---Advertisement---

Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer l Madhyamik Bengali 2026 l আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর

By Siksakul

Updated on:

Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer
---Advertisement---

Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer: মাধ্যমিক বাংলা ২০২৬-এর প্রস্তুতির জন্য শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কবিতাটি শুধু সাহিত্যিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ নয়, বরং এর অন্তর্নিহিত মানবিক বার্তা ও পরীক্ষায় আসার সম্ভাব্য প্রশ্নের কারণে এটি ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ মনোযোগের দাবিদার। এই ব্লগে আপনি পাবেন Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer, Madhyamik Bengali 2026 Suggestion, আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার ব্যাখ্যা, MCQ প্রশ্নোত্তর, এবং Shankha Ghosh Poem Questions for Madhyamik সহ একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড।

যারা মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৬ অনুসরণ করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের জন্য এই কবিতার MCQ, সংক্ষিপ্ত ও ব্যাখ্যাসহ প্রশ্নোত্তর অত্যন্ত সহায়ক হবে। এই পোস্টে থাকবে Poem Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Full Guide, Madhyamik Bengali Poem Answer ২০২৬, এবং Shankha Ghosh কবিতার প্রশ্নোত্তর যা আপনাকে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে সহায়তা করবে।

Table of Contents

‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটির শঙ্খর ঘোষের উৎস

শঙ্খ ঘোষের জলই পাষাণ হয়ে আছে কাব্যগ্রন্থ থেকে ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি‘ কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।

‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটির সারসংক্ষেপ

আমাদের পৃথিবী আজ সংকটের মুখোমুখি। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, ধর্মান্ধতা ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে কবি শঙ্খ ঘোষ ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি রচনা করেন। আমাদের ডান কিংবা বাম উভয় দিকেই রয়েছে ধ্বংসের নিশ্চিত ইঙ্গিত। মাথার ওপরে কিংবা পায়ের নীচে প্রতিমুহূর্তে প্রতিবন্ধকতা। নানারকম বাধায় আমাদের বেঁচে থাকাই সমস্যার হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় মানুষের অস্তিত্বই আজ সংকটের সামনে। প্রেরণা খুঁজে নেওয়ার মতো কোনো ইতিহাসও আমাদের নেই। কেন-না ইতিহাস এখানে ক্ষমতাবানদের দ্বারা বিকৃত। তাই প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর আশঙ্কায় জীবন অনিশ্চিত। এই অবস্থায় বিরোধী শক্তিকে আটকাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলতে হবে।

অন্যের দাসত্ব করতে গিয়ে আমরা আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে অন্যের পায়ে সমর্পণ করে ফেলেছি। নিজেদের ঐতিহ্যকে ভুলে অন্যের চাপিয়ে দেওয়া ইতিহাসকে গ্রহণ করে আমার বেঁচে রয়েছি। এই বেঁচে থাকার আড়ালে রয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি। এরই মধ্যে দু-চারজন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এখনও আছেন, যাঁরা মানুষে মানুষে একাত্মতার কথা বলেন। এই একাত্মতাই হল আমাদের পৃথিবীর প্রাণশক্তি। পারস্পরিক প্রীতিই সভ্যতাকে বাঁচাতে পারে। এই চেষ্টাই এখন সকলকে করতে হবে।

‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটির নামকরণ

নামকরণ যে-কোনো সাহিত্যিক রচনায় প্রবেশের চাবিকাঠি। তাই সাহিত্যে নামকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আর এই নামকরণ নানান দিক থেকে হতে পারে। আমাদের আলোচ্য ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটির নামকরণ কতখানি প্রাসঙ্গিক তা বিচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নানারকম সংকটের মধ্য দিয়ে আজকের পৃথিবী এগিয়ে চলেছে। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, ধর্মান্ধতা ইত্যাদি বিষয়গুলি মানবতার বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। এই অবস্থায় মানুষের অস্তিত্বই আজ সংকটের সামনে। প্রেরণা খুঁজে নেওয়ার মতো কোনো ইতিহাসও আমাদের নেই, কারণ ইতিহাস এখানে ক্ষমতাবানদের দ্বারা বিকৃত। তাই অন্ধ ও ভিখারি হয়ে বেঁচে থাকাই আজ মানুষের নিয়তি। সাধারণ মানুষ এখানে কোনো মর্যাদাই পায় না। তবুও যাবতীয় শুভবুদ্ধির অবসান এখনও হয়নি। সংখ্যায় অল্প হলেও কিছু মানুষ আজও সম্প্রীতির কথা বলে, মানুষে মানুষে মিলনের কথা বলে। ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ – কবিতার দুটি স্তবকে ধ্রুবপদের মতো পঙ্‌ক্তিটিকে দু-বার ব্যবহার করেছেন কবি। মিলনের আকাঙ্ক্ষা এতে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ব্যঞ্জনার দিক থেকে নামকরণটি তাই অত্যন্ত সার্থক হয়েছে।

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা MCQ l Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কবির কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত –

(A) ‘ নিহিত পাতাল ছায়া ‘

(B) ‘ পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ

(C) ‘ দিনগুলি রাতগুলি ‘ 

(D) ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে

Ans: (D) ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটির কবি হলেন – 

(A) জীবনানন্দ দাশ 

(B) শঙ্খ ঘোষ 

(C) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী 

(D) বিষ্ণু দে

Ans: (B) শঙ্খ ঘোষ

  1. কবি শঙ্খ ঘোষের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটি হল – 

(A) দিনগুলি রাতগুলি 

(B) নিহিত পাতাল ছায়া 

(C) মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে 

(D) বাবরের প্রার্থনা

Ans: (A) দিনগুলি রাতগুলি

  1. শঙ্খ ঘোষ রচিত একটি প্রবন্ধ গ্রন্থ হল—

(A) মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে 

(B) অল্প বয়সে 

(C) কালের মাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক 

(D) সুপুরিবনের সারি 

Ans: (C) কালের মাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক

  1. শঙ্খ ঘোষের ছদ্মনাম কী ছিল ? 

(A) যাযাবর 

(B) মৌমাছি 

(C) নীললোহিত 

(D) কুত্তক

Ans: (D) কুত্তক

  1. ‘ কুত্তক ‘ ছদ্মনামে লেখা শঙ্খ ঘোষের রচনাগুলির নাম হল – 

(A) শব্দ নিয়ে খেলা ও কথা নিয়ে খেলা 

(B) দিনগুলি রাতগুলি , বাবরের প্রার্থনা 

(C) ছন্দময় জীবন , ভিন্ন রুচির অধিকার 

(D) এই শহরের রাখাল , ছন্দের বারান্দা

Ans: (A) শব্দ নিয়ে খেলা ও কথা নিয়ে খেলা

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কথাটি কবিতায় ব্যবহৃত হয় – 

(A) এক বার 

(B) দু – বার 

(C) তিন বার 

(D) চার বার 

Ans: (B) দু – বার

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ বাক্যটির অর্থ – 

(A) দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা 

(B) ছাড়া ছাড়া থাকা 

(C) বন্ধন মুক্ত থাকা 

(D) ঢিলেঢালা থাকা 

Ans: (A) দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটির দ্বিতীয় পঙ্ক্তি – 

(A) আমাদের ডানপাশে ধ্বস 

(B) আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ

(C)  আমাদের মাথায় বোমারু 

(D) আমাদের ঘর গেছে উড়ে

Ans: (B) আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ

  1. ‘ আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ ‘ ‘ গিরিখাদ ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ –

(A) স্থানচ্যুতি 

(B) অদৃশ্য হওয়া 

(C) চূড়া 

(D) পর্বত গহ্বর

Ans: (D) পর্বত গহ্বর

আরোও দেখুন:- মাধ্যমিক বাংলা – অসুখী একজন কবিতা প্রশ্ন ও উত্তর

  1. আমাদের মাথায় ______ ।

(A) বোমারু 

(B) গিরিখাদ

(C) চূড়া 

(D) পর্বত গহ্বর

Ans: (A) বোমারু

  1. কবিতায় উল্লিখিত হিমানীর বাঁধ রয়েছে – 

(A) হাতে হাতে 

(B) পায়ে পায়ে 

(C) মাথায় মাথায় 

(D) শিরায় শিরায় 

Ans: (B) পায়ে পায়ে

  1. পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ ।’ — ‘ হিমানী ‘ শব্দের আক্ষরিক অর্থ – 

(A) কাজল 

(B) আগুন 

(C) তুষার 

(D) পর্বত 

Ans: (C) তুষার

  1. কবিতায় কবি কাদের শবদেহের উল্লেখ করেছেন ? 

(A) বুড়োদের 

(B) শিশুদের 

(C) যুবকদের 

(D) বৃদ্ধাদের সময়ের

Ans: (B) শিশুদের

  1. ‘ আমাদের পথ নেই আর ।’— ‘ পথ ‘ শব্দটি কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে – 

(A) দু – বার 

(B) একবার

(C) চারবার 

(D) তিনবার

Ans: (A) দু – বার

  1. আমাদের কী নেই বলে কবির মত প্রকাশ ?

(A) ভূগোল 

(B) ইতিহাস 

(C) বাংলা 

(D) জীবন

Ans: (D) জীবন

  1. “ আমাদের চোখমুখ ঢাকা ।’— ‘ চোখমুখ ‘ অর্থে কবি বলেছেন 

(A) মুখোশাবৃত 

(B) সময়াবৃত 

(C) অলংকারাবৃত

(D) সমাজাবৃত 

Ans: (A) মুখোশাবৃত

  1. আমরা ভিখারি কত মাসে বলে কবির মত ।

(A) পাঁচ মাস 

(B) ছ – মাস 

(C) আট মাস ।

(D) বারো মাস

Ans: (D) বারো মাস

[আরোও দেখুন:- 

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | Madhyamik Bengali Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer :

  1. ‘ আমাদের ’ বলতে কবি কাদের বুঝিয়েছেন ?

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর কবিতায় ‘ আমাদের ’ বলতে দেশকালের সীমা অতিক্রম করে সাম্রাজ্যবাদী ও হানাদারি শত্রুর হাতে আক্রান্ত সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন । 

  1. ‘ ডান পাশে ধ্বস ’ ও ‘ বাঁয়ে গিরিখাদ ’ বলতে আসলে কবি কী বুঝিয়েছেন ? 

Ans: আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ ডান পাশে ধ্বস ’ ও ‘ বাঁয়ে গিরিখাদ ‘ বলতে কবি আসলে মানুষের পদে পদে বিপদ এবং পতনের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন । 

  1. ‘ আমাদের ডান পাশে ধ্বস ’ –‘ধ্বস ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ কী ?

Ans: ‘ ধ্বস ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ খসে পড়া । পাঠ্য কবিতায় সাধারণ মানুষের চলার প্রতি পদে পদে বিপদের সম্ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

  1. ‘ আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ ’ – ‘ গিরিখাদ ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ লেখো । 

Ans: ‘ গিরিখাদ ’ হল দুই পর্বতের মাঝে সৃষ্ট গভীর খাদ । পাহাড়ি পথের বিপদসংকুলতার মতোই বর্তমান বিশ্বে মানুষের জীবনে ছড়িয়ে থাকা প্রতিকূলতাকে বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হে ব্যবহৃত হয়েছে ।

  1. ‘ আমাদের মাথায় বোমারু ‘ বলতে কী বলা হয়েছে ? 

Ans: যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যেমন বোমারু বিমান থেকে অতর্কিতে আক্রমণ চালায় , তেমনই আচমকা আক্রমণে মানুষের জীবন আজ বিপন্ন । কবিতায় সেই বিপন্নতার কথাই বলা হয়েছে ।

  1. ‘ পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ’— ‘ পায়ে পায়ে ‘ বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: পাঠ্য কবিতায় ‘ পায়ে পায়ে ‘ বলতে মানুষের প্রতি পদক্ষেপকে বোঝানো হয়েছে । মানুষের চলার পথে নানান প্রতিকূলতা প্রতি মুহূর্তে বরফের দেয়ালের মতোই বাধা হয়ে দাঁড়ায় । ‘ হিমানীর বাঁধ ’ সেই বাধার প্রতীক ।

  1. ‘ আমাদের পথ নেই কোনো ” বলার কারণ কী ?

Ans: ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ বড়ো অসহায় ও নিরুপায় । প্রতিনিয়ত তার চলার পথের প্রতিকূলতা এবং দিশাহীনতাকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি এমন মন্তব্য করেছেন ।

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় আমাদের ঘর উড়ে গেছে , কথাটি কেন বলা হয়েছে ?

Ans: বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে । সে – কথা বোঝাতেই কৰি মন্তব্যটি করেছেন ।

  1. ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দুরে । বলার অর্থ কী ?

Ans: যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসকবলিত আজকের দুনিয়ায় হিংস্রতার হাত থেকে রেহাই পায়নি শিশুরাও । তারই ভয়াবহতা বোঝাতে এই উক্তি ।

  1. আমাদের শিশুদের শব পড়ে থাকার মধ্যে দিয়ে কোন্ বিষয়টি ধরা পড়েছে ? 

Ans: বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার বলি হচ্ছে আগামী প্রজন্মও । তাই কবির আশঙ্কা— তবে কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে মানবসমাজ !

  1. ‘ আমরাও তবে এইভাবে / এ – মুহূর্তে মরে যাব না কি ? ‘ — এ কথা বলার অর্থ কী ?

Ans: চারদিকের প্রতিকূলতা , হানাদারি শত্রুর আক্রমণে গৃহহারা মানুষ চোখের সামনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মৃত্যু দেখে নিজের বেঁচে থাকাতেও সংশয় প্রকাশ করে ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে । এমন পরিস্থিতি থেকেই সাধারণ মানুষের প্রতিভূ কবির এই উক্তি । 

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি । বলার কারণ কী ? 

Ans: বিশ্বব্যাপী প্রতিকূলতার মাঝে চারদিকে হতাশার ছবি স্পষ্ট হলেও কবির বিশ্বাস পারস্পরিক সাহচর্য ও ঐক্যের জোরেই সমস্ত কিছু জয় করা সম্ভব । তাই কবি একতা আর সংঘবদ্ধতার কথা বলেছেন । 

  1. ‘ আমাদের ইতিহাস নেই’— এ কথা বলা হয়েছে কেন ? 

Ans: এ কবিতায় কবি সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি । আর সাধারণ মানুষ কোনোদিনই ইতিহাসে স্থান পায় না । তাদের ইতিহাস জনসমক্ষে প্রতিফলিত হয় না । তাই এমন উক্তি । 

  1. ‘ আমাদের চোখমুখ ঢাকা ‘ — ‘ চোখমুখ ঢাকা ’ – র কারণ কী ? 

Ans: পৃথিবীর সমস্ত ইতিহাসই ক্ষমতাবানের ইতিহাস । দুর্বল , বিপন্ন মানুষের ইতিহাস কখনোই সভ্যতার দর্পণে প্রতিফলিত হয় না । প্রকৃত সত্য জেনেও সাধারণ মানুষ অন্ধ , আসল অবস্থা বুঝেও তারা বোবা । তাই তাদের ‘ চোখমুখ ঢাকা ‘ ।

  1. ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস বলার কারণ কী ?

Ans: সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শোষণে নিপীড়িত , বর্ণিত ও হতভাগ্য জনগণ আজ আশ্রয় ও জীবিকা হারিয়ে চিরভিখারিতে পরিণত হয়েছে । সেইসঙ্গে প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণায় ভীরু – দুর্বল সাধারণ মানুষের সামগ্রিক দৈন্যও আজ বড়ো প্রকট । তাই কবি এ কথা বলেছেন । 

  1. ‘ পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে / পৃথিবী হয়তো গেছে মরে বলার অন্তর্নিহিত কারণ কী ? 

Ans: পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতার মাঝে পীড়িত , ঘরহারা ও ইতিহাসে ঠাই না – পাওয়া মানুষগুলির কাছে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে । তাই পৃথিবীর বেঁচে থাকা বা না থাকায় তাদের কিছু যায় আসে না ।

  1. ‘ আমাদের কথা কে বা জানে ‘ বলার কারণ কী ?

Ans: এই ব্যক্তিসর্বস্ব বিচ্ছিন্নতার যুগে , সাধারণ মানুষের সামান্য প্রয়োজনীয়তার কথায় যেন কেউ দৃপাত করে না । সেজন্যই কবি এ কথা বলেছেন ।

  1. ‘ তবু তো কজন আছি বাকি বলার কারণ কী ?

Ans: ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতা অনুসারে এই রাজনৈতিক , সামাজিক অবক্ষয়ের যুগেও কিছু মানুষ এখনও মানবতায় বিশ্বাস হারায়নি । সেই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষগুলোকে নিয়েই কবি জোটবাঁধার কথা বলেছেন । ‘ 

  1. আয় আরো হাতে হাত রেখে— এই পঙ্ক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ লেখো । 

Ans: সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালনে মানুষ আজ ঘরছাড়া , পথহারা , ইতিহাস – বিকৃত চিরভিখারিতে পরিণত । প্রত্যয়ী কবি এই ধ্বংসের মাঝেও বিবেকবান ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে সংঘবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন ।

  1. ‘ আমাদের পথ নেই আর ‘ — কবির এরকম বলার কারণ কী ? 

Ans: ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি লক্ষ আজকের পৃথিবীতে সাধারণ মানুষের অসহায়তা । শাসকের আগ্রাসন— সাম্রাজ্যবাদ – মৌলবাদ – সমাজ – রাজনৈতিক অবক্ষয় ও হানাদারি শত্রুর স্বেচ্ছাচারে মানুষের স্বাভাবিক বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও এখন বিপন্ন । 

পরিস্থিতির এই প্রতিকূলতাকে কবি উদ্ধৃতাংশটির মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন । 

  1. ‘ আমাদের পথ নেই আর আমাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর । তাই ‘ আমাদের ’ বলতে তিনি এ পৃথিবীর সমস্ত নিরন্ন , খেটে খাওয়া ও নিরাপত্তাহীন অসহায় মানুষকেই বুঝিয়েছেন । 

  1. ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে ?

Ans: আজকের পৃথিবীতে যুদ্ধ – দাঙ্গা ও হিংসার উন্মত্ততায় শিশুদেরও রেহাই নেই । নিয়মিত দূরে কিংবা কাছেই ঘটে চলা এমন শিশুঘাতী সন্ত্রাসের খবরে আমরা শিউরে উঠি । উদ্ধৃতাংশে কবি এ কথাই বলতে চেয়েছেন । 

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে আমাদের ইতিহাসের পরিচয় দাও ।

Ans: পৃথিবীর সামগ্রিক ইতিহাসই আসলে ক্ষমতাবানদের ইতিহাস । অসহায় ও দুর্বল সাধারণ মানুষের কথা তাই তথাকথিত সভ্যতার আয়নায় ফুটে ওঠে না । তারা ইতিহাসহীন অথবা বিকৃত ইতিহাসের আড়ালে থাকার দৈন্যে বিস্মৃত ও নিরুত্তর ।

  1. ‘ আমাদের শিশুদের শব ‘ কোথায় ছড়ানো রয়েছে ?

Ans: ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে আমাদের শিশুদের শব কাছে ও দুরে ছড়ানো রয়েছে । অর্থাৎ আজকের সমগ্র পৃথিবী জুড়েই শিশুরা হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধ আর সন্ত্রাসের বলি । 

  1. আমাদের ডান পাশে , বাঁয়ে , মাথায় ও পায়ে যা আছে তা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে লেখো ।

Ans: আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে আমাদের ডান পাশে ধস এবং বাঁয়ে গিরিখাদ , আর মাথার উপরে বোমারু ও পায়ে হিমানীর বাঁধ ।

  1. ‘ পৃথিবী হয়তো গেছে মরে — এমন বলার কারণ কী ?

Ans: শাসনের ষড়যন্ত্রে , সমাজ – রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবক্ষয়ে হতভাগ্য সাধারণ মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে । মানবতার এই ঘোর দুর্দিনে প্রাণধারণের যে – দৈন্য ফুটে ওঠে , তা মানবজীবনের দিশাহীন অর্থহীনতার প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয় ।

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কোন মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

Ans: ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ।

  1. ‘ আমাদের মাথায় বোমারু’- ‘ বোমারু ‘ শব্দটির অর্থ কী ?

Ans: ‘ বোমারু ‘ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল , যা থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয় ।

  1. ‘ আমাদের পথ নেই আর- তাহলে আমাদের করণীয় কী ?

Ans: এই সমাজ – রাজনৈতিক পচন ও পতনের মাঝে , সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সংঘবন্ধতাই হল তার মুক্তির একমাত্র পথ ।

[আরোও দেখুন:- 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা শঙ্খ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় বর্তমান পারিপার্শ্বিক অবস্থা প্রসঙ্গে কবির মতামত তোমার নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো ।

Ans: শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় প্রায় ক্ষয়ে যাওয়া সমাজে এখনও যাদের মধ্যে মনুষ্যত্বের অবশেষটুকু আছে তাদের সংঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন । সাম্রাজ্যবাদী , শক্তিধর দেশগুলি কবির মতামত নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে পৃথিবীকে করে তুলেছে অস্থির । মানুষের চলার পথে ডাইনে – বাঁয়ে বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে । মাথার উপর বোমারু বিমানের মতোই হানা দিচ্ছে মৃত্যু , পদে পদে রয়েছে প্রতিকূলতা । তবু কবি আশাবাদী স্বপ্ন দেখান । তাই কবি পথহারা অসহায় মানুষগুলোকে এক হতে বলেছেন । 

  1. ‘ আমাদের ঘর উড়ে যাওয়া ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? 

অথবা , ‘ আমাদের ঘর গেছে উড়ে’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতায় উদ্ধৃত প্রসঙ্গটি পাই । আজকের এই অবক্ষয়ের যুগে সাধারণ মানুষকে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে । চারদিকে দাঙ্গা , যুদ্ধ আর ধ্বংসের তাণ্ডব মানুষকে গৃহহীন করেছে । হিংসায় উন্মত্ত , যুদ্ধবিধ্বস্ত এই পৃথিবীতে মানুষকে আশ্রয় নিতে হচ্ছে উদ্বাস্তু শিবিরে । মানুষের এই নিরাশ্রয় , নিরাপত্তাহীনতার দিকটিতেই কবি ইঙ্গিত করেছেন । 

  1. ‘ আমাদের পথ নেই কোনো’— ‘ পথ ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ? কবির এমন আশঙ্কার কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার ‘ পথ ‘ – মূল অর্থ অংশ । এখানে ‘ পথ ’ বলতে এই অবক্ষয়ের যুগে আদর্শহীনতা ও অনিশ্চয়তার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে নতুনভাবে বাঁচার উপায় বা দিশাকে বোঝানো হয়েছে । আশঙ্কার কারণ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ , দাঙ্গা , রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা মানুষকে দিশেহারা করে তুলেছে । মানুষ আজ সন্ত্রাস আর বঞ্চনার শিকার । জীবনধারণের প্রতি পদে প্রতিবন্ধকতা তার অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে । তাই কবির আশঙ্কা এই অন্ধকারের আবর্ত থেকে বেরিয়ে এসে , মানুষের সুষ্ঠু জীবনযাপনের আর বুঝি কোনো উপায় নেই । 

  1. ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে । উদ্ধতাংশটির তাৎপর্য লেখো । 

Ans: উদ্ধৃতিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার অংশ বিশেষ । যুদ্ধবিধ্বস্ত বর্তমান বিশ্বে আমাদের চারপাশ আজ উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিপৎসংকুল । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ; শাসকের মদতপুষ্ট স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী হানাহানি থেকে শিশুরাও বাদ যায়নি । ‘ কাছে দুরে ‘ গোটা পৃথিবীজুড়েই এখন সদ্যোজাতরাও হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের বলি । কবির আক্ষেপ আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি যেখানে শিশুদেরও কোনো নিরাপত্তা নেই । আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষা দিতে অক্ষম । এই অক্ষমতা মানবতার পক্ষেও গভীর অবমাননার , তাই অত্যন্ত বেদনার । 

  1. আমরাও তবে এইভাবে / এ – মুহূর্তে মরে যাব না কি – এ শঙ্কার হেতু কী ? 

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা থেকে প্রশ্নোবৃত অংশটি গৃহীত । এখানে কবির এমন শঙ্কার কারণটি অত্যন্ত মর্মগ্রাহী । যেখানে আমরা আমাদের শিশুদের অস্তিত্ব রক্ষায় অপারগ , যেখানে প্রাণঘাতী হানাহানির অনায়াস শিকার হচ্ছে আমাদের শিশুরা ; সেখানে নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নটিও অবান্তর ও অর্থহীন হয়ে ওঠে । কারণ কবি কেবল বেঁচে থাকার জন্যই বেঁচে থাকাকে ঘৃণা করেন । তাই এহেন নারকীয় প্রবলের কাছে নতিস্বীকার এক সংবেদনশীল মানুষের কাছে অত্যন্ত যন্ত্রণা ও অপমানের বিষয় । পাঠ্য উদ্ধৃতাংশে সেই হতাশা ও অনুশোচনারই প্রকাশ ঘটেছে ।

  1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ।’— এ আমন্ত্রণ কেন ?

আমন্ত্রণ কেন ? 

Ans: ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় এ আমন্ত্রণ বর্তমান যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর গৃহহীন , অসহায় , নিরন্ন সাধারণ মানুষদের প্রতি । আশাবাদী কবি তাদের নিয়ে ঐক্যের স্বপ্ন দেখেন , আর দেখেন নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন । মানুষের চলার পথে ডাইনে , বাঁয়ে , উপর , নীচে প্রতিটি দিকেই প্রতিকূলতা । হানাদারি শত্রুর আক্রমণে মানুষ আজ গৃহহীন , বাদ যায়নি শিশুরাও । আমাদের নিজেদের অস্তিত্বও বিপন্ন । সমগ্র পৃথিবীটার যেন জীবস্মৃত অবস্থা । আর এইখানেই কবির দায়বদ্ধতা । তাই এরকম এক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কবি মানুষকে সংঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন । 

  1. ‘ আমাদের ইতিহাস নেই — কে , কেন এ কথা বলেছেন ? অথবা , ‘ এমনই ইতিহাস’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো । 

Ans: উদ্ধৃত অংশটি কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার অন্তর্গত । দেশকালনির্বিশেষে কে বলেছেন সমগ্র পৃথিবীর আপামর জনসাধারণের প্রসঙ্গে কবি উদ্ধৃত অংশটি লিখেছেন । 

 বর্তমানে এক ভয়ংকর প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি । কেন বলেছেন আমরা গৃহহারা , এমনকি ধ্বংসের হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করতেও অপারগ । আমাদের বাঁচার আর পথ নেই । যুগে যুগে আমরা সাধারণ মানুষরা বঞ্চিত হয়েই চলেছি । 

আমাদের এই উপেক্ষা ও বঞ্চনার ইতিহাস কোথাও লেখা নেই । কারণ ইতিহাস নিয়ন্ত্রিত হয় ক্ষমতাবানদের দ্বারা । আসলে জীবন্মুত মানুষের অস্তিত্বটাই যেখানে তুচ্ছ , সেখানে চিরকাল অবজ্ঞা আর উপেক্ষাই তার প্রাপ্য । তাই সাধারণ মানুষ হয় ইতিহাসহীন , নয় অস্পষ্ট ইতিহাসের আড়ালে থাকা বিস্মৃত তাচ্ছিল্যের সামগ্রী । 

  1. আমরা ভিখারি বারোমাস ‘ বলতে কবি কী ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস – অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝিয়েছেন ?

Ans: উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার অংশ বিশেষ । আমরা ভিখারি বারোমাস বলতে কবি মানুষের মানসিক দৈন্যের কথা বলেছেন । কবির মতে নানান প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণার ক্ষত নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে । সে পথহারা , তার মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে পড়েছে । তার প্রকৃত ইতিহাসের সঠিক প্রতিফলন হয়নি জেনেও সে নিশ্চুপ ও বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন । এভাবে আপাতদুর্বল ও ভীরু সাধারণ মানুষের অবহেলিত মানসিক দৈন্যের কথা বলতে গিয়ে কবি এমন মন্তব্য করেছেন ।

  1. পৃথিবী হয়তো গেছে মরে- এমন সংশয়ের কারণ কী ? সংশয়ের কারণ কী ?

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় এমন সংশয়পূর্ণ উক্তিটি করেছেন । উপনিষদের কথার রেশ টেনে বলা যায় মানুষ তার মানবতার পক্ষে চলমান , তাই জীবনে থেমে থাকা মৃত্যুরই সমান । আজকের যুদ্ধ ও দাঙ্গাবিধ্বস্ত পৃথিবীতে মানুষ দিশেহারা , তার হাত – পা বাঁধা । গৃহহীন , ইতিহাস – বিস্মৃত এই নিরন্ন মানুষগুলি নিজের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ব্যর্থ । জীবনের অর্থহীনতায় বেঁচে থাকার আশা সে হারিয়েছে । তাই সমস্ত পৃথিবীটা তার কাছে জীবস্মৃত বলে মনে হয়েছে । 

  1. ‘ তবু তো কজন আছি বাকি – কবি এই উক্তিটির সাহায্যে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় উদ্ধৃত উক্তিটি যেন ‘ বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বাণী ‘ । কবির মতে , সাম্রাজ্যবাদী ও স্বার্থান্বেষী একদল মানুষ নানান প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের চলার পথ রুদ্ধ করে দিতে চাইছে । সামাজিক , উদ্ভিটির মূল অর্থ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে তারা নানানভাবে বিপন্ন । তাদের অতীত অস্পষ্ট , অসম্পূর্ণতায় অন্ধকার । আর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎও সাম্রাজ্যবাদী শাসকের চক্রান্তে দুর্বিষহ । এরকম প্রতিকূল অবস্থার মাঝে বিবেকবান যে কয়েকজনের অস্তিত্ব আছে , কবি তাদের নিয়ে প্রতিরোধের আশায় এমন উক্তি করেছেন । 

  1. ‘ আয় আরো হাতে হাত রেখে হাতে হাত রাখা বলতে কী বোঝায় ? এক্ষেত্রে আরো ‘ শব্দটির প্রয়োগের তাৎপর্য লেখো ।

Ans: শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় হাতে হাত রাখা বলতে মানুষের সংঘবদ্ধতাকে বুঝিয়েছেন । ‘ আরো ‘ – এর তাৎপর্য → বিচ্ছিন্নতা , আগ্রাসন , হিংসা , অসহিহ্রুতার বিরুদ্ধে কবি সাহিত্যিকদের লড়াই চিরকালের । তারা চায় শাস্তি , যা সমাজের বৃহত্তর অংশের চাওয়া । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও অশুভ শক্তির প্রভাবে সাধারণ মানুষ আজ বিপন্ন । তবু এত প্রতিকূলতার মাঝেও তাদের মধ্যে যতটুকু প্রতিরোধের ক্ষমতা আছে সেটুকু একত্রিত করার জন্য কবি ‘ আরো ‘ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ।

  1. ‘ আমরা ফিরেছি দোরে দোরে’- ‘ আমরা কারা ? কেন এই অবস্থা ?

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ আমরা ‘ বলতে অসহায় ও বিপন্ন সাধারণ মানুষকে বোঝানো হয়েছে । আজ সমগ্র পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে এক গভীর আঁধার । হিংসা যুদ্ধ – রক্তক্ষয় – বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতার আঘাতে মানুষ এখন ক্ষতবিক্ষত । তার চলার পথে ডাইনে – বাঁয়ে – উপরে কিংবা নীচে সর্বত্রই কেন এই অবস্থা প্রতিকূলতা আর অতর্কিতে প্রাণহানির আশঙ্কা । শাসকের চক্রান্তে , স্বার্থান্বেষী ক্ষমতাবানের মদতে সমাজ – রাজনৈতিক অবক্ষয় এক চরম রূপ নিয়েছে । ফলে নরঘাতী হানাহানির শিকার হচ্ছে শিশুরাও । হতভাগ্য , নিরাপত্তাহীন ও দিশাহীন মানুষের এই নিরুপায় দুর্দশার ছবিটি ফুটে উঠেছে প্রশ্নোত পঙক্তিটিতে ।

  1. আমাদের শিশুদের শব’— ‘ শিশুদের শব ’ বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন ? ‘ শব ‘ শব্দটির অর্থ কী ?

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ? কবিতা থেকে প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি নেওয়া । হিংসায় উন্মত্ত এ পৃথিবীতে কোমল – নিষ্পাপ ‘ শিশুদের শব শিশুরাও আজ রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসের শিকার । যুদ্ধ – দাঙ্গা ও অতর্কিত হানার আঘাতে নিমেষে ছিন্নভিন্ন হয় । যে – কোনো সদ্যোজাতের দেহ । কাছে – দূরে ছড়িয়ে থাকা শিশুর এই শবদেহের মধ্যে সমগ্র পৃথিবীজুড়ে ঘটে – চলা শিশুঘাতী নারকীয়তার অমানুষী চিহ্ন ফুটে ওঠে । কবি এ কথাই বোঝাতে চেয়েছেন । → শর ‘ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল শবদেহ । 

  1. ‘ আমাদের কথা কে – বা জানে’— ‘ আমরা ’ কারা ? তাদের কথা কেন কেউ জানে না ?

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগণিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ । 

 এ পৃথিবীর ইতিহাস আসলে ক্ষমতাবান শাসকের ইতিহাস । শাসকেরা প্রতিনিয়ত তার গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে । তাদের মদতে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ কেন কেউ আমাদের করার জন্য সমাজ রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম জানে না দেয় , যার বলি হয় সাধারণ মানুষ । তাদের সুখ – দুঃখ – শান্তি স্বস্তির পরোয়া কেউ করে না । দুর্বল ও অসহায় আমজনতার কথা তাই কখনও সভ্যতার আয়নায় ধরা দেয় না । তাদের জন্য জোটে উপেক্ষা , অবহেলা ও বিস্মৃতি । কবি এই ঐতিহাসিক সত্যকেই তুলে ধরেছেন ।

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer

1. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি শঙ্খ ঘোষ সময় ও সমকাল সম্পর্কে যা বলতে চেয়েছেন , তা আলোচনা করো । 

অথবা , ‘ আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় যুগযন্ত্রণার যে – নির্মম ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে , বর্ণনা করো । 

Ans: বর্তমান সমাজব্যবস্থা উত্তর শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি আমাদের পাঠ্য বইয়ের চারপাশের পৃথিবী ‘ ভাবমূলের অন্তর্গত । বর্তমান সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা কবিকে পীড়িত করেছে । তাই মানুষের চলার পথের প্রতিকূলতা , অসহায়তা , সংশয় ও সম্ভাবনার ছবি কবি এই কবিতায় তুলে ধরেছেন । বর্তমান সময়ে মানুষের চলার পথ বিপৎসংকুল । তাদের চারপাশে মৃত্যুর হাতছানি , প্রতিপাদে বাধা আর প্রতিকূলতা । অবক্ষয়ের কার্য রূপ তার চলার সব পথ রুদ্ধ । তবু মানুষ এগিয়ে চলেছে । হানাদারি শত্রুর আঘাতে মানুষ নিরাশ্রয় হয়েছে । সে তার ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে গিয়ে হয়েছে ব্যর্থ । এখন সে নিজেও মৃত্যুভয়ে শঙ্কিত ও পথহারা । এমন পরিস্থিতিতে কবি ‘ বেঁধে বেঁধে ‘ অর্থাৎ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের সংঘবদ্ধ হয়ে চলার কথা বলেছেন । 

  কবির মতে , সাম্রাজ্যবাদী আর সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা কোণঠাসা । আমাদের এই দুঃখযন্ত্রণার ইতিহাস হয়তো অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । অথবা যদি লেখা হয় তবে তা হবে অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণতায় ভরা । 

সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদের চিরকাল এভাবেই আশাবাদী কবির আহ্বান ক্ষমতাবানের প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুঝে বেঁচে থাকতে হয় । পৃথিবীর এই জীবন্মুত পরিস্থিতিতে অন্যের দোরে দোরে পরমুখাপেক্ষী হয়ে না – ঘুরে , নৈরাশ্য ত্যাগ করে তাই আমাদেরই একত্রিত হতে হবে । কবির আহ্বান বিবেকবান মানুষের একতা ও সাহচর্যই হবে । তাদের প্রতিরোধের ভাষ্য ।

2. ‘ আমাদের পথ নেই কোনো ’ –‘আমরা ’ কারা এবং তাদের ‘ পথ ’ নেই কেন ? পথহারা মানুষগুলিকে কবি কোন্ পথের সন্ধান দিয়েছেন ?

Ans: স্বাধীনতা – পরবর্তী যুগের অন্যতম সমাজসচেতন কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ আমরা ‘ কোনো সীমাবদ্ধ এলাকার জনসমষ্টি নয় । তিনি ‘ আমরা ‘ বলতে ‘ আমরা কারা আজকের যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত , নিপীড়িত , শ্রমজীবী ও শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন । ‘ পথ ’ বলতে এখানে কবি সাধারণ মানুষের জীবনের চলার পথের কথা বলেছেন । সুস্থ সমাজ ও সুন্দর পৃথিবীই পারে মানুষের চলার পথকে মসৃণ করতে । কিন্তু আজকের পৃথিবী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ভীত – সন্ত্রস্ত । সাধারণ শান্তিকামী মানুষ বিপন্ন ও অসহায় । গৃহহারা এইসব মানুষ তাদের ভাবী প্রজন্মকে বাঁচাতে ব্যর্থ । তাদের নিজেদের অস্তিত্বও আজ সংকটের মুখে । তাই তাদের মনে হয়েছে তারা পথহারা । কবির দেওয়া পথের সন্ধান কবি – সাহিত্যিকরা মানুষকে কোনোদিন নিরাশার অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দেন না । কবি শঙ্খ ঘোষও এর ব্যতিক্রম নন । আঘাতে আঘাতে জর্জরিত মানুষ একদিন না একদিন প্রত্যাঘাতের পথ বেছে নেয় । এটাই চিরকালের নিয়ম । কবিও পথহারা মানুষগুলিকে প্রত্যাঘাত হানার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন । তিনি তাদের ‘ আরো বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থাৎ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । কবির মতে , যে কজন আছি , তারা সকলে সংঘবদ বিশ্বাসে একজোট হলে আমাদের সামনে অবশ্যই নতুন পথ খুলে যাবে ।

3. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি — বেঁধে বেঁধে থাকা বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন এবং কাদের এভাবে থাকতে বলেছেন ? কবি বেঁধে বেঁধে থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন কেন ? 

অথবা , ‘ তবু তো কজন আছি বাকি / আয় আরো হাতে হাত রেখে / আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি- কবিতাটির মধ্যে কবি যে – মূল বক্তব্য তুলে ধরতে চেয়েছেন , তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও । উদ্ধৃতাংশটির প্রেক্ষিতে কবি – মানসিকতার পরিচয় দাও ।

Ans: ” বেঁধে বেঁধে থাকা -কবির দৃষ্টিভঙ্গি উত্তর শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতায় ‘ বেঁধে বেঁধে ’ থাকি বলতে কবি সংঘবদ্ধভাবে বেঁচে থাকাকে বোঝাতে চেয়েছেন । বর্তমান বিশ্ব ক্ষমতাবান শাসক , সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও মৌলবাদীদের যৌথ ষড়যন্ত্রে বিধ্বস্ত । মানুষ আজ বিপন্ন । প্রতি পদে পদে তার বিপদ । তার মাথার উপর ছাদ নেই । তারা তাদের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে অক্ষম । এমনকি তারা নিজেরাই প্রতি মুহূর্তে প্রাণসংশয়ের ভয়ে ভীত । তাই এভাবে ক্রমাগত শোষিত মানুষগুলিকে কবি প্রত্যাঘাতের পথে এগোতে বলেছেন । এই প্রত্যাঘাতের পথ হল সংঘবদ্ধতা । কবি পৃথিবীর অংসখ্য শ্রমজীবী , শান্তিকামী সাধারণ মানুষদের ‘ বেঁধে বেঁধে ’ অর্থাৎ একত্রিত হয়ে এ সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলেছেন । বেঁধে বেঁধে থাকার প্রয়োজনীয়তা → বন্য জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেদের রক্ষার্থে আদিম অরণ্যচারী মানুষের মনেও একদিন সংঘবদ্ধভাবে বাস করার ভাবনা জেগেছিল । এইভাবেই গড়ে উঠেছিল পরিবার , পাড়া , গ্রাম , প্রদেশ ও রাষ্ট্র । সৃষ্টি হয়েছিল নতুন নতুন সভ্যতা । আজ বন্য জন্তুর ভয়ে নয় ; সাম্রাজ্যবাদী , ক্ষমতাবান ও মৌলবাদী শক্তি তাদের নৃশংসতায় সাধারণ মানুষের সামনে অস্তিত্বের সংকট সৃষ্টি করেছে । এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে , ভাবী প্রজন্মের কাছে এক সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে হলে প্রয়োজন মানুষের সংঘবন্ধতা । সুস্থ – শান্তিকামী ও বিবেকমান মানুষের ঐক্যবদ্ধ অঙ্গীকারেই একমাত্র এ সভ্যতার সংকটমোচন সম্ভব । কবি এ কথাই বলেছেন । 

4. আমাদের ইতিহাস নেই বলে ‘ কবি সংশয় প্রকাশ প্রশ্ন করেছেন কেন ?

অথবা , ‘ এমনই ইতিহাস বলার কারণ কী ? 

অথবা , “ আমাদের ডানপাশে ধ্বস / আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ সমগ্র কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে এই মন্তব্যের তাৎপর্য লেখো । 

Ans: উদ্ধৃত অংশটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে সংশয়ার্কীর্ণ ইতিহাসের রূপ থাকি ‘ কবিতার অংশবিশেষ । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আজকের পৃথিবী বিষাক্ত হয়ে উঠেছে । মানুষের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন । এই সময়ে আমরা বিশেষ করে সাধারণ মানুষ এক ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি । আমরা ডাইনে – বাঁয়ে বিপদকে রেখে , মাথার ওপর হানাদারি শত্রুকে উপেক্ষা করে , সামনের প্রতিকূল পথ ধরে এগিয়ে চলেছি । এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই । ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে আমরা ব্যর্থ । প্রতিক্ষণে হানাদারি মৃত্যুর ভয়ে আমরা ভীত । সাম্রাজ্যবাদী ও সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা পর্যুদস্ত । কিন্তু আমাদের এই দুঃখের ইতিহাস অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । রানারের বেদনার মতো কালোরাত্রির খামে চিরকাল তা আবদ্ধ থেকে যাবে , এটাই কবির আক্ষেপ । 

 বিশ্বাসের ভিত যেখানে আলগা হয়ে যায় , সেখানেই সংশয়ের সৃষ্টি হয় । কবি মনে করেন , সারাপৃথিবীর ইতিহাসে সাধারণ মানুষের কথা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি । কারণ ইতিহাসকে কবির দৃষ্টিতে আমাদের ইতিহাস নিয়ন্ত্রণ করে শাসক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি । আর সাধারণ মানুষের যদিও বা কোনো ইতিহাস থাকে তবে তা অস্পষ্ট , অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণ । ক্ষমতাবান শাসকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ইতিহাসে মানুষের অবস্থার যথার্থ প্রতিফলন ঘটে না । তাদের অসহায় বিপন্নতা কিংবা জীবন্মুত পরিস্থিতির খোঁজ , শাসকের ইতিহাসে অনুপস্থিত বলেই তথাকথিত বিকৃত ইতিহাস সম্পর্কে কবির এই সংশয় । 

5. ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস’— ‘ আমরা ’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? তারা নিজেদের সর্বদা ভিখারি বলে মনে করেছেন কেন ? 

Ans: কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত । এখানে ‘ আমরা ‘ বলতে বর্তমান বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ও মৌলবাদী শক্তির অত্যাচারে জর্জরিত সাধারণ , শান্তিকামী ও শ্রমজীবী মানুষদের বোঝানো হয়েছে ।

  এক্ষেত্রে ‘ আমরা ’ একটি বিশেষ শ্রেণিচরিত্র , দেশকালভেদে যারা সর্বদাই এক । সাধারণ , শ্রমজীবী এই মানুষগুলি সমাজের নীচের তলার মানুষ হিসেবে পরিচিত । এরা সভ্যতার ধারক ও বাহক । কিন্তু এরাই থাকে । সবচেয়ে অন্ধকারে । সমাজের তথাকথিত উচ্চবিত্তের দয়াদাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভর করে এদের মরা বাঁচা । শাসকের ক্ষমতার বদল হলেও এদের দীনতার কোনো বদল হয় না । সাধারণ এই মানুষগুলি সর্বদাই বঞ্চিত থাকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে । আবার সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তি যখন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিশ্বময় উন্মাদনা সৃষ্টি করে , তখন সবার আগে এরাই আশ্রয়চ্যুত হয়ে পড়ে , টান পড়ে এদের রুটি – রুজিতে । এদের জীবনের ইতিহাস কোথাও লেখা হয় না । আর যদিও – বা হয় তবে তা ক্ষমতাবান ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে বিকৃত হয়ে পরিবেশিত হয় । অথচ এই সমস্ত মানুষরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিচারে ভিখারি নয় , এরা সামাজিক দিক দিয়েও দীন , শাসকের অবজ্ঞা , উপেক্ষা ও অবহেলার পাত্র । তাই কবি এই সাধারণ মানুষদের জবানিতে বলেছেন , ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস । 

6. ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে ! — কার , কোন্ কবিতার অংশ ? মূলগ্রন্থের নাম কী ? পাঠ্য কবিতা অনুসারে পড়ুক্তি দুটির তাৎপর্য আলোচনা করো ।

Ans: প্রশ্নে উদ্ভূত পঙ্ক্তিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে । বেঁধে থাকি কবিতা থেকে গৃহীত । শক্তি দুটির তাৎপর্য । এই কবিতাটি তাঁর ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত । । হিংসাশ্রয়ী সময়ের বিপন্নতায় আজ মানুষের চারপাশ বিপৎসংকুল । তাই রাষ্ট্রীয় বর্বরতার নগ্ন ভয়াবহতা থেকে শিশুরাও এখন আর বাদ যায় না । এইজন্য ‘ কাছে – দূরে ‘ অর্থাৎ যত্রতত্র নারকীয় হানাহানি কিংবা প্রাণঘাতী হিংসার বলি হিসেবে ছড়িয়ে থাকে শিশুর মৃতদেহ । এভাবেই ক্ষমতার দখলদার তথা শক্তিশালী প্রবল একদিকে নির্বিবাদে শিশুহত্যার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেমন ধ্বংস করে , অন্যদিকে তেমনি আপামর জনসাধারণের মনে এক ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করতে সক্ষম হয় । শিশু তো দেশের ভবিষ্যৎ , তাই তার হত্যা হলে , ভবিষ্যৎশূন্য হয় দেশ । নতুন ভাবনার ধারক ও বাহকের পথ নিশ্চিহ্ন হয় চিরতরে । সুতরাং , যে – সমাজ ও রাষ্ট্র শিশুহত্যার চক্রান্ত করে , সে সম্পূর্ণ মনুষ্যত্ব – বিরোধী । অন্যদিকে , নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারা যেন আমাদেরই অক্ষমতা ও কলঙ্কের চিহ্ন । তাই কবি এই শিশুঘাতী মারণযজ্ঞের হাত থেকে মানবতায় উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন ।

7. ‘ আমাদের ইতিহাস নেই— কাদের , কেন ইতিহাস নেই ? এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে সভ্যতার কোন্ কলঙ্কিত ইতিহাসকে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে ?

Ans: কাদের কেন ইতিহাস নেই উত্তর / আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি সারাপৃথিবীর খেটে – খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের ইতিহাসহীনতার প্রতি দিক্‌নির্দেশ করেছেন । আসলে এ বিশ্বের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয় । শাসক কিংবা সাম্রাজ্যবাদীর ইচ্ছা আর পরিকল্পনায় । তাই সেখানে উপেক্ষিত দুর্বলের বাস্তব অবস্থার যথার্থ প্রতিচ্ছবি কখনোই ফুটে ওঠে না । ক্ষমতাবানের দত্ত আর আস্ফালনে শিকড়হারা মানুষের সম্পূর্ণ বিস্মৃত দৈন্যদশাটি আমাদের ইতিহাস নেই এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে । 

  কলঙ্কিত ইতিহাসের পরিচয় বর্তমান সময়ে হিংসা ও রণরক্তে পর্যুদস্ত সাধারণ মানুষের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে কবি ইতিহাসের প্রসঙ্গকে টেনে এনেছেন । কোনো দেশ কিংবা জাতির সমাজ , সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিবর্তনের ধারাবাহিক ভাষ্য আর বিশ্লেষণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মানুষের ইতিহাস । কিন্তু প্রথাগত ইতিহাস বা ক্ষমতাবানের পরিকল্পিত ইতিহাসে প্রাধান্য পায় শাসকের স্বার্থ । সেখানে বিকৃতি – বিভ্রান্তি ও মিথ্যা প্রচারে প্রকৃত ইতিহাস তার নিজস্বতা হারায় । সাধারণ মানুষ ক্রমশ ভুলে যেতে থাকে নিজের ঐতিহ্য – শিকড় – স্বপ্ন ও সংঘর্ষের ইতিবৃত্তকে । তারা দিশাহীন বিচ্ছিন্নতার স্রোতে ক্রমশ পথ হারায় । তাই কবি আমজনতার ইতিহাস থাকা না – থাকার সঙ্গে যখন ‘ এমনই ইতিহাস ‘ লেখেন তখন মানুষের বিভ্রান্তির দিকটিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে । শাসকের উদ্দেশ্যপূরণ করে এমন চাপিয়ে দেওয়া মিথ্যা ইতিহাসের কলঙ্কিত রূপটিকেই তাই কবি এভাবে কটাক্ষ করেছেন ।

Madhyamik Suggestion 2026 | মাধ্যমিক সাজেশন ২০২৬

Special Keywords :

Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer, Madhyamik Bengali 2026, আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর, Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Madhyamik Suggestion, Shankha Ghosh Poem Questions for Madhyamik, আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার ব্যাখ্যা, Madhyamik Bengali Poem Question Answer, মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৬, Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki কবিতার MCQ প্রশ্ন, Bengali Poem Suggestion for Madhyamik 2026, Shankha Ghosh কবিতার প্রশ্নোত্তর, Madhyamik Bengali 2026 Poetry Questions, আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা প্রশ্ন ও ব্যাখ্যা, Poem Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Full Guide, Madhyamik Bengali Poem Answer ২০২৬

---Advertisement---

Related Post

📃 General Studies Important GK Questions and Answers: Very useful for all job exam preparation l জেনারেল স্টাডিস গুরুত্বপূর্ণ জিকে প্রশ্নোত্তর : সমস্ত চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য খুবই উপযোগী 👇

General Studies Important GK Questions and Answers: চাকরির প্রস্তুতি নিতে গেলে যে বিষয়টি কখনোই এড়ানো যায় না, তা হল জেনারেল স্টাডিস বা সাধারণ জ্ঞান (GK)। বিশেষ করে WBCS, ...

Madhyamik History Chapter 2 Questions – Sanskar Boisisto o Porjalochona l মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর – দ্বিতীয় অধ্যায়: সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

Madhyamik History Chapter 2 Questions – Sanskar Boisisto o Porjalochona: মাধ্যমিক ২০২৬ পরীক্ষার্থীদের জন্য ইতিহাস একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” (Madhyamik ...

🧠 200 Important Psychology Questions and Answers for Primary and Upper Primary Exams Part-1 I প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারি পরীক্ষার জন্য সাইকোলজির গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর Part-1

Psychology Questions and Answers for Primary and Upper Primary Exams: শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হতে গেলে মনোবিজ্ঞান (Psychology) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রাইমারি TET ও আপার প্রাইমারি TET ...

📘 Indian Army Agniveer Maths 2025 – Most Important Maths MCQs with Answers

Indian Army Agniveer Maths 2025: The Indian Army Agniveer Exam 2025 is scheduled to be held from June 30 to July 10, 2025, for various posts including General ...

1 thought on “Aai Aro Bedhe Bedhe Thaki Question and Answer l Madhyamik Bengali 2026 l আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর”

Leave a Comment