ।
ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য ।
- 1. চলচ্চিত্র নির্মাণ : বিজ্ঞাপন জগতের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে সত্যজিৎ যখন চলচ্চিত্র নির্মাণে আত্মনিয়োগ করেন এবং তাঁর বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘ পথের পাঁচালী ‘ ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায় , তখন থেকেই ভারতীয় চলচ্চিত্রে এক নতুন যুগ শুরু হয় বলা যেতে পারে ।
- 2. সত্যজিতের বিখ্যাত চলচ্চিত্রসমূহ : ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুকাল পর্যন্ত সময়ে তিনি ‘ অপরাজিত ‘ , ‘ অপুর সংসার ‘ , ‘ দেবী ‘ , ‘ জলসাঘর ‘ , ‘ ‘ চারুলতা ‘ , ‘ গুপি গাইন বাঘাবাইন ‘ , ‘ হীরক রাজার দেশে ‘ , ‘ সোনার কেল্লা ‘ , ‘ শাখাপ্রশাখা ‘ , ‘ আগন্তুক ‘ প্রভৃতি একের পর এক আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন । ভারতীয় চলচ্চিত্রকে তিনি অস্কার – সহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার এনে দেন ।
8. দৃশ্যশিল্পের ইতিহাস ও তার বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ভূমিকা : আধুনিক ইতিহাসচর্চার বৈচিত্র্যের একটি দিক হল দৃশ্যশিল্পের ইতিহাস । এর প্রধান দুটি বিষয় হল ছবি আঁকা ও ফোটোগ্রাফি ।
ইতিহাস : মানুষ যখন তার মনের ভাব প্রকাশের জন্য রং ও তুলির মাধ্যমে কোনো দৃশ্য নির্মাণ করে , তখন তা ছবি আঁকা নামে পরিচিত । অন্যদিকে ক্যামেরার মাধ্যমে যখন কোনো বাস্তব জিনিসের ছবি তোলা হয় এবং তখন তা ফোটোগ্রাফি নামে পরিচিত । খ্রিস্টপূর্ব ৮০০০ অব্দ থেকেই গুহাচিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে ছবি আঁকার সূচনা হয় এবং ফোটোগ্রাফির সূচনা হয় ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ।
বৈশিষ্ট্য : দৃশ্যশিল্পের ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করলে দেখা যায় যে উদ্ভব ও বিবর্তন : ছবি আঁকা ও ফোটোগ্রাফির উদ্ভব এবং তার যুগ নির্ধারণ ও শ্রেণিবিভক্তিকরণের মাধ্যমে দৃশ্য – শিল্পের ইতিহাস গড়ে ওঠে । এর মাধ্যমে মানুষ ও প্রকৃতি বা পরিবেশের সম্পর্ককে চিহ্নিত করা যায় ।
সংস্কৃতিতে প্রভাব : দৃশ্যশিল্প মানবসভ্যতা ও সংস্কৃতিতে কীভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল তা চিহ্নিত করা এই ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।
পৃষ্ঠপোষকতা : দৃশ্যশিল্পের ইতিহাসে শিল্পী এবং ফোটোগ্রাফার বা আলোকচিত্রীদের অভিজ্ঞতা এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের ইতিহাস খুঁজে বের করাও ওই ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্য ।
শিল্প – প্রতিষ্ঠান : দৃশ্য শিল্পের উন্নতির জন্য বিজ্ঞানসম্মত প্রশিক্ষণের লক্ষ্য নিয়ে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ও রীতি গড়ে উঠেছে তার ইতিহাস আলোচনা ও এই ইতিহাসচর্চার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।
9. স্থাপত্য ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ? অথবা , স্থাপত্য কর্মের ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ?
Ans: ভূমিকা : প্রাচীন স্থাপত্যগুলি হল ইতিহাসের সাক্ষী , তাই স্থাপত্যের ইতিহাস হল অনেকটাই জীবন্ত ইতিহাস ।
স্থাপত্য ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য : ইউরোপে রেনেসাঁসের সময় থেকেই স্থাপত্য ও স্থাপত্য নির্মাণকার্যে যুক্ত কারিগরদের সম্পর্কে স্থাপত্যের ইতিহাস লেখার কাজ শুরু হয় । এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
- 1. প্রতিষ্ঠাকাল : স্থাপত্যের ইতিহাসে মুলত ধর্মীয় প্রশাসনিক বা নান্দনিকতার উদ্দেশ্যে নির্মিত স্থাপত্যগুলির প্রতিষ্ঠাকাল ও প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি চিহ্নিত করা হয় ।
- 2. ইতিহাস নির্মাণ : স্থাপত্যগুলির মাধ্যমে অতীত ও বর্তমান যুক্ত থাকে বলে স্থাপত্যগুলির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত সময়ের ইতিহাস রচনায় এগুলির ভূমিকা তুলে ধরা হয় ।
- 3. স্থাপত্য রীতি : প্রতিটি পৃথক স্থাপত্য রীতির বৈশিষ্ট্য , বিবর্তন ও তার ধারাবাহিকতা তুলে ধরা এই ইতিহাসের বিশে লক্ষণ । এ প্রসঙ্গে ইউরোপের স্থাপত্যে ডোরীয় রীতি , গথিক রীতি , রোমান ও ভিক্টোরীয় রীতির কথা বলা যায় ।
- 4. জাতীয় গর্ব : বিভিন্ন দেশের সেরা স্থাপত্যগুলি কীভাবে সেই দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করে বা জাতীয় আন্দোলনে উৎসাহের সঞ্চার করে তা তুলে ধরাও এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য ।
উপসংহার : স্থাপত্যের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতি , রাজনীতি ও সংস্কৃতির ইতিহাসও জড়িয়ে থাকায় স্থাপত্য ইতিহাস সামগ্রিক ইতিহাসের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অংশ ।
10. স্থানীয় ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করো । অথবা , স্থানীয় ইতিহাসচর্চা সম্পর্কে টীকা লেখো ।
Ans: ভূমিকা : আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিশেষ দিক হল স্থানীয় ইতিহাস । স্থানীয় ইতিহাস বলতে বোঝায় ভৌগোলিকভাবে স্থানীয় প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক সম্প্রদায় বা ব্যক্তি বা বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ইতিহাস । বিভিন্ন দিক : স্থানীয় ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দিককে এভাবে চিহ্নিত করা যায়—
স্থানীয় ইতিহাসের সূত্রপাত : উনিশ শতকের ইংল্যান্ডে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর বা শহরের ইতিহাস রচনার মাধ্যমে স্থানীয় ইতিহাস লেখা শুরু হয় । পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াতেও এই ধরনের ইতিহাস রচনা শুরু হয় ।
স্থানীয় বিষয় : এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় দেশ বা ব্যাপক এলাকার পরিবর্তে ক্ষুদ্র এলাকাকে চিহ্নিত করে সেই স্থানের ইতিহাস অন্বেষণ করা হয় । এভাবে স্থানীয় ইতিহাসসমূহের সমন্বয়ে দেশের ইতিহাস গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয় ।
মৌখিক পরম্পরা : স্থানীয় জনশ্রুতি , মিথ বা অতিকথা , উপকথা , মৌখিক পরম্পরাকে ভিত্তি করে রচিত স্থানীয় ইতিহাস অনেকক্ষেত্রেই অলিখিত থাকে এবং এজন্যই মৌখিক পরম্পরার ই উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় ।
সমাজের ক্ষুদ্র ইতিহাস : স্থানীয় ইতিহাস রচনাকালে স্থানীয় সমাজের ক্ষুদ্র সম্প্রদায় বা ব্যক্তি বা পরিবারের ইতিহাসকে তুলে ধরে এলাকার গুরুত্ব চিহ্নিত করা হয় । তাই এই ইতিহাস হল বৃহত্তর সমাজ – ইতিহাসের ক্ষুদ্র সংস্করণ ।
11. বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ভূমিকা : বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিকাশ , প্রযুক্তির উদ্ভব ও তার অগ্রগতি এবং চিকিৎসাবিদ্যার অগ্রগতিই বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত । আধুনিক অপারেশন থিয়েটার বৈশিষ্ট্য : বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
- 1 জ্ঞানচর্চার ইতিহাস : প্রকৃতি ও মানব শারীরতত্ত্ব সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ , গবেষণা ও তার ব্যাখ্যার ফলেই তত্ত্বগত ও ব্যাবহারিক জ্ঞানের উন্মেষ ঘটেছে বলে এই ইতিহাস হল বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কিত জ্ঞানচর্চার ইতিহাস ।
- 2 অগ্রগতি উপস্থাপন : এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় ইউরোপের রেনেসাঁস পর্বের পরবর্তীকাল থেকে বিংশ শতক পর্যন্ত সময়ের বিজ্ঞান – প্রযুক্তি , শারীরজ্ঞান ও চিকিৎসাবিদ্যার অগ্রগতি পরিমাপ করা হয় ।
- 3 মানবসভ্যতায় প্রভাব বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যা কীভাবে মানবসমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং দেশের অর্থনৈতিক , সামরিক ও চিকিৎসার ক্ষেত্রকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে তা আলোচনা করাই এই ইতিহাসের উদ্দেশ্য ।
- 4 মানবসভ্যতা থেকে যন্ত্রসভ্যতা : মানুষ তার বুদ্ধি ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রশস্ত্র , যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির উন্নতি ঘটায় । প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চিহ্নিত করে মানবসভ্যতার যন্ত্রসভ্যতায় উত্তরণকে ব্যাখ্যা করা এই ইতিহাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ।
উপসংহার : বিজ্ঞান – প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চা আধুনিক ইতিহাসচর্চার এক বিশেষ অঙ্গরূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে । এমনকি সাধারণ ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রেও বিজ্ঞান – প্রযুক্তির ব্যবহার বাধ্যতামূলক ।
12. বিপিনচন্দ্র পালের আত্মচরিত ‘ সত্তর বৎসর ’ কীভাবে ভারতের আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হয়ে উঠেছে তা বিশ্লেষণ করো । অথবা , আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিপিনচন্দ্র পালের ‘ সত্তর বৎসর ‘ নামক আত্মজীবনী গ্রন্থের গুরুত্ব কী ?
Ans: ভূমিকা : ভারতের জাতীয়তাবাদী ও চরমপন্থী নেতা বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘ সত্তর বৎসর ’ – এ ১৮৫৮-১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালের পরিস্থিতি বর্ণিত হয়েছে । ফলে এটি আধুনিক ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ গৌণ উপাদান ।
উপাদানের বিভিন্ন দিক : ‘ সত্তর বৎসর ‘ থেকে ইতিহাসের যে দিকগুলো জানা যায় তা হল গ্রাম ও শহরের কথা : এই গ্রন্থ থেকে বিপিনচন্দ্র পালের বংশ ও পারিবারিক ইতিহাস , বাখরগঞ্জ , ফেঁচুগঞ্জ , শ্রীহট্ট , হবিগঞ্জ – এর মতো গ্রামের পাশাপাশি তৎকালীন কলকাতা শহরের ইতিহাসও জানা যায় ।
সংস্কৃতি : ‘ সত্তর বৎসর থেকে গ্রামীণ সংস্কৃতি অর্থাৎ দোল দুর্গোৎসব , যাত্রাগান ও পুরাণপাঠ , বিবাহ প্রথা – র পাশাপাশি কলকাতার তৎকালীন সংস্কৃতি , খাদ্যাভ্যাস ও বিধিনিষেধ , মদ্যপান ও মদ্যপান নিবারণী সমিতির কথাও জানা যায় ।
ব্রাহ্মসমাজের রাজনৈতিক আদর্শ : তিনি দেখিয়েছেন ইংরেজি শিক্ষিত বাঙালিরা নতুন সামাজিক আদর্শের সন্ধান পেয়েছিল । তৎকালীন ব্রাহ্মসমাজও এই শিক্ষিত বাঙালিদের মধ্যে স্বাধীনতার আদর্শের সঞ্চার করেছিল ।
ভারতসভা ও হিন্দুমেলা : ‘ সত্তর বৎসর ‘ থেকে আনন্দমোহন বসু ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় – এর নেতৃত্বে ছাত্রসভা বা ‘ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ’ ও ‘ ভারতসভা ‘ গঠনের কথা এবং নবগোপাল মিত্র ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘ হিন্দুমেলা ’ নামক জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠানের কথাও জানা যায় ।
উপসংহার : বিপিনচন্দ্র পালই প্রথম ব্যক্তিত্ব যিনি তাঁর আত্মজীবনীতে ‘ দেশকথা’কে তুলে ধরেছেন । তবে তাঁর এই দেশকথাতে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে ।