---Advertisement---

Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer – Boost your Memory l মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়: সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ | প্রস্তুতির জন্য পূর্ণাঙ্গ গাইড

By Siksakul

Updated on:

Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer
---Advertisement---

Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer: মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ইতিহাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। WBBSE এর সিলেবাস অনুযায়ী মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়: সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অধ্যায়টি ছাত্রছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ের মূল বৈশিষ্ট্য, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং সংঘবদ্ধতার সূচনা নিয়ে প্রশ্ন এসে থাকে পরীক্ষায়। তাই এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer, গুরুত্বপূর্ণ MCQ, Short Questions, Long Questions, এবং সহজ ভাষায় ব্যাখ্যাসহ Chapter 4 Full NotesPDF Download লিঙ্ক। এছাড়াও থাকছে অধ্যায়ের উপর ভিত্তি করে সাজেশন (২০২৫), টিকা, বাংলা অনুবাদ ও Madhyamik History Chapter 4 Guide। যারা WBBSE বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, এই গাইড তাদের জন্য একদম উপযোগী।

Table of Contents

মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন চতুর্থ অধ্যায়: সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ | Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer

  1. সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম ঘটনাস্থল ছিল— 

(A) মিরাট 

(B) ঝাঁসি 

(C) কানপুর

(D) ব্যারাকপুর

Ans: (D) ব্যারাকপুর

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মার্চ ব্যারাকপুর সেনানিবাসে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন –

(A) কুনওয়ার সিং

(B) লরেন্স 

(C) মঙ্গল পান্ডে 

(D) নানাসাহেব

Ans: (C) মঙ্গল পান্ডে

  1. সিপাহি বিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন—

(A) লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক

(B) লর্ড এডিনবরা

(C) লর্ড ডালহৌসি

(D) লর্ড ক্যানিং

Ans: (D) লর্ড ক্যানিং

  1. ১৮৫৭ – র মহাবিদ্রোহের সময় দিল্লির মোগল সম্রাট ছিলেন— 

(A) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ 

(B) দ্বিতীয় আলমগির 

(C) দ্বিতীয় আকবর শাহ 

(D) দ্বিতীয় শাহ আলম

Ans: (A) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

  1. ‘ পেশোয়া ‘ পদ লুপ্ত করেন গভর্নর জেনারেল –

(A) লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক 

(B) লর্ড অকল্যান্ড 

(C) লর্ড ডালহৌসি

(D) লর্ড ক্যানিং 

Ans: (C) লর্ড ডালহৌসি

  1. সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ নামে পরিচিত— 

(A) কুনওয়ার সিং

(B) নানাসাহেব

(C) মঙ্গল পান্ডে

(D) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

Ans: (C) মঙ্গল পান্ডে

  1. নানাসাহেব কার পোষ্যপুত্র ছিলেন ? 

(A) দ্বিতীয় বাজিরাও 

(B) প্রথম বাজিরাও 

(C) বালাজি বিশ্বনাথ 

(D) রঘুজি ভোঁসলে 

Ans: (A) দ্বিতীয় বাজিরাও

  1. ভারতে সিপাহি বিদ্রোহকালে নারী হয়েও পুরুষের বেশে লড়াই করেছিলেন যিনি , তিনি হলেন— 

(A) অযোধ্যার বেগম সাহেবা 

(B) জিন্নাতমহল 

(C) রানি লক্ষ্মীবাই 

(D) দেবী চৌধুরানি

Ans: (C) রানি লক্ষ্মীবাই

  1. দিল্লির শেষ মোগল সম্রাট ছিলেন – 

(A) মোহম্মদ শাহ 

(B) প্রথম বাহাদুর শাহ 

(C) দ্বিতীয় শাহ আলম

(D) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

Ans: (D) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

  1. মহাবিদ্রোহের সর্বভারতীয় নেতা ছিলেন – 

(A) প্রথম বাহাদুর শাহ 

(B) নানাসাহেব 

(C) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

(D) তাঁতিয়া টোপি

Ans: (C) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

আরোও দেখুন:

  1. তাঁতিয়া টোপি ছিলেন—

(A) মারাঠা ব্রাহ্মণ

(B) গুজরাটি ব্রাহ্মণ

(C) বাঙালি বাষ্মণ 

(D) তামিল ব্রাহ্মণ 

Ans: (A) মারাঠা ব্রাহ্মণ

  1. ঝাঁসির রানির বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন— 

(A) স্যার হিউরোজ 

(B) আর্ল স্ট্যানলি 

(C) স্যার হ্যাভলক 

(D) এফ উইলিয়ামস 

Ans: (A) স্যার হিউরোজ

  1. নানাসাহেবের বিশ্বস্ত অনুচর ছিলেন –

(A) তাঁতিয়া টোপি

(B) লক্ষ্মীবাই 

(C) কুনওয়ার সিং

(D) আহম্মদুল্লাহ

Ans: (A) তাঁতিয়া টোপি

  1. মহাবিদ্রোহের সময় বিদ্রোহী সেনারা ‘ ভারতের হিন্দুস্থানের সম্রাট ‘ বলে মেনে নিয়েছিলেন— 

(A) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে 

(B) প্রথম শাহ আলমকে 

(C) প্রথম বাহাদুর শাহকে

(D) দ্বিতীয় শাহ আলমকে 

Ans: (D) দ্বিতীয় শাহ আলমকে

  1. মহাবিদ্রোহের পর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন –

(A) মহারানি ভিক্টোরিয়া 

(B) লর্ড ক্যানিং 

(C) ভারত সচিব 

(D) ভাইসরয় 

Ans: (A) মহারানি ভিক্টোরিয়া

  1. কোম্পানি কার হাতে শাসনক্ষমতা প্রত্যার্পণ করে ? 

(A) রানি এলিজাবেথ 

(B) মহারানি ভিক্টোরিয়া 

(C) রানি ইসাবেলা

(D) রানি ক্যাথারিন

Ans: (B) মহারানি ভিক্টোরিয়া

  1. ‘ ভাইসরয় ‘ শব্দের অর্থ কী ? 

(A) রাজপ্রতিনিধি 

(B) সভাসদ 

(C) রাজকর্মচারী

(D) রাজন্যবর্গ

Ans: (A) রাজপ্রতিনিধি

  1. কোম্পানির আমলে শেষ গভর্নর জেনারেল কে ? 

(A) লর্ড ওয়েলেসলি 

(B) লর্ড ডালহৌসি 

(C) লর্ড আমহার্স্ট 

(D) লর্ড ক্যানিং 

Ans: (D) লর্ড ক্যানিং

  1. মহাবিদ্রোহের পরে যে নীতিটি লোপ পায়— 

(A) বশ্যতামূলক মিত্ৰতা নীতি 

(B) স্বত্ববিলোপ নীতি 

(C) অগ্রসর নীতি 

(D) সংযুক্তি নীতি 

Ans: (B) স্বত্ববিলোপ নীতি

  1. An Act for the Better Government of India’— আইন বলে যে পদের সৃষ্টি হয়— 

(A) ভারতীয় কাউন্সিল 

(B) গভর্নর জেনারেল 

(C) ভারত সচিব

(D) কোনোটিই নয়

Ans: C) ভারত সচিব

আরোও দেখুন:

  1. ভারতে কোম্পানির শাসন কায়েম ছিল — 

(A) ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দ – ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ 

(B) ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ – ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ

(C) ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ – ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ

(D) ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ – ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দ

Ans: (B) ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ – ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ

  1. মহারানি ভিক্টোরিয়া ‘ ভারত সম্রাজ্ঞী ‘ উপাধি ধারণ করেন –

(A) ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে 

Ans: (A) ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে

  1. ভারতে ইংরেজ – বিরোধী বিদ্রোহে জনগণের মধ্যে প্রথম স্বতঃস্ফূর্ত সংঘবদ্ধতা যে বিদ্রোহে দেখা যায় , সেটি হল –  

(A) সাঁওতাল বিদ্রোহ 

(B) সিপাহি বিদ্রোহ 

(C) কোল বিদ্রোহ

(D) চুয়াড় বিদ্রোহ

Ans: (B) সিপাহি বিদ্রোহ

  1. কংগ্রেস – পূর্ব যুগকে ‘ সভাসমিতির যুগ ‘ বলেছেন – 

(A) অনিল শীল 

(B) রণজিৎ গুহ 

(C) রামশরণ শর্মা 

(D) নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী 

Ans: (A) অনিল শীল

  1. ঊনবিংশ শতাব্দীকে ‘ সমিতির যুগ ’ বলে অভিহিত করেন –

(A) সুশোভন সরকার 

(B) ড . অনীল শীল 

(C) রমেশচন্দ্র মজুমদার 

(D) অমলেশ ত্রিপাঠী 

Ans: (B) ড . অনীল শীল

  1. ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হল— 

(A) ভারতের জাতীয় কংগ্রেস 

(B) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা 

(C) ল্যান্ড হোল্ডার্স সোসাইটি 

(D) ভারতসভা

Ans: (B) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

  1. ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় –

(A) ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে 

Ans: (D) ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে

  1. ‘ আত্মীয়সভা ‘ প্রতিষ্ঠা করেন— 

(A) রামমোহন রায় 

(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(C) দ্বারকানাথ ঠাকুর

(D) কেশবচন্দ্র সেন

Ans: (A) রামমোহন রায়

  1. ‘ ব্রাহ্মসভা ‘ ছিল একটি –

(A) রাজনৈতিক 

(B) সাংস্কৃতিক 

(C) অর্থনৈতিক

(D) ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান

Ans: (D) ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান

  1. অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করে—

(A) ইয়ং বেঙ্গল 

(B) হিন্দুমেলা 

(C) জমিদার সভা 

(D) ভারতসভা

Ans: (A) ইয়ং বেঙ্গল

  1. ভারতে প্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটি হল – 

(A) জমিদার সভা 

(B) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা 

(C) হিন্দুমেলা

(D) ভারতসভা

Ans: (D) ভারতসভা

  1. ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ‘ স্থাপিত হয়— 

(A) ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে

(B) ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে

(D) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে

Ans: (B) ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে

  1. ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ‘ ছিল একটি –

(A) সাহিত্য সভা 

(B) ব্যবসায়ী সংগঠন

(C) রাজনৈতিক সভা 

(D) শিক্ষক সভা 

Ans: (C) রাজনৈতিক সভা

  1. ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সম্পাদিত সংবাদপত্রটির নাম ছিল— 

(A) সম্বাদ কৌমুদী 

(B) সমাচার দর্পণ 

(C) দিগ্‌দর্শন 

(D) সংবাদ প্রভাকর 

Ans: (D) সংবাদ প্রভাকর

  1. ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা ‘ – র পূর্বসূরী ছিল— 

(A) জ্ঞানোপার্জিকা সভা

(B) ভারতবর্ষীয় সভা

(C) জমিদার সভা 

(D) সর্বতত্ত্বদীপিকা সভা 

Ans: (D) সর্বতত্ত্বদীপিকা সভা

  1. ‘ সর্বতত্ত্বদীপিকা সভা’ র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন— 

(A) রমাপ্রসাদ রায় 

(B) রমাকান্ত রায় 

(C) রমারঞ্জন রায় 

(D) রমানাথ রায় 

Ans: (A) রমাপ্রসাদ রায়

  1. ‘ সর্বতত্ত্বদীপিকা সভা ‘ প্রতিষ্ঠিত হয়— 

(A) ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে

(D) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে

Ans: (A) ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে

  1. ‘ জমিদার সভা’র অন্যতম প্রতিষ্ঠিতা ছিলেন— 

(A) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(B) প্রসন্ন কুমার ঠাকুর

(C) সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(D) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর 

Ans: (B) প্রসন্ন কুমার ঠাকুর

  1. জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের— 

(A) ১৯ মার্চ 

(B) ২০ এপ্রিল

(C) ১২ নভেম্বর 

(D) ২ নভেম্বর 

Ans: (A) ১৯ মার্চ

  1. জমিদার সভা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন –

(A) প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর 

(B) কালীনাথ রায়চৌধুরী 

(C) প্রসন্নকুমার ঠাকুর 

(D) রাধাকান্ত দেব 

Ans: (D) রাধাকান্ত দেব

  1. ‘ ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় –

(A) ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে 

Ans: (C) ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে

  1. ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয় –

(A) ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে 

Ans: (B) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে

  1. ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের মুখপত্র ছিল –

(A) হিন্দু প্যাট্রিয়ট 

(B) বেঙ্গলি 

(C) অমৃতবাজার 

(D) হিন্দু 

Ans: (A) হিন্দু প্যাট্রিয়ট

  1. ইন্ডিয়ান লিগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন –

(A) শিশিরকুমার ঘোষ 

(B) মতিলাল ঘোষ

(C) রাসবিহারী ঘোষ 

(D) গিরিশচন্দ্র ঘোষ 

Ans: (A) শিশিরকুমার ঘোষ

  1. ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন যে বিদ্রোহের পক্ষে ছিল –

(A) সাঁওতাল বিদ্রোহের 

(B) দাক্ষিণাত্য বিদ্রোহের 

(C) মুন্ডা বিদ্রোহের 

(D) নীল বিদ্রোহের

Ans: (D) নীল বিদ্রোহের

  1. ‘ দি বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি গড়ে ওঠে— 

(A) ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে

(B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে

Ans: C) ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে

  1. ‘ পুনা সার্বজনিক সভা ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় –

(A) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে

Ans: (A) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে

  1. সর্বপ্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক আন্দোলনের সূচনা যাঁর হাত ধরে হয় , তিনি হলেন—

(A) রাজা রামমোহন রায় 

(B) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 

(C) স্বামী বিবেকানন্দ 

(D) দাদাভাই নওরোজি 

Ans: (A) রাজা রামমোহন রায়

  1. ‘ উনিশ শতকে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক সমিতিগুলির মাধ্যমেই ভারতে আধুনিক রাজনীতির সূচনা ঘটে’— উক্তিটি হল— 

(A) ড . রমেশচন্দ্র মজুমদারের 

(B) ড . সুরেন্দ্রনাথ সেনের 

(C) অধ্যাপক সুশোভন সরকারের 

(D) ড . অনিল শীলের 

Ans: (D) ড . অনিল শীলের

  1. ‘ হিন্দুমেলা ‘ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যাঁর নাম জড়িত তিনি হলেন— 

(A) প্যারিচাঁদ মিত্র 

(B) নবগোপাল মিত্র 

(C) শিশিরকুমার ঘোষ 

(D) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়

Ans: B) নবগোপাল মিত্র

  1. ‘ জাতীয় মেলা ‘ বা ‘ হিন্দুমেলা ‘ প্রতিষ্ঠিত হয়— 

(A) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে 

(C) ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে 

Ans: B) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে

  1. ‘ জাতীয় মেলা ‘ বা ‘ হিন্দুমেলা ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় –

(A) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে 

Ans: B) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে

  1. ‘ হিন্দুমেলা’র অপর নাম –

(A) চৈত্রমেলা 

(B) মাঘীপূর্ণিমা মেলা

(C) পৌষপার্বণ মেলা

(D) বৈশাখী মেলা 

Ans: (A) চৈত্রমেলা

  1. ‘ হিন্দুমেলার উপহার ‘ কবিতাটি রচনা করেন –

(A) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(B) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(C) নবগোপাল মিত্র 

(D) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর

Ans: (C) নবগোপাল মিত্র

  1. “ মিলে সব ভারত সন্তান ‘ গানটির রচয়িতা হলেন – 

(A) সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(B) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(C) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(C) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

Ans: (A) সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর

  1. ‘ হিন্দুমেলা ‘ প্রবর্তন করেন— 

(A) রাজনারায়ণ বসু 

(B) অরবিন্দ ঘোষ 

(C) নবগোপাল মিত্র 

(D) আনন্দমোহন বসু 

Ans: C) নবগোপাল মিত্র

  1. হিন্দুমেলার উত্তরসূরী ছিল— 

(A) সর্বশুভকরী সভা 

(B) জাতীয় গৌরব সঞ্চারিণী সভা 

(C) হিতসাধনী সভা

(D) এর কোনোটিই নয়

Ans: (B) জাতীয় গৌরব সঞ্চারিণী সভা

  1. হিন্দুমেলা কতদিন চলেছিল ? 

(A) দশ বছর 

(B) এগারো বছর 

(C) বারো বছর 

(D) চোদ্দো বছর 

Ans: (D) চোদ্দো বছর

  1. ইস্ট ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা কে ? 

(A) মনমোহন ঘোষ

(B) দাদাভাই নওরোজি 

(C) উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় 

(D) ফিরোজ শাহ মেহতা 

Ans: (B) দাদাভাই নওরোজি

  1. ভারতসভা প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের— 

(A) ২০ এপ্রিল 

(B) ২৬ জুলাই 

(C) ১৪ নভেম্বর 

(D) ১২ নভেম্বর 

Ans: (B) ২৬ জুলাই

  1. ‘ ‘ ভারতসভা ‘ – র প্রথম সভাপতি ছিলেন— 

(A) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় 

(B) আনন্দমোহন বসু 

(C) রেভা . কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় 

(D) শিবনাথ শাস্ত্রী 

Ans: (A) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়

আরোও দেখুন:

মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়: সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer

  1. সিপাহি বিদ্রোহ কথাটি প্রথম কে ব্যবহার করেন ? 

Ans: ‘ সিপাহি বিদ্রোহ ‘ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন ভারত সচিব আর্ল স্ট্যানলি । 

  1. সিপাহি বিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন ?

Ans: সিপাহি বিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড ক্যানিং । 

  1. সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ কে ছিলেন ? 

Ans: সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ মঙ্গল পান্ডে । 

  1. প্রথম কোথায় সিপাহি বিদ্রোহ আত্মপ্রকাশ করে ? 

Ans: সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম আত্মপ্রকাশ করে ব্যারাকপুরে । 

  1. ব্রিটিশ ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন ? 

Ans: ব্রিটিশ ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড ক্যানিং । 

  1. কাকে বিদ্রোহীরা ‘ হিন্দুস্থানের সম্রাট ‘ বলে ঘোষণা করে ?  

Ans: দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে বিদ্রোহীরা ‘ হিন্দুস্থানের সম্রাট ‘ বলে ঘোষণা করে । 

  1. ভারতের শেষ মোগল সম্রাট কে ছিলেন ? 

Ans: ভারতের শেষ মোগল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ । 

  1. কে প্রথম সিপাহি বিদ্রোহ শুরু করে ?

Ans: মঙ্গল পান্ডে প্রথম সিপাহি বিদ্রোহ শুরু করে । 

  1. করার অপরাধে সিপাহি বিদ্রোহে অংশগ্রহণ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে কোথায় নির্বাসন দেওয়া হয় ? 

Ans: সিপাহি বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করার অপরাধে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে রেঙ্গুনে নির্বাসন দেওয়া হয় । 

  1. নির্বাসনকালে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের বয়স কত ছিল ? 

Ans: নির্বাসনকালে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের বয়স ছিল বছর । 

  1. মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ কোথায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ? 

Ans: মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ রেঙ্গুনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন । 

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে কে ভারতের স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ বলে অভিহিত করেন ? 

Ans: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে বিনায়ক দামোদর সাভারকার ভারতের স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ বলে অভিহিত করেন । 

  1. কার্ল মার্কস ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে কী বলেছিলেন ? 

Ans: কার্ল মার্কস ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে বলেছিলেন এটি ছিল জাতীয় বিদ্রোহ । 

  1. ” মহাবিদ্রোহ ছিল ক্ষয়িষ্ণু অভিজাত তন্ত্র ও মৃতপ্রায় সামস্তশ্রেণির মৃত্যুকালীন আর্তনাদ ” —উক্তিটি কার ?  

Ans: উক্তিটি ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার – এর । 

  1. মহাবিদ্রোহের একজন নেতার নাম লেখো । 

Ans: মহাবিদ্রোহের একজন নেতার নাম তাঁতিয়া টোপি ।

  1. মহাবিদ্রোহ দমন করেছিল এমন একজন ব্রিটিশ সেনাপতির নাম লেখো ।

Ans: মহাবিদ্রোহ দমন করেছিল এমন একজন ব্রিটিশ সেনাপতি হলেন হ্যাভলক । 

  1. বিদ্রোহে বাঙালি ‘ গ্রন্থটি কার লেখা ?

Ans: ‘ বিদ্রোহে বাঙালি ‘ গ্রন্থটি দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা । 

  1. মহারানির ঘোষণাপত্র করে প্রকাশিত হয় ? 

Ans: মহারানির ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হয় ১ নভেম্বর ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে । 

  1. মহারানির ঘোষণাপত্রটি ভারতের কোথায় ঘোষিত হয় ? 

Ans: মহারানির ঘোষণাপত্রটি ভারতের এলাহাবাদে ঘোষিত হয় । 

  1. মহারানির ঘোষণাপত্র’টি এলাহাবাদে কে পাঠ করেন । 

Ans: মহারানির ঘোষণাপত্র’টি এলাহাবাদে পাঠ লর্ড ক্যানিং । 

  1. কত খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে ? 

Ans: ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে । 

  1. কোন আইন বলে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে ? 

Ans: An Act for the Better Government of India 1858 আইন বলে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে । 

  1. মহারানির ঘোষণাপত্রকে কী নামে অভিহিত করা হয় ? 

Ans: মহারানির ঘোষণাপত্রকে ভারতীয় জনগণের ‘ ম্যাগনা কার্টা হিসেবে অভিহিত করা হয় । 

  1. ভাইসরয় ‘ কথার অর্থ কী ? 

Ans: ‘ ভাইসরয় ‘ কথার অর্থ রাজপ্রতিনিধি । 

  1. ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন ? 

Ans: ভারতের প্রথম ভাইসরয় লর্ড ক্যানিং । 

  1. কবে বোর্ড অফ কন্ট্রোলের অবসান ঘটে । 

Ans: ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে বোর্ড অফ কন্ট্রোলের অবসান ঘটে । 

  1. ভারতে ভাইসরয়ের শাসন কবে থেকে শুরু হয় । 

Ans: ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ভারতে ভাইসরয়ের শাসন থেকে শুরু হয় । 

  1. ভারত সচিবের সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত ? 

Ans: ভারত সচিবের সদর দপ্তর ছিল লন্ডনে । 

  1. ভারত সচিবের দপ্তরের নাম কী ছিল ? 

Ans: ভারত সচিবের দপ্তরের নাম ছিল ইন্ডিয়া হাউস । 

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ভারতের আকাশ থেকে মেঘ দূর করেছিল — এ কথা কে বলেছেন ? 

Ans: ঐতিহাসিক স্যার লেপেল গ্রিফিন – এর । 

  1. হিন্দুমেলার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ? 

Ans: হিন্দুমেলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর । 

  1. উনিশ শতকে ভারতে সভাসমিতি গঠনের পরিণতি কোন প্রতিষ্ঠানে রূপায়িত .

Ans: উনিশ শতকে ভারতে সভাসমিতি গঠনের চরম পরিণতি জাতীয় কংগ্রেস গঠিত হয় । 

  1. পুনা সার্বজনিক সভা ( ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে ) কার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ? 

Ans: গোপালহরি দেশমুখের নেতৃত্বে পুনা সার্বজনিক সভা ( ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে ) গড়ে ওঠে । 

  1. ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কে প্রতিষ্ঠা করেন ? 

Ans: অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন । 

  1. কত খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় ?

Ans: ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় ।

  1. জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন ? 

Ans: জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি ছিলেন উমেশচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় । 

  1. আনন্দমঠ উপন্যাসটি কার লেখা ? 

Ans: ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা 

  1. ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস করে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ? 

Ans: ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় । 

  1. ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সংগীতটি কোন্ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

Ans: ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সংগীতটি ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে । 

  1. ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সঙ্গীতটি প্রথম কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ? 

Ans: ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সঙ্গীতটি প্রথম বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । 

  1. কে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘ ভারতীয় জাতীয়তাবাদের গুরু ’ বলেছেন ? 

Ans: অরবিন্দ ঘোষ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের গুরু ’ বলেছেন । 

  1. পরাধীন ভারতের ‘ জাতীয় সংগীত ‘ কোনটি ? 

Ans: পরাধীন ভারতের ‘ জাতীয় সংগীত ‘ ছিল ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ । 

  1. ‘ বর্তমান ভারত ‘ কার লেখা ? 

Ans: ‘ বর্তমান ভারত ’ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা । 

  1. ‘ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ‘ কার লেখা ? 

Ans: ‘ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ‘ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা । 

  1. ‘ ‘ বর্তমান ভারত ‘ প্রথম কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ? 

Ans: ‘ বর্ত্তমান ভারত ‘ পত্রিকায় প্রথম উদ্‌বোধন প্রকাশিত হয় । 

মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়: সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer

  1. সিপাহি বিদ্রোহ কাকে বলা হয় ? 

Ans: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বড়োেলাট লর্ড ক্যানিং – এর শাসনকালে উত্তর ও মধ্য ভারতের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারতীয় সিপাহিদের ( সৈনিক ) নেতৃত্বে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে — যা ইংরেজ শাসনের ভিতকে কাঁপিয়ে দেয় । আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মার্চ ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হয় । তবে ১৮৫৭ – র ১০ মে উত্তরপ্রদেশের মিরাট সেনাছাউনিতে প্রকৃতপক্ষে মহাবিদ্রোহ শুরু হয় । 

  1. সিপাহি বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল ? 

Ans: এনফিল্ড রাইফেলের প্রবর্তন ছিল সিপাহি বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ । নতুন ধরনের এই বন্দুকের টোটায় মধ্যে গোরু ও শুকরের চর্বি মিশ্রিত থাকার গুজব রটালে ধর্মনাশের ভয়ে হিন্দু ও মুসলিম সিপাহিরা এই রাইফেল ব্যবহার করতে অস্বীকার করে । কিন্তু ইংরেজরা ভারতীয় সিপাহিদের দাবি না মানলে ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে তারা প্রকাশ্যে বিদ্রোহ শুরু করে ( ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ) । 

  1. কোন্ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিপাহি বিদ্রোহের সূত্রপাত হয় ? 

Ans: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ব্যারাকপুর সেনাছাউনিতে মঙ্গল পান্ডে নামে এক সেনা এনফিল্ড রাইফেলের টোটার চর্বি ব্যবহারকে কেন্দ্র করে ক্রুদ্ধ হয়ে তাঁর ঊর্ধ্বতন ইংরেজ অফিসারকে আক্রমণ করেন ( ২৯ মার্চ ১৮৫৭ খ্রি . ) । ফলে সামরিক আদালতে বিচারে তাঁর ফাঁসি হয় । এই ঘটনাই সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা ঘটায় । 

  1. দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ কে ছিলেন ? তিনি কোথায় । নির্বাসিত হন ? 

Ans: দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ছিলেন সর্বশেষে মোগল সম্রাট এবং সিপাহি বিদ্রোহে সিপাহিদের সর্বভারতীয় নেতা । যদিও তিনি অনেক ইতঃস্তত করেই সিপাহি বিদ্রোহের সর্বভারতীয় নেতা হতে রাজি হন । সিপাহি বিদ্রোহে অংশগ্রহণের অপরাধে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ব্রষ্মদেশের রেঙ্গুনে তিনি নির্বাসিত হন । 

  1. ঝাঁসির রানি বিখ্যাত কেন ? 

Ans: ঝাঁসির রানি বিখ্যাত , কারণ প্রথমত , ঝাঁসি রাজ্য কোম্পানির অধিগ্রহণ করার প্রতিবাদে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই সিপাহি বিদ্রোহে ঝাঁপিয়ে পড়েন । দ্বিতীয়ত , তিনি মহাবিদ্রোহের একজন উল্লেখযোগ্য নেত্রী ছিলেন এবং তিনি পুরুষের বেশে যুদ্ধ করেন । তৃতীয়ত , যুদ্ধে অসম সাহস ও বীরত্ব দেখানো সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তিনি সম্মুখযুদ্ধে ১৭ জুন ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন । 

  1. মঙ্গল পান্ডে স্মরণীয় কেন ? 

Ans: মঙ্গল পান্ডে স্মরণীয় , কারণ— প্রথমত , উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলায় জন্মগ্রহণকারী মঙ্গল পান্ডে ( ১৮২৭-১৮৫৭ খ্রি . ) ছিলেন ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ৩৪ নং বেঙ্গল আর্মির একজন দেশীয় সিপাহি । দ্বিতীয়ত , গোরু ও শূকরের চর্বি মিশ্রিত এনফিল্ড রাইফেলের টোটা ব্যবহারের বিরুদ্ধে মঙ্গল পান্ডে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ( ২৯ মার্চ , ১৮৫৭ খ্রি . ) । লেফটেন্যান্ট ‘ বোগ’কে আক্রমণ করেন এবং শেষপর্যন্ত ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ করেন । তৃতীয়ত , মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে সিপাহি বিদ্রোহের খবর অন্যান্য সামরিক ছাউনিতে ছড়িয়ে পড়লে উত্তর ভারতে সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা হয় । 

  1. নানাসাহেব কেন বিখ্যাত ? নানাসাহেব ( ১৮২৪-১৮৫৭ / ১৮৫৯ খ্রি . ) বিখ্যাত , কেন ?

Ans: কারণ প্রথমত , তিনি ছিলেন মারাঠা পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও – এর দত্তক পুত্র ও পেশোয়াপদের উত্তরাধিকারী । দ্বিতীয়ত , লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ আইন দ্বারা নানাসাহেবের প্রাপ্য রাজন্য ভাতা বাতিল করা হলে তিনি ইংরেজ বিরোধী হয়ে ওঠেন এবং সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হলে কানপুরে সিপাহি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন । তৃতীয়ত , যদিও নানাসাহেব সিপাহি বিদ্রোহের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর রাজ্য উদ্ধারে ব্যর্থ হন তথাপি তাঁর বীরগাথাকে স্মরণ করে সংগীত , নাটক , সিনেমাও তৈরি হয়েছে । 

  1. ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে কি সিপাহি বিদ্রোহ বলা সংগত ? 

Ans: ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে শুধুমাত্র সিপাহি বিদ্রোহ বলা যায় না , কারণ প্রথমত , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ ইংরেজ কোম্পানির ভারতীয় সিপাহিরা শুরু করলেও পরবর্তীকালে উত্তর ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকার জনগণ ব্যাপকভাবে এই বিদ্রোহে শামিল হয় । দ্বিতীয়ত , কয়েকটি স্থানে সিপাহিরা বিদ্রোহ না করলেও জনগণ বিদ্রোহ করেছিল এবং সামস্ত প্রভুরা যোগদান করেছিল । 

  1. ১৮৫৭ -র বিদ্রোহকে সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া বলা হয় কেন ? 

Ans: ১৮৫৭ – র বিদ্রোহে কিছু রাজ্যচ্যুত সামন্তরাজা ও ভূমিচ্যুত জমিদার ও তালুকদার নেতৃত্ব দিয়েছিল । এদের লক্ষ্য ছিল হৃত রাজ্য ও জমিদারি পুনরুদ্ধার । সামস্তশ্রেণির এই প্রয়াসকে বামপন্থী চিন্তাবিদ রজনীপাম দত্ত রক্ষণশীল ও সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলির অভ্যুত্থান বলে উল্লেখ করেছেন । 

  1. ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে ভারতে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলা হয় – কেন ? 

Ans: প্রখ্যাত বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকার ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে ভারতের ‘ প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ ‘ বলে আখ্যায়িত করেছেন , কারণ প্রথমত , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী বিদ্রোহীরা মনেপ্রাণে ইংরেজ বিতাড়ন করতে চেয়েছিল । দ্বিতীয়ত , বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক একসঙ্গে লড়েছিল এবং দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ভারতের সম্রাট বলে মেনে নিয়েছিল । তৃতীয়ত , ইংরেজ – বিরোধী এত ব্যাপক আন্দোলন ইতিপূর্বে ভারতে আর হয়নি । 

  1. ১৮৫৭ – র মহাবিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ ’ বলা যায় না কেন ? 

Ans: প্রখ্যাত বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকার ১৮৫৭ – র মহাবিদ্রোহকে ‘ ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম ‘ বলে অভিহিত করেছেন । কিন্তু ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার ও সুরেন্দ্রনাথ সেন এই মতকে অস্বীকার করে বলেছেন যে , ( ১ ) জনগণের অংশগ্রহণ সর্বত্র সমানভাবে ঘটেনি ; ( ২ ) মারাঠা , রাজপুত , শিখ , গোরখা প্রভৃতি জাতি বিদ্রোহ থেকে দূরে ছিল ; ( ৩ ) সে সময় জাতীয় চেতনার উন্মেষ হয়নি ; ( ৪ ) বিদ্রোহীরা নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থে বিদ্রোহ করেছিল — জাতীয় স্বার্থে নয় । তাই এই বিদ্রোহকে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলা যায় না । 

  1. ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে জাতীয় সংগ্রাম / জাতীয় বিদ্রোহ বলা কতটুকু যুক্তিসংগত ? 

Ans: ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের স্পষ্ট উদ্দেশ্য ও সর্বভারতীয় চরিত্র না – থাকলেও তা ছিল জাতীয় সংগ্রাম , কারণ 214 31 প্রথমত , ভারতের এক বৃহদাংশের নানা শ্রেণির জনগণ ও সিপাহিরা একযোগে লড়ে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিল । দ্বিতীয়ত , তারা বাহাদুর শাহকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীকরূপে ভারতের সম্রাট বলে ঘোষণা করে । তৃতীয়ত , এই বিদ্রোহে জনগণের সার্বিক অংশগ্রহণ ও স্পষ্ট উদ্দেশ্য না থাকলেও এই বিদ্রোহ জাতীয় বিদ্রোহের চরিত্রলাভ করেছিল । 

  1. ১৮৫৭ – র মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র সম্পর্কে দুটি পরস্পরবিরোধী মতের উল্লেখ করো । 

Ans: ম্যালেসন , জন কে , স্যার জন লরেন্স , রবার্টস প্রমুখ ইংরেজ ঐতিহাসিক সিপাহি বিদ্রোহকে নিছক সিপাহি বিদ্রোহ বলেই অভিহিত করেছিলেন , কারণ এই বিদ্রোহ সিপাহিদের দ্বারা সূচিত হয়েছিল এবং সিপাহিদের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল । অপরদিকে জে বি নর্টন , আলেকজান্ডার ডাফ , হোমস প্রমুখ মত প্রকাশ করেছিলেন যে , প্রথমে সিপাহিদের মধ্যে শুরু হলেও ক্রমশ এই বিদ্রোহ জাতীয় বিদ্রোহের রূপ পরিগ্রহ করে ।

  1. বাঙালি বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় এই বিদ্রোহ থেকে দূরে ছিলেন কেন ? 

অথবা , শিক্ষিত বাঙালি সমাজ কেন ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে সমর্থন করেননি ? 

Ans: ইংরেজ প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ ও নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে বাঙালি বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় ইংরেজ সরকারকে সমর্থন করেছিল এবং সিপাহি বিদ্রোহের বিপক্ষে ছিল । এ প্রসঙ্গে বাঙালি বুদ্ধিজীবী দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় , কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত , জমিদার রাধাকান্ত দেব প্রমুখের কথা বলা যায় । 

  1. মহাবিদ্রোহ দমনে সাহায্য করেছিল এমন কয়েকটি দেশীয় শক্তির নাম লেখো । 

Ans: মহাবিদ্রোহ দমনে বেশ কিছু দেশীয় শক্তি ইংরেজদের সাহায্য করেছিল । এমন কয়েকটি দেশীয় শক্তি হল— গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া , কাশ্মীরের মহারাজা , হায়দ্রাবাদের নিজাম , যোধপুরের রাজা , গোরখা নেতা জং বাহাদুর প্রমুখ । 

  1. মির্জা গালিব কে ছিলেন ? 

Ans’ মির্জা গালিব ( ১৭৯৭ – ১৮৬৯ খ্রি . ) , উর্দু ও পারসি ভাষার একজন বিখ্যাত কবি , – প্রথমত , যিনি শেষ মোগল সম্রাটের রাজদরবারের কবিও ছিলেন । দ্বিতীয়ত , তিনি ১৮৫৭ – র বিদ্রোহে মোগলদের অংশগ্রহণ ও পরাজয়ের কথাও বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন ‘ চোখের সামনে দেখছি রক্তের নদী বয়ে চলেছে । তৃতীয়ত , মহাবিদ্রোহের পরে মোগল শাসনের অবসানের পর ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে তিনি পৃষ্ঠপোষকতা বা পুরো ভাতা লাভ করতে ব্যর্থ হন ।

  1. মহাবিদ্রোহের পর থেকে ভারতের ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেলকে কেন ভাইসরয় বলা হত ? 

Ans: ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন দ্বারা ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে এবং ভারতের শাসনভার সরাসরি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের শাসন শুরু হয় । এই কারণে মহাবিদ্রোহের পর থেকে ব্রিটিশ ‘ রাজপ্রতিনিধি ‘ হিসেবে ভাইসরয় – এর পদ তৈরি । একারণেই গভর্নর জেনারেলকে ‘ ভাইসরয় ‘ বা রাজপ্রতিনিধি বলা হত ।

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর দেশীয় রাজাদের সঙ্গে ইংরেজরা কীরুপ সম্পর্ক গড়ে তোলে ? 

Ans: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর দেশীয় রাজাদের সঙ্গে ইংরেজরা সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী হয় , যেমন— প্রথমত , মহাবিদ্রোহের আগে দেশীয় রাজাদের মনে ইংরেজদের প্রতি যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করার জন্য মহারানির ঘোষণাপত্রে স্বত্ববিলোপ নীতি রদ করা হয় এবং সরকার ভারতে আর রাজ্যবিস্তার করবে না বলে ঘোষণা করে । 

  1. উনিশ শতককে ‘ সভাসমিতির যুগ ‘ ( Age of Association ) বলে অভিহিত করা হয় কেন ? 

অথবা , সভাসমিতির যুগ কাকে বলে ? 

Ans: জাতীয় চেতনা উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে ভারতবাসীর মনে দেশাত্মবোধের ধারণা জাগ্রত হয় এবং ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য ভারতীয়রা সংঘবন্ধ আন্দোলনের তাগিদ অনুভব করে । এই উপলব্ধি থেকেই উনিশ শতকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু রাজনৈতিক সভাসমিতি গড়ে ওঠে । এই কারণে অধ্যাপক অনিল শীল উক্ত সময়কালকে সভাসমিতির যুগ ‘ বলে অভিহিত করেছেন । 

  1. সভাসমিতির যুগে রাজনৈতিক সভাগুলির বৈশিষ্ট্যগুলি কী ছিল ? 

Ans: উনিশ শতকে বাংলা তথা ভারতে সভাসমিতির বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল প্রথমত , বাংলাতেই প্রথম সভাসমিতি গড়ে ওঠে এবং পরে বাংলার অনুকরণে ভারতের অন্যান্য স্থানে তা গড়ে ওঠে । দ্বিতীয়ত , এগুলি শুরুতে উচ্চবিত্ত ও অভিজাতকেন্দ্রিক হলেও ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর মধ্যবিত্ত শ্রেণির দ্বারা পরিচালিত হত । তবে এগুলিতে একারণেই সাধারণ মানুষের স্বার্থ ছিল উপেক্ষিত । তৃতীয়ত , এগুলি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল গোষ্ঠী স্বার্থ ও আঞ্চলিক স্বার্থ বজায় রাখা এবং আঞ্চলিক ভিত্তিতে ভারতীয়দের দাবিদাওয়া পুরণের চেষ্টা করা ।

  1. ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ’ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? এই সভার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ? 

Ans: ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ’ প্রতিষ্ঠিত হয় । এই সভার প্রথম সম্পাদক ছিলেন দুর্গাপ্রসাদ তর্কপঞ্চানন । 

  1. বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার ’ লক্ষ্য কী ছিল ?

Ans: বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার লক্ষ্য ছিল প্রথমত , বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা করাই ছিল । এই সভার প্রাথমিক লক্ষ্য । দ্বিতীয়ত , পরবর্তীকালে এই সভা রাজনৈতিক সংস্থায় পরিণত হয় । এই সময় বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার মূল লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশদের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বা কার্যাবলি ভারতবাসীর কতটা হিতসাধন বা ক্ষতি করতে পারে তা পর্যালোচনা করা । 

  1. জমিদার সভা কারা , কবে প্রতিষ্ঠা করেন ? 

Ans: ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে ( ১৯ মার্চ ) জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয় । এই সভার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা রাধাকান্ত দেব , দ্বারকানাথ ঠাকুর ও প্রসন্নকুমার ঠাকুর । 

  1. জমিদার সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ? 

Ans: জমিদার সভা প্রতিষ্ঠার ( ১৮৩৮ খ্রি . ) উদ্দেশ্যগুলি হল— প্রথমত , বাংলা – বিহার – উড়িষ্যার জমিদার স্বার্থ রক্ষা করা ও জমিদারদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা । দ্বিতীয়ত , জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় এবং সরকার কর্তৃক নিষ্কর জমির বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা । তৃতীয়ত , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার সাধন করা । বাস্তবেও দেখা যায় যে , ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ‘ নিষ্কর জমির বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিল , ‘ জমিদার সভা ‘ সেই বিষয়েই নতুন করে জনমত গড়ে তোলে । 

  1. কবে , কাদের উদ্যোগে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় ? 

Ans: ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম অ্যাডাম ও জর্জ টমসন – এর উদ্যোগে ‘ ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় । sche ৪৫ ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি গঠনের উদ্দেশ্য কী ছিল ? ( উত্তর ) ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া সোসাইটি গঠনের একাধিক উদ্দেশ্য ছিল । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের দাবি জানানোর পাশাপাশি ভারতীয়দের অবস্থার উন্নতি , পুলিশ ও রাজস্ব বিভাগের সংস্কারসাধনের দাবি জানানো ।

  1. ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম সভাপতি ও প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ?

Ans: ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম সভাপতি ছিলেন রাজা রাধাকান্তদেব । প্রথম সম্পাদক ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর । 

  1. বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি করে স্থাপিত হয় ? এর বাংলা নামটি কী ছিল ? 

Ans: বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২৫ এপ্রিল স্থাপিত হয় । এর বাংলা নামটি ছিল ‘ ভারতবর্ষীয় সভা ‘ । 

  1. বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি গঠনের লক্ষ্য কী ছিল ?

Ans: বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি গঠনের লক্ষ্য ছিল সকল শ্রেণির ভারতবাসীর কল্যাণসাধন এবং তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকারগুলিকে সুনিশ্চিত করা । 

  1. জ্ঞানোপার্জিকা সভা ‘ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? এই সভার কীভাবে বিলোপ ঘটে ?

Ans: ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি “ জ্ঞানোপার্জিকা সভা ’ প্রতিষ্ঠিত হয় । পরে এই সভা জ্ঞানোপার্জনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ত্যাগ করে এবং বেঙ্গল – ব্রিটিশ সোসাইটি নামক একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয় । 

  1. ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন কবে , কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? 

Ans: ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ অক্টোবর ‘ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশান ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় । জমিদার সভা ’ ও ‘ বেঙ্গল ব্রিটিশ সোসাইটি’মিলিত হয়েব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয় । 

  1. ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের মুখপত্রটির নাম কী ছিল ? এই মুখপত্রের সম্পাদক কে ছিলেন ? 

Ans: ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের মুখপত্রটির নাম ছিল ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘ । এই মুখপত্রের সম্পাদক ছিলেন হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় । 

মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়: সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer

1. সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের ( ১৮৫৭ খ্রি . ) চরিত্র বিশ্লেষণ করো ।

 অথবা , মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো ।

Ans: ভূমিকা : ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের সময়কাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ঐতিহাসিকরা এই বিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ করেছেন । 

চরিত্র ও প্রকৃতি : ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের প্রকৃতির বিভিন্ন দিকগুলি হল –

 শুধুমাত্র সিপাহি বিদ্রোহ : ম্যালেসন , জন কে , স্যার জন লরেন্স , পি ই রবার্টস প্রমুখ ইংরেজ এই বিদ্রোহকে নিছক সিপাহি বিদ্রোহ ছাড়া আর কিছু মনে করেন না । সমসাময়িক ভারতীয় লেখক স্যার সৈয়দ আহমদ খান , দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় , কিশোরচাঁদ মিত্র , হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখও মনে করেছেন , সিপাহি ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের দ্বারা সংগঠিত এই বিদ্রোহে জনগণের সংযোগ ছিল গৌণ ; সিপাহিরা নিজেদের সুযোগসুবিধা আদায়ের জন্য বিদ্রোহ করেছিল । 

 জাতীয় বিদ্রোহ : জে বি নর্টন , জনকে এবং ইংরেজ ঐতিহাসিক আলেকজান্ডার ডাফ প্রমুখ ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে ‘ জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন । কারণ , উত্তর ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিদ্রোহে শামিল হয়েছিল এবং তারা মনেপ্রাণে ব্রিটিশ বিতাড়ন চেয়েছিল । সিপাহিদের দ্বারা মনোনীত শেষ মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ হয়ে ওঠেন ভারতের জাতীয় সম্রাট , জাতীয়তার প্রতীক , হিন্দু – মুসলিম ঐক্যের প্রতীক । ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রখ্যাত বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকার The Indian war of Independence গ্রন্থে ১৮৫৭ -র বিদ্রোহকে ‘ ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম ‘ বলে অভিহিত করেছেন । কারণ ইংরেজ – বিরোধী এত ব্যাপক আন্দোলন ইতিপূর্বে ভারতে আর ঘটেনি বলে এটিই ছিল ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম । 

 সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া : বামপন্থী চিন্তাবিদ রজনী পাম দত্ত , এম এন রায় প্রমুখ এই বিদ্রোহকে রক্ষণশীল ও সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলির অভ্যুত্থান বলে উল্লেখ করেছেন । অধ্যাপক সুশোভন সরকার ও এই বিদ্রোহের সামন্ততান্ত্রিক চরিত্র স্বীকার করে নিয়েছেন । 

সাম্প্রদায়িক আন্দোলন : সামাজিক ও ধর্মীয় কারণে এর সূচনা ঘটেছিল বলে আলফ্রেড লায়াল প্রমুখ তৎকালীন অনেক ইংরেজ কর্মচারী ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে সাম্প্রদায়িক আন্দোলন বলে ব্যাখ্যা করেছেন । সংশোধনবাদী মতামত : ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড . রমেশচন্দ্র মজুমদার তাঁর ” The Sepoy Mutiny and the Revolt of 1857 ‘ গ্রন্থে এবং সুরেন্দ্রনাথ সেন তাঁর Eighteen Fifty Sevent গ্রন্থে বহু তথ্য সংকলিত করে এই বিদ্রোহের ওপর নতুন করে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন । 

 রমেশচন্দ্র মজুমদারের মত : ড . মজুমদারের মতে , এই বিদ্রোহ ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েনি । সকল শ্রেণির জনগণও এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেনি । তাই ১৮৫৭ – র তথাকথিত প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ না – ছিল প্রথম , না – ছিল জাতীয় , না – ছিল স্বাধীনতার যুদ্ধ ( The so called First National War of Independence in 1857 is neither First , nor National , nor a war of Independence ) । 

 ড . সেনের মতামত : ড . সুরেন্দ্রনাথ সেন – এর মতে , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ সিপাহি বিদ্রোহ হিসেবে শুরু হলেও শেষপর্যন্ত তা গণবিদ্রোহে পরিণত হয় । দিল্লি , অযোধ্যা , বিহার প্রভৃতি অঞ্চলে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল সর্বাধিক এবং যেসকল অঞ্চলে জনগণের সমর্থন ছিল সেসব অঞ্চলের বিদ্রোহী নেতাদের লক্ষ্য ছিল প্রতিবিপ্লব ঘটানো । 

উপসংহার : কেমব্রিজ ঐতিহাসিক সি এ বেইলির মতে , ১৮৫৭ – র ভারতীয় বিদ্রোহ কেবল একটি আন্দোলন নয় , এর মধ্যে কৃষক অভ্যুত্থান বা জাতীয় বিদ্রোহের মতো আরও অনেক কিছুই ছিল ( ” The Indian rebellion of 1857 was not one movement , be it a peasant movement , or a war of national liberation , it was many . ‘ ) । 

2. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘ সামরিক বিদ্রোহ বলা যায় কী ? 

Ans: ভূমিকা : ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের সময়কাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ঐতিহাসিকরা এই বিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ করেছেন । সামরিক বিদ্রোহ ম্যালেসন , জন কে , স্যার জন লরেন্স , পিই রবার্টস প্রমুখ ইংরেজ এই বিদ্রোহকে নিছক সিপাহি বিদ্রোহ ছাড়া আর কিছু মনে করেন না । সমসাময়িক ভারতীয় লেখক স্যার সৈয়দ আহমদ খান , দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় , কিশোরচাঁদ মিত্র , হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখও মনে করেছেন যে , সিপাহি ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের দ্বারা সংগঠিত এই বিদ্রোহে জনগণের সংযোগ ছিল গৌণঃ সিপাহিরা নিজেদের সুযোগসুবিধা আদায়ের জন্য বিদ্রোহ করেছিল । ব্যাখ্যা করে বলা যায় যে –

 সেনাছাউনি কেন্দ্রিক এনফিল্ড রাইফেলের ব্যবহারকে কেন্দ্র করে ব্যারাকপুরের সেনাবাহিনীর সিপাহিরা এই বিদ্রোহ শুরু করে । এবং পরবর্তীকালে তা আম্বালা , লখনউ , মিরাট , বেরিলি , কানপুর , জব্বলপুর – এর সেনাছাউনিতে ছড়িয়ে পড়ে । 

 সীমিত বিদ্রোহ : এই বিদ্রোহ মূলত সিপাহিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং সিপাহিদের উদ্যোগেই মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে হিন্দুস্থানের সম্রাট বলে মনোনীত করা হয়েছিল । তবেঙ্গল আর্মির দাপট : ভারতীয় সিপাহির অধিকাংশ সৈন্য ছিল বেঙ্গল আর্মির অন্তর্গত এবং এই বিদ্রোহে বেঙ্গল আর্মির সদস্যরাই দাপট বজায় রেখেছিল । বিপক্ষে যুক্তি : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে সিপাহি বিদ্রোহ না বলে এই বিদ্রোহকে অনেকে ‘ জাতীয় বিদ্রোহ ‘ অথবা ‘ সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া ’ অথবা ‘ গণ – আন্দোলন ‘ নামেও অভিহিত করেছেন । 

 সংশোধনবাদী মতামত : ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড . রমেশচন্দ্র মজুমদার তাঁর “ The Sepoy Mutiny and the Revolt of 1857 গ্রন্থে এবং সুরেন্দ্রনাথ সেন তাঁর ‘ Eighteen Fifty Seven গ্রন্থে বহু তথ্য সংকলিত করে এই বিদ্রোহের ওপর নতুন করে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন । 

 রমেশচন্দ্র মজুমদারের মত : ড . মজুমদারের মতে , এই বিদ্রোহ ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েনি । সকল শ্রেণির জনগণও এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেনি । তাই ১৮৫৭ – র তথাকথিত প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ না – ছিল প্রথম , না – ছিল জাতীয় , না – ছিল স্বাধীনতার যুদ্ধ ( The so called First National War of Independence in 1857 is neither First , nor National , nor a war of Independence ) 

 ড . সেনের মতামত : ড . সুরেন্দ্রনাথ সেন এর মতে , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ সিপাহি বিদ্রোহ হিসেবে শুরু হলেও শেষপর্যন্ত তা গণবিদ্রোহে পরিণত হয় । দিল্লি , অযোধ্যা , বিহার প্রভৃতি অঞ্চলে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল সর্বাধিক এবং যেসকল অঞ্চলে জনগণের সমর্থন ছিল সেসব অঞ্চলের বিদ্রোহী নেতাদের লক্ষ্য ছিল প্রতিবিপ্লব ঘটানো । 

উপসংহার : কেমব্রিজ ঐতিহাসিক সি এ বেইলির মতে , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ নিছক একটি কোনো বিদ্রোহ ছিল না । কৃষক বিদ্রোহ , জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম প্রভৃতির মিলিত মহাবিদ্রোহ ছিল ( ” The Indian rebellion of 1857 was not one movement , be it a peasant movement , or a war of national liberation , it was many . ‘ ) । 

3. ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যায় কি ? 

Ans: ভূমিকা : ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ সম্পর্কে ঐতিহাসিক ড সুরেন্দ্রনাথ সেন যথার্থই বলেছেন , “ ধর্মনাশের বিরুদ্ধে ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যে সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হলেও তা জাতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধৰূপে সমাপ্ত হয় ” ।

 পক্ষে যুক্তি : ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলার কারণগুলি হল –

 ব্যাপকতা : পূর্ববর্তী বিদ্রোহগুলির তুলনায় ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের ব্যাপকতা ও স্বতঃস্ফূর্ত গণসমর্থন ছিল ব্যাপক । 

 সাম্প্রদায়িক ঐক্য : দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ছিলেন হিন্দু – মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্যের প্রতীক । এই ধর্মীয় ভাবাবেগ পরবর্তীকালে তা স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয় ।

 দেশপ্রেম আবুল কালাম আজাদের মতে , আধুনিক জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞায় বিচার করলে একে জাতীয় আন্দোলন বলা না গেলেও বিদ্রোহীদের দেশপ্রেমের খামতি ছিল না । 

 পরিকল্পিত বিদ্রোহ : এই বিদ্রোহ আচমকা হঠাৎ ছিল না , এর পেছনে স্পষ্ট পরিকল্পনা ছিল । সাহায্যের আশায় দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ পারস্যের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন । 

 গণ – অভ্যুত্থান : জাতীয়তাবাদ বলতে আমরা যাই বুঝি না কেন বিদেশি শাসন থেকে মুক্তিলাভের জন্য গড়ে ওঠা গণ অভ্যুত্থানকে জাতীয় সংগ্রাম বলা যেতেই পারে । 

 জাতীয় সংগ্রাম : ঐতিহাসিক কে পানিক্কর – এর মতে , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের নেতারা যদি নিজ নিজ অঞ্চলের স্বাধীনতার কথাও চিন্তা করে থাকেন , তবু তাঁরা যে জাতীয় সংগ্রামই করেছিলেন তা অস্বীকার করা যায় না । বিপক্ষে যুক্তি : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যায় না , 

কারণ— ( ১ ) বিদ্রোহীদের কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য , পরিকল্পনা বা সংগঠন ছিল না । ( ২ ) ঐক্য বা বোঝাপড়া কেবলমাত্র সিপাহিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল । ( ৩ ) সিপাহিদের সঙ্গে বিদ্রোহী নেতাদের তেমন যোগাযোগ ছিল না । ( ৪ ) বিদ্রোহের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও নেতাদের মধ্যে লক্ষ্য ও আদর্শের ফারাক ছিল এবং এটি জাতীয় স্বার্থে পরিচালিত হয়নি । উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় , একটি দেশের মুক্তিযুদ্ধে দেশের সমস্ত মানুষ অংশ নেবে এ কথা আশা করা যায় । না । এই বিদ্রোহে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ যোগদান করেছিল , তাই একে জাতীয় বিদ্রোহ বলা হয়ে থাকে । তা ছাড়া বিদ্রোহীদের মধ্যে জাতীয় রাষ্ট্রের ধারণা হয়তো ছিল না , কিন্তু ব্রিটিশ – বিরোধী মানসিকতার প্রভাব ছিল । 

 ১৮৫৭ – র অভ্যুত্থানকে ভারতের ‘ প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম ‘ বলা যায় কি ? উত্তর ভূমিকা : ১৮৫৭ – র অভ্যুত্থানে দেশের মুক্তির জন্য কৃষক , কারিগর ও অন্যান্য সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিয়েছিল । তাই প্রখ্যাত বিপ্লবী বি ডি সাভারকার এই অভ্যুত্থানকে ভারতের ‘ প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম ‘ বলেছেন । 

 পক্ষে যুক্তি : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের অভ্যুত্থানকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম রূপে অভিহিত করার যুক্তিগুলি হল – 

( ১ ) ইংরেজ কোম্পানির দীর্ঘকালের শোষণ ও শাসনের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহ ছিল ভারতবর্ষে জনগণের জ্বলন্ত প্রতিবাদ । 

( ২ ) বিদ্রোহীরা ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটাতে চেয়েছিল । ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ সমগ্র ভারতে না – হলেও , এমনকি এর কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য না থাকলেও মনেপ্রাণে ইংরেজদের বিতাড়ন চেয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক এক সঙ্গে লড়েছিল এবং দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ‘ ভারতের সম্রাট ’ করেছিল । 

( ৩ ) ইংরেজ – বিরোধী এত ব্যাপক আন্দোলন ভারতে আর হয়নি । তাই গতানুগতিক বিচার না করে এই অভ্যুত্থানকে স্বাধীনতার সংগ্রাম বলাই যুক্তিযুক্ত । মাধ্যমিক ইতিহাস ও পরিবেশ সহা বিপক্ষে যুক্তি : ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার ও সুরেন্দ্রনাথ সেন ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলে অভিহিত করেননি , কারণ তাঁদের মতে 

( ১ ) ভারতের কিছু অঞ্চলে এই বিদ্রোহ সীমাবদ্ধ ছিল ; কাজেই এই সংগ্রামকে সারাভারতের সংগ্রাম বলা যায় না । 

( ২ ) এই বিদ্রোহ ছিল সিপাহিদের অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ , যা জাতীয় বিদ্রোহের পর্যায়ে পড়ে না । 

( ৩ ) অধিকাংশ সামন্তরাজা ও জমিদার ইংরেজ কোম্পানির প্রতি অনুগত ছিল এবং বিদ্রোহের বিরোধিতা করেছিল । 

( ৪ ) বিদ্রোহীদের মধ্যে সকলের স্বাধীনতা লাভের লক্ষ্যে নয় , বরং পৃথক পৃথক উদ্দেশ্য সিদ্ধির লক্ষ্যে বিদ্রোহ হয়েছিল । 

( ৫ ) শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজ ও সমসাময়িক বাংলার পত্রপত্রিকাগুলিও বিদ্রোহের বিরোধিতা করেছিল । 

( ৬ ) তখন বিদ্রোহীদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের চেতনা ছিল না , অর্থাৎ সেই সময় জাতীয়তাবাদের জন্ম হয়নি । 

উপসংহার : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ নিছক একটি কোনো বিদ্রোহ ছিল না । তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় এই বিদ্রোহ ছিল জাতীয় বিদ্রোহ । আবার বিদ্রোহের আঙ্গিকে গণবিদ্রোহের রূপ প্রকট হয়ে উঠেছিল । 

4. ব্রিটিশ – বিরোধী জনমত গঠনে বাংলার সভা সমিতিগুলির বিবরণ দাও । 

Ans: ভূমিকা : দেশের স্বার্থরক্ষা ও সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য সংঘবদ্ধ আন্দোলন প্রয়োজন— ভারতীয়দের এই উপলব্ধি থেকেই উনিশ শতকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে , যেগুলি ব্রিটিশ – বিরোধী জনমত গঠনে বিশেষ সহায়ক হয়েছিল । 

সভাসমিতি : এইরূপ নানা সভাসমিতির মধ্যে বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা , জমিদার সভা , হিন্দুমেলা ও ভারতসভা ছিল উল্লেখযোগ্য । 

বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা : ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে টাকির মুনশি কালীনাথ রায়চৌধুরি , প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর এবং প্রসন্নকুমার ঠাকুরের যৌথ উদ্যোগে ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ’ গড়ে ওঠে । এর বিভিন্ন সভায় ব্রিটিশদের ভালোমন্দ কাজের পর্যালোচনা করা হত । যোগেশচন্দ্র বাগলের মতে , এটি বাঙালি তথা ভারতবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ।

 জমিদার সভা : ১২ নভেম্বর ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর , রাধাকান্তদেব ও প্রসন্নকুমার ঠাকুরের যৌথ প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে জমিদার সভা ( Land Holders Society ) । রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতে , এটি ছিল ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের অগ্রদূত । এই প্রতিষ্ঠান থেকেই জনসাধারণ সর্বপ্রথম নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে দাবি আদায়ের শিক্ষা লাভ করে । 

হিন্দুমেলা : ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে নবগোপাল মিত্রের উদ্যোগে ‘ জাতীয় মেলা ’ গড়ে ওঠে , যা ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে হিন্দুমেলায় পরিণত হয় । দেশীয় সাহিত্য , শিল্প ও সংস্কৃতির যথার্থ বিকাশের মাধ্যমেই ভারত ও ভারতবাসীর প্রকৃত মঙ্গল সম্ভব — এই চিন্তা থেকেই জন্ম নেয় এই প্রতিষ্ঠানটি । জাতীয় সংস্কৃতি , জাতীয় শিল্প ও জাতীয় গৌরব বৃদ্ধি করা এবং এ বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করাই ছিল হিন্দুমেলার প্রধান কর্মসূচি । প্রখ্যাত জাতীয় নেতা বিপিনচন্দ্র পাল যথার্থই বলেছেন , ” নব গোপাল মিত্রের কাছেই আমরা জাতীয়তাবাদের প্রথম প্রেরণা পেয়েছিলাম । ” 

ভারতসভা : মধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্যদের নিয়ে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জুলাই সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় , আনন্দমোহন বসু ও শিবনাথ শাস্ত্রীর সহায়তায় কলকাতার অ্যালবার্ট হলে ভারতসভা প্রতিষ্ঠা করেন । এই সংগঠনে কোনো ইউরোপীয় বা জমিদার শ্রেণির সদস্য না থাকায় ভারতসভা সাধারণ ভারতবাসীর রাজনৈতিক সংগঠনের চরিত্রলাভ করে । এই সভাই সর্বপ্রথম ‘ হিন্দু – মুসলিম সম্প্রীতির ওপর জোর দেয় এবং নিম্নবর্গীয় মানুষদের গণ – আন্দোলনে শামিল করে । ভারতসভার নেতৃত্বে ব্রিটিশ প্রবর্তিত সিভিল সার্ভিস আইনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের বিরুদ্ধে , ইলবার্ট বিলের পক্ষে ব্যাপক আন্দোলন ও জনমত গড়ে ওঠে । মূল্যায়ন উপরিলিখিত সংগঠনগুলি ছাড়াও ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ( ১৪৩৯ ) , বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ( ১৮৪৩ ) , ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ( ১৮৫১ ) , ইন্ডিয়ান লিগ ( ১৮৭৫ ) প্রভৃতি সভাসভাসমিতিগুলিও ব্রিটিশ – বিরোধী জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিল । সঙ্গত কারণেই ঐতিহাসিক ড . অনীল শীল উনিশ শতককে সভাসমিতির যুগ ( Age of Associations ) বলে উল্লেখ করেছেন । 

5. ‘ জমিদার সভা ’ ও ‘ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন সম্বন্ধে কী জান ?

Ans: প্রথম অংশ , জমিদার সভা : উনিশ শতকে ভারতে তথা বাংলায় যে সভাসমিতি গড়ে উঠেছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জমিদার সভা ( ১২ নভেম্বর ১৮৩৮ খ্রি . ) । এই সভার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন রাধাকান্ত দেব এবং যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন প্রসন্নকুমার ঠাকুর ও ডব্লিউ সি হ্যারি । 

জমিদার সভার উদ্দেশ্য : জমিদার সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি ছিল প্রথমত , বাংলা – বিহার – উড়িষ্যার জমিদার স্বার্থ রক্ষা করা ও জমিদারদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা ; দ্বিতীয়ত , জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় এবং সরকার কর্তৃক নিষ্কর জমির বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা ; তৃতীয়ত , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন । বাস্তবেও দেখা যায় যে , ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ’ নিষ্কর জমির বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিল , ‘ জমিদার সভা ‘ আবার সেই বিষয়েই নতুন করে আলোচনা শুরু করে । 

জমিদার সভার কার্যাবলি : জমিদার সভার উদ্দেশ্য ছিল জমিদারদের স্বার্থ সুরক্ষিত করা । 

এই সভার কার্যাবলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে জমিদারদের মত প্রকাশ : নিষ্কর জমি বাজেয়াপ্ত করা এবং প্রশাসনের বিভিন্ন কাজকর্ম পুলিশ , আইন – আদালত , আদালতে ব্যবহৃত ভাষা , রাজস্ব ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে জমিদার সভা তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে থাকে ।

 সরকারি মর্যাদা : কিছুদিনের মধ্যেই জমিদার সভা সরকারের কাছ থেকে চেম্বার অফ কমার্সের মর্যাদা পায় । সরকারের প্রস্তাবিত আইন – কানুন চূড়ান্ত হওয়ার আগে জমিদার সভার মতামত নেওয়া হত । 

 নিষ্কর জমির ব্যবস্থা : জমিদার সভার কার্যক্রমের জন্যই প্রতি গ্রামে পঞ্চাশ বিঘা জমি নিষ্কর রাখার ব্যবস্থা হওয়ায় জমিদার থেকে রায়ত সকলেই এর দ্বারা উপকৃত হয়েছিলেন । 

 নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পুরোধা এই সভাই প্রথম নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ দেখায় । রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতে , জমিদার সভা ছিল ভারতের রাজনৈতিক তথা স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধা । দ্বিতীয় অংশ , ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন – এর ( বাংলা নাম ব্রিটিশ ভারতবর্ষীয় সভা ) প্রতিষ্ঠাকাল ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ অক্টোবর । ইতিপূর্বে গঠিত জমিদার সভা ( ১৮৩৮ খ্রি . ) এবং ‘ বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ‘ ( ১৮৪৩ খ্রি . ) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে মিলিত হয় এবং এই দুই সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত হয় ব্রিটিশ ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন । সভার প্রথম সভাপতি ছিলেন রাজা রাধাকান্ত দেব এবং সম্পাদক দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

 উদ্দেশ্য : এই সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ শাসিত ভারতের উন্নতিসাধন এবং তার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন পরিচালনা । 

 কার্যকলাপ : প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পরেই প্রথমত , এই অ্যাসোসিয়েশন ভারত শাসনসংস্কারমূলক একটি স্মারকলিপি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাঠায় । দ্বিতীয়ত , অ্যাসোসিয়েশন শিক্ষা , স্বাস্থ্য , রাজস্ব , পুলিশ , আইন – কানুন প্রভৃতি বিষয়ে সরকারের সমালোচনাও করে ; তৃতীয়ত , এই সভা জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবের পাশাপাশি । ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে অ্যাসোসিয়েশন শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণে বাধা দেয় এবং জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার কাজে এই সভা সক্রিয় সহযোগিতা করে । ব্রিটিশ ভারতে এই সভার কার্যকলাপ মূলত বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ হলেও এটাই ছিল ভারতের প্রথম বৃহত্তম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান । 

6. জাতীয়তাবাদের বিকাশে ভারতসভার ভূমিকা আলোচনা করো । সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক আয়োজিত সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের গুরুত্ব বর্ণনা করো । 

 Ans: প্রথম অংশ : জাতীয়তাবাদের বিকাশের ভারতসভার ভূমিকা : ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই কলকাতায় সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় , আনন্দমোহন বসু প্রমুখ ভারতসভা প্রতিষ্ঠা করেন । ভারতসভা ছিল একটি সর্বভারতীয় সংগঠন । ভারতে জাতীয় আন্দোলনের সূচনায় ভারতসভার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলি হল— 

সর্বভারতীয় গণ – সংগঠন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এই প্রতিষ্ঠানের ১২৪ টি শাখার মাধ্যমে ভারতসভা সর্বভারতীয় গণ – সংগঠন গড়ে তোলে । রাজনৈতিক ঐক্যসাধন : ভারতের রাজনৈতিক স্বার্থে ভারতের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্যসাধন ছিল ভারতসভার ঘোষিত লক্ষ্য । 

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তোলা হিন্দু – মুসলিমদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তোলার জন্য ভারতসভা জোর দিয়েছিল । 

জনমত গঠন : ব্রিটিশ সরকারের জনবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে ভারতসভা জনমত গঠনের ওপর জোর দিল । 

জাতীয়তাবাদের উম্মেষ : বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সভা ভারতীয় জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটায় । 

ইলবার্ট বিলের সমর্থন : ইলবার্ট বিলের সমর্থনে সুরেন্দ্রনাথের নেতৃত্বে ভারতসভা দেশের নানা স্থানে জনসভা করে জনমত গড়ে তোলে । 

সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এই সভাই ছিল আধুনিক ভারতবর্ষের মূল্যায়ন : প্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান । ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের উন্মেষকালে ভারতসভাই ছিল প্রধান প্রতিষ্ঠান । 

দ্বিতীয় অংশ— সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের ভূমিকা : ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় প্রথম সর্বভারতীয় ‘ জাতীয় সম্মেলন ‘ আহ্বান করেন । 

প্রস্তাবসমূহ : এই সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবগুলি হল ( ১ ) প্রতিনিধিমূলক আইনসভা গঠন , ( ২ ) ব্রিটেন ও ভারতে একইসঙ্গে ICS ( Indian Civil Service ) পরীক্ষা গ্রহণ এবং পরীক্ষার্থীদের বয়স ২১ বছর করা , ( ৩ ) সরকারি চাকুরির ভারতীয়করণ , ( ৪ ) অস্ত্র আইন রোধ করা , ( ৫ ) সামরিক খাতে ব্যয় হ্রাস করা , ( ৬ ) বিচার বিভাগ থেকে শাসন বিভাগের পৃথক্করণ করা প্রভৃতি । 

গুরুত্ব : জাতীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল , যেমন- ( ১ ) প্রথম সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন ছিল ইলবার্ট বিল সম্পর্কে ইংরেজদের প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলনের বিরুদ্ধে শিক্ষিত ভারতবাসীর যোগ্য প্রত্যুত্তর । ( ২ ) এই জাতীয় সম্মেলন থেকেই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস গঠনের প্রেরণা আসে । আনন্দমোহন বসুর মতে , এই সম্মেলন ছিল ‘ জাতীয় পার্লামেন্টের দিকে প্রথম পদক্ষেপ । 

7. ‘ ভারতসভার প্রতিষ্ঠা ও ভূমিকা আলোচনা করো । 

অথবা , ভারতসভার লক্ষ্য কী ছিল ? জাতীয় আন্দোলনের উন্মেষে এই সভা কীভাবে সাহায্য করেছিল ? 

Ans: ভূমিকা : ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই কলকাতার অ্যালবার্ট হলে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় , আনন্দমোহন বসু প্রমুখের উদ্যোগে স্থাপিত হয় ভারতসভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন । শিশিরকুমার ঘোষের প্রতিষ্ঠিত ‘ ইন্ডিয়ান লিগ’ও এর সঙ্গে যুক্ত হয় । 

প্রেক্ষাপট : ভারতসভা প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে প্রথমত , সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বুদ্ধিজীবী শ্রেণির নেতা উপলব্ধি করেছিলেন যে , দেশের বৃহত্তর জনগণের সংযোগে গণতান্ত্রিকভাবে সমিতি গঠন না করলে সরকার সেই সমিতির দাবিকে মূল্য দেবে না । দ্বিতীয়ত , ভারতে ইতিপূর্বে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক সমিতিগুলি ছিল রক্ষণশীল ও তাদের আচরণ ছিল অভিজাতসুলভ । তৃতীয়ত , সর্বভারতীয় স্তরে সমিতি গঠন ও আন্দোলন পরিচালনার মাধ্যমে ভারতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করা । 

ভারতসভার উদ্দেশ্য : ‘ ভারতসভা ‘ – র চারটি ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল , যেমন – ( ১ ) জনমত গঠন , ( ২ ) ভারতের সকল জাতি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য স্থাপন , ( ৩ ) হিন্দু – মুসলিম ঐক্য স্থাপন এবং ( ৪ ) রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে ভারতের জনসংযোগ ঘটানো । যাতে সাধারণ ভারতীয়রা বিপুল সংখ্যায় এই সংগঠনে যোগ দিতে পারে তার জন্য এর সদস্য চাঁদা দরিদ্রতম শ্রেণির জন্য এক টাকা হিসেবে ধার্য করা হয় । দ্বিতীয় অংশ , ‘ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতসভার ১২৪ টি শাখা গড়ে ওঠে এবং এগুলির মাধ্যমে ভারতসভা জাতীয় আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয় । 

ভারতসভার উল্লেখযোগ্য কার্যাবলি হল > সিভিল সার্ভিস সংক্রান্ত আন্দোলন ভারতসভা সর্বপ্রথম আন্দোলন গড়ে তোলে ভারতীয় সিভিল সার্ভিস আইনের সংস্কারকে কেন্দ্র করে । এই আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের বয়স ২১ থেকে কমিয়ে ১৯ করলে ভারতসভা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় । সিভিল সার্ভিস সংক্রান্ত একটি সর্বভারতীয় প্রতিবাদপত্র লালমোহন ঘোষ মারফৎ ব্রিটিশ সংসদে পেশ করা হয় । 

লিটনের প্রতিক্রিয়াশীল আইনের বিরোধিতা : ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে লর্ড লিটন দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন জারি করে দেশীয় ভাষার সংবাদপত্রগুলির স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নেন এবং ওই বছরেই অস্ত্র আইন জারি করে ভারতবাসীকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করেন । কলকাতার টাউন হলে ‘ ভারতসভা ‘ — এই দুটি আইনের বিরুদ্ধে বিরাট বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে । 

ইলবার্ট বিলের পক্ষে আন্দোলন : লর্ড রিপন – এর আমলে ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় বর্ণবৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্য তাঁর আইন সচিব সি পি ইলবার্ট একটি বিল বা আইনের খসড়া রচনা করলে ভারতসভা এই বিলের পক্ষে আন্দোলন শুরু করে । 

মূল্যায়ন : ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার প্রথম জাতীয় সম্মেলন ‘ আহ্বান করেন । এর দু – বছর পর তিনি দ্বিতীয় ‘ জাতীয় সম্মেলন ‘ আহ্বান করেন , যা ছিল ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পূর্বাভাস । সুতরাং দেখা যায় , যে ভারতসভাই ছিল আধুনিক ভারতের প্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং এই সভার মধ্য দিয়েই সর্বভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বিকাশ ঘটে । 

8. ভারতে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো । অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অঙ্কিত ‘ ভারতমাতা চিত্রটি বিখ্যাত কেন ?

Ans: প্রথম অংশ : জাতীয়তাবাদী চেতনায় উম্মেষ : ভারতে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষে ‘ আনন্দমঠ ‘ ( ১৮৮২ খ্রি . ) ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ এক জাতীয়তাবাদী উপন্যাস , কারণ স্বদেশপ্রেম : বঙ্কিমচন্দ্র রচিত ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীর মনে স্বাদেশিকতা ও সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ধারণা সঞ্চারিত করেছিল । 

‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সংগীত : ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসে জন্মভূমিকে মাতৃরূপে কল্পনা করে ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সংগীতটি ( ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে রচিত ) ব্যবহার ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা , কারণ এই সঙ্গীতটিই হয়ে ওঠে পরাধীন ভারতের জাতীয় সংগীত ও বিপ্লবীদের মন্ত্র । 

দেশমাতার আদর্শ : ‘ আনন্দমঠ ‘ – এ বঙ্কিমচন্দ্র বলেছিলেন , ‘ দেশমাতা হলেন মা , দেশপ্রেম হল ধর্ম , দেশসেবা হল পূজা । এভাবে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দেশ ও তার জনগণের মধ্যে মাতা ও সন্তানের যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা করে ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করেন । 

ভারতমাতা স্ববিরোধিতা : আনন্দমঠ – এ বঙ্কিমচন্দ্র সচেতনভাবে জানিয়েছেন যে , ব্রিটিশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লব , ডাকাতি , দস্যুবৃত্তি হল অমঙ্গলের নামান্তর , কারণ ইংরেজ রাজত্বে সনাতন সামন্ত সমাজ অটুট থাকবে । এটি ছিল বিভ্রান্তিকর । তথাপি বাঙালির জাতীয়তাবাদ গঠন ও দেশের যুবসম্প্রদায়কে স্বদেশভক্তি , ত্যাগ ও সেবাধর্মে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যেই রচিত হয়েছিল ‘ আনন্দমঠ ‘ । দ্বিতীয় অংশ , অবনীন্দ্রনাথের ‘ ভারতমাতা ‘ : উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের জাতীয়তাবাদের প্রসারে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ‘ ভারতমাতা ‘ চিত্রটি ছিল খুবই উল্লেখযোগ্য । এই চিত্রটি বিখ্যাত , কারণ— 

 বিষয়বস্তু : গেরুয়া বসন পরিহিতা ‘ ভারতমাতা ’ – রূপী যোগিনী একাধারে দেবী ও মানবী । বরাভয়দায়িনী এবং ত্যাগ ও বৈরাগ্যের মূর্ত প্রতীক ভারতমাতার চার হাতে শোভা পাচ্ছে রুদ্রাক্ষের মালা , শুভ্রবস্ত্র , পুথি ও ধানের শিষ এবং পদযুগলের চারপাশে রয়েছে শ্বেতপদ্ম । 

 তাৎপর্য : ভারতমাতা ছবিটির মাধ্যমে শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ধনধান্যপূর্ণ সমৃদ্ধিশালী ভারতের ছবি তুলে ধরেন । এই ছবির মাধ্যমে ভারতের অধ্যাত্মবাদ , নারীশক্তি , ঐতিহ্য ও শস্যশ্যামল অর্থনীতির কথা ফুটে উঠেছে ।

 প্রভাব : বিশ শতকে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রসারে ‘ ভারতমাতা ’ চিত্রটির প্রভাব ছিল অনস্বীকার্য । কারণ স্বদেশি যুগে বিভিন্ন সভা – সমাবেশে এই চিত্রটি সজ্জিত হত । ভগিনী নিবেদিতার মতে , চিত্রটি ছিল জাতীয়তাবাদ প্রসারের ক্ষেত্রে প্রথম একটি তাৎপর্যপূর্ণ ছবি । 

9. ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসের জাতীয়তাবাদী মূল্য বিচার করো । 

Ans: ভূমিকা : আনন্দমঠ ‘ ( ১৮৮২ খ্রি . ) উপন্যাসে লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ গানটির মধ্য দিয়ে বাঙালি সমাজকে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে তোলেন । 

বিষয়বস্তু : ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে ঐতিহাসিক পটভূমি : ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ও সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের ক্ষীণ সূত্র ধরে অতীতের পটভূমিতে বঙ্কিম এক উজ্জ্বল ও জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেন । সন্তান দল : স্বাদেশিকতা , আধ্যাত্মিকতা দেশোদ্ধারকারী সন্তান দলের প্রতিষ্ঠানের নামটিই আনন্দমঠ । এঁদের জীবনের মূলমন্ত্র ছিল , জননী ও জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও গরিমাময় । 

মাতৃমূর্তি : সন্তানদলের প্রধান স্বামী সত্যানন্দ মহেন্দ্রকে যে মাতৃমূর্তি দেখান , তার তিনটি রূপ , যেমন— ” মা যা ছিলেন ’ , ‘ মা যা হইয়াছেন ‘ এবং ‘ মা যা হইবেন ‘ । দ্বিতীয় মূর্তিটি মায়ের নগ্নিকা মুর্তি , ঔপনিবেশিক শাসনকালে যা রিক্ত ও নিঃস্ব , চারিদিকে শ্মশানের পরিবেশ ও মৃত্যুর হাহাকার ; তৃতীয় রূপটি হল ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে মা যে রূপটি ফিরে পাবেন , তা হল দশভূজা দুর্গার রূপ । জাতীয়তাবাদ : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস যেভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল তা হল – 

জাতীয়তাবাদের উদ্‌বোধন : জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ধর্মবোধকে জুড়ে দিয়েছিলেন , কারণ বাঙালির জাতীয়তাবাদের এক বড়ো অংশ জুড়েই ছিল ধর্ম । _ ইতিবাচক মতবাদ : এই গ্রন্থে বঙ্কিম ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে জাতীয় জীবনের , জাতীয় জীবনের সঙ্গে রাষ্ট্র ও ধর্মের সমন্বয় সাধন করেছেন । এই পূর্ণ সামঞ্জস্যবিধানের সূত্রটি তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন ফরাসি দার্শনিক কোঁতে – এর ‘ পজিটিভজ্ম ’ নামে ইতিবাচক মতবাদের মধ্যে । 

দেশপ্রেমের বাণী : ‘ আনন্দমঠ ‘ – এর মাধ্যমে দেশপ্রেমের বাণী প্রকাশিত হয় । এটি স্বদেশপ্রেম , দেশমাতা আদর্শের ধারণার উদ্ভব ঘটায় , কারণ এই গ্রন্থে বলা হয়েছিল দেশমাতা হলেন মা , দেশপ্রেম হল ধর্ম এবং দেশসেবা হল পূজা । 

অভয়মন্ত্র : এই উপন্যাসে জন্মভূমিকে মাতৃরূপে কল্পনা করে রচিত ‘ বন্দে মাতরম্ ’ সঙ্গীতটি পরাধীন ভারতের বিপ্লবী মন্ত্র ও রণ সঙ্গীতে পরিণত হয় । 

আত্মত্যাগের আদর্শ : এই গ্রন্থটি দেশের যুবসম্প্রদায়কে স্বদেশ ভক্তি , ত্যাগ ও সেবাধর্মে উদ্বুদ্ধ করে স্বদেশ প্রেমের গীতারুপে চিহ্নিত হয়েছিল ।  

Madhyamik Class 10 History Chapter 4 in Bengali Madhyamik History 2025 Chapter 4 Madhyamik History Chapter 4 Bengali Version Madhyamik History Chapter 4 Full Notes Madhyamik History Chapter 4 Guide Madhyamik History Chapter 4 Important Questions Madhyamik History Chapter 4 Long Questions Madhyamik History Chapter 4 MCQ Madhyamik History Chapter 4 Notes Madhyamik History Chapter 4 PDF Download Madhyamik History Chapter 4 Question and Answer Madhyamik History Chapter 4 Short Questions Madhyamik History Chapter 4 Solutions Madhyamik History Chapter 4 WBBSE Syllabus Madhyamik History Chapter 4 বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর Madhyamik ইতিহাস চ্যাপ্টার ৪ প্রশ্নোত্তর WBBSE Class 10 History Chapter 4 মাধ্যমিক ইতিহাস ২০২৫ প্রস্তুতি গাইড মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় ৪ প্রস্তুতি মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় ৪ বহুনির্বাচনী প্রশ্ন মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় ৪ ব্যাখ্যা মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় ৪ সাজেশন ২০২৫ মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়: সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা প্রশ্নোত্তর সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
---Advertisement---

Related Post

CCRAS Recruitment 2025 Notification: Apply for 388 Group A, B & C Vacancies Including MTS & LDC

CCRAS Recruitment 2025 Notification: The Central Council for Research in Ayurvedic Sciences (CCRAS) has issued a short notification regarding 388 vacancies across Group A, B, and C posts. ...

WB SLST English 2025 Preparation: 45 Important One-Sentence Question Answers on The Lotus Eaters by Somerset Maugham

WB SLST English 2025 preparation: Preparing for the 2nd WB SLST English Exam 2025? Struggling to cover every story in your syllabus? Don’t worry! We’ve compiled 45 One-Sentence ...

WB SLST English 2025 l 50 One-Sentence Q&A from The Ox by H.E. Bates

50 One-Sentence Q&A from The Ox by H.E. Bates: If you’re preparing for WB SLST English 2025 (IX-X), mastering the short story “The Ox” by H.E. Bates is ...

🥭 List of Scientific Names of Important Fruits 2025 l গুরুত্বপূর্ণ ফলের বৈজ্ঞানিক নাম

আপনি কি জানেন যে প্রতিদিন আমরা যে ফলগুলি খাই, সেগুলিরও নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক নাম বা Scientific Name রয়েছে? শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান (Madhyamik Biology), প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা (SSC, UPSC, WBCS, Railway, NTPC) এবং সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই গুরুত্বপূর্ণ ফলের বৈজ্ঞানিক নামের তালিকা ২০২৫ (List of Scientific Names of Important Fruits 2025)।

Leave a Comment