---Advertisement---

Cell Division and its Significance l কোষবিভাজন ও এর তাৎপর্য 2024 l কোষ বিভাজন কাকে বলে | Cell Division

By Siksakul

Published on:

Cell Division and its Significance l কোষবিভাজন ও এর তাৎপর্য 2024 l কোষ বিভাজন কাকে বলে
---Advertisement---

Cell Division and its Significance: কোষবিভাজন হল জীবজগতের একটি মৌলিক প্রক্রিয়া যা জীবনের বৃদ্ধি, উন্নয়ন এবং প্রজননের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জটিল প্রক্রিয়াটি নিশ্চিত করে যে জেনেটিক উপাদানগুলি সঠিকভাবে নতুন কোষে পৌঁছে যাচ্ছে, যা জীবের বিকাশ, টিস্যু মেরামত এবং প্রজননে সহায়তা করে। এই ব্লগে, আমরা কোষবিভাজনের রহস্যময় জগতের অনুসন্ধান করবো এবং এর বিভিন্ন প্রকার, প্রক্রিয়া এবং জীবনের জন্য এর তাৎপর্য আলোচনা করবো।

কোষ বিভাজন কাকে বলে?

কোষবিভাজন হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে একটি কোষ বিভাজিত হয়ে দুটি বা ততোধিক নতুন কোষ তৈরি করে। এই প্রক্রিয়াটি জীবের বৃদ্ধি, টিস্যু মেরামত এবং প্রজননের জন্য অপরিহার্য। কোষবিভাজনের প্রধান দুটি প্রকার হল মাইটোসিস এবং মিওসিস, যেগুলি ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায় ঘটে এবং জীবের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করে।

কোষবিভাজনের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত আলোচনা এবং জীবনে এর তাৎপর্য সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সাথে থাকুন।

Cell Division and its Significance l কোষবিভাজন ও এর তাৎপর্য 2024 l কোষ বিভাজন কাকে বলে | Cell Division

কোষ বিভাজন কাকে বলে ?

কোষ বিভাজন (Cell Division) : পৃথিবীর সকল সজীব বস্তু একটিমাত্র কোষের দ্বারা তাহাদের জীবন শুরু করে। এই কোষটি নিয়মিত বিভাজিত হইয়া বহু কোষের সৃষ্টি করে এবং বহুকোষ হইতে লার্ভা বা ভ্রুনের সৃষ্টি হয়। এই লার্ভা বা ভ্রুন জীবে পরিণত হয়। জীবের জনন, বৃদ্ধি ও বিভিন্ন অঙ্গের ক্রমবিকাশের জন্যই এই কোষের ক্রমাগত বিভাজন হইতে থাকে। এমন কি পূর্ণবয়স্ক জীবে বৃদ্ধি, মেরামত, ক্ষয়প্রাপ্ত কোষের প্রতিস্থাপনের জন্যও কোষের বিভাজন ঘটিয়া থাকে।
   বিপাকীয় ক্রিয়ার উপচিতির (Anabolism) ফলে কোষ আকার ও আয়তনে বৃদ্ধি পায়। কোযের আকার ও আয়তনের বদ্ধি কিন্তু শারীরবৃত্তীয় কার্যের প্রয়ােজনীয়তা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আকার ও আয়তনে চরম বুদ্ধিপ্রাপ্ত হইবার পরই কোষ বিভাজিত হয়।
   নিউক্লিয়াসে ডি. এন. এ.-র পরিমাণ দ্বিগণ হইলেই কোষবিভাজন শুরু হয়। প্রকতপক্ষে কোষবিভাজন একটি জিন নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি।

কোষ বিভাজন কাকে বলে? (What is Cell Division) :
সংজ্ঞা – যে পদ্ধতিতে একটি কোষ হইতে দুই বা অধিক অপত্য কোষের সষ্টি হয় তাহাকে কোষ বিভাজন বলে।
আত্মপ্রতিলিপি গঠন সজীব বস্তুর সর্বাপেক্ষা উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য। যে পদ্ধতিতে কোষ তাহার নিজ প্রতিলিপি গঠন করে তাহাকে কোষ বিভাজন বলে। বিভাজন পদ্ধতিতে বহুকোষের উৎপত্তি জীবের সার্বিক বৈশিষ্ট্য। একটি কোষ অন্য আর একটি অনুরেপ কোষ হইতে উৎপন্ন হয় এবং এই সূত্রই জীবন-প্রবাহের ধারাবাহিকতার প্রকৃতি ভিত্তি। জীবদেহে কোষ বিভাজন তিনটি পৃথক পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। যেমন-
(১) অ্যামাইটোসিস (Amitosis), (২) মাইটোসিস (Mitosis) ও (৩) মিয়ােসিস (Meiosis)।

অ্যামাইটোসিস (Amitosis Gr. a—না, mitos—সূত্র) বা প্রত্যক্ষ কোষ-বিভাজন (Direct cell division)

সংজ্ঞা : যে কোষ বিভাজনে পিণ্ডিল গঠিত না হইয়া নিউক্লিয়াসটি সরাসরি মধ্যাংশ বরাবর খাঁজ সৃষ্টির দ্বারা দুইটি অপত্য খণ্ডাংশে বিভক্ত হয় তাহাকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে। এই প্রক্রিয়ায় মাইটোসিসের ন্যায় নিউক্লিয়াসের ভাঙ্গন, ক্রোমােজোম সষ্টি এবং নিউক্লিয়াসের পুনর্গঠন প্রভৃতি ঘটনা ঘটে না। নিউক্লীয়াসের বিভাজন সরাসরি খাঁজ সৃষ্টির মাধ্যমে ঘটে বলিয়া এই বিভাজনকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন (Direct cell division) বলে। উদাহরণ—অ্যামিবা, ব্যাকটিরিয়া, কারা (শৈবাল), ঈস্ট (ছত্রাক)।

মাইটোসিস (Mitosis, গ্রীক—mitos—সূত্র) বা পরোক্ষ বিভাজন (Indirect division) বা সমবিভাজন (Equational division )

সংজ্ঞা : যে বিশেষ পদ্ধতিতে নিউক্লিয়াসের নানাবিধ পরিবর্তনের মাধ্যমে মাতৃ নিউক্লিয়াস সম-গুণসম্পন্ন দুইটি অপত্য নিউক্লিয়াসের জন্ম দেয় তাহাকে মাইটোসিস বলে। বহুকোষী জীবের দেহ দুই প্রকার কোষ দ্বারা তৈরী—১. দেহকোষ বা সােমাটিক কোষ (Somatic Cells), যাহা প্রজনন কার্য ব্যতীত দেহের যাবতীয় শারীরবৃত্তীয় কার্য করে, এবং ২. জনন কোষ (Germ Cells), যাহা যৌন জননে সাহায্য করে। যেমন – শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়ের কোষ।

   মাইটোসিস পদ্ধতিতে দেহজ কোষের নিউক্লীয় বিভাজন হয় এবং একটি নিউক্লীয়াস হইতে দুইটি সমগণ সম্পন্ন অপত্য নিউক্লীয়াস উৎপন্ন হয়। জননকোষ উৎপন্ন করতে শুক্রাশয়ে বা ডিম্বাশয়ে বা রেণুস্থলীতে মাতৃকোষে যে বিভাজন দেখা যায় এবং যে বিভাজনের দ্বারা চারটি জননকোষ বা রেণু উৎপন্ন হয় তাহাকে মিয়োসিস বলে।

মাইটোসিস কোথায় হয় : মাইটোসিস বিভাজন সকল দেহকোষে ঘটিয়া থাকে। যে সকল জীবের দেহকোষ আদর্শ নিউক্লিয়াসযুক্ত তাহাতেই এই বিভাজন হয়। রেণুস্থলীতে রেণুমাতৃকোষ সৃষ্টির পূর্বে মাইটোসিস বিভাজন হয়। শুক্রাশয়ে আদি শুক্রকোষ (Spermatogonia) পর্যন্ত মাইটোসিস বিভাজন ঘটে। ডিম্বাশয়ে আদি ডিম্বাণু (Oogonium) অবস্থা পর্যন্ত মাইটোসিস বিভাজন ঘটে।

মাইটোসিস পদ্ধতি (Process of Mitosis)— 1878 খ্রীষ্টাব্দে ওয়াল্টার ফ্লেমিং (Walter Flemming) প্রথম জীবদেহে মাইটোসিস কোষবিভাজন প্রত্যক্ষ করেন এবং ইহার বিবরণ দেন। স্লাইচের (Schleicher) 1878 খ্রীষ্টাব্দে মাইটোসিসের বিবরণ প্রসঙ্গে ইহার নামকরণ করেন কেরিওকাইনেসিস (Karyokinesis)। 1879 খ্রীষ্টাব্দে সেনাইডার (Scheneider) মাইটোসিস পদ্ধতির পূর্ণ বিবরণ দেন, ককরাউম (Cockraum) এবং ম্যাককলে (Mac Caulay) 1960) খ্রীষ্টাব্দে মাইটোসিসের রাসায়নিক পদ্ধতির বিশদ বিবরণ দেন।

মাইটোসিস বা কেরিওকাইনেসিস (Karyokiness Gr. Karyon—নিউক্লিয়াস, Kinesis—চলন) বলিতে নিউক্লিয়াসের বিভাজন বােঝায়। কিন্তু নিউক্লিয় বিভাজন বা কেরিওকাইনেসিস সমাপ্ত হবার সঙ্গে সঙ্গে সাইটোপ্লাজমীয় বিভাজন বা সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis) আরম্ভ হয়। সাইটোপ্লাজমের বিভাজনের ফলে একটি কোষ হইতে দুইটি অপত্য কোষ গঠিত হয়। এই কারণে দেহজ কোষ বিভাজনকে (Somatic cell division) মাইটোসিস না বলিয়া মাইটোটিক সেল ডিভিশন (Mitotic cell division) বলা হয়। মাইটোটিক বিভাজনে অপত্য কোষদ্বয় সমসংখ্যক ক্রোমােজোম প্রাপ্ত হয় এবং সমগণ সম্পন্ন হয় বলিয়া ইহাকে সমবিভাজন বা ইকুএশনাল ডিভিশন (Equational division)-ও বলে। মাইটোটিক বিভাজনে মাতৃ নিউক্লিয়াস সরাসরি বিভক্ত না হইয়া প্রথমে বিনষ্ট হইয়া নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রোমােজোম গঠন করে পরে ঐ ক্রোমােজোম হইতে অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি হয়। এই বিভাজনে অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি সরাসরি হয় না বলিয়া, ইহাকে পরােক্ষ বিভাজনও বলে (Indirect division)।

(১) ক্যারিওকাইনেসিস (Karyokinesis) : বিভিন্ন দশা (Different Phases) – বিবরণ ও অনুধাবনের সুবিধার জন্য মাইটোসিস পদ্ধতিকে কয়েকটি দশা (Phase) এবং প্রতিটি দশাকে আবার উপদশায় ভাগ করা হয়। একটি দশা কখন ঠিক কিভাবে অন্য দশায় রপান্তরিত হয় তাহা নির্ণয় করা সম্ভব নহে; কারণ এই পদ্ধতি অতি গতিশীল।
   মাইটোসিসে প্রােফেজ (Prophase), মেটাফেজ (Metaphase), অ্যানাফেজ (Anaphase) এবং টেলােফেজ (Telophase) এই চারিটি দশা আছে। টেলােফেজ দশার অব্যবহিত পরে সৃ হয় সাইটোকাইনেসিস। দুইটি মাইটোসিসের মধ্যবতী দশার নাম ইন্টারফেজ (interphase)। যখন নিউক্লিয়াসটি বিভাজিত হয় না সেই অবস্থাকে স্থির দশা (resting phase) এবং নিউক্লিয়াসটিকে স্থির নিউক্লিয়াস (resting nucleus) বলে। স্থির অবস্থায় নিউক্লিয়াসে নিউক্লিয় বস্তুর সংশ্লেষ পূর্ণোদ্যমে সংঘটিত হয়, অর্থাৎ বিপাকীয় ক্রিয়া সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলিতে থাকে। তাই নিউক্লিয়াসের এই দশাকে বিপাকীয় দশা (metabolic stage) এবং নিউক্লিয়াসটিকে বিপাকীয় নিউক্লিয়াস (metabolic nucleus) বলে। অনুধাবনের সুবিধার জন্য প্রতিটি দশাকে প্রাথমিক, মধ্য ও শেষ উপদশায় ভাগ করা হয়।

ক্যারিওকাইনেসিসে কতটা সময় লাগে?
মােটামুটি হিসাবে জানা যায় যে নিউক্লিয় বিভাজনের আন্তর্দশায় অথাৎ ইন্টারফেজে বিভাজন প্রস্তুতির জন্য সময় বেশী লাগে এবং বিভাজন দশায় সময় খুবই কম লাগে। মানুষের ক্ষেত্রে কোষবিভাজনে সময় লাগে 18 ঘন্টা। এর মধ্যে 45 মিনিট শধ, বিভাজন কালে লাগে, বাকি 17 ঘন্টা 15 মিনিট সময় লাগে ইন্টারফেজে। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ঐ সময় যথাক্রমে 2 ঘন্টা ও 12 ঘন্টা, প্রাণীর ক্ষেত্রে যথাক্রমে 1 ঘন্টা ও 18 ঘন্টা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রোফেজ হইতে টেলােফেজ পর্যন্ত সময় লাগে ½–2 ঘন্টা এবং ইন্টারফেজে 10–20 ঘন্টা। স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহকোষ বিভাজনে সময় লাগে G1 দশায় 5 ঘন্টা, S-দশায় 7 ঘন্টা, G2-দশায় 3 ঘন্টা, প্রোফেজ দশায় 1–2 ঘন্টা, মেটাফেজ দশায় 5–15 মিনিট, অ্যানাফেজ দশায় 2–10 মিনিট এবং টেলােফেজ দশায় 10–30 মিনিট।

ক) ইন্টারফেজ দশা (Interphase, Inter=in between বা মধ্য) : দুইটি মাইটোসিস দশার মধ্যবর্তী দশাকে আন্তদশা বা ইন্টারফেজ বলে। দুইটি মাইটোসিসের মধ্যবর্তী দশায় কোষ আয়তনে বাড়ে এবং পুনরায় বিভাজিত হইবার জন্য প্রস্তুত হয়। এই প্রস্তুতির ফলেই কোষের নিউক্লিয়াসে নানাপ্রকার রাসায়নিক ও ভৌত ঘটনাবলী পরিলক্ষিত হয়।
   এই দশা পর্ববতী টেলােফেজ এবং পরবর্তী প্রােফেজ দশার মধ্যবর্তী দশা। ইহার স্থিতিকাল সর্বাপেক্ষা বেশী। বিপাকীয় কার্যের ভিত্তিতে এই দশাকে তিনটি উপদশায় ভাগ করা হয় (A. Howard and S.R. Pele 1953) G1 , S ও G2 । ইন্টারফেজের মাঝামাঝি অবস্থায় সকল সংশ্লেষমূলক কার্য বা বিপাকীয় কার্য’ ঘটে বলিয়া ইহাকে সংশ্লেষ দশা (S=Synthesis period) বলে। এই উপদশায় DNA, RNA ও প্রােটিন সংশ্লেষিত হয় এবং নিউক্লিয়াসের ঘনমান দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। সংশ্লেষ মূলক কার্য আরম্ভের পূর্বের দশা (টেলােফেজের পরবর্তী অবস্থা) এবং সংশ্লেষ কার্যের পরবতী দশা- (প্রােফেজের পরবর্তী অবস্থা)-কে ছেদ দশা (Gap period) বসে। প্রথমটিকে G1 এবং শেষেরটিকে G2 হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এই দুই উপদশা সংশ্লেষ দশার ছেদ ঘটায়।

রাসায়নিক ঘটনাবলী (Chemical events) : ভৌতিক ঘটনা আবিভত হইবার বহু পূবেই কোষের প্রতিলিপি গঠনের ঘটনা সংঘটিত হয়। বিভাজিত হইবে এমন কোষের নিউক্লিয়াসের ক্রোমােজোমগলি অধিক পরিমাণে DNA-সংশ্লেষ করে। দেখা গিয়েছে এরূপ নিউক্লিয়াসের DNA এর পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়। এই অবস্থায় ক্রোমােজোমের জিনগুলিও নিজ নিজ প্রতিলিপি তৈরী করে। জিনগুলির প্রতিলিপি তৈরী হওয়ায় ক্রোমােজোমের প্রতিলিপি তৈরী হয়; কিন্তু ইহার গঠন পদ্ধতি দৃশ্যমান হয় না। ইন্টারফেজ দশার পূর্বে একটি ক্রোমাটিডষক্ত ক্রোমােজোমকে মোনাড (Monad) বলে। দ্বিত্বকরণ পদ্ধতিতে যখন মোনাড হইতে ক্রোমোজোমে আর একটি ক্রোমাটিড যুক্ত হয় তখন উহার নাম হয় ডায়াড (Dyad)। মােনাডের দ্বিত্বকরণ পদ্ধতি সম্পন্ন হইবার পরই প্রােফেজ দশা শুরু হয়।

(খ) প্রােফেজ দশা (Prophase, pro-before বা পর্ব) : যে বিভাজন দশায় ক্রোমাটিড কুণ্ডলিত হয়, নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয় আবরণী বিলুপ্ত হয় এবং পিণ্ডিল গঠিত হয় তাহাকে প্রােফেজ দশা বলে। প্রােফেজ দশায় নিম্নলিখিত ঘটনাবলী লক্ষ্য করা যায় :-
১. জল বিশােষণের দ্বারা সম্পৃক্ত নিউক্লিয় রসের প্রতিসরণ-সচক ক্রোমােজোমের সহিত একই মানের হওয়ায় কোষের অন্তর্বতীকালীন অবস্থা বা ইন্টারফেজে ক্রোমােজোম দৃশ্যমান হয় না।
২. নিউক্লিয়াস বিভাজন দশায় প্রবেশ করিলে জলীয় অংশ অপসারিত হয় বলিয়া ক্রোমােজোমগুলি দৃশ্যমান হয়।
৩. নিউক্লিয় জালিকা ধীরে ধীরে খুলিয়া যায় এবং অবশেষে নির্দিষ্ট জোড় সংখ্যক ক্রোমােজোমে পরিণত হয়। ক্রোমোজোমগলি ক্ষীণকায় ও দীর্ঘ থাকে। প্রতিটি ক্রোমােজোম দুইটি ক্রোমাটিডযুক্ত থাকে। প্রতিটি ক্রোমােজোমে ক্রোমাটিডদ্বয় পরস্পর সম্পূর্ণ পৃথক থাকিলেও একটি অবিভাজিত সেন্ট্রোমিয়ার অংশে যুক্ত থাকে।
৪. নিউক্লিওলাসটি প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট ক্রোমােজোমের নির্দিষ্ট অংশের সহিত যুক্ত থাকে।
৫. প্রােফেজ দশায় ক্রোমােজোমের ক্রোমাটিড বিশেষভাবে স্প্রিং-এর ন্যায় কুন্ডলীকৃত হয়। ফলে ক্রোমােজোমগুলি স্থূল ও আকারে ছােট হয়।
৬. কোষে ক্রোমােজোমগলি জোড়ায় জোড়ায় থাকে । ইহাদের সমসংস্থ বা হোমােলােগাস (Homologous) ক্রোমােজোম বলে। হােমােলোগাস জোড়া দেখিতে একই প্রকার, বিশেষ প্রভেদ থাকে না। হােমােলােগাস ক্রোমােজোম নিউক্লিয়াসের মধ্যে ছড়ান থাকে এবং নিজেরা কুন্ডলী করিয়া থাকে না।
৭. নিউক্লিওলাস প্রথম দিকে দেখা যায়, কিন্তু প্রােফেজ দশার শেষ পর্যায়ে ইহা বিলপ্ত হয়। ইহা সর্বক্ষণই একটি নির্দিষ্ট ক্রোমােজোমের নির্দিষ্ট অংশের (গৌণ খাঁজ) সহিত যুক্ত থাকে।
৮. প্রােফেজ আরম্ভের পর্বে প্রাণীকোষে সেন্ট্রোজোম বিভাজিত হয় এবং দুইটি সেন্ট্রিওলে পরিণত হয়। প্রােফেজ চলাকালীন সেন্ট্রিওল দুইটি পরস্পরের নিকট হইতে 180° দূরে সরিয়া যায় এবং প্রােফেজ দশা শেষে পরস্পরের বিপরীত দিকে অবস্থান করে। মধ্য প্রােফেজ দশায় ইহা হইতে স্পিণ্ডল (Spindle) তৈরী আরম্ভ হয়। এই জাতীয় পিণ্ডিলকে সেন্ট্রিওলার পিণ্ডিল (Centriolar spindle) বলে।

কোষবিভাজন ও এর তাৎপর্য (রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন 1. কোষ বিভাজন কাকে বলে? কোষ বিভাজন -এর পর্যায় কয়টি? এদের কি বলা হয়?

উত্তর : কোষ বিভাজনের সংজ্ঞা – যে পদ্ধতিতে একটি কোষ হইতে দুই বা অধিক অপত্য কোষের সষ্টি হয় তাহাকে কোষ বিভাজন (Cell division) বলে।
কোষ বিভাজনের দুটি পর্যায় হল :
(i) নিউক্লিয়াস-বিভাজন : প্রথম পর্যায়ে নিউক্লিয়াসটি বিভাজিত হয় বলে একে নিউক্লিাস-বিভাজন (Nuclear division) বলা হয়।
(ii) সাইটোপ্লাজম-বিভাজন : কোষ বিভাজনের দ্বিতীয় পর্যায়ে কোষের সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়। এই পর্যায়কে সাইটোপ্লাজম বিভাজন (Cytoplasmic division) বা সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis) বলা হয়। 

প্রশ্ন 2. (i) ডি. এন. এ. কি দিয়ে তৈরী? এটি কি? (ii) পেলিকল কাকে বলে?

উত্তর : (i) ডি. এন. এ. (DNA) : ক্রোমােজোম প্রধানত ডিঅক্সিরাইবোজ নিউক্লিক অ্যাসিড (Deoxyribose nucleic acid) বা ডিঅক্সিরাইবােনিউক্লিক অ্যাসিড (Deoxyribonucleic acid) নামের জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরী। একে ইংরাজীতে সংক্ষেপে ডি. এন. এ. (DNA) বলা হয়। এর চারদিকে যে প্রােটীন-নির্মিত একটি আবরণ থাকে, তাকে ক্রোমােজোমের ধাত্র (Matrix) বলা হয়। ধাত্রের বাইরে যে আর একটি সূক্ষ্ম আবরণ থাকে তার নাম পেলিক্‌ল (Pellicle)। 

প্রশ্ন 3. জিন কাকে বলে? এর প্রধান কাজ কি?

উত্তর : জিন- ক্রোমােজোমের এক-একটি ছােট ছােট অংশ বংশগতির এক-একটি নির্দিষ্ট প্রলক্ষণ (Trait) বহন করে। প্রলক্ষণ বহনকারী ক্রোমােজোমের এইরকম এক-একটি ছােট অংশকে জিন (Gene) বলা হয়। জিনগুলি ক্রোমােজোমের দৈর্ঘ্য-বরাবর সারিবদ্ধভাবে বিন্যস্ত থাকে। বংশগতি নিয়ন্ত্রণ করা জিনের কাজ। 

প্রশ্ন 4. মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের পর্যায়গুলি কি কি? কোন পর্যায়ে কি কি হয়?

উত্তর : মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের পর্যায় দুটি : (i) প্রথম পর্যায়ে নিউক্লিয়াসটি বিভক্ত হয়ে, দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠন করে। এই পর্যায়ের নাম মাইটোসিস (Mitosis), যার অপর নাম ক্যারিও-কাইনেসিস (Karyokinesis )। (ii) দ্বিতীয় পর্যায়ের নাম সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis )। এই সময় সাইটোপ্লাজম দুটি অংশে বিভক্ত হয়। সাইটোপ্লাজমের অংশ দুটির প্রত্যেকটিতে একটি করে অপত্য নিউক্লিয়াস থাকে। এইভাবে, মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের ফলে, একটি জনিতৃকোষ থেকে দুটি সমান অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। 

প্রশ্ন 5. বহুকোষী উদ্ভিদের প্রধানতঃ কোন কোন অঞ্চলে কোষ বিভাজিত হয়?

উত্তর : বহুকোষী উদ্ভিদের সমস্ত সজীব কোষ প্রয়ােজনমতাে বিভাজিত হতে পারলেও, প্রধানতঃ যে কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের কোষ মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয় সেগুলি হল : (i) কাণ্ড ও মূলের ডগায় অবস্থিত প্রাথমিক ভাজক কলার কোষে, (ii) দ্বিবীজপত্রী উদ্ভদের পরিধি-বৃদ্ধির সময় কাণ্ড ও মূলের ক্যাম্বিয়াম নামের গৌণ ভাজক কলার কোষে এবং (iii) উদ্ভিদের যে অঞ্চলে ক্ষত সৃষ্টি হয়, সেখানে। 

প্রশ্ন 6. বহুকোষী এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীর মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোথায় কোথায় কোষ বিভাজন হয়? কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে দ্রুত হারে এবং কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে বিলম্বিত হারে এই বিভাজন হয়?

উত্তর : বহুকোষী প্রাণীর ক্ষেত্রে : (i) ভ্রুনের পরিস্ফুরণ, (ii) বৃদ্ধি, (iii) ক্ষত-নিরাময় এবং (iv) নির্মোচনের সময় মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ বিভাজন হয়।
স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষেত্রে : (v) ত্বক, (vi) অস্থি-মজ্জা এবং (vii) অন্ত্রের অন্তঃ-আবরণে দ্রুতহারে মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজন হয়। (viii) যকৃৎ এবং (ix) বৃক্কের কোষে অপেক্ষাকৃত বিলম্বিত হারে মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজন হয়। (x) এককোষী জীবেরা সচরাচর এই পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়। 

প্রশ্ন 7. মাইটোসিসের সংজ্ঞা কি?

উত্তর : নিউক্লিয়াস-বিভাজনের যে পদ্ধতিতে মাতৃ-নিউক্লিয়াসটি কতকগুলি ক্রমিক অবিরাম এবং জটিল অবস্থার মধ্য দিয়ে বিভাজিত হয়ে হুবহু মাতৃ-নিউক্লিয়াসের সমগুণসম্পন্ন দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি করে, তাকে মাইটোসিস (Mitosis) বলে। 

প্রশ্ন ৪. (a) মাইটোসিসের ফেজ কাকে বলে? এর দশাগুলিকে কি কি ভাগে ভাগ করা হয়েছে? (b) প্রতি ফেজে কি পরিবর্তন হয়?

উত্তর : মাইটোসিসের এক-একটি অবস্থা বা দশাকে ফেজ বলে। মাইটোসিসের দশাগুলিকে যে চারটি ফেজে ভাগ করা হয়, সেগুলি যথাক্রমে  (i) প্রােফেজ (Prophase), (ii) মেটাফেজ (Metaphase), (iii) অ্যানাফেজ (Anaphase) এবং (iv) টেলােফেজ (Telophase)।
   (b) প্রতিটি ফেজে নিউক্লিয়াসের বিশেষ করে ক্রোমােজোমের আকৃতিগত, ভৌত এবং রাসায়নিক পরিবর্তন হয়। 

প্রশ্ন 9. প্রােফেজ দশায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কি কি ঘটে?

উত্তর : প্রােফেজের শুরুতে (i) নিউক্লিয়াসের ভিতরের বস্তুগুলিকে কতকটা হালকাভাবে জড়ানাে গােল এক ফেটি সুতার মতাে দেখায়।
   (ii) শুরু থেকেই নিউক্লিয়াসের নিরুদন (Dehydration) চলতে থাকে অর্থাৎ জলের পরিমাণ কমে যেতে থাকে।
   (iii) এইসময় থেকেই নিউক্লিয়াসের মধ্যে সূক্ষ সুতার মতাে ক্রোমােজোম দেখা যায়। প্রতিটি ক্রোমােজোম দুটি লম্বালম্বি ক্রোমাটিডে বিভক্ত হতে থাকে।
   (iv) প্রথম দিকে ক্রোমাটিড দুটি পরস্পর দড়ির মতাে পাকানাে থাকে পরে এ দুটি ক্রমে আলাদাভাবে স্প্রিং-এর মতাে প্যাচাতে থাকে। পরে প্যাচের সংখ্যা বেশি হয় এবং ক্রমে প্যাচের ব্যাস বড় হতে থাকে এবং এদের সংখ্যা কমে যেতে থাকে। তখন ক্রোমাটিড দুটি লম্বায় কমতে থাকে এবং চওড়ায় বাড়তে থাকে ; ফলে ক্রোমাটিড দুটির মধ্যে টান পড়ায়, এরা কেবল সেনট্রোমিয়ার অংশ ছাড়া পরস্পর আলাদা হয়ে পাশাপাশি চলে আসে এবং লম্বা অক্ষ-বরাবর পরস্পর সমান্তরালভাবে বিন্যস্ত হয়।    আবার প্রোফেজের শেষের দিকে (v) ক্রোমােজোমের চারপাশে ধাত্র এবং পেলিকল সৃষ্টি হয় বলে ক্রোমােজোমের পরিধি সমান দেখায়।
   (vi) নিউক্লিওলাসটি ক্রমে ছােট হতে থাকে এবং শেষপর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে যায়।
   (vii) নিউক্লিয়াস মেমব্রেন বিলুপ্ত হয়।
   (viii) ক্রোমোজোমগুলি কোষের কেন্দ্রের কাছে দলবদ্ধভাবে বিন্যস্ত হয়। 

প্রশ্ন 10. মেটাফেজে ক্রোমােজোমের অবস্থা কিরূপ হয় ?

উত্তর : মেটাফেজে : (i) নিউক্লিয়াসের স্পিন্ডল তৈরী হয়, (ii) ক্রোমােজোমগুলি সেট্রোমিয়ারের সাহায্যে ক্রোমোজোমিক ফাইবারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে, নিউক্লিয়ার স্পিনড লের নিরক্ষীয় তলে বিন্যস্ত থাকে এবং (iii) ক্রোমােজোমগুলি সবচেয়ে মােটা ও স্পষ্ট হয়। 

প্রশ্ন 11. অ্যানাফেজের বিভিন্ন সময় কি কি ঘটে?

উত্তর : (i) অ্যানাফেজের শুরুতে সেন্ট্রামিয়ার দুটি সমান ভাগে ভাগ হয়ে যায়, ফলে ক্রোমাটিড দুটির প্রত্যেকের নিজস্ব সেনট্রোমিয়ার হয়।
   (ii) ক্রোমাটিড দুটি তখন সেন্ট্রামিয়ারের দিক থেকে পরস্পর পৃথক হতে থাকে এবং ক্রমে নিরক্ষীয় তল থেকে মেরুর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। সেনট্রোমিয়ার বিভক্ত হওয়ার পর ক্রোমাটিড দুটিকে অপত্য ক্রোমােজোম (Daughter chromosomes) বলা হয়। এইগুলি পরে সেন্ট্রোমিয়রের অবস্থান অনুসারে V, L বা I আকার ধারণ করে ক্রোমােজোম দুটির একটি এক মেরু এবং অপরটি অন্য মেরুর দিকে যায়।
   (iii) অ্যানাফেজের শেষে অপত্য ক্রোমােজোমগুলি মেরু দুটির কাছে দলবদ্ধভাবে বিন্যস্ত হয়। 

প্রশ্ন 12. টেলােফেজে কি কি ঘটনা ঘটে ?

উত্তর : টেলােফেজে যে সমস্ত ঘটনা ঘটনা ঘটে সেগুলি মােটামুটি হল :
(i) ক্রোমােজোম গুলির ধাত্র ও পেলিকল মিলিয়ে যায়, প্যাচ খুলে যায় এবং শেষপর্যন্ত ক্রোমােজোমগুলি আবার ক্রোমাটিন রেটিকুলামে পরিণত হয়।
(ii) নিউক্লিওলাসের পুনরাবির্ভাব হয়।
(iii) আবার নিউক্লিয়ার মেমব্রেন সৃষ্টি হয়। 

প্রশ্ন 13. মাইটোসিসের ফলে কি কি হয়?

উত্তর : (i) মাইটোসিসের ফলে উৎপন্ন অপত্য নিউক্লিয়াস দুটির ক্রোমোজোম দুটির আঙ্গিক ও মাত্রিক পরিবর্তন হয় না। ফলে অপত্য নিউক্লিয়াসের গঠন ও গুণ মাতৃ নিউক্লিয়াসের মত হুবহু হয়।
   (ii) সাইটোপ্লাজম, মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাসটিড, ইত্যাদি কোষের অন্যান্য অংশও সমানভাবে বিভাজিত হওয়ায়, অপত্য কোষ দুটি হুবহু মাতৃ-কোষের মতাে হয়।
  (iii) যে সমস্ত এককোষী জীব মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের সাহায্যে বংশবিস্তার করে (যেমন—অ্যামিবা, ঈসটস ইত্যাদি), তাদের ক্ষেত্রে বংশধর ও জনিতৃর মধ্যে কোনও পার্থক্য দেখা যায় না।
  (iv) অঙ্গজ জননের সাহায্যে বংশবিস্তারের সময়েও মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজন হয় বলে, জনিতৃ ও বংশধরের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না।

প্রশ্ন 14. উদ্ভিদকোষে মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের চিত্র অঙ্কন করে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর।

উত্তর :

\"Mitotic Mitotic Cell Division

একটি উদ্ভিদকোষের মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভিন্ন দশায় কিরূপ আকার হয় তা দেখান হল।

প্রশ্ন 15. মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের উপযােগিতা কি কি?

উত্তর : এই পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের উপযােগিতা অনেক। তার মধ্যে কয়েকটি হল:
(i) মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের ফলে বহুকোষী জীবের দেহ দৈর্ঘ্যে ও আয়তনে বাড়ে।
(ii) স্বাভাবিক দৈহিক ক্ষয়পূরণের প্রয়ােজনেও এই পদ্ধতিতে কোষ বিভাজিত হয়।
(iii) রােগাক্রমণের ফলে অথবা আঘাতজনিত কারণে ক্ষত সৃষ্টি হলে, ঐ অঞ্চলে মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের ফলে উৎপন্ন নৃতন কোষের সাহায্যে ক্ষত নিরাময় হয়।
(iv) অনুন্নতধরনের বহুকোষী প্রাণীদের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ফলে দেহের কিছু অংশ দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে, এই পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের সাহায্যে হৃত অংশের পুনরুৎপত্তি হয়।
(v) পতঙ্গ এবং অন্যান্য প্রাণীর নির্মোচনের ঠিক পরে মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের ফলে সৃষ্ট কোষগুলির দ্বারা দেহের নৃতন আবরণ তৈরী হয়।
(vi) এককোষী জীবের ক্ষেত্রে, অবশ্য, কোষ বিভাজনের ফলে দৈহিক বৃদ্ধি হয় না। এদের ক্ষেত্রে সচরাচর মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের দ্বারা বংশবৃদ্ধি হয়। 

প্রশ্ন 16. মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের সময় উদ্ভিদ ও প্রাণীকোষের মধ্যে কি কি পার্থক্য হয়?

উত্তর : উদ্ভিদকোষে : (i) সেনট্রোসােম না থাকায়, সেনট্রাল স্পিনডল সৃষ্টি হয় না।
(ii) মেটাফেজ প্লেটে ক্রোমােজোমগুলি সচরাচর বিক্ষিপ্তভাবে থাকে।
(iii) সাইটোকাইনেসিস হয় কোষভাগ-প্রাকার সৃষ্টির মাধ্যমে।
প্রাণীকোষে : (i) সেনট্রোসােম থেকে উৎপন্ন সেন্ট্রিওল দুটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে পটোলের মতাে সেনট্রাল স্পিনডল তৈরী হয়। সেনট্রাল স্পিনডল পরে নিউক্লিয়ার স্পিন্ডল-প্রস্তুতিতে অংশগ্রহণ করে।
(ii) মেটাফেজ প্লেটে ক্রোমােজোমগুলি সচরাচর নির্দিষ্ট রীতিতে ( লম্বা ক্রোমােজোমগুলি পরিধির দিকে এবং ছােট ক্রোমােজোমগুলি কেন্দ্রের দিকে) বিন্যস্ত থাকে।
এবং (iii) সাইটোকাইনেসিস হয় সাইটোপ্লাজমের পরিধি থেকে কেন্দ্রের দিকে ক্রমবর্ধমান খাঁজের সাহায্যে। 

প্রশ্ন 17. মায়ােসিসের (মিয়োসিস) সংজ্ঞা দাও।

উত্তর : মায়ােসিসের সংজ্ঞা- নিউক্লিয়াস-বিভাজনের যে পদ্ধতিতে একটি জুনিতৃ-নিউক্লিয়াস পর পর দুবার বিভাজিত হয়ে মােট চারটি অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি করে এবং অপত্য নিউক্লিয়াসগুলিতে জনিতৃ-নিউক্লিয়াসের তুলনায় অর্ধেক-সংখ্যক ক্রোমােজোম থাকে, তাকে মায়ােসিস বলে। 

প্রশ্ন 18. মায়ােসিস (মিয়োসিস) পদ্ধতিতে কোষবিভাজন কিরূপ হয়?

উত্তর : (i) মায়ােসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের সময় নিউক্লিয়াসটি দুবার বিভাজিত হয়, কিন্তু ক্রোমােজোমগুলি বিভাজিত হয় মাত্র একবার।
(ii) অপত্য নিউক্লিয়াসে ক্রোমােজোমের সংখ্যা জনিতৃ-নিউক্লিয়াসের তুলনায় অর্ধেক হয়ে যায়। এই কারণে সমগ্র মায়ােসিসকে হ্রাস-বিভাজন বলা হয়। 

প্রশ্ন 19. মাইটোসিস ও মায়ােসিস (মিয়োসিস) পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের পার্থক্য।

উত্তর : নিচের ছকে এদের পার্থক্য দেওয়া হল।

মাইটোসিস (Mitosis)মায়ােসিস (Meiosis)
(1) মাইটোসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের ফলে একটি মাতৃ-কোষ থেকে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়।(1) মায়ােসিস পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজনের ফলে একটি মাতৃ-কোষ থেকে চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়।
(2) মাইটোসিসের ফলে উৎপন্ন অপত্য নিউক্লিয়াস হুবহু মাতৃ-নিউক্লিয়াসের মতাে গুণসম্পন্ন হয়।(2) মা’য়ােসিসের ফলে উৎপন্ন অপত্য নিউক্লিয়াসগুলি পরস্পর, এবং মাতৃ-নিউক্লিয়াসের তুলনায় পৃথক গুণসম্পন্ন হয়।
(3) এর ফলে উৎপন্ন অপত্য নিউক্লিয়াসে মাতৃ-নিউক্লিয়াসের সমান সংখ্যক ক্রোমােজোম থাকে।(3) এর ফলে উৎপন্ন অপত্য নিউক্লিয়াসে মাতৃ-নিউক্লিয়াসের তুলনায় অর্ধেক সংখ্যক
ক্রোমােজোম থাকে।
(4) এই পদ্ধতিতে কোষ-বিভাজন দেহকোষে হয়।(4)এই পদ্ধতিতে কোষ বিভাজন অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুক্রাণু-মাতৃকোষে, ডিম্বাণু-মাতৃকোষে এবং রেণু-মাতৃকোষে হয়।
(5) এই পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের ফলে উৎপন্ন ক্রোমোেজামের আঙ্গিক অথবা মাত্রিক পরিবর্তন হয় না।(5) এই পদ্ধতিতে কোষ বিভাজনের ফলে উৎপন্ন ক্রোমােজোমের আঙ্গিক এবং মাত্রিক পরিবর্তন হয়।
(6) এতে কোষ বিভাজনের ফলে সচরাচর দেহকোষের সংখ্যা-বৃদ্ধি হয়।(6) এতে কোষ বিভাজনের ফলে সচরাচর জনন-কোষ উৎপন্ন হয়।

কোষবিভাজন ও এর তাৎপর্য (অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন 20. জীবের জীবন শুরু হয় কয়টি কোষ থেকে?
উত্তর : একটি মাত্র কোষ থেকে।

প্রশ্ন 21. কোষ বিভাজনের সময় কার বেশী পরিবর্তন হয়?
উত্তর : নিউক্লিয়াসের।

প্রশ্ন 22. কোন্ নিউক্লিয়াসে সাধারণতঃ ক্রোমােজোম থাকে না?
উত্তর : যেটি বিভাজিত হয় না।

প্রশ্ন 23. মানুষের ক্রোমােজোম সংখ্যা কত?
উত্তর : 23 জোড়া।

প্রশ্ন 24. কোন্ জীবের ক্রোমােজোম সংখ্যা 4 জোড়া?
উত্তর : ড্রসােফিলা।

প্রশ্ন 25. কোন্ জীবে সব থেকে বেশী ক্রোমােজোম আছে?
উত্তর : ফার্ণ (100 জোড়া)।

প্রশ্ন 26. মাইটোসিসের অপর নাম কি?
উত্তর : ক্যারিওকাইনেসিস।

প্রশ্ন 27. ক্রোফিস কি?
উত্তর : একপ্রকার সামুদ্রিক চিংড়ি জাতীয় প্রাণী।

প্রশ্ন 28. ডুসােফিল কার নাম?
উত্তর : এক রকম মাছি জাতীয় পতঙ্গ।

প্রশ্ন 29. মাইটোসিসের কয়টি দশা আছে ?
উত্তর : চারটি।

প্রশ্ন 30. প্রাণীকোষে মাইটোসিস বিভাজনে কে গুরুত্বপূর্ণ অংশ নেয় ?
উত্তর : সেন্ট্রোসোম

প্রশ্ন 31. কোন ফেজে নিউক্লিয়ার স্পিনডল তৈরী হয়?
উত্তর : মেটাফেজে।

প্রশ্ন 32. কোন্ ফেজে নিউক্লিওলাসের পুনরাবির্ভাব হয়?
উত্তর : টেলােফেজে।

প্রশ্ন 33. এককোষী জীবের কিরূপ কোষ বিভাজনে বংশ বৃদ্ধি হয়?
উত্তর : মাইটোসিস।

প্রশ্ন 34. জীবদেহের একক কি ?
উত্তর : কোষ।

প্রশ্ন 35. মায়ােসিসে (মিয়োসিস) ক্রোমােজোম সংখ্যা কি দাড়ায়?
উত্তর : অর্ধেক হয়।

প্রশ্ন 36. কোষের কোন অংশে সাইটোকাইনেসিস ঘটে?
উত্তর : সাইটোপ্লাজমে।

প্রশ্ন 37. মায়ােসিসে (মিয়োসিস) কয়টি কোষ উৎপন্ন হয়?
উত্তর : চারটি।

প্রশ্ন 38. দেহকোষে মায়ােসিস (মিয়োসিস) হয় কি ?
উত্তর : না।

প্রশ্ন 39. কোন জীবের কোষে সেন্টোজোম থাকে ?
উত্তর : প্রাণীকোষে।

প্রশ্ন 40. কোষ কথাটি কে সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন?
উত্তর : রবার্ট হুক।

প্রশ্ন 41. মাইটোসিসে ক’টি কোষ উৎপন্ন হয় ?
উত্তর : দুটি।

প্রশ্ন 42. জীবদেহে কোষের সংখ্যা কোন পদ্ধতিতে বৃদ্ধি পায় ?
উত্তর : মাইটোসিস প্রক্রিয়ায়।

প্রশ্ন 43. কোষ দ্বি-খণ্ডিত হলে কি তাকে মাইটোসিস বলে?
উত্তর : না।

প্রশ্ন 44. একটি কোষ একবার মাইটোসিসের পর ক’টি অপত্যকোষে পরিণত হয় ?
উত্তর : দুটি।

প্রশ্ন 45. একটি কোষ একবার মায়ােসিসের (মিয়োসিস) পর ক’টি অপত্যকোষে পরিণত হয় ?
উত্তর : চারটি।

প্রশ্ন 46. মাইটোসিসের কোন দশায় নিউক্লিওলাস ও নিউক্লীয় আবরণী অবলুপ্ত হয় ?
উত্তর : প্রােফেজ।

প্রশ্ন 47. মানুষের দেহকোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা 46 হলে, গ্যামেটে তার সংখ্যা কত?
উত্তর : একটি

প্রশ্ন 48. জনন মাতৃকোষে কি কেবল মায়ােসিস (মিয়োসিস) ঘটে ?
উত্তর : না।

কোষবিভাজন ও এর তাৎপর্য (সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন 49. ক্রোমােজোম কি?
উত্তর : জীবকোষে নির্দিষ্ট সংখ্যক সুতাের মত ক্রোমাটিন পদার্থঘটিত বংশগতির ধারক ও বাহককে ক্রোমােজোম বলে।

প্রশ্ন 50. কোষ বিভাজন কি কি বিষয়ের পূর্বে প্রয়ােজন হয়?
উত্তর : দেহবৃদ্ধি ও জননের পূর্বে কোষ বিভাজন প্রয়ােজন হয়।

প্রশ্ন 51. ক্যানসার গ্রস্থ-কলার কোষ-বিভাজনে কিভাবে ক্রোমােজোম বণ্টন হয়?
উত্তর : ক্যানসার গ্রস্থ-কলার কোষ বিভাজনের সময় অপত্য নিউক্লিয়াস দুটিতে অসমানভাবে ক্রোমােজোম বণ্টন হয়।

প্রশ্ন 52. মায়ােসিস (মিয়োসিস) পদ্ধতিতে সচরাচর কোথায় কোষ বিভাজন হয়?
উত্তর : জনন কোষ সৃষ্টির সময় ও স্পাের সৃষ্টির সময়।

প্রশ্ন 53. স্টেম বডি কাকে বলে?
উত্তর : প্রাণীকোষে অ্যানাফেজের শেষের দিকে নিউক্লিয়ার স্পিন্ডলের মাঝ বরাবর লম্বা হাত অংশকে স্টেম বডি (Stem body) বলে। 

প্রশ্ন 54. সপুষ্পক উদ্ভিদদেহে মায়ােসিস (মিয়োসিস) কোথায় হয়?
উত্তর : সপুষ্পক উদ্ভিদ-দেহে পুংরেণু মাতৃকোষে ও স্ত্রী-রেণু মাতৃকোষে মায়ােসিস হয়।

প্রশ্ন 55. মাইটোসিসের ফলে ক’টি নতুন কোষ উৎপন্ন হয়?
উত্তর : মাইটোসিসের ফলে একটি কোষ থেকে দুটি নতুন কোষ উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্ন 56. ইন্টারফেজ কোষ কাকে বলে?
উত্তর : বিভাজন উন্মুখ কোষকে ইন্টারফেজ বলে। 

প্রশ্ন 57. সাইটোকাইনেসিস কাকে বলে?
উত্তর : কোষের সাইটোপ্লাজম বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস বলে। 

প্রশ্ন 58. মায়ােসিসের (মিয়োসিস) প্রধান তাৎপর্য কি ?
উত্তর : প্রজাতির ক্রোমােজোম সংখ্যা ঠিক রাখা ও নতুন বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটান হল মায়ােসিসের প্রধান তাৎপর্য। 

প্রশ্ন 59. আমাদের হাতের কোষের ক্রোমােজোম সংখ্যা 46 হলে, পায়ের কোষের ক্রোমােজোম সংখ্যা কত?
উত্তর : পায়ের কোষের ক্রোমােজোম সংখ্যা 46. 

প্রশ্ন 60. হ্রাসকরণ বিভাজন কাকে বলে? এটি কোথায় হয়?
উত্তর : বিভাজিত কোষের যে ক্রোমােজোম সংখ্যা থাকে, মা’য়ােসিস পদ্ধতিতে তার অর্ধেক অপত্যকোষে যায়, সেজন্য একে হ্রাসকরণ বিভাজন বলে। গ্যামেট উৎপাদনকালে অর্থাৎ শুক্রাণু ও ডিম্বাণু গঠনের সময় সনন মা’য়ােসিস প্রক্রিয়া হয়। 

প্রশ্ন 61. উদ্ভিদ কোষে সাইটোপ্লাজম বিভাজনের বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তর : এর বৈশিষ্ট্য হল এখানে সেলুলােজ নির্মিত তরল কোষভাগ প্রাকারের (cell plate) আবির্ভাব ঘটে। 

প্রশ্ন 62. একটি উদ্ভিদের দেহকোষের ক্রোমােজোম সংখ্যা 24 হলে, জনন মাতৃকোষের ক্রোমােজোম সংখ্যা কত?
উত্তর : জনন মাতৃকোষের হ্রাসকরণ বিভাজন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ক্রোমােজোম সংখ্যা একই থাকে অর্থাৎ 24 থাকে। 

প্রশ্ন 63. মাইটোসিস ও মায়ােসিস (মিয়োসিস) পদ্ধতির তফাৎ কি?
উত্তর : মাইটোসিস হয় দেহকোষে কিন্তু মায়ােসিস (মিয়োসিস) হয় জনন মাতৃকোষে। 

প্রশ্ন 64. ক্রোমােজোম ও ক্রোমাটিড বলতে কি বােঝায়?
উত্তর : কোষ বিভাজনের সময় নিউক্লিয়াসের নিউক্লীয় জালিকা কতগুলাে নির্দিষ্ট সংখ্যক খণ্ডে বিভক্ত হয়, এই খণ্ডগুলাে হল ক্রোমােজোম। ক্রোমােজোমগুলাে লম্বালম্বি বিদীর্ণ হয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক ক্রোমাটিড গঠন করে।

প্রশ্ন 65. মাতৃজনন কোষে মায়ােসিস না ঘটলে কি হবে?
উত্তর : নিষেকের পূর্বে মা’য়ােসিস না ঘটলে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর ক্রোমােজোম সংখ্যা সমান থাকবে, কিন্তু তাদের মধ্যে নিষেক ঘটলে ভ্রুণের ক্রোমােজোম সংখ্যা দ্বিগুণ হবে, এভাবে প্রতি জননেই সংখ্যা দ্বিগুণ হবে। ফলে জীবের সঙ্গে তার সৃষ্ট জীবের সামঞ্জস্য থাকবে না।

প্রশ্ন 66. হ্যাপ্লয়েড কোষ ও ডিপ্লয়েড কোষ কোথায় দেখা যায়?
উত্তর : হ্যাপ্লয়েড বা n-সংখ্যক ক্রোমােজোম সমৃদ্ধ কোষ হল শুক্রাণু ও ডিম্বাণু, এগুলাে যথাক্রমে পুংজনন পিতৃকোষে এবং স্ত্রী-জনন মাতৃকোষে দেখা যায়, কারণ সেখানেই এরা উৎপন্ন হয়।

আরো পড়ুন:

আপনি কি বাংলা কবিতা পড়তে ভালোবাসেন, তাহলে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন : www.raateralo.com
---Advertisement---

Related Post

WEBCSC Recruitment 2025, Notification Out for Co-operative Bank Vacancies, Application Starts

The West Bengal Co-operative Service Commission (WEBCSC) has announced a recruitment drive to fill multiple vacancies in various Central Co-operative Banks across West Bengal. Interested candidates can verify ...

WBPSC Miscellaneous Recruitment 2025, Check Eligibility

WBPSC Miscellaneous Recruitment 2025: The West Bengal Public Service Commission (WBPSC) has announced the recruitment process for the Miscellaneous Recruitment Service Examination (MSRE) 2025 through Advertisement No. 13/2024. ...

RRC Recruitment 2025: Apply Now for 1104 Vacancies – Check Post Details, Age Limit & Application Process

RRC Recruitment 2025: Apprenticeship Training Vacancies Available Across Various Workshops/Units RRC is inviting applications from eligible candidates to fill Apprenticeship Training positions at multiple workshops/units. RRC Recruitment 2025: ...

FSSAI Assistant Recruitment 2025: Apply Now for 15,000+ Vacancies

FSSAI Assistant Recruitment 2025: The Food Safety and Standards Authority of India (FSSAI) has launched its 2025 recruitment drive, offering over 15,000 vacancies for the post of Assistant. ...

Leave a Comment