Sindhutire Kobita Questions and Answers: মাধ্যমিক ২০২৬ পরীক্ষার্থীদের জন্য সৈয়দ আলাওল রচিত “সিন্ধুতীরে” কবিতাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পাঠ্য। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করেছি Sindhutire Kobita Madhyamik Question Answer, Sindhutire Kobita SAQ MCQ, ও Madhyamik Bengali Poetry Question Answer সহ আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক। যারা Bengali Class 10 Poetry Questions খুঁজছেন অথবা Madhyamik Bengali Suggestion 2026 অনুসরণ করছেন, তাদের জন্য এটি হবে এক সম্পূর্ণ সহায়ক গাইড।
এখানে আপনি পাবেন —
📌 সিন্ধুতীরে কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর (MCQ)
📌 সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (SAQ)
📌 রচনামূলক প্রশ্ন ও ব্যাখ্যা
📌 সিন্ধুতীরে কবিতার সারাংশ ও বিশ্লেষণ
📌 Madhyamik Bengali 2026 Poem Analysis & Guide
চলুন, West Bengal Board Bengali Suggestion 2026 অনুযায়ী সিন্ধুতীরে কবিতাটি ভালোভাবে প্রস্তুতি নিই, যাতে আপনার কবিতা অংশ থেকে পূর্ণ নম্বর অর্জন সম্ভব হয়।
Sindhutire Kobita Questions and Answers l সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর
সৈয়দ আলাওল – কবি পরিচিতি
সৈয়দ আলাওলের জন্ম-পরিচয় –
সৈয়দ আলাওলের জন্ম হয়েছিল আনুমানিক 1597 খ্রিস্টাব্দে, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার ফতেহাবাদে। তাঁর বাবা ছিলেন জালালপুরের অধিপতি মজলিশ কুতুবের অমাত্যপ্রধানা।
সৈয়দ আলাওলের পরবর্তী জীবন ও কাব্যরচনা –
জলদস্যুদের হাতে আলাওলের বাবা মারা গেলে আলাওল আরাকানে আসেন। সেখানে প্রথমে অশ্বারোহী সেনাদলে নিযুক্ত হলেও অমাত্যপ্রধান মাগন ঠাকুর তাঁর গুণমুগ্ধ হয়ে পড়েন। তাঁরই নির্দেশে আলাওল হিন্দি কবি মহম্মদ জায়সীর পদুমাবৎ কাব্যের অনুবাদ করেন। আলাওল রচিত অন্য গ্রন্থগুলি হল – সয়ফুলমুলক বদিউজ্জমাল, তোহ্ফা, সেকেন্দারনামা, সপ্তপয়কর। এ ছাড়াও দৌলত কাজীর অসমাপ্ত রচনা সতী ময়না-র কাহিনিও তিনি শেষ করেন। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে মানবতাবাদী কবি হিসেবে আলাওলের স্বতন্ত্র জায়গা রয়েছে। আনুমানিক 1673 খ্রিস্টাব্দে আলাওল মারা যান।
সিন্ধুতীরের উৎস
সৈয়দ আলাওল মালিক মহম্মদ জায়সীর পদুমাবৎ কাব্যের অনুবাদ করেছিলেন; যার নাম দেন পদ্মাবতী। সেই কাব্যগ্রন্থের 35 তম খণ্ড ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ থেকে এই কাব্যাংশটি নেওয়া হয়েছে। ‘সিন্ধুতীরে’ নামটি সাহিত্য সঞ্চয়ন (দশম শ্রেণি) গ্রন্থের সংকলকদের দেওয়া।
সিন্ধুতীরের পূর্বকথা
পদ্মাবতীকে নিয়ে রত্নসেন সিংহল থেকে ফিরছিলেন। এই সময়ে সমুদ্র ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধরে রত্নসেনের কাছে দান ভিক্ষা করে। কিন্তু “ব্রাহ্মণ ভিখারি তোর ধনে কোন্ কাজ” – এই বলে রত্নসেন সমুদ্রকে দান দিতে অস্বীকার করেন। এরপরে সমুদ্রের ক্রোধে রত্নসেন ভাগ্যবিপর্যয়ে পড়েন। তাঁর ডিঙা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সেই সময়ে একটি মান্দাসে রত্নসেন ও সখী-সহ পদ্মাবতী আশ্রয় নিলেও সেটিকে রক্ষা করা যায় না। মান্দাস দ্বিখণ্ডিত হয়ে পদ্মাবতী রত্নসেন থেকে আলাদা হয়ে পড়েন। পদ্মাবতীর মান্দাস ভাসতে ভাসতে প্রবল ঢেউয়ে তটভূমিতে আছড়ে পড়ে। ভয়ে পদ্মাবতী ও সখীরা ততক্ষণে মূর্ছা গিয়েছেন।
সিন্ধুতীরের সারসংক্ষেপ
মান্দাসে ভাসতে ভাসতে পদ্মাবতী যেখানে পৌঁছোলেন সেখানে ছিল এক দিব্যপুরী। অতি সুন্দর সেই জায়গা। সেখানে এক প্রাসাদে থাকে সমুদ্রকন্যা পদ্মা। পর্বতের কোলে অবস্থিত সুরম্য উদ্যানে ভোরবেলা পদ্মা তার সখীদের নিয়ে যাবার সময়ে সমুদ্রের ধারে মান্দাসটিকে লক্ষ করে। কৌতূহলী হয়ে সে চারদিকে চার সখীকে এবং মাঝখানে অতি রূপবতী এক কন্যাকে চেতনাহীন হয়ে থাকতে দ্যাখে। সেই রূপে বিস্মিত পদ্মার মনে হয় ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গভ্রষ্ট বিদ্যাধরী যেন মাটিতে অচেতন হয়ে আছে। সেই অচেতন মেয়েটির চোখ বেরিয়ে আসছে, বসন এলোমেলো। পদ্মা অনুমান করেন প্রবল বাতাসে নৌকা ভেঙে যাওয়াতেই সমুদ্রের ঝড়ঝঞ্ঝার কষ্টে আচ্ছন্ন হয়েছেন ওই রূপবতী কন্যা। ছবির মূর্তির মতো সুন্দরী সেই মেয়েটি পড়ে আছেন, তার সামান্যই শ্বাস রয়েছে। দয়ালু পদ্মা মেয়েটির জীবন বাঁচাতে তৎপর হয়। সে সখীদের আদেশ দেয় বস্ত্র দিয়ে ঢেকে মেয়েটিকে উদ্যানে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আগুনের সেঁক দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেয়। শুরু হয় তন্ত্র-মন্ত্র-মহৌষধি প্রয়োগ। এইভাবে চার দণ্ড চলার পরে পদ্মাবতী ও তার চার সখী জ্ঞান ফিরে পায়।
সিন্ধুতীরের নামকরণ
নামকরণ সাহিত্যে প্রবেশের চাবিকাঠি, তাই সাহিত্যের ক্ষেত্রে নামকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘সিন্ধুতীরে’ নামকরণটি কবির দেওয়া নয়। কাব্যকাহিনির বিষয়বস্তুকে সামনে রেখে সংকলকগণ এরূপ নামকরণ করেছেন।
সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতী স্বামীর সঙ্গে চিতোরে ফেরার সময় সামুদ্রিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন। তাঁদের জলযানটি সমুদ্রে ডুবে যায়। একটি মান্দাসে রত্নসেন ও সখী-সহ পদ্মাবতী আশ্রয় নিলেও সেটি রক্ষা পায় না। প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝায় মান্দাস দ্বিখণ্ডিত হয়ে পদ্মাবতী রত্নসেন থেকে আলাদা হয়ে পড়েন। দুর্যোগজনিত কষ্টে রাজকন্যা জ্ঞান হারিয়ে সমুদ্রতীরে পড়ে থাকেন। সাগরকন্যা পদ্মা ভোরবেলা সুরম্য উদ্যানে এসে এই দৃশ্য দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন। তিনি সখীদের নির্দেশ দেন অচৈতন্য রাজকন্যাকে উদ্ধার করতে। সখীরাও সেই নির্দেশমতো রাজকন্যা পদ্মাবতীকে উদ্যানের মাঝখানে নিয়ে এসে চার দণ্ড ধরে নানা সেবাযত্নের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এই হল সংক্ষিপ্ত কাব্যকাহিনি। এখানে লক্ষণীয় যে, যাবতীয় ঘটনা ঘটেছে সমুদ্রের তীরবর্তী স্থানে। কাব্যাংশটির শুরুতেও এই সমুদ্রতীরবর্তী ‘দিব্যস্থান’-টির শোভা-সৌন্দর্য বর্ণিত হয়েছে।
সিন্ধুতীরে শব্দটির অর্থ সমুদ্রতীরে। সেই স্থাননামের উল্লেখেই কাব্যাংশটির নামকরণ। এই অংশে সংঘটিত যাবতীয় ঘটনা এবং বর্ণিত যাবতীয় বিষয় সমুদ্রতীরকেন্দ্রিক। যে চরিত্রদের কেন্দ্র করে কাহিনি আবর্তিত হয়েছে, তার থেকে যে জায়গায় কাহিনিটি ঘটেছে সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ রূপে প্রকাশিত হয়েছে। এই দিক থেকে বিচার করলে নামকরণটি বিষয়কেন্দ্রিক এবং যথাযথ হয়েছে বলা যায়।
সিন্ধুতীরে – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর l সিন্ধুতীরে কবিতা বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
বহুবিকল্পীয় প্রশ্ন ও উত্তর
ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।
‘সিন্ধুতীরে’ পদ্যাংশটি যে কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে –
- পদ্মাবতী
- তোহফা
- সেকেন্দারনামা
- সতীময়না ও লোরচন্দ্রাণী
উত্তর – 1. পদ্মাবতী
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটির লেখক –
- সৈয়দ আলাওল
- মালিক মহম্মদ জায়সী
- মাগন ঠাকুর
- সিকন্দর শাহ
উত্তর – 1. সৈয়দ আলাওল
পদ্মাবতী কাব্যের মূল গ্রন্থটির রচয়িতা –
- মালিক মহম্মদ জায়সী
- থদো-মিনতার
- মজলিশ কুতুব
- সৈয়দ আলাওল
উত্তর – 1. মালিক মহম্মদ জায়সী
পদ্মাবতী কাব্যটি যে কাব্যের অনুবাদ, সেটি হল –
- পদুমাবৎ
- সয়ফুলমুলক বদিউজ্জমাল
- সেকেন্দারনামা
- লোরচন্দ্রাণী
উত্তর – 1. পদুমাবৎ
আলাওল বর্তমান ছিলেন –
- সপ্তদশ শতকে
- চতুর্দশ শতকে
- পঞ্চদশ শতকে
- অষ্টাদশ শতকে
উত্তর – 1. সপ্তদশ শতকে
কবি সৈয়দ আলাওলের প্রথম রচনা –
- তোহফা
- সয়ফুলমুলক বদিউজ্জমাল
- সপ্তপয়কর
- পদ্মাবতী
উত্তর – 4. পদ্মাবতী
পদ্মাবতী কাব্যটি রচিত হয় –
- 1645থেকে 1652 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
- 1660 খ্রিস্টাব্দে
- 1662 খ্রিস্টাব্দে
- 1672 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর – 1. 1645থেকে 1652 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত? –
- লোরচন্দ্রাণী
- পদ্মাবতী
- সতীময়না
- তোহফা
উত্তর – 2. পদ্মাবতী
নীচের যে রচনাটি সৈয়দ আলাওলের নয় –
- তোহফা
- নাগাষ্টক
- সেকেন্দারনামা
- সতীময়না ও লোরচন্দ্রাণী
উত্তর – 2. নাগাষ্টক
‘সিন্ধুতীরে’ শীর্ষক কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের যে খণ্ড থেকে নেওয়া হয়েছে –
- রত্নসেন-বন্ধনখণ্ড
- বাদশাহ-আক্রমণখণ্ড
- পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড
- পদ্মাবতী-রত্নসেন ভেটখণ্ড
উত্তর – 3. পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড
‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’-টি জায়সীর কাব্যে ছিল –
- লক্ষ্মী-সমুদ্রখণ্ড নামে
- লক্ষ্মী-রত্নসেনখণ্ড নামে
- রাজা-বাদশাহ সন্ধিখণ্ড নামে
- রত্নসেন সাথীখণ্ড নামে
উত্তর – 1. লক্ষ্মী-সমুদ্রখণ্ড নামে
“কন্যারে ফেলিল যথা…” – এই ‘কন্যা’ হলেন –
- রত্নসেনের কন্যা
- রত্নসেনের স্ত্রী পদ্মাবতী
- পদ্মাবতীর পঞ্চম সখী
- সমুদ্রকন্যা পদ্মা
উত্তর – 2. রত্নসেনের স্ত্রী পদ্মাবতী
“জলের মাঝারে তথা …” – জলের মধ্যে রয়েছে –
- সাপ
- নগরী
- পাহাড়
- রাক্ষস
উত্তর – 2. নগরী
‘অতি মনোহর দেশ’ বলতে বোঝানো হয়েছে –
- সমুদ্রকে
- চিতোরকে
- সিংহলকে
- সমুদ্রের পাশে পার্বত্য অঞ্চলকে
উত্তর – 4. সমুদ্রের পাশে পার্বত্য অঞ্চলকে
‘সমুদ্রনৃপতি সুতা’ কে? –
- লক্ষ্মী
- পদ্মা
- উমা
- বারুণী
উত্তর – 2. পদ্মা
“সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান…” – সিন্ধুতীরে দিব্যস্থান দেখেছেন –
- চন্দ্রপ্রভা
- রোহিণী
- বিধুন্নলা
- পদ্মা
উত্তর – 4. পদ্মা
“তার পাশে রচিল উদ্যান…” – সমুদ্রতীরে উদ্যান রচনা করেছেন –
- বিজয়া
- লক্ষ্মী
- পদ্মা
- পদ্মাবতী
উত্তর – 3. পদ্মা
“তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি …” – ‘টঙ্গি’ শব্দের অর্থ –
- ছবি
- গাছপালা
- তিরধনুক
- প্রাসাদ
উত্তর – 4. প্রাসাদ
“হেমরত্বে নানা রঙ্গি…” – ‘হেম’ শব্দের অর্থ –
- উজ্জ্বল
- রঙিন
- সোনা
- নকল
উত্তর – 3. সোনা
“সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস…” – ‘মাঞ্জস’ শব্দের অর্থ –
- এক ধরনের সুতো
- ভাঙা নৌকো
- ভেলা
- জাহাজ
উত্তর – 3. ভেলা
সিন্ধুতীরের ওপরের পর্বত ছিল –
- ঘর-বাড়িতে পূর্ণ
- ফল-ফুলে সজ্জিত
- পশুপাখিতে ভরা
- জল-মানুষে পূর্ণ
উত্তর – 2. ফল-ফুলে সজ্জিত
“মনেতে কৌতুক বাসি …” – পদ্মার মনে কৌতূহল জাগার কারণ –
- তিনি সমুদ্রতীরে কলরব শুনেছেন
- তিনি সমুদ্রতীরে হঠাৎ এক পর্বত লক্ষ করেছেন
- তিনি উদ্যানে বহু পাখির সমাগম লক্ষ করেছেন
- তিনি সমুদ্রতীরে একটি মাঞ্জস লক্ষ করেছেন
উত্তর – 4. তিনি সমুদ্রতীরে একটি মাঞ্জস লক্ষ করেছেন
“তুরিত গমনে আসি …” – ত্বরিত গমনে এসেছেন –
- রত্নসেন
- পদ্মাবতী
- হীরামন
- পদ্মা
উত্তর – 4. পদ্মা
“রূপে অতি রম্ভা জিনি” – রম্ভা হলেন –
- অপ্সরা
- দেবী
- দাসী
- সখী
উত্তর – 1. অপ্সরা
“মধ্যেতে যে কন্যাখানি রূপে অতি রম্ভা জিনি …” – মাঝখানের কন্যাটি হলেন –
- চন্দ্রপ্রভা
- বিজয়া
- পদ্মাবতী
- পদ্মা
উত্তর – 3. পদ্মাবতী
“নিপতিতা চেতন রহিত …” – পদ্মাবতী চেতনা হারিয়েছেন –
- সমুদ্রের ঝড়ঝঞ্ঝায়
- স্বামীর জন্য দুশ্চিন্তায়
- রাক্ষসের পীড়নে
- পিতার শোকে
উত্তর – 1. সমুদ্রের ঝড়ঝঞ্ঝায়
“… বিস্মিত হইল বালা” – পদ্মা বিস্মিত হয়েছে –
- কীভাবে সেই কন্যা তার রাজ্যে ওই স্থানে এল সে-কথা ভেবে
- চার সখীর সঙ্গে পদ্মাবতীকে চিনতে পেরে
- পদ্মাবতীর রূপের ছটা দেখে
- পদ্মাবতীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে
উত্তর – 3. পদ্মাবতীর রূপের ছটা দেখে
“ইন্দ্রশাপে বিদ্যাধরি…” – ‘বিদ্যাধরি’ হলেন –
- স্বর্গের গায়িকা অপ্সরা
- ইন্দ্রের স্ত্রী
- কুবেরের স্ত্রী
- দেবী সরস্বতী
উত্তর – 1. স্বর্গের গায়িকা অপ্সরা
“বেকত দেখিয়ে আঁখি তেন স-বসন সাক্ষী/বেথানিত হৈছে কেশ বেশ।” – ‘বেথানিত’ শব্দের অর্থ –
- ব্যক্ত
- বিস্থানিত বা অসম্বৃত
- সিক্ত
- ছিন্ন
উত্তর – 2. বিস্থানিত বা অসম্বৃত
“বুঝি সমুদ্রের নাও ভাঙ্গিল প্রবল বাও/মোহিত পাইয়া সিন্ধু-ক্লেশ।” – এ কথা মনে হয়েছে –
- রত্নসেনের
- পদ্মাবতীর
- বিধুন্নলার
- পদ্মার
উত্তর – 4. পদ্মার
“চিত্রের পোতলি সমা নিপতিত মনোরমা …” – এখানে ‘চিত্রের পোতলি সমা’ হলেন –
- পদ্মাবতী
- পদ্মা
- নাগমতী
- বিজয়া
উত্তর – 1. পদ্মাবতী
“বিধি মোরে না কর নৈরাশ।” – পদ্মা এমন প্রার্থনা জানিয়েছেন, কারণ –
- তিনি চান না সমুদ্রে কেউ কষ্ট পাক
- তিনি চান পদ্মাবতীর প্রাণ রক্ষা করতেন
- তিনি চান না তার সখীরা দ্রুত প্রাসাদে ফিরে যাক
- তিনি আর সামুদ্রিক ঝড়ঝঞ্ঝা চান না
উত্তর – 2. তিনি চান পদ্মাবতীর প্রাণ রক্ষা করতেন
“পিতার পুণ্যের ফলে মোহর ভাগ্যের বলে/বাহরক কন্যার জীবন।” – ‘বাহুরক’ শব্দের অর্থ –
- বেরিয়ে যাক
- ফিরে আসুক
- স্বস্তি পাক
- সফল হোক
উত্তর – 2. ফিরে আসুক
“কপা কর …” – পদ্মা কৃপা প্রার্থনা করেছেন
- সমুদ্রের কাছে
- নিরঞ্জনের কাছে
- ব্রাহ্মণের কাছে
- শিবের কাছে
উত্তর – 2. নিরঞ্জনের কাছে
“সখী সবে আজ্ঞা দিল …” – সখীদের কী আদেশ দিল? –
- তারা যেভাবেই হোক যেন পদ্মাবতীর প্রাণ রক্ষা পড়ে করে
- তারা যেন পদ্মাবতীর স্বামীর সন্ধানে বেরিয়ে
- তারা যেন পদ্মাবতীর সঙ্গে কোনো কথা না বলে
- তারা যেন পদ্মাবতীকে বাগানে নিয়ে যায়
উত্তর – 4. তারা যেন পদ্মাবতীকে বাগানে নিয়ে যায়
“পঞ্চজনে বসনে ঢাকিয়া …” – বসনে ঢেকে পাঁচ জন কী করল? –
- পদ্মাবতীকে প্রাসাদে নিয়ে গেল
- পদ্মাবতীকে স্বামীর নৌকোয় তুলে দিল
- পদ্মাবতীর চিকিৎসা করার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেল
- পদ্মাবতীকে উদ্যানে নিয়ে গেল
উত্তর – 4. পদ্মাবতীকে উদ্যানে নিয়ে গেল
ক-টি দণ্ডের মধ্যে পঞ্চকন্যা চেতন পেয়েছিল? –
- তিন
- চার
- পাঁচ
- সাত
উত্তর – 2. চার
চেতনাহীন কন্যাকে দেখে পদ্মার মনে কীসের উদয় হয়েছিল? –
- দ্বেষ
- মমতা
- স্নেহ
- করুণা
উত্তর – 3. স্নেহ
“শ্রীযুক্ত মাগন” হলেন –
- ইন্দ্র
- পদ্মার পিতা
- আলাওলের পৃষ্ঠপোষক
- মোহন্ত
উত্তর – 3. আলাওলের পৃষ্ঠপোষক
দু-একটি বাক্যে উত্তর দাও l Sindhutire Short Answer Questions
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কার রচনা?
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি সপ্তদশ শতাব্দীর কবি সৈয়দ আলাওলের রচনা।
কবি সৈয়দ আলাওল কোন্ রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন?
কবি সৈয়দ আলাওল আরাকান রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন।
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের কোন্ খণ্ডের অংশ?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ -এর অংশ।
পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি কোন্ সময়ে রচিত?
কবি সৈয়দ আলাওলের লেখা পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি 1645 থেকে 1652 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রচিত।
পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অনুসরণে রচিত?
পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি হিন্দি কবি মালিক মুহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যগ্রন্থের অনুসরণে রচিত।
জায়সীর পদুমাবৎ কাব্য রচনাকালে দিল্লির সুলতান কে ছিলেন?
জায়স নগরে বসবাসকারী সিদ্দিকি বংশোদ্ভূত কবি মালিক মুহম্মদ জায়সীর পদুমাবৎ কাব্য রচনাকালে দিল্লির সুলতান ছিলেন শেরশাহ।
পদুমাবৎ কাব্যটি কোন্ সময়ের রচনা?
কবি মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যটি ‘সন নব সৈ সেতালিস অহা’ অর্থাৎ 947 হিজরি বা 1540 খ্রিস্টাব্দের রচনা।
পদ্মাবতী কাব্যে চিতোর দুর্গের অধিপতি কে ছিলেন?
পদ্মাবতী কাব্যে চিতোর দুর্গের অধিপতি ছিলেন রাজা রত্নসেন।
রাজা রত্নসেন কার মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন?
চিতোরের রাজা রত্নসেন এক শুকপাখির মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন।
রাজা রত্নসেন কীভাবে পদ্মাবতীর কাছে পৌঁছোন?
শুকপাখির মুখে পদ্মাবতীর রূপের প্রশংসা শুনে চিতোররাজ রত্নসেন ষোলোশো রাজকুমারকে সঙ্গে নিয়ে যোগীবেশে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর কাছে পৌঁছেছিলেন।
সিংহলে যাত্রাকালে কে রত্নসেনকে সাহায্য করেছিলেন?
ষোলোশো রাজকুমার-সহ চিতোররাজ রত্নসেন সিন্ধুতীরে পৌঁছোলে রাজা গজপতি তাঁকে সিংহলে যাবার জন্য নৌকো দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
চিতোররাজ রত্নসেনের প্রথমা স্ত্রীর নাম কী?
চিতোররাজ রত্নসেনের প্রথমা স্ত্রীর নাম ছিল নাগমতী।
আরাকান রাজ্যটি কোথায় অবস্থিত?
আরাকান রাজ্যটি ব্রহ্মদেশের উত্তর-পশ্চিম সীমায় এবং বাংলাদেশের পূর্বে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত একটি সমুদ্রতীরবর্তী স্থান।
আরাকান রাজ্যের প্রাচীন নাম কী?
আরাকান রাজ্যের প্রাচীন নাম রক্ষতুঙ্গ বা রোসাঙ। আইন-ই-আকবরী-তে একে ‘আখরঙ’ বলা হয়েছে। বাহারিস্তান গারী-তে মীর্জা নাথান এই দেশকে বলেছেন ‘আর খঙ’ -এর থেকেই ‘আরাকান’ নামটি এসেছে।
আরাকানের অধিবাসী মগেরা কোন্ ধর্মাবলম্বী ছিলেন?
আরাকানের অধিবাসী মগেরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন।
আলাওল কোন্ কোন্ রাজার রাজত্বকালে আরাকানে ছিলেন?
সপ্তদশ শতাব্দীর কবি সৈয়দ আলাওল থদো-মিন্ডারের পুত্র সান্দ-যু-ধম্মা বা চন্দ্রসুধর্মার রাজত্বকালে আরাকানে ছিলেন।
আরাকানে কার রাজত্বকালে আলাওল তাঁর পদ্মাবতী কাব্যটি রচনা করেন?
আরাকানে থদো-মিনতারের রাজত্বকালে কবি সৈয়দ আলাওল তাঁর পদ্মাবতী কাব্যটি রচনা করেন।
আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের মূল কাহিনি কয়টি?
কবি সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের মূল কাহিনি দুটি – একটি নাগমতী-পদ্মাবতী রত্নসেনের মিলনান্তক কাহিনি, আর অন্যটি হল রত্নসেন-আলাউদ্দিন-পদ্মাবতীর ত্রিভুজপ্রেমের কাহিনি, যাতে যুদ্ধের উত্তেজনাই প্রধান।
পদ্মাবতী কাব্যে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর প্রিয় শুকপাখিটির নাম কী ছিল?
পদ্মাবতী কাব্যে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর প্রিয় শুকপাখিটির নাম ছিল হীরামন।
পদ্মাবতীর পিতার নাম কী?
পদ্মাবতী কাব্যে পদ্মাবতীর পিতার নাম ছিল গন্ধর্বসেন।
পদ্মাবতীকে বিবাহ করে দেশে ফেরার সময় রত্নসেন কীভাবে বিপর্যস্ত হন?
পদ্মাবতীকে বিবাহ করে স্বদেশে ফেরার সময় নিজ অহংকারের জন্য রাজা রত্নসেন সমুদ্রের দ্বারা বিপর্যস্ত হন এবং অবশেষে বহু দুর্যোগ ও দুর্বিপাক পেরিয়ে দেশে ফেরেন।
পদ্মাবতী কাব্যে অলৌকিকতা কীভাবে স্থান পেয়েছে?
পদ্মাবতী কাব্যে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশধারী সমুদ্রের রত্নসেনকে পরীক্ষা, সমুদ্রে নৌকাডুবি, পদ্মাবতীর পাতালপুরীতে যাওয়া এবং সমুদ্রের কৃপায় আবার ধনরত্ন-সহ রত্নসেনকে ফিরে পেয়ে চিতোরে পৌঁছোনো-প্রভৃতি অলৌকিক বা রূপকথাধর্মী বিবরণ রয়েছে।
পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ মূল পদুমাবৎ কাব্যে কোন্ নামে ছিল?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ মালিক মুহাম্মদ জায়সী রচিত পদ্মাবৎ কাব্যে ‘লক্ষ্মী-সমুদ্রখণ্ড’ নামে ছিল।
জায়সীর কাব্যে সমুদ্রকন্যার নাম কী ছিল?
মালিক মুহাম্মদ জায়সী রচিত পদ্মাবৎ কাব্যে সমুদ্রকন্যার নাম ছিল লক্ষ্মী, যা আলাওলের কাব্যে হয়েছে ‘পদ্মা’।
‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’-টির অন্তর্গত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কোন ছন্দে রচিত?
‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’-টির অন্তর্গত সিন্ধুতীরে কাব্যাংশটি ত্রিপদী ছন্দে রচিত।
“কন্যারে ফেলিল যথা …” – কন্যাটি এক্ষেত্রে কে?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যের অন্তর্গত ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ থেকে নেওয়া ‘সিন্ধুতীরে’ শীর্ষক কাব্যাংশে উল্লিখিত ‘কন্যা’-টি হলেন সিংহলরাজ গন্ধর্বসেনের কন্যা তথা চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী।
“… দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার” – ‘দিব্য পুরী’-র অর্থ কী?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত সিন্ধুতীরে কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে দিব্য পুরীর অর্থ অলৌকিক স্বর্গীয় নগরী।
সমুদ্রনৃপতি সুতা কে?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ‘সমুদ্রনৃপতি সুতা’ হলেন পদ্মা।
“তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ” – কার, কোথায় থাকার কথা বলা হয়েছে?
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মার পাহাড়ের পাশে ফুল-ফলে ভরা, বিচিত্র প্রাসাদময় এক বাগানে থাকার কথা বলা হয়েছে।
“যদি হৈল সময় প্রত্যুষ” – সকাল হতে পদ্মা কী দেখলেন?
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে বর্ণিত কাহিনি অনুযায়ী সকাল হতে পদ্মা দেখলেন সমুদ্রের ধারে একটি মান্দাস রয়েছে।
“কন্যারে ফেলিল যথা” – কন্যাকে কোথায় ফেলা হল?
কন্যা অর্থাৎ সিংহল রাজকন্যা পদ্মাবতীকে সমুদ্রের মধ্যে এক দিব্যপুরীতে ফেলা হয়।
“সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস” – কে এই মাঞ্জস দেখেছিলেন?
সমুদ্রকন্যা পদ্মা এই মাঞ্জস দেখেছিলেন।
“মধ্যেতে যে কন্যাখানি রূপে অতি রম্ভা জিনি” – রম্ভানিন্দিত রূপটি কার?
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে রম্ভানিন্দিত রূপটি হল চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতীর।
“বিস্মিত হইল বালা” – বিস্মিত হওয়ার কারণ কী?
সমুদ্রতীরে অচেতন কন্যার সৌন্দর্য দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা বিস্মিত হয়েছিলেন।
“অনুমান করে নিজ চিতে …” – পদ্মা কী অনুমান করলেন?
অথবা, “দেখিয়া রূপের কলা/বিস্মিত হইল বালা/অনুমান করে নিজ চিতে।” – ‘বালা’ কী অনুমান করেছিল?
সমুদ্রের তীরে অপূর্ব সুন্দরী পদ্মাবতীকে দেখে সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মা অনুমান করলেন যে ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গের অপ্সরা বিদ্যাধরি স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে অচেতন অবস্থায় সেখানে পড়ে রয়েছেন।
“বেথানিত হৈছে কেশ বেশ” – ‘বেথানিত’ শব্দের অর্থ কী?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ শীর্ষক কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে বেথানিত শব্দের অর্থ অসম্বৃত বা বিস্থানিত, অর্থাৎ আলুথালু।
“… ভাঙ্গিল প্রবল বাও” – প্রবল বাতাস কী ভেঙে দিয়েছে?
আলোচ্য অংশে প্রবল বাতাস পদ্মাবতীর মান্দাস ভেঙে দিয়েছে।
পদ্মাবতী কীভাবে মূর্ছিত হয়ে পড়েছেন?
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী সমুদ্রে প্রবল বাতাসে মান্দাস ভেঙে পড়ায় ভয়ে ও কষ্টে মূর্ছিত হয়ে পড়েন।
“কিঞ্চিৎ আছয় মাত্র শ্বাস” – কার কথা বলা হয়েছে?
সমুদ্রতীরে অচেতন পদ্মাবতীর কথা বলা হয়েছে।
“বিধি মোরে না কর নৈরাশ।” – বক্তা কোন্ বিষয়ে নিরাশ হতে চান না?
সমুদ্রকষ্টে মূর্ছিতা পদ্মাবতীর প্রাণ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সমুদ্রকন্যা পদ্মা নিরাশ হতে চান না।
“বাহুরক কন্যার জীবন” – বক্তা কীভাবে কন্যার প্রাণরক্ষার চেষ্টা করেছেন?
আলোচ্য অংশে বক্তা সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে আগুন জ্বেলে পদ্মাবতীর শরীরে সেঁক দিয়ে, মন্ত্রতন্ত্র ও মহৌষধ প্রয়োগ করে চার দণ্ড ধরে সেবাযত্ন করে তাঁর প্রাণরক্ষার চেষ্টা করেছেন।
“কৃপা কর …” – পদ্মাবতীর প্রাণরক্ষায় পদ্মা কার কৃপা প্রার্থনা করেছেন?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে পদ্মাবতীর প্রাণরক্ষার জন্য পদ্মা নিরঞ্জনের কৃপা প্রার্থনা করেছেন।
“সখী সবে আজ্ঞা দিল” – বক্তা তার সখীদের কী আজ্ঞা দিয়েছিলেন?
অথবা, “সখী সবে আজ্ঞা দিল …” – তাঁর সখীদের কী আজ্ঞা দিয়েছিলেন?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত সিন্ধুতীরে কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের পদ্মাবতীকে বস্ত্রে ঢেকে উদ্যানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা ও শুশ্রূষার আজ্ঞা দিয়েছিলেন।
“পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন” – ‘পঞ্চকন্যা’ কে কে?
কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে পঞ্চকন্যা হলেন চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী এবং তাঁর চার সখী – চন্দ্রপ্রভা, রোহিণী, বিজয়া ও বিধুন্নলা।
“পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।” – পঞ্চকন্যা কীভাবে চেতনা ফিরে পেল?
সমুদ্রকন্যা পদ্মার সখীদের সেবাশুশ্রূষায় পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পেলেন।
“শ্রীযুত মাগন গুণী” – মাগন গুণীর পরিচয় দাও।
মাগন গুণী ছিলেন আরাকানরাজ থদো-মিনতারের অমাত্যপ্রধান, যিনি আলাওলকে গ্রন্থ রচনায় উৎসাহ দেন।
Sindhutire Short Questions and Answers l সিন্ধুতীরে কবিতা – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
“দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার।” – কোন পুরীকে ‘দিব্য পুরী’ বলা হয়েছে? তাকে ‘দিব্য’ বলার কারণ কী?
‘দিব্যপুরী’-র পরিচয় – সমুদ্রের ঢেউ পদ্মাবতীর মান্দাসকে যেখানে পৌঁছে দেয়, সেখানে জলের মধ্যে একটি সুন্দর নগরী ছিল। সেই নগরীকেই ‘দিব্যপুরী’ বলা হয়েছে।
‘দিব্যপুরী’ বলার কারণ – সেই পুরী ‘দিব্য’, কারণ সেখানে মানুষের কোনো দুঃখকষ্ট ছিল না। সমুদ্রকন্যা পদ্মার নিজস্ব বিচরণক্ষেত্র সেই স্থানের ফল-ফুলে শোভিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছিল অতুলনীয়। সেখানে বসবাস করা মানুষরা সবাই ধর্ম মেনে চলত এবং সবসময় সদাচরণ করত। অর্থাৎ নৈতিক আদর্শের উচ্চতাই সেই নগরীকে অলৌকিক মহিমা দিয়েছিল।
“অতি মনোহর দেশ।” – এই ‘মনোহর দেশে’-র সৌন্দর্যের পরিচয় দাও।
অথবা, সিন্ধুতীরে কবিতা অবলম্বনে দেশটির বর্ণনা দাও।
অথবা, কোন্ স্থানকে কেন মনোহর দেশ বলা হয়েছে?
মনোহর দেশ – পদ্মাবতীর মাঞ্জস সমুদ্রের ঢেউর দ্বারা জলের মধ্যে যে ‘দিব্য পুরী’-তে গিয়ে পৌঁছোয় তাকেই ‘মনোহর দেশ’ বলা হয়েছে।
মনোহর বলার কারণ – কবির বর্ণনানুসারে এই দিব্য পুরী অতি মনোহর। কেন-না সেখানে কোনো দুঃখকষ্ট নেই; আছে শুধু সত্যধর্ম এবং সদাচার। সেখানে আছে একটি পর্বত এবং নানা ফুলে ভরা অপূর্ব এক উদ্যান। সেখানকার গাছগুলিতে নানা ফল ও ফুলের সমারোহ। একদিকে প্রকৃতির শোভা, অন্যদিকে সুস্থ জীবনাদর্শ দেশটিকে মনোহর করে তুলেছিল।
“সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান।” – সিন্ধুতীরে এই দিব্যস্থানে কে থাকেন? স্থানটিকে দিব্যস্থান বলা হয়েছে কেন?
দিব্যস্থানের বাসিন্দা – সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সিন্ধুতীরের দিব্যস্থানে বাস করেন সমুদ্রকন্যা পদ্মা।
দিব্যস্থান বলার কারণ – ‘দিব্যস্থান’ কথাটির অর্থ হলো সুন্দর ও মনোহর স্থান। সমুদ্রবেষ্টিত এই স্থানটি খুবই মনোমুগ্ধকর। এখানে কোনো দুঃখ বা কষ্ট নেই। সত্য ও সদাচার স্থানটিকে স্বর্গীয় মহিমায় পূর্ণ করেছে। এখানে একটি পর্বত এবং সুরম্য এক উদ্যান রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন গাছে বিচিত্র ফুল ও ফলের সমারোহ দেখা যায়। তাই, এই স্থানটিকে ‘দিব্যস্থান’ বলা হয়েছে।
“তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ” – মন্তব্যটির প্রসঙ্গ নির্দেশ করো। কন্যাটি কে? কোথায় সে সর্বক্ষণ থাকে?
প্রসঙ্গ – মান্দাস যখন পদ্মাবতীকে ভাসতে ভাসতে এক মনোহর দেশে নিয়ে যায়, সেখানে এক মূল্যবান রত্নে সজ্জিত প্রাসাদ ছিল। সেই প্রাসাদেই পদ্মা বাস করতেন। এই মনোহর দেশ এবং এর রত্নসজ্জিত প্রাসাদ প্রসঙ্গে এই মন্তব্যটি করা হয়েছে।
কন্যার পরিচয় – কন্যাটি সমুদ্রকন্যা পদ্মা।
পদ্মার বাসস্থান – আলোচ্য মনোহর দেশের রত্নসজ্জিত প্রাসাদেই পদ্মা সর্বক্ষণ বাস করতেন।
“মনেতে কৌতুক বাসি” – কার মনে, কেন কৌতুকের উদয় হয়েছিল?
উদ্দিষ্ট জন – সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মার মনে কৌতুকের উদয় হয়েছিল।
কৌতুকের উদয় হওয়ার কারণ – সমুদ্রকন্যা পদ্মা পিতৃগৃহে রাত কাটিয়ে সকালে সখীদের সঙ্গে নিয়ে সুরম্য উদ্যানে এসেছিলেন। হঠাৎ তাঁর চোখে পড়ে সমুদ্রতীরে একটি ভেলা পড়ে রয়েছে। সেই ভেলার চারদিকে চার সখী-সহ অপূর্ব সুন্দরী এক কন্যা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। নির্জন সমুদ্রতীরে এমন দৃশ্য দেখে পদ্মার মনে কৌতূহলের উদয় হয়েছিল।
“রূপে অতি রম্ভা জিনি/নিপতিতা চেতন রহিত।” – কার কথা বলা হয়েছে? মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উদ্দিষ্ট জন – উল্লিখিত অংশে সমুদ্রতীরে অচেতন পদ্মাবতীর কথা বলা হয়েছে।
ব্যাখ্যা – সকালবেলা সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে নিজ উদ্যানের দিকে যাচ্ছিলেন। এই সময় সমুদ্রের ধারে একটি ভেলা পড়ে থাকতে দেখে কৌতূহলী হয়ে তিনি দ্রুত সেখানে আসেন। সেখানে পৌঁছে পদ্মা দেখেন, চারপাশে তাঁর চারজন সখী নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছেন, আর মধ্যখানে এক অপরূপা কন্যা চেতনাহীন অবস্থায় পড়ে আছেন। তাঁর রূপের সৌন্দর্য এতটাই অতুলনীয় ছিল যে, তা স্বর্গের বিখ্যাত অপ্সরা রম্ভার সৌন্দর্যকেও হার মানায়।
“বিস্মিত হইল বালা।” — বালা কে? তাঁর বিস্ময়ের কারণ কী?
বালার পরিচয় – উল্লিখিত অংশে ‘বালা’ বলতে সমুদ্রকন্যা পদ্মার কথা বলা হয়েছে।
বিস্ময়ের কারণ – পদ্মা তাঁর সখীদের সঙ্গে নিয়ে সিন্ধুতীরে নিজের সুরম্য উদ্যানের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় সমুদ্রের ধারে একটি ভেলা পড়ে থাকতে দেখে কৌতূহলী পদ্মা সেখানে যান এবং দেখেন, চারদিকে তাঁর চার সখীসহ এক অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। ওই মেয়েটির সৌন্দর্য স্বর্গের অপ্সরা রম্ভাকেও পরাজিত করে। তা দেখেই পদ্মা বিস্মিত হয়েছিলেন।
“অনুমান করে নিজ চিতে।” – কার, কোন্ অনুমানের কথা বলা হয়েছে আলোচনা করো।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – উল্লিখিত অংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মার অনুমানের কথা বলা হয়েছে।
অনুমানের বিষয় – সখীদের সঙ্গে সকালে উদ্যানে যাবার সময় সমুদ্রকন্যা পদ্মা সমুদ্রতীরে একটি মন্দাস পড়ে থাকতে দেখেন। সেখানে গিয়ে তিনি সখীদের মধ্যে অচেতন পদ্মাবতীকে দেখতে পান। তার সৌন্দর্য এমন, যেন স্বর্গের অপ্সরা রম্ভাকেও পরাজিত করবে। পদ্মা তার সেই রূপের বিস্ময়ে নানারকম অনুমান করতে থাকেন। তখন তাঁর মনে হয়, এটি কোনো সাধারণ মানবী নয়, বরং স্বর্গের নর্তকী বিদ্যাধরী, যিনি স্বর্গ থেকে পতিত হয়ে পৃথিবীতে এসে পড়েছেন।
“ইন্দ্রশাপে বিদ্যাধরি” – কে কাকে ‘বিদ্যাধরি’ বলে অনুমান করেন? কেন এই অনুমান?
‘বিদ্যাধরি’ অনুমান – সমুদ্রকন্যা পদ্মা সমুদ্রতীরে অচেতন পদ্মাবতীকে দেখে তাঁকে ‘বিদ্যাধরি’ বলে অনুমান করেন।
অনুমানের কারণ – পিতৃপুরে রাত কাটিয়ে পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে নিজের সুরম্য উদ্যানের দিকে আসছিলেন। সেই সময়ে সমুদ্রতীরে চার সখীর মধ্যে এক অচেতন কন্যাকে তিনি দেখতে পান, যিনি আসলে সিংহল রাজকন্যা পদ্মাবতী। তাঁর সৌন্দর্য এমনই যে, তা স্বর্গের অপ্সরা রম্ভাকেও হার মানায়। এই অসামান্য সৌন্দর্যের কারণেই পদ্মার মনে হয়েছিল, যেন স্বর্গের গায়িকা বিদ্যাধরি স্বর্গ থেকে পতিত হয়ে পৃথিবীতে এসে পড়েছেন।
“অচৈতন্য পড়িছে ভূমিতে।” – কে অচৈতন্য হয়ে ভূমিতে পড়েছিলেন? তাঁর অচৈতন্য হওয়ার কারণ কী?
উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – সিংহল রাজকন্যা এবং চিতোরের রানা রত্নসেনের পত্নী পদ্মাবতী অচৈতন্য হয়ে সমুদ্রতীরে পড়েছিলেন।
অচৈতন্য হওয়ার কারণ – রানা রত্নসেনের সঙ্গে পদ্মাবতী সমুদ্রপথে চিতোরে ফিরে যাচ্ছিলেন। সমুদ্রের ক্রোধের কারণে তাঁদের জলযান বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। কোনো রকমে একটি ভেলায় রত্নসেন এবং চার সখীসহ পদ্মাবতী আশ্রয় নেন। কিন্তু সেই ভেলাও দুই খণ্ড হয়ে যায় এবং পদ্মাবতী রত্নসেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। সামুদ্রিক ঝঞ্ঝার তাণ্ডব এবং প্রাণহানির ভয়ে পদ্মাবতী জ্ঞান হারান।
“বেথানিত হৈছে কেশ বেশ।” – কার, কেন এরকম অবস্থা হয়েছিল?
উদ্দিষ্ট চরিত্র – সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যের একটি অংশে এরকম অবস্থা হয়েছিল সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর।
বিপর্যস্ত অবস্থার কারণ – সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতী স্বামী রত্নসেনের সঙ্গে চিতোরে ফিরছিলেন। সমুদ্রপথে তাঁদের জলযান বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। একটি কলার ভেলায় রত্নসেন, পদ্মাবতী ও চারজন সখী আশ্রয় নিলেও সেটি দুই খণ্ড হয়ে যায়। এর ফলে পদ্মাবতী সখীসহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে রাজকন্যার চুল এলোমেলো হয়ে যায় এবং সাজসজ্জা নষ্ট হয়।
“মোহিত পাইয়া সিন্ধু-ক্লেশ।” — কার কথা বলা হয়েছে? মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
উদ্দিষ্ট জন – উল্লিখিত অংশে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর কথা বলা হয়েছে।
বিশ্লেষণ – সখীদের সঙ্গে উদ্যানে যাওয়ার সময় পদ্মা অচেতন পদ্মাবতীকে দেখেন। অপরিচিতা সুন্দরী কন্যাকে দেখে তাঁর মনে নানারকম ভাবনা জাগে। বিধ্বস্ত সেই কন্যার চোখ যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে, তার বেশভূষাই বিপর্যয়ের প্রমাণ দেয়। তার চুল এবং পোশাক এলোমেলো। সমুদ্রকন্যা পদ্মা ভেবে নেন যে, প্রবল বাতাস হয়তো নৌকা ভেঙে দিয়েছে। সমুদ্রের জলে ভাসতে ভাসতে প্রবল কষ্টেই হয়তো মেয়েটি অচেতন হয়ে আছে।
“চিত্রের পোতলি সমা/নিপতিত মনোরমা” – ‘মনোরমা’ কে? তিনি কোথায়, কেন নিপতিতা ছিলেন?
মনোরমার পরিচয় – সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীকে ‘মনোরমা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
নিপতিতা হওয়ার স্থান ও কারণ – রানা রত্নসেনের সঙ্গে বিয়ের পর পদ্মাবতী সমুদ্রপথে চিতোরে আসছিলেন। কিন্তু প্রবল ঝড়ে তাঁদের জাহাজ ডুবে যায়। কলার মান্দাসে আশ্রয় নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পদ্মাবতী রত্নসেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এরপর বিধ্বস্ত রাজকন্যা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। সমুদ্রের তীরে অচেতন অবস্থায় চারজন সখীর পরিবেষ্টনে পড়ে থাকেন তিনি।
“চিত্রের পোতলি সমা” – ‘পোতলি’ শব্দের অর্থ কী? কাকে চিত্রের পোতলির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে এবং কেন?
‘পোতলি’ শব্দের অর্থ – ‘পোতলি’ শব্দের অর্থ ‘পুতুল’।
চিত্রের পোতলির সঙ্গে তুলনার কারণ – সমুদ্রতীরে অচেতন পদ্মাবতীকে পুতুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। তার অপরূপ সৌন্দর্য সমুদ্রকন্যা পদ্মাকে মুগ্ধ করেছিল। কখনও মনে হয়েছিল যে সেই সৌন্দর্য রম্ভাকেও পরাজিত করতে পারে। কখনও মনে হয়েছে ইন্দ্রের অভিশাপগ্রস্ত বিদ্যাধরি পৃথিবীতে এসে পড়েছেন। এই সৌন্দর্যের কারণেই তাঁকে ছবির পুতুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
“বিধি মোরে না কর নৈরাশ” – কার প্রার্থনা? এমন প্রার্থনার কারণ কী?
প্রার্থনাকারী – উল্লিখিত প্রার্থনাটি করেছেন সমুদ্রকন্যা পদ্মা।
প্রার্থনার কারণ – সমুদ্রের তীরে অচৈতন্য পদ্মাবতীকে মান্দাসের উপর পড়ে থাকতে দেখে পদ্মা সেই অপরূপ নারীর জন্য দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি বুঝতে পারেন যে, ভয়াবহ কোনো সামুদ্রিক বিপর্যয়ের কারণেই ওই নারীর এই অবস্থা। ছবির প্রতিমার মতো সুন্দরী সেই নারীর শ্বাস সামান্য চলছে। পদ্মা সেই নারীর প্রতি স্নেহার্দ্র হয়ে পড়েন। প্রার্থনা করতে থাকেন, বিধাতা যেন তাঁকে নিরাশ না করেন অর্থাৎ সেই কন্যাকে বাঁচিয়ে রাখেন।
“বাহুরক কন্যার জীবন” – এখানে বক্তা কোন্ কন্যার জীবনের কথা বলেছেন? উল্লিখিত কন্যাকে বক্তা কোথায়, কী অবস্থায় প্রথম দেখেছিলেন?
উদ্দিষ্ট কন্যা – সমুদ্রকন্যা পদ্মা এখানে সিংহলের রাজকন্যা এবং চিতোরের রাজবধূ পদ্মাবতীর জীবনের কথা বলেছেন।
উদ্দিষ্ট কন্যাকে প্রথম দেখা – পদ্মা পদ্মাবতীকে প্রথমে সমুদ্রতীরে চার সখী-সহ অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তখন পদ্মাবতী মরণাপন্ন, তাঁর পোশাক ও চুল এলোমেলো অবস্থায় ছিল। তাঁকে দেখে পদ্মার মনে হয়েছিল কোনো অপরূপ স্বর্গকন্যা শাপভ্রষ্টা হয়ে মাটিতে পড়ে আছে। তখনও তাঁর শ্বাসবায়ু অল্প অল্প প্রবাহিত হচ্ছে দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা রাজকন্যাকে বাঁচানোর জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন।
“বাহুরক কন্যার জীবন” – এ আকাঙ্ক্ষা কার? তিনি কীভাবে কন্যার জীবন রক্ষা করলেন?
যার আকাঙ্ক্ষা – সমুদ্রকন্যা পদ্মা এই আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন।
কন্যার জীবন রক্ষা – সমুদ্রকন্যা পদ্মা ঈশ্বরের কাছে অচেতন পদ্মাবতীর জীবন ফিরে আসার প্রার্থনা করেন এবং চিকিৎসায় উদ্যোগী হন। সখীদের আদেশ দিয়ে পদ্মাবতী এবং তাঁর চার সখীকে বসনাবৃত করে উদ্যানের মধ্যে নিয়ে যান। তারপরে আগুনের সেঁক দিয়ে, তন্ত্র-মন্ত্র মহৌষধের সাহায্যে চারদণ্ড সেবাযত্ন করে চার সখী-সহ পদ্মাবতীর চেতনা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হল এবং তাঁদের জীবন রক্ষা হল।
“কৃপা কর নিরঞ্জন।” – বক্তা কে? এই প্রার্থনার কারণ আলোচনা করো।
বক্তা – উল্লিখিত অংশের বক্তা সমুদ্রকন্যা পদ্মা।
প্রার্থনার কারণ – সমুদ্রতীরে অচেতন পদ্মাবতীকে দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা অত্যন্ত সমব্যথী হয়ে ওঠেন। তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন যে, তিনি যেন তাঁকে নিরাশ না করেন, অর্থাৎ বিধাতা যেন ওই কন্যার প্রাণ রক্ষা করেন। পিতার পুণ্য আর তাঁর নিজের ভাগ্যবলে কন্যার জীবন ফিরে আসুক বলে পদ্মা প্রার্থনা করেন। ওই কন্যাকে সুস্থ করার জন্য যথাসাধ্য চিকিৎসা করবেন বলেও পদ্মা জানান। এভাবে এক প্রবল স্নেহের বশে তিনি পদ্মাবতীর জীবনের জন্য প্রার্থনা করেন।
“সখী সবে আজ্ঞা দিল।” — সখীদের কে, কী আজ্ঞা দিলেন?
আজ্ঞাদানকারী – সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মা সখীদের আজ্ঞা দিয়েছিলেন।
আজ্ঞার বিষয় – আজ্ঞার বিষয় – সামুদ্রিক ঝড়ে বিধ্বস্ত সিংহল-রাজকন্যা অচৈতন্য অবস্থায় সমুদ্রতীরে পড়ে আছেন। চার জন সখী তাঁকে ঘিরে রয়েছে সুরম্য প্রাসাদ থেকে সমুদ্রকন্যা পদ্মা এই দৃশ্য দেখে অস্থির হলেন। তিনি তখনই রাজকন্যাকে উদ্ধার করে আনতে সখীদের নির্দেশ দিলেনি শুকনো বস্ত্র দিয়ে তাঁর শরীর ঢেকে, আগুন জ্বেলে সর্বাঙ্গ সেঁকে দিতে বললেন। আর তন্ত্রমন্ত্র সহকারে মহৌষধ দিতে আজ্ঞা করলেন।
“পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।” — এখানে ‘পঞ্চকন্যা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? তাঁরা কীভাবে চেতনা ফিরে পেয়েছিল?
‘পঞ্চকন্যা’-র পরিচয় – এখানে ‘পঞ্চকন্যা’ বলতে পদ্মাবতী ও তাঁর চার সখীর কথা বলা হয়েছে।
চেতনা ফিরে পাওয়া – পদ্মার আদেশে তাঁর সখীরা অচেতন পদ্মাবতী ও তাঁর সখীদের দেহ বস্ত্রে ঢেকে উদ্যানের মধ্যে নিয়ে যান। তারপর তন্ত্র, মন্ত্র, ও মহৌষধি সহযোগে তাঁদের মাথায় এবং পায়ে আগুনের সাহায্যে সেঁক দেওয়া হয়। এইভাবে চার দণ্ড বহু যত্নসহ চিকিৎসা করার ফলে চন্দ্রপ্রভা, রোহিণী, বিজয়া ও বিধুন্নলা এই চার সখীসহ পদ্মাবতী চেতনা ফিরে পান।
“শ্রীযুত মাগন গুণী …” — ‘মাগন’ কে?
উদ্ধৃতাংশের মাগন ছিলেন রোসাঙরাজ নরপতির বিশ্বস্ত মন্ত্রী। তাঁর মৃত্যুর পর মাগন রাজা থদো-মিনতারের মুখ্য পাত্ররূপে নিযুক্ত হন। এরপর 1652 খ্রিস্টাব্দে থদো-মিনতারের মৃত্যু হলে মাগন রাজার নাবালক পুত্র চন্দ্রসুধর্মার অভিভাবক হিসেবে বিধবা রাজপত্নীকে রাজকার্যে সাহায্য করতেন।1645 খ্রিস্টাব্দে বা তার পরবর্তী কোনো সময়ে এই মাগন ঠাকুরই আলাওলকে আরাকানের অমাত্যসভায় নিয়ে আসেন। তিনি বহুভাষাবিদ, শাস্ত্রজ্ঞানী, বিদ্যোৎসাহী, কাব্যরসিক এবং সাহিত্যসংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
Sindhutire Kobita Questions and Answers l সিন্ধুতীরে কবিতা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
“সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান।” – এই দিব্যস্থানের পরিচয় দাও। এখানে যে উদ্যানটির কথা আছে তা উল্লেখ করো।
দিব্যস্থানের পরিচিতি – সৈয়দ আলাওল অনূদিত পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাংশে যেখানে সমুদ্রের মধ্যে মান্দাসে করে পদ্মাবতী গিয়ে পৌঁছোন, সেখানেই ছিল এক দিব্য পুরী। কবির কথায় তা ছিল ‘মনোহর দেশ’। সেখানের মানুষের জীবনে কোনো দুঃখকষ্ট ছিল না। সমাজে নৈতিক আদর্শ ছিল অত্যন্ত উঁচুতে – “সত্য ধর্ম সদা সদাচার।” অর্থাৎ মানুষজন ছিল ধার্মিক এবং সৎ আচার-আচরণে অভ্যস্ত।
উদ্যানের পরিচয় – সমুদ্রতীরে অবস্থিত দিব্যস্থানটি সমুদ্রকন্যা পদ্মকে আকৃষ্ট করেছিল। এর উপরিভাগে ছিল প্রচুর ফলফুলে পরিপূর্ণ এক পর্বত। তার পাশে সুরম্য এক উদ্যান রচনা করেছিলেন সমুদ্রকন্যা পদ্মা। সেখানে নানা মনোহর ফুল ফুটে থাকত। তাদের সুগন্ধে চারপাশ ভরে থাকত। বিভিন্ন উপকারী বৃক্ষে নানা ফল ধরে থাকত। তারই মধ্যে ছিল এক অতি মনোরম প্রাসাদ – ‘বিচিত্র টঙ্গিা’। সেই প্রাসাদ স্বর্ণনির্মিত এবং নানান রত্নে সেটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। সেই রত্নখচিত প্রাসাদে আলো পড়লে নানান রঙের বর্ণালি বিচ্ছুরিত হত। তাই কবিতায় প্রাসাদের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ‘হেম রত্নে নানা রাঙ্গি’। অর্থাৎ, সোনা এবং মণিমাণিক্যের ছটায় চারদিক আলো করে বহু বর্ণে শোভা পাচ্ছিল এই অপূর্ব পুরী। এভাবেই মনোরম উদ্যানটি সম্পূর্ণতা পেয়েছিল।
“দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত হইল বালা/অনুমান করে নিজ চিতে।” – কে, কাকে দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন? সেই কন্যা সেখানে কীভাবে এসেছিল? তাঁকে দেখে কী মনে হয়েছিল?
উদ্দিষ্ট ব্যক্তিদ্বয় – সৈয়দ আলাওল অনূদিত পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ থেকে নেওয়া ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় সমুদ্রকন্যা পদ্মা অচেতন সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর রূপ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন।
কন্যার আগমন – ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করে রত্নসেনের কাছে দান ভিক্ষা করে প্রত্যাখ্যাত হয় সমুদ্র। তখন সমুদ্রের অভিশাপে রত্নসেনের নৌকা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে একটি মান্দাসে রত্নসেন ও সখীসহ পদ্মাবতী আশ্রয় নিলেও সেটিকে রক্ষা করা যায়নি। দু-টুকরো হয়ে পদ্মাবতী রত্নসেন থেকে আলাদা হয়ে পড়েন। প্রবল ঢেউ পদ্মাবতীদের মান্দাসটিকে তীরে নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছোনোর আগেই ভয়ে সখীসহ পদ্মাবতী চেতনা হারান। যেখানে তাঁরা পৌঁছোন তা ছিল এক মনোরম পুরী।
কন্যাকে দেখে প্রতিক্রিয়া – পদ্মাবতীকে দেখে পদ্মার মনে হয়েছিল যে, ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গের নর্তকী বিদ্যাধরী যেন স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে মাটিতে অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। পদ্মাবতীর ঠিকরে বেরিয়ে আসা চোখ এবং আলুথালু বেশ দেখে পদ্মা এ-ও অনুমান করেন যে, ওই কন্যার ওপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে গেছে। এলোমেলো চুল এবং বেশ-বাসের এই অবস্থা দেখে পদ্মার মনে হয় যে, হয়তো সমুদ্রযাত্রার পথে দুরন্ত ঝড়ে বাতাসে নৌকা ভেঙে তাঁরা এই বিপদে পড়েছিলেন। সমুদ্রের কষ্টেই তাঁর এই অজ্ঞান অবস্থা।
“অচৈতন্য পড়িছে ভূমিতে।” – কার কথা বলা হয়েছে? তাকে দেখে কার, কী মনে হয়েছিল? তিনি এই অবস্থায় কোন্ ভূমিকা নিয়েছিলেন?
উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – সৈয়দ আলাওল অনূদিত পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ থেকে সংকলিত ‘সিন্ধুতীরে’ নামক কাব্যাংশের উল্লিখিত অংশে পদ্মাবতীর কথা বলা হয়েছে।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তির মনোভাব – পদ্মাবতীর বিস্ফারিত চোখ, এলোমেলো পোশাক এবং চুল দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা অনুমান করেন যে, সমুদ্রের প্রবল বাতাসে নৌকা ভেঙে বোধহয় মেয়েটির এই কষ্ট। শুধু তা-ই নয়, গভীর সহানুভূতি দিয়ে পদ্মা দেখতে পান যে, মেয়েটির শ্বাস তখনও অল্প অল্প পড়ছে। স্নেহশীল পদ্মা বিধাতার কাছে মেয়েটির জীবন প্রার্থনা করেন। তিনি প্রত্যাশা করেন তাঁর পিতার পুণ্যের ফলে এবং তাঁর নিজের ভাগ্যের কারণে যেন মেয়েটির জীবন ফিরে আসে।
পদ্মার ভূমিকা – পদ্মাবতীর প্রাণ ফিরে পাওয়ার আশায় পদ্মা শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেই থেমে থাকেননি, বরং তাঁর চিকিৎসারও যথাসাধ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সখীগণ-সহ পদ্মাবতীকে বস্তু দিয়ে ঢেকে উদ্যানে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি তাঁর সখীদের নির্দেশ দেন। সেখানে তন্ত্রাচারের মাধ্যমে, বিধিমতো মন্ত্রপাঠ করে নানা মহাগুণসম্পন্ন ঔষধের দ্বারা তাঁদের চিকিৎসা করা হয়। আগুন জ্বালিয়ে পায়ে ও মাথায় সেঁক দেওয়া হয়। চার দণ্ডের মতো যত্নের সঙ্গে শুশ্রূষা হওয়ার পরে চার সখীসহ পদ্মাবতী চেতনা ফিরে পান।
“পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।” – পঞ্চকন্যা কে কে? তাদের অচৈতন্যের কারণ কী? কীভাবে তারা চেতনা ফিরে পেয়েছিল?
পঞ্চকন্যার পরিচয় – সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবর্তী কাব্যের অংশবিশেষ ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্য-কাহিনিতে বর্ণিত পঞ্চকন্যার মধ্যমণি হলেন সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতী। আর তাঁর চারজন সখী হলেন চন্দ্রকলা, বিজয়া, রোহিণী ও বিধুন্নলা।
অচৈতন্য হওয়ার কারণ – স্বামী রত্নসেনের সঙ্গে রাজকন্যা পদ্মাবতী সমুদ্রপথে চিতোরে ফেরার সময় হঠাৎ তাঁদের জলযানটি সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে এবং ডুবে যায়। রত্নসেন এবং সখীসহ রাজকন্যা কোনোরকমে একটি মান্দাসে আশ্রয় নেন। শেষপর্যন্ত মান্দাস দ্বিখণ্ডিত হয়ে চার সখীসহ রাজকন্যা রত্নসেনের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। খণ্ডিত ভেলায় ভাসতে ভাসতে তাঁরা সমুদ্রতীরের ভূমিতে পৌঁছান। কিন্তু প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে অসম লড়াই, দৈহিক ক্লেশ ইত্যাদির প্রভাবে রাজকন্যা ও তাঁর সখীরা জ্ঞান হারান।
চেতনা ফিরে পাওয়া – পঞ্চকন্যার এই অবস্থায় দেবতা সমুদ্রকন্যা পদ্মা নিরঞ্জনকে স্মরণ করেন এবং তাঁর সখীদের চিকিৎসাকর্মে ব্রতী হওয়ার নির্দেশ দেন। প্রাণপণ সেবাশুশ্রূষা করে পঞ্চকন্যার জীবন রক্ষাই ছিল তাঁর মনের ইচ্ছা। সেই অনুযায়ী শুকনো কাপড় দিয়ে সখীসহ রাজকন্যার শরীর আবৃত করা হয়। আগুন জ্বেলে সর্বাঙ্গ সেঁক দেওয়া হয় এবং তন্ত্রমন্ত্র সহকারে মহৌষধ প্রয়োগ করা হয়। একটানা চার দণ্ড সেবাশুশ্রূষার পর পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পান। দয়ালু পদ্মার আন্তরিক সেবাযত্নে সখী-সহ পদ্মাবতীর জ্ঞান ফিরে আসে।
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটিতে কবির রচনারীতির যে বিশেষত্ব দেখতে পাওয়া যায় লেখো।
রচনারীতির বিশেষত্ব – ‘সিন্ধুতীরে’ -এর সংক্ষিপ্ত পরিসরেও অচৈতন্য অপরিচিতা রাজকুমারী পদ্মাবতীর প্রতি সমুদ্রকন্যা পদ্মার যে সহানুভূতি ও ভালোবাসা তা মানবিকতার চূড়ান্ত নিদর্শন।
ত্রিপদী ছন্দের প্রয়োগে বিশেষত্ব – ধীর লয়ের ত্রিপদী ছন্দে এই আবেগকে ধরাশ করেছেন কবি। আবার শেষে ভণিতায় পাঁচালির রীতিও ব্যবহার করেছেন –
“শ্রীযুত মাগন গুণী মোহন্ত আরতি শুনি
হীন আলাওল সুরচন।।”
- শব্দ প্রয়োগের – আরবি-ফারসি ভাষায় সুপণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও আলাওলের কাব্যে আরবি-ফারসি শব্দের প্রয়োগ কম। পরিবর্তে তৎসম শব্দের প্রচুর ব্যবহার লক্ষ করা যায় – ‘সদাচার’, ‘সুতা’, ‘পুষ্প,’ ‘মনোহর’, ‘স্বর্গভ্রষ্টা’, ‘কেশ’ ইত্যাদি।
- কাব্যিক শব্দ প্রয়োগ – কাব্যিক শব্দের ব্যবহারেও আলাওল দক্ষতা দেখিয়েছেন। যেমন – ‘মাঝারে’, ‘চিতে’, ‘তুরিত’ ইত্যাদি। আলাওল আখ্যানকাব্য রচনা করেছিলেন, ফলে তাঁর ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি পড়লে গল্প পড়ার আনন্দ উপভোগ করা যায়।
- সাবলীল লেখনী – পরপর প্রতিটি দৃশ্যকেই তিনি ছবির মতো সাজিয়ে তুলেছেন। সেই দৃশ্যগুলিকে অত্যন্ত সুমধুর ও সুপাঠ্য করে তুলেছে তাঁর দক্ষ সাবলীল লেখনী। ঘটনার পরম্পরাটিকেও তিনি সাজিয়েছেন অত্যন্ত সুন্দরভাবে।
- নাটকীয়তা – যেভাবে ঘটনা তৈরি করা হয়েছে তা কাব্যাংশটিকে নাটকীয়তা দিয়েছে। শেষে কবি আলাওল লিখেছেন – “হীন আলাওল সুরচন।” অনস্বীকার্য যে, ‘সিন্ধুতীরে’ আলাওলের একটি সুরচনা।
‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় পদ্মার চরিত্রটি যেভাবে পাওয়া যায় আলোচনা করো।
অথবা, ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতা অবলম্বনে সমুদ্রকন্যার আচার-আচরণ ব্যাখ্যা করো।
- কথামুখ – সৈয়দ আলাওলের অনূদিত পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মাসমুদ্রখণ্ড’ থেকে সংকলিত ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় পদ্মাই সবথেকে সক্রিয় চরিত্র। সে সমুদ্রকন্যা। কাহিনিতে তাঁর কিছু বিশেষত্ব লক্ষ করা যায়।
- সৌন্দর্যপ্রিয় – পদ্মার মধ্যে ছিল সৌন্দর্যপ্রিয়তা। তাই যে উদ্যান তিনি তৈরি করেছেন সেখানে নানা মনোহর ফুল সুগন্ধ বিস্তার করেছে, গাছে নানা ফল ধরেছে। তাঁর প্রাসাদটিও ছিল সোনায় মোড়া। তার ওপরে নানান রত্নের সজ্জা সেই প্রাসাদের সৌন্দর্যও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
- প্রাণচঞ্চল – পদ্মা ছিলেন প্রাণচঞ্চল। তাই রাত্রি শেষ হতেই দেখা যায় সকালবেলা সখীদের সঙ্গে হাসিখেলায় মেতে উঠে তিনি তাঁর প্রিয় উদ্যানের দিকে চলেছেন। সখীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ছিল অত্যন্ত মধুর।
- মানবিক – পদ্মা চরিত্রটি বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে তাঁর মানবিকতায়। অপরিচিতা পদ্মাবতীকে সমুদ্রতীরের মান্দাসে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁর উৎকণ্ঠা, ঈশ্বরের কাছে তাঁর কাতর প্রার্থনা যেন আত্মীয়ের সঙ্গে আত্মীয়তার সেতু তৈরি করেছে। তাঁরই নির্দেশে পদ্মার সখীরা তন্ত্র-মন্ত্র-মহৌষধি সহযোগে আগুনের সেঁক দিয়ে পদ্মাবতীর চেতনা ফিরিয়েছে। মধ্যযুগের কবিতায় আলাওলের সৃষ্ট এই চরিত্রটিতে মানবিকতা এক অসামান্য বিশেষত্ব। এভাবেই সমুদ্রকন্যা পদ্মা হয়ে উঠেছেন অনন্যা।
‘সিন্ধুতীরে’ কবিতার মূল চরিত্র পদ্মাবতী ও পদ্মার পরিচয় দাও। পদ্মাবতীকে দেখে পদ্মার ভাবনা ও প্রতিক্রিয়া আলোচনা করো।
পদ্মাবতীর পরিচয় – পদ্মাবতী ছিলেন সিংহল রাজকন্যা। তাঁর পিতা ছিলেন গন্ধর্বসেন। পদ্মাবতীর অপরূপ সৌন্দর্যের কথা শুনে চিতোর রাজা রত্নসেন তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন। অনেক ঘটনার মধ্য দিয়ে রত্নসেনের সঙ্গে পদ্মাবতীর বিয়ে হয় এবং বিয়ের পরে দেশে ফেরার সময় তাঁরা সামুদ্রিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন।
পদ্মার পরিচয় – অন্যদিকে, পদ্মা ছিলেন সমুদ্রকন্যা। সমুদ্রতীরে তাঁর যে সুরম্য উদ্যান আছে এবং সোনায় মোড়া যে প্রাসাদ তিনি তৈরি করেছেন, তা পদ্মার সৌন্দর্যপ্রিয়তার অসামান্য উদাহরণ। সখীদের নিয়ে হাসিখেলায় প্রাণচঞ্চল রূপেই পদ্মাকে কবিতায় পাওয়া যায়।
পদ্মার ভাবনা ও প্রতিক্রিয়া – পদ্মাবতীর বিস্ফারিত চোখ, এলোমেলো পোশাক এবং চুল দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা অনুমান করেন যে, সমুদ্রের প্রবল ঝড়ে নৌকা ভেঙেই বোধহয় মেয়েটি এই কষ্ট পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গভীর সহানুভূতির সঙ্গে পদ্মা দেখেন যে, মেয়েটির শ্বাস তখনও অল্প অল্প পড়ছে। স্নেহশীল পদ্মা বিধাতার কাছে মেয়েটির জীবন প্রার্থনা করেন। তিনি প্রত্যাশা করেন, তাঁর পিতার পুণ্যের ফলে এবং তাঁর নিজের ভাগ্যের কারণে মেয়েটির জীবন যেন ফিরে আসে। পদ্মাবতীকে দেখে পদ্মার মনে হয়েছিল যে, ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গের নর্তকী বিদ্যাধরী যেন স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে মাটিতে অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন। পদ্মাবতীর ঠিকরে বেরিয়ে আসা চোখ এবং এলোমেলো বেশ দেখে পদ্মা এ-ও অনুমান করেন যে, ওই কন্যার ওপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে গেছে। এলোমেলো চুল এবং বেশবাসের এই অবস্থায় পদ্মার মনে হয় যে, হয়তো সমুদ্রযাত্রার পথে দুরন্ত ঝড়ে নৌকা ভেঙে তাঁরা এই বিপদে পড়েছেন। সমুদ্রের কষ্টেই তাঁর এই অজ্ঞান অবস্থা।
“সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ অবলম্বনে সৈয়দ আলাওলের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও।
- কথামুখ – আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশের শুরুতেই সমুদ্রকন্যা পদ্মার দিব্যপুরীর বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
- সৌন্দর্যপ্রীতি – সেই মনোহর পুরীর বর্ণনায় আলাওলের সৌন্দর্যপ্রীতির পরিচয় ফুটে উঠেছে। পদ্মার প্রাসাদের নিকটে এক পর্বত অবস্থিত। তার পাশে ছিল ফুল ও ফলে ভরা অপূর্ব এক উদ্যান। কবির ভাষায় –
“নানা পুষ্প মনোহর সুগন্ধি সৌরভতর
নানা ফল বৃক্ষ সুলক্ষণ।
তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি হেমরত্নে নানা রঙ্গি
তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ।।”
- শব্দ প্রয়োগ – মধ্যযুগে রচিত এই কাব্যের ভাষা তৎসম শব্দ নির্ভর হয়েও হৃদয়স্পর্শী। কাহিনি-কাব্যের ধারা অনুযায়ী আলাওল ঘটনাক্রমকে গল্পের মতো সাজিয়েছেন।
- উদার মানবিক চরিত্রের প্রকাশ – সমুদ্রকন্যার উদার মানবিক চরিত্রের প্রকাশ কাব্যাংশটিকে সর্বজনীন করে তুলেছে। সম্পূর্ণ অপরিচিতা পদ্মাবতীর জন্য তাঁর উদ্বেগ এবং তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য তাঁর আকুলতা নিখাদ মানবিক।
- রূপমাধুরীর বর্ণনা – কাব্যের নায়িকা পদ্মাবতীর রূপমাধুরীর বর্ণনায় আলাওল অসামান্য। অচৈতন্য পদ্মাবতীকে দেখে সমুদ্রকন্যার মনে হয়েছে – “ইন্দ্রশাপে বিদ্যাধরি/কিবা স্বর্গভ্রষ্ট করি/অচৈতন্য পড়িছে ভূমিতে।” অর্থাৎ ‘নিপতিতা চেতন রহিত’ নারীর রূপসৌন্দর্যে স্বর্গীয় ছোঁয়া থাকতে পারে, কিন্তু সে যে এই মর্তপৃথিবীর একজন, তাতে কোনো সংশয় নেই।
- রূপচরিত্রের নির্মাণ – মানব-মানবীর রূপচরিত্র নির্মাণে আলাওল এভাবেই বিরল দক্ষতা দেখিয়েছেন। এইভাবে ‘সিন্ধুতীরে’র স্বল্প পরিসরেও আলাওলের উচ্চ কবিপ্রতিভার পরিচয় ফুটে উঠেছে।
“সিন্ধুতীরে” কাব্যাংশটির নামকরণ কতদূর সার্থক হয়েছে তা বিচার করো।
নামকরণ সাহিত্যের প্রবেশের চাবিকাঠি। সাহিত্যের ক্ষেত্রে নামকরণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘সিন্ধুতীরে’ নামকরণটি কবির দেওয়া নয়। কাব্যকাহিনির বিষয়বস্তুকে সামনে রেখে সংকলকগণ এ ধরনের নামকরণ করেছেন।
সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতী তাঁর স্বামীর সঙ্গে চিতোরে ফেরার সময় সামুদ্রিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েন। তাঁদের জলযানটি সমুদ্রে ডুবে যায়। একটি মান্দাসে রত্নসেন ও সখীসহ পদ্মাবতী আশ্রয় নিলেও সেটি রক্ষা পায়নি। প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝায় মান্দাস দ্বিখণ্ডিত হয়ে পদ্মাবতী রত্নসেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। দুর্যোগজনিত কষ্টে রাজকন্যা জ্ঞান হারিয়ে সমুদ্রতীরে পড়ে থাকেন। সাগরকন্যা পদ্মা ভোরবেলা সুরম্য উদ্যানে এসে এই দৃশ্য দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন। তিনি সখীদের নির্দেশ দেন অচৈতন্য রাজকন্যাকে উদ্ধার করতে। সখীরাও সেই নির্দেশ অনুযায়ী রাজকন্যা পদ্মাবতীকে উদ্যানের মাঝখানে নিয়ে এসে চার দণ্ড ধরে নানা সেবাযত্নের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এটাই হল সংক্ষিপ্ত কাব্যকাহিনি। এখানে লক্ষণীয় যে, যাবতীয় ঘটনা ঘটেছে সমুদ্রের তীরবর্তী স্থানে। কাব্যাংশটির শুরুতেও এই সমুদ্রতীরবর্তী ‘দিব্যস্থান’-এর শোভা-সৌন্দর্য বর্ণিত হয়েছে।
সিন্ধুতীরে শব্দটির অর্থ সমুদ্রতীরে। সেই স্থাননামের উল্লেখেই কাব্যাংশটির নামকরণ করা হয়েছে। এই অংশে সংঘটিত যাবতীয় ঘটনা এবং বর্ণিত যাবতীয় বিষয় সমুদ্রতীরকেন্দ্রিক। যে চরিত্রদের কেন্দ্র করে কাহিনি আবর্তিত হয়েছে, তার চেয়ে যে স্থানটিতে কাহিনিটি ঘটেছে, সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ রূপে প্রকাশিত হয়েছে। এই দিক থেকে বিচার করলে নামকরণটি বিষয়কেন্দ্রিক এবং যথাযথ হয়েছে বলা যায়।
‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ অবলম্বনে পদ্মার মনোহর প্রাসাদের বর্ণনা দাও। সখী-সহ রাজকন্যা পদ্মাবতীর রূপ দেখে সমুদ্রলক্ষ্মীর কী ধারণা হয়েছিল?
মনোহর প্রাসাদের বর্ণনা – ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে দেখা যায় সমুদ্রতীরে দিব্যস্থানে ফুলেফলে ভরা এক সুরম্য উদ্যান রচনা করেছিলেন সমুদ্রকন্যা পদ্মা। সেই উদ্যানের মধ্যেই ছিল তাঁর সুরম্য প্রাসাদ। তা ছিল অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর এবং বৈচিত্র্যময় – ‘বিচিত্র টঙ্গি’। তা ছিল স্বর্ণনির্মিত এবং নানান মূল্যবান রত্নে সাজানো। সেই রত্নখচিত প্রাসাদে আলো পড়লে বর্ণালি বিচ্ছুরিত হত। ‘হেম রত্নে নানা রঙ্গি’ অর্থাৎ সোনা ও রত্নাসম্ভারে তা বিচিত্র দেখতে লাগছিল।
পদ্মাবতীর রূপদর্শনে সমুদ্রলক্ষ্মীর ধারণা – সমুদ্রতীরের অসামান্য পরিবেশে সখীদের নিয়ে উদ্যানে যাওয়ার সময়ে সমুদ্রকন্যা পদ্মা লক্ষ করেন সমুদ্রতীরের মান্দাসটিকে। দ্রুত কাছে গিয়ে অচেতন চার সখীর মধ্যে থাকা পদ্মাবতীকে তিনি লক্ষ করেন। পদ্মাবতীকে দেখে সমুদ্রকন্যার মনে হয় রূপ ও সৌন্দর্যে তিনি স্বর্গের অপ্সরা রম্ভাকেও পরাজিত করতে পারেন – “দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত হইল বালা”। সমুদ্রকন্যার মনে হয়, ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গের গায়িকা বিদ্যাধরী যেন স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে মাটিতে অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন। তাঁর ঠিকরে বেরিয়ে আসা চোখ, আলুথালু বেশ ইত্যাদি দেখে পদ্মার মনে হয় যে, তাঁর ওপর দিয়ে কোনো ঝড় বয়ে গেছে। ছবিতে আঁকা মূর্তির মতো সুন্দরী মেয়েটির তখন সামান্যমাত্র শ্বাস-প্রশ্বাসই বইছিল।
আরো পড়ুনঃ
- জয় গোস্বামীর অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা প্রশ্ন ও উত্তর
- সিরাজউদ্দৌলা নাটক প্রশ্ন ও উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা ২০২৬ প্রস্তুতি
Keywords:
Sindhutire Kobita Madhyamik Question Answer, Sindhutire Kobita Questions and Answers, Madhyamik Bengali 2026 Suggestion, Madhyamik Bengali Poetry Question Answer, Syed Alaol Sindhutire Poem, মাধ্যমিক ২০২৬ বাংলা কবিতা প্রশ্নোত্তর, সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর, সৈয়দ আলাওল কবিতা প্রশ্নোত্তর, Bengali Class 10 Poetry Questions, Madhyamik Bengali Suggestion 2026, Sindhutire Bengali Poem Summary, Sindhutire Kobita SAQ MCQ, Madhyamik Bengali Poetry Preparation, Madhyamik Bengali Poem Guide, সিন্ধুতীরে কবিতা বহুনির্বাচনি প্রশ্ন, Madhyamik Bengali Short Question Answer, Madhyamik 2026 Bengali Poem Analysis, Madhyamik Bengali Important Poetry, Madhyamik Class 10 Bengali Questions, West Bengal Board Bengali Suggestion 2026